মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
হাদীস নং: ৫১৭৭
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৭। হযরত সাহল ইবনে সা'দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যদি দুনিয়ার মূল্য আল্লাহ্ তা'আলার দৃষ্টিতে মাছির একটি পাখার সমমূল্য পরিমাণ হইত তাহা হইলে তিনি কোন কাফেরকে এক ঢোকও পান করাইতেন না। —আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ كَانَتِ الدُّنْيَا تَعْدِلُ عِنْدَ اللَّهِ جَنَاحَ بَعُوضَةٍ مَا سَقَى كَافِرًا مِنْهَا شربة» رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৭৮
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা বাগ-বাগিচা ও ক্ষেত-খামার ( আগ্রহের সহিত) গ্রহণ করিও না। ফলে তোমরা দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়িবে। —তিরমিযী ও বায়হাকী
كتاب الرقاق
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَتَّخِذُوا الضَّيْعَةَ فَتَرْغَبُوا فِي الدُّنْيَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৭৯
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৯। হযরত আবু মুসা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি (যেই পরিমাণ) দুনিয়াকে ভালবাসে সে (সেই পরিমাণ) তাহার আখে রাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করিবে, পক্ষান্তরে যে আখেরাতকে মহব্বত করে, সে সেই পরিমাণ দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করিবে। সুতরাং যাহা অচিরেই ধ্বংস হইয়া যাইবে তাহার উপর উহাকে প্রাধান্য দাও যাহা চিরস্থায়ী থাকিবে। – আহমদ ও বায়হাকী
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَحَبَّ دُنْيَاهُ أَضَرَّ بِآخِرَتِهِ وَمَنْ أَحَبَّ آخِرَتَهُ أَضَرَّ بِدُنْيَاهُ فَآثِرُوا مَا يَبْقَى عَلَى مَا يَفْنَى» . رَوَاهُ أَحْمد وَالْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮০
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, দীনারের দাসের উপর লা'নৎ এবং দিরহামের দাসের উপর লা'নত। —তিরমিযী
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «لُعِنَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَلُعِنَ عَبْدُ الدِّرْهَمِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮১
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮১। হযরত কা'ব ইবনে মালেক তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ দুইটি ক্ষুধার্ত বাঘকে মেষ-বকরীর পালের মধ্যে ছাড়িয়া দিলে ততটুকু ক্ষতিসাধন করে না, যতটুকু কোন ব্যক্তির ধন-সম্পদের মোহ ও মর্যাদার লালসা তাহার দ্বীনের ক্ষতি করিয়া থাকে। —তিরমিযী ও দারেমী
كتاب الرقاق
وَعَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلَا فِي غَنَمٍ بِأَفْسَدَ لَهَا مِنْ حِرْصِ الْمَرْءِ عَلَى الْمَالِ والشرف لدينِهِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮২
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮২। হযরত খাব্বাব (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেনঃ মু'মিন ব্যক্তি (জীবনধারণের উদ্দেশ্যে) যাহা খরচ করে, তাহাকে উহাতে সওয়ার দেওয়া হয়। কিন্তু সে এই মাটির মধ্যে যাহা ব্যয় করে (উহাতে কিছুই দেওয়া হয় না)। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَن خباب عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَنْفَقَ مُؤْمِنٌ مِنْ نَفَقَةٍ إِلَّا أُجِرَ فِيهَا إِلَّا نَفَقَتَهُ فِي هَذَا التُّرَابِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৩
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৩। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ (কোন ব্যক্তির জীবনধারণের) প্রত্যেকটি খরচ আল্লাহ্ তা'আলার রাস্তায় ব্যয় করার মধ্যে গণ্য—ঘর-বাড়ী ব্যতীত। কেননা, উহাতে কোন কল্যাণ নাই। —তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব।
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «النَّفَقَةُ كُلُّهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلَّا الْبِنَاءَ فَلَا خَيْرَ فِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৪
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৪। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বাহির হইলেন, আমরাও তাঁহার সঙ্গে ছিলাম। এই সময় তিনি একটি উঁচু গুম্বজ দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, এইটি কি ? সঙ্গীগণ বলিলেন, ইহা অমুক আনসারী ব্যক্তির। ইহা শুনিয়া তিনি নীরব রহিলেন এবং উহা (ঘৃণা) নিজের মনেই রাখিলেন। অবশেষে যখন সেই ঘরওয়ালা আসিয়া লোকজনের মধ্যে হুযূর (ﷺ)কে সালাম করিল, তখন তিনি তাহার দিক হইতে চেহারা ফিরাইয়া লইলেন। এইভাবে কয়েকবার করিল, এমনকি লোকটি হুযূর (ﷺ)এর অসন্তুষ্টি এবং তাহার দিক হইতে মুখ ফিরান অনুধাবন করিয়া হুয়ূরের সাহাবীদের নিকট ব্যাপারটি প্রকাশ করিল এবং বলিল, আল্লাহর কসম! আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে (আমার প্রতি) অসন্তুষ্ট দেখিতেছি। তাহারা বলিলেন, হুযূর (ﷺ) এই দিকে বাহির হইয়া তোমার গুম্বজটি দেখেন, (ইহাতেই তিনি অসন্তুষ্ট হন।) এই কথা শুনিয়া লোকটি তাহার গুম্বুজের দিকে ফিরিয়া গেল এবং উহাকে ভাঙ্গিয়া চুরমার করিয়া যমীনের সাথে মিশাইয়া দিল। ইহার পর আবার একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এই দিকে বাহির হইলেন; কিন্তু গুম্বজটি দেখিলেন না। জিজ্ঞাসা করিলেনঃ গুম্বজটির কি হইল ? তাহারা বলিলেন, উহার মালিক আমাদের নিকট আসিয়া আপনার অসন্তুষ্টির কথা বলিলে আমরা তাহাকে ইহার কারণটি অবহিত করিলাম, অতঃপর সে উহাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়াছে। তখন হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ সাবধান! একান্ত প্রয়োজনীয় ঘর ব্যতীত অন্য কোন ইমারত উহার মালিকের জন্য বিপদ (অর্থাৎ, আযাবের কারণ হইবে)। –আবু দাউদ
كتاب الرقاق
وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمًا وَنَحْنُ مَعَهُ فَرَأَى قُبَّةً مُشْرِفَةً فَقَالَ: «مَا هَذِهِ؟» قَالَ أَصْحَابُهُ: هَذِهِ لِفُلَانٍ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَسَكَتَ وَحَمَلَهَا فِي نَفْسِهِ حَتَّى إِذَا جَاءَ صَاحِبُهَا فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فِي النَّاسُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ صَنَعَ ذَلِكَ مِرَارًا حَتَّى عرفَ الرجلُ الغضبَ فِيهِ والإِعراضَ فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى أَصْحَابِهِ وَقَالَ: وَاللَّهِ إِنِّي لَأُنْكِرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالُوا: خَرَجَ فَرَأَى قُبَّتَكَ. فَرَجَعَ الرَّجُلُ إِلَى قُبَّتِهِ فَهَدَمَهَا حَتَّى سَوَّاهَا بِالْأَرْضِ. فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ فَلَمْ يَرَهَا قَالَ: «مَا فَعَلَتِ الْقُبَّةُ؟» قَالُوا: شَكَا إِلَيْنَا صَاحِبُهَا إِعْرَاضَكَ فَأَخْبَرْنَاهُ فَهَدَمَهَا. فَقَالَ: «أَمَا إِنَّ كَلَّ بِنَاءٍ وَبَالٌ عَلَى صَاحِبِهِ إِلَّا مَا لَا إِلَّا مَا لَا» يَعْنِي مَا لَا بُدَّ مِنْهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৫
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৫। হযরত আবু হাশেম ইবনে উতবা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে উপদেশস্বরূপ বলিলেনঃ সমস্ত মাল-সম্পদের মধ্যে তোমার জন্য একজন খাদেম ও আল্লাহর রাস্তায় ব্যবহারের জন্য একটি সওয়ারীই যথেষ্ট। – আহমদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্। আর মাসাবীহর কোন কোন গ্রন্থে عتبة -এর স্থলে অর্থাৎ, عتبد ‘তা’-এর পরিবর্তে ‘দাল’ আছে, কিন্তু ইহা ভুল ।
كتاب الرقاق
وَعَن أبي هَاشم بن عُتبَةَ قَالَ: عَهِدَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّمَا يَكْفِيكَ مِنْ جَمْعِ الْمَالِ خَادِمٌ وَمَرْكَبٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ. وَفِي بَعْضِ نسخ «المصابيح» عَن أبي هَاشم بن عتيد بِالدَّال بدل التَّاء وَهُوَ تَصْحِيف
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৬
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৬। হযরত উসমান (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আদম সন্তানের জন্য বসবাসের একখানা ঘর, লজ্জাস্থান ঢাকার একখানা কাপড়, একখণ্ড শুকনা রুটি ও কিছু পানি ব্যতীত আর কিছুই রাখার হক বা অধিকার নাই। – তিরমিযী
كتاب الرقاق
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ لِابْنِ آدَمَ حَقٌّ فِي سِوَى هَذِهِ الْخِصَالِ: بَيْتٌ يَسْكُنُهُ وَثَوْبٌ يُوَارِي بِهِ عَوْرَتَهُ وجلف الْخبز وَالْمَاء . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৭
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৭। হযরত সাহল ইবনে সা'দ (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খেদমতে আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যাহা করিলে আল্লাহ্ আমাকে ভালবাসিবেন এবং মানুষেরা আমাকে ভালবাসিবে। তিনি বলিলেনঃ দুনিয়া ত্যাগ কর, আল্লাহ্ তোমাকে মহব্বত করিবেন। এবং মানুষের নিকট যাহা আছে উহার প্রতি লালসা করিও না। তবে লোকেরা তোমাকে ভালবাসিবে। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا أَنَا عَمِلْتُهُ أَحَبَّنِي اللَّهُ وَأَحَبَّنِي النَّاسُ. قَالَ: «ازْهَدْ فِي الدُّنْيَا يُحِبُّكَ اللَّهُ وَازْهَدْ فِيمَا عِنْدَ النَّاسِ يُحِبَّكَ النَّاسُ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৮
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একটি (খালি) চাটাইয়ে ঘুমাইয়াছিলেন, উহা হইতে উঠিলে তাঁহার দেহ মোবারকে চাটাইয়ের দাগ পড়িয়াছিল। তখন ইবনে মাসউদ আরয করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদি আপনি আমাদিগকে নির্দেশ দিতেন তবে আমরা আপনার জন্য একখানা বিছানা তৈয়ার করিয়া বিছাইয়া দিতাম। তিনি বলিলেনঃ দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? বস্তুতঃ আমার ও দুনিয়ার দৃষ্টান্ত হইল একজন ঐ আরোহীর ন্যায়, যে একটি গাছের নীচে ছায়ায় কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম লয়, অতঃপর বৃক্ষটিকে ছাড়িয়া চলিয়া যায়। – আহমদ, তিরমিযী ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَن ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَامَ عَلَى حَصِيرٍ فَقَامَ وَقَدْ أَثَّرَ فِي جَسَدِهِ فَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ أَمَرْتَنَا أَنْ نَبْسُطَ لَكَ وَنَعْمَلَ. فَقَالَ: «مَا لِي وَلِلدُّنْيَا؟ وَمَا أَنَا وَالدُّنْيَا إِلَّا كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৮৯
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৯। হযরত আবু উমামা (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, আমার বন্ধুদের মধ্যে সেই মু'মিনই আমার নিকট ঈর্ষার পাত্র, যে পার্থিব ঝামেলামুক্ত, নামাযের ব্যাপারে সৌভাগ্যবান অর্থাৎ, আল্লাহর এবাদত উত্তমরূপে আদায় করে এবং গোপনীয় অবস্থায় আল্লাহর আনুগত্যে থাকে। মানুষের কাছে গুমনাম বা অপরিচিত—তাহার প্রতি অঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করা হয় না, তাহার রি প্রয়োজন পরিমাণ হয় এবং উহাতেই সে তুষ্ট থাকে। এই কথাগুলি বলিয়া হুযূর (ﷺ) নিজের হাতের অঙ্গুলীর মধ্যে চটকী মারিলেন এবং বলিলেনঃ এই অবস্থায় হঠাৎ একদিন তাহাকে মৃত্যু পাইয়া বসে। তাহার জন্য ক্রন্দনকারিণীও কম হয় এবং মীরাসী সম্পদও স্বল্প ছাড়িয়া যায়। —আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَغْبَطُ أَوْلِيَائِي عِنْدِي لَمُؤْمِنٌ خَفِيفُ الْحَاذِ ذُو حَظٍّ مِنَ الصَّلَاةِ أَحْسَنَ عِبَادَةَ رَبِّهِ وَأَطَاعَهُ فِي السِّرِّ وَكَانَ غَامِضًا فِي النَّاسِ لَا يُشَارُ إِلَيْهِ بِالْأَصَابِعِ وَكَانَ رِزْقُهُ كَفَافًا فَصَبَرَ عَلَى ذَلِكَ» ثُمَّ نَقَدَ بِيَدِهِ فَقَالَ: «عُجِّلَتْ مَنِيَّتُهُ قَلَّتْ بَوَاكِيهِ قَلَّ تُراثُه» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯০
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯০। হযরত আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমার রব মক্কার বাতহা (প্রশস্ত উপত্যকা) আমার জন্য স্বর্ণে রূপান্তরিত করিয়া দেওয়ার বিষয় আমার নিকট পেশ করিলেন, তখন আমি বলিলামঃ না, হে আমার প্রভু! বরং আমি একদিন পরিতৃপ্ত এবং আরেক দিন অভুক্ত থাকিতে চাই। যাহাতে আমি যখন অভুক্ত থাকি তখন তোমার কাছে সকাতরে বিনয় প্রকাশ করিব এবং তোমাকে স্মরণ করিব। আর যখন পরিতৃপ্ত হইব তখন তোমার প্রশংসা করিব এবং তোমার শোকর আদায় করিব।—আহমদ ও তিরমিযী
كتاب الرقاق
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَرَضَ عَلَيَّ رَبِّي لِيَجْعَلَ لِي يطحاء مَكَّة ذَهَبا فَقلت: لَا يارب وَلَكِنْ أَشْبَعُ يَوْمًا وَأَجُوعُ يَوْمًا فَإِذَا جُعْتُ تَضَرَّعْتُ إِلَيْكَ وَذَكَرْتُكَ وَإِذَا شَبِعَتُ حَمِدْتُكَ وَشَكَرْتُكَ . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯১
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯১। হযরত উবায়দুল্লাহ্ ইবনে মিহছান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজের গৃহে নিরাপদে শারীরিক সুস্থতা সহকারে ভোর করে এবং তাহার কাছে সেই দিনের প্রাণ রক্ষা পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মওজুদ থাকে, তাহার জন্য যেন দুনিয়ার সমস্ত নিয়ামত একত্রিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে। —তিরমিযী। এবং তিনি বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব।
كتاب الرقاق
وَعَن عبيدِ الله بنِ مِحْصَنٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ: «مَنْ أَصْبَحَ مِنْكُمْ آمِنًا فِي سِرْبِهِ مُعَافًى فِي جَسَدِهِ عِنْدَهُ قُوتُ يَوْمِهِ فَكَأَنَّمَا حِيزَتْ لَهُ الدُّنْيَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯২
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯২। হযরত মিকদাম ইবনে মা'দীকারাব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছিঃ কোন ব্যক্তি তাহার উদর অপেক্ষা মন্দ কোন পাত্রকে ভর্তি করে নাই। আদম সন্তানের জন্য এই পরিমাণ কয়েক লোকমাই যথেষ্ট যাহা দ্বারা সে নিজের কোমরকে সোজা রাখিতে পারে (ও আল্লাহর এবাদত করিতে পারে)। যদি ইহার অধিক খাওয়া প্রয়েজন মনে করে তবে এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য, আরেক তৃতীয়াংশ পানীয় এবং অপর তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখিবে। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَن مقدامِ بْنِ مَعْدِي كَرِبَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا مَلَأَ آدَمِيٌّ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ بِحَسْبِ ابْنِ آدَمَ أُكُلَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ كَانَ لَا مَحَالَةَ فَثُلُثٌ طَعَامٌ وَثُلُثٌ شَرَابٌ وَثُلُثٌ لِنَفَسِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯৩
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৩। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এক ব্যক্তিকে ঢেকুর দিতে শুনিয়া বলিলেনঃ তোমার ঢেকুর কম কর। কেননা, কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তিই খুব বেশী ক্ষুধার্ত হইবে, যে দুনিয়াতে খুব বেশী পরিতৃপ্ত হইয়াছে। —শরহে সুন্নাহ্। আর তিরমিযীও অনুরূপ অর্থে বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الرقاق
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَمِعَ رَجُلًا يَتَجَشَّأُ فَقَالَ: «أَقْصِرْ مِنْ جُشَائِكَ فَإِنَّ أَطْوَلَ النَّاسِ جُوعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَطْوَلُهُمْ شِبَعًا فِي الدُّنْيَا» . رَوَاهُ فِي «شرح السّنة» . وروى التِّرْمِذِيّ نَحوه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯৪
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৪। হযরত কা'ব ইবনে ইয়ায (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছিঃ প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোন একটি ফেতনা (পরীক্ষামূলক বিষয়) রহিয়াছে আর আমার উম্মতের ফেতনা হইল মাল । – তিরমিযী
كتاب الرقاق
وَعَن كَعْب بن عِياضٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ لِكُلِّ أُمَّةٍ فِتْنَةً وَفِتْنَةُ أُمتي المالُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯৫
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৫। হযরত আনাস (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেনঃ কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে এমন অবস্থায় আনা হইবে যেন সে একটি অসহায় বকরীর ছানা। অতঃপর তাহাকে আল্লাহ্ তা'আলার সম্মুখে দাঁড় করান হইবে। তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবেন, আমি তোমাকে (হায়াত ও স্বাস্থ্য) দান করিয়াছিলাম, (দাস-দাসী, ধন-দৌলতের) মালিক বানাইয়াছিলাম এবং আমি তোমাকে (দ্বীনে হকের) নেয়ামত দান করিয়াছিলাম, আমার সেই সমস্ত নিয়ামতকে কি কাজে ব্যয় করিয়াছ? সে বলিবে, হে আমার রব! আমি উহাকে সঞ্চয় করিয়াছি, (ব্যবসা করিয়া) উহাতে বৃদ্ধি করিয়াছি এবং (অবশেষে) প্রথমে যাহা ছিল তদপেক্ষা অধিক পরিমাণে ছাড়িয়া আসিয়াছি। সুতরাং আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে) ফিরাইয়া দিন, আমি উক্ত সমুদয় সম্পদ আপনার নিকট লইয়া আসিব। আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে বলিবেনঃ যাহা কিছু তুমি আগে প্রেরণ করিয়াছ তাহা আমাকে দেখাও। উত্তরে সে (পূর্বের ন্যায়) আবার বলিবে, হে আমার রব! আমি উহাকে সঞ্চয় করিয়াছি, উহাতে বৃদ্ধি করিয়াছি এবং পূর্বে যাহা ছিল তাহা হইতে অধিক ছাড়িয়া আসিয়াছি। সুতরাং আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে পাঠাইয়া দাও। তবে সমুদয় সম্পদ নিয়া তোমার নিকট আসিব। তখন প্রকাশ পাইবে যে, সে এমন এক বান্দা, যে আখেরাতের জন্য কোন নেক আমল প্রেরণ করে নাই। সুতরাং তাহাকে দোযখের দিকে লইয়া যাওয়া হইবে। -তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি যঈফ।
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يُجَاءُ بِابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ بَذَجٌ فَيُوقَفُ بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ فَيَقُولُ لَهُ: أَعْطَيْتُكَ وَخَوَّلْتُكَ وَأَنْعَمْتُ عَلَيْكَ فَمَا صَنَعْتَ؟ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ وَتَرَكْتُهُ أَكْثَرَ مَا كَانَ فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ كُلِّهِ. فَيَقُولُ لَهُ: أَرِنِي مَا قَدَّمْتَ. فَيَقُولُ: رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ وَتَرَكْتُهُ أَكثر ماكان فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ كُلِّهِ. فَإِذَا عَبْدٌ لَمْ يُقَدِّمْ خَيْرًا فَيُمْضَى بِهِ إِلَى النَّارِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَضَعفه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫১৯৬
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৬। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ কিয়ামতের দিন নিয়ামত সম্পর্কে বান্দাকে সর্বপ্রথম যেই প্রশ্ন করা হইবে তাহা হইল ; তাহাকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, আমি কি তোমাকে সুস্বাস্থ্য দান করি নাই, আমি কি তোমাকে ঠাণ্ডা পানি দিয়া পরিতৃপ্ত করি নাই ? – তিরমিযী
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَوَّلَ مَا يُسْأَلُ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنَ النَّعِيمِ أَنْ يُقَالَ لَهُ: أَلَمْ نُصِحَّ جِسْمَكَ؟ وَنَرْوِكَ من المَاء الْبَارِد؟ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
তাহকীক: