মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৭- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
হাদীস নং: ৫২০১
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০১। হযরত উকবা ইবনে আমের (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেনঃ যখন তুমি দেখিবে কোন বান্দার গুনাহ্ ও নাফরমানী সত্ত্বেও মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ তাহাকে দুনিয়ার প্রিয় বস্তু দান করিতেছেন, তখন বুঝিয়া লও যে, প্রকৃতপক্ষে ইহা অবকাশমাত্র। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) (দৃষ্টান্তস্বরূপ) এই আয়াতটি তেলাওয়াত করিলেনঃ “যখন তাহারা (কাফেরগণ) যে সকল উপদেশ তাহাদিগকে দেওয়া হইয়াছিল উহা ভুলিয়া গেল, তখন আমি তাহাদের জন্য প্রত্যেক বস্তুর দ্বার উন্মুক্ত করিয়া দেই, অবশেষে যখন তাহারা প্রাপ্ত জিনিসে অত্যধিক আনন্দিত হইয়া পড়ে এমতাবস্থায় আমি তাহাদিগকে হঠাৎ পাকড়াও করি এবং তাহারা হতাশ হইয়া পড়ে।” –আহমদ
كتاب الرقاق
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا رَأَيْتَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يُعْطِي الْعَبْدَ مِنَ الدُّنْيَا عَلَى مَعَاصِيهِ مَا يُحِبُّ فَإِنَّمَا هُوَ اسْتِدْرَاجٌ» ثُمَّ تَلَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (فَلَمَّا نسوا ماذكروا بِهِ فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ أَبْوَابَ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى إِذَا فَرِحُوا بِمَا أُوتُوا أَخَذْنَاهُمْ بَغْتَةً فَإِذَا هم مبلسون) رَوَاهُ أَحْمد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০২
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০২। হযরত আবু উমামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা সোফফার অধিবাসীদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি একটি দীনার রাখিয়া মৃত্যুবরণ করিল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ ইহা একটি পোড়া দাগ। বর্ণনাকারী বলেন, কিছুদিন পর আরেক ব্যক্তি দুইটি দীনার রাখিয়া মৃত্যুবরণ করিল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ ইহা দুইটি পোড়া দাগ। – আহমদ ও বায়হাকী শো'আবুল ঈমানে
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الصُّفَّةِ تُوُفِّيَ وَتَرَكَ دِينَارًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيَّةٌ» قَالَ: ثُمَّ تُوُفِّيَ آخَرُ فَتَرَكَ دِينَارَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيَّتَانِ» رَوَاهُ أَحْمَدُ والبيهقيُّ فِي «شعب الإِيمان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৩
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৩। হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি তাঁহার মামা আবু হাশেম ইবনে উতবার কাছে তাহার রোগ পরিচর্যার জন্য গেলেন। (তাহাকে দেখিয়া) আবু হাশেম কাঁদিয়া দিলেন। মুয়াবিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, হে মামা। কেন কাঁদিতেছেন ? রোগ যন্ত্রণা আপনাকে কষ্ট দিতেছে—না কি দুনিয়ার লোভ-লালসায় আপনার এই ক্রন্দন? জওয়াবে আবু হাশেম বলিলেন, ইহার একটিও নহে। বরং (এইজন্য কাঁদিতেছি যে,) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে একটি অসীয়ত করিয়াছিলেন। কিন্তু আমি তাহা রক্ষা করিতে পারি নাই। মুয়াবিয়া (রাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই অসীয়তটি কি ছিল? তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমার মাল সঞ্চয়ের মধ্যে কেবলমাত্র একজন খাদেম এবং আল্লাহর রাস্তায় জেহাদের জন্য একটি সওয়ারীই যথেষ্ট। আমি দেখিতেছি যে, আমি মাল সঞ্চয় করিয়াছি। —আহমদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَن مُعَاوِيَة أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى خَالِهِ أَبِي هَاشِمِ بْنِ عتبَة يعودهُ فَبَكَى أَبُو هَاشِمٍ فَقَالَ: مَا يُبْكِيكَ يَا خَالِ؟ أَوَجَعٌ يُشْئِزُكَ أَمْ حِرْصٌ عَلَى الدُّنْيَا؟ قَالَ: كلا ولكنَّ رَسُول الله عهد إِلينا عَهْدًا لَمْ آخُذْ بِهِ. قَالَ: وَمَا ذَلِكَ؟ قَالَ: سَمِعْتُهُ يَقُولُ: «إِنَّمَا يَكْفِيكَ مِنْ جَمْعِ الْمَالِ خَادِمٌ وَمَرْكَبٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» . وَإِنِّي أَرَانِي قَدْ جَمَعْتُ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৪
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৪। হযরত উম্মে দারদা (রাঃ) বলেন, একদা আমি (আমার স্বামী) হযরত আবুদ্দারদা (রাঃ)-কে বলিলাম, আপনার কি হইয়াছে, আপনি কেন (কোন পদ ও সম্পদ) অর্জন করিতেছেন না, যেইভাবে অমুক অমুক অর্জন করিতেছে? তখন তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, “তোমাদের সম্মুখে একটি দুর্গম গিরিপথ রহিয়াছে, ভারী বোঝা বহনকারী সহজভাবে উহা অতিক্রম করিতে পারিবে না।” তাই আমি উক্ত দুর্গম পথের জন্য হাল্কা থাকাই পছন্দ করি।
كتاب الرقاق
وَعَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ قَالَتْ: قُلْتُ: لِأَبِي الدَّرْدَاءِ: مَالك لَا تَطْلُبُ كَمَا يَطْلُبُ فُلَانٌ؟ فَقَالَ: أَنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ أَمَامَكُمْ عَقَبَةً كَؤُودًا لَا يَجُوزُهَا المثقلون» . فَأحب أَن أتخفف لتِلْك الْعقبَة
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৫
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৫। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমাদের কেহ পা না ভিজাইয়া পানিতে চলিতে পারে কি? তাঁহারা বলিলেন, না (ইহা কখনও সম্ভব নহে) ইয়া রাসূলাল্লাহ্। তখন তিনি বলিলেনঃ অনুরূপভাবে কোন দুনিয়াদার গুনাহ্ হইতে নিরাপদে থাকিতে পারে না। —হাদীস দুইটি বায়হাকী শো'আবুল ঈমানে
كتاب الرقاق
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ مِنْ أَحَدٍ يَمْشِي عَلَى الْمَاءِ إِلَّا ابْتَلَّتْ قَدَمَاهُ؟» قَالُوا: لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: «كَذَلِكَ صَاحِبُ الدُّنْيَا لَا يسلمُ منَ الذُّنُوب» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৬
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৬। হযরত জুবায়র ইবনে নুফায়র (রাঃ) মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমার কাছে এই অহী পাঠান হয় নাই যে, আমি যেন মাল-সম্পদ সঞ্চয় করি এবং একজন ব্যবসায়ী হই, বরং আমাকে এই নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে যে, “তুমি তোমার রবের প্রশংসার সহিত তীহ পাঠ কর এবং সজ্দাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হইয়া যাও এবং ‘ইয়াকীন' (অর্থাৎ, মৃত্যু) আসা পর্যন্ত তোমার রবের এবাদতে আত্মনিয়োগ কর।” — শরহে সুন্নাহ্। আর আবু নোয়াইম তাঁহার ‘হিল্ইয়াহ্' গ্রন্থে আবু মুসলিম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الرقاق
وَعَن جُبَير بن نفير رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مُرْسَلًا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أُوحِيَ إِلَيَّ أَنْ أَجْمَعَ الْمَالَ وَأَكُونَ مِنَ التَّاجِرِينَ وَلَكِنْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنْ (سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُنْ مِنَ السَّاجِدِينَ. واعبد ربَّك حَتَّى يَأْتِيك الْيَقِين) رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ» وَأَبُو نُعَيْمٍ فِي «الْحِلْية» عَن أبي مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৭
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৭। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি হালাল উপায়ে দুনিয়ার মাল-সম্পদ অন্বেষণ করে ভিক্ষাবৃত্তি হইতে বাঁচিবার জন্য, পরিবারের খরচ নির্বাহের উদ্দেশ্যে এবং প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণের লক্ষ্যে, সে আল্লাহ্ তা'আলার সহিত কিয়ামতের দিন এমনভাবে মিলিত হইবে যে, তাহার চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল থাকিবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি হালাল উপায়ে মাল অর্জন করিল বটে; কিন্তু গর্ব, অহঙ্কার ও ধনের আধিক্য প্রকাশের নিয়তে, সে আল্লাহ্ তা'আলার সহিত এমন অবস্থায় মিলিত হইবে যে, তিনি তাহার উপর ভীষণভাবে রাগান্বিত হইবেন। —বায়হাকী শো আবুল ঈমানে এবং আবু নোয়াইম তাহার হিলইয়া গ্রন্থে
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ طَلَبَ الدُّنْيَا حَلَالًا اسْتِعْفَافًا عَنِ الْمَسْأَلَةِ وَسَعْيًا عَلَى أَهْلِهِ وَتَعَطُّفًا عَلَى جَارِهِ لَقِيَ اللَّهَ تَعَالَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَوَجْهُهُ مِثْلُ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ. وَمَنْ طَلَبَ الدُّنْيَا حَلَالًا مُكَاثِرًا مفاخرا مرائيا لَقِي الله وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» وَأَبُو نُعَيْمٍ فِي «الْحِلْية»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৮
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৮। হযরত সাহল ইবনে সা'দ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ নিশ্চয় এই মাল হইল বিরাট সম্পদ। সেই সম্পদের চাবিও আছে। সুতরাং সেই বান্দার জন্য সুসংবাদ যাহাকে আল্লাহ্ তা'আলা কল্যাণের দ্বার খোলা এবং অকল্যাণের দ্বার বন্ধ করার চাবি বানাইয়াছেন। আর সেই বান্দার জন্য ধ্বংস যাহাকে আল্লাহ্ অকল্যাণ বা মন্দের দ্বার খোলা এবং কল্যাণের দ্বার বন্ধ করার চাবি বানাইয়াছেন। ——ইবনে মাজাহ্
كتاب الرقاق
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ هَذَا الْخَيْرَ خَزَائِنُ لِتِلْكَ الْخَزَائِنِ مَفَاتِيحُ فَطُوبَى لِعَبْدٍ جَعَلَهُ اللَّهُ مِفْتَاحًا لِلْخَيْرِ مِغْلَاقًا لِلشَّرِّ وَوَيْلٌ لَعَبْدٍ جَعَلَهُ اللَّهُ مِفْتَاحًا لِلشَّرِّ مِغْلَاقًا لِلْخَيْرِ» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২০৯
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৯। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যখন কোন ব্যক্তির মাল-সম্পদে বরকত দান করা না হয়, তখন সে উহাকে পানি ও মাটিতে ব্যয় করে।
كتاب الرقاق
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا لَمْ يُبَارَكْ لِلْعَبْدِ فِي مَالِهِ جَعَلَهُ فِي المَاء والطين»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১০
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১০। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা ঘর-বাড়ী তৈরীর মধ্যে হারাম মাল লাগানো হইতে বাঁচিয়া থাক । কেননা, উহা হইল ধ্বংসের মূল। —হাদীস দুইটি বায়হাকী শো' আবুল ঈমানে
كتاب الرقاق
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اتَّقُوا الْحَرَامَ فِي الْبُنْيَانِ فَإِنَّهُ أَسَاسُ الْخَرَابِ» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১১
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১১। হযরত আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, দুনিয়া ঐ ব্যক্তির ঘর, যাহার (আখেরাতে) ঘর নাই এবং ঐ ব্যক্তিরই মাল, যাহার (আখেরাতে) কোন মাল নাই। আর দুনিয়ার জন্য সেই ব্যক্তিই সঞ্চয় করে যাহার আকল বা বুদ্ধি নাই। –আহমদ ও বায়হাকী
كتاب الرقاق
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الدُّنْيَا دَارُ مَنْ لَا دَارَ لَهُ وَمَالُ مَنْ لَا مَالَ لَهُ وَلَهَا يَجْمَعُ مَنْ لَا عَقْلَ لَهُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১২
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১২। হযরত হোযাইফা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, একদা তিনি এক ভাষণে বলেনঃ মদ হইল পাপের সমষ্টি। নারী সম্প্রদায় শয়তানের ফাঁদ। দুনিয়ার মহব্বত সকল পাপের মূল। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁহাকে ইহাও বলিতে শুনিয়াছি; তোমরা নারীদিগকে পিছনে সরাইয়া রাখ, যেইভাবে আল্লাহ্ তাহাদিগকে পিছনে রাখিয়াছেন। — রাযীন।
كتاب الرقاق
وَعَنْ حُذَيْفَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِي خُطْبَتِهِ: «الْخَمْرُ جِمَاعُ الْإِثْمِ وَالنِّسَاءُ حَبَائِلُ الشَّيْطَانِ وَحُبُّ الدُّنْيَا رَأْسُ كُلِّ خَطِيئَةٍ» قَالَ: وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: «أَخِّرُوا النِّسَاءَ حَيْثُ أَخَّرَهُنَّ اللَّهُ» . رَوَاهُ رزين
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৩
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৩। আর বায়হাকী তাঁহার শো আবুল ঈমান গ্রন্থে হযরত হাসান বসরী (রঃ) হইতে শুধু حب الدنيا رأس كل خطيئة “দুনিয়ার মহব্বত প্রত্যেক পাপের মূল বা উৎস” এই বাক্যটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الرقاق
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وروى اليهقي مِنْهُ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» عَنِ الْحَسَنِ مُرْسَلًا: «حب الدُّنْيَا رَأس كل خَطِيئَة»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৪
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৪। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমি আমার উম্মতের উপর দুই ব্যাপারে খুব বেশী ভয় করি। প্রবৃত্তির কামনা আর দীর্ঘ হায়াতের আকাঙ্ক্ষা। বস্তুতঃ প্রবৃত্তি মানুষকে ন্যায়নীতি গ্রহণ করা হইতে বাধা দেয়। আর দীর্ঘ হায়াতের আকাঙ্ক্ষা আখেরাতকে ভুলাইয়া দেয়। এই যে দুনিয়া! ইহা প্রবহমান প্রস্থানকারী এবং ঐ আখেরাত! উহা প্রবহমান আগমনকারী। আর ইহার প্রত্যেকটির সন্তানাদিও রহিয়াছে। অতএব যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায় আর তোমরা দুনিয়ার সন্তান না হইয়া থাকিতে পার তবে তাহাই কর। কেননা, আজ তোমরা আমলের গৃহে রহিয়াছ, (এখানে) কোন হিসাব-কিতাব নাই । আর আগামীকাল তোমরা আখেরাতের অধিবাসী হইবে, আর তথায় কোন আমল নাই। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে
كتاب الرقاق
وَعَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وسم: «إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَتَخَوَّفُ عَلَى أُمَّتِي الْهَوَى وَطُولُ الْأَمَلِ فَأَمَّا الْهَوَى فَيَصُدُّ عَنِ الْحَقِّ وَأما طول الأمل فيُنسي الْآخِرَةَ وَهَذِهِ الدُّنْيَا مُرْتَحِلَةٌ ذَاهِبَةٌ وَهَذِهِ الْآخِرَةُ مُرْتَحِلَةٌ قَادِمَةٌ وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا بَنُونَ فَإِنِ اسْتَطَعْتُم أَن لَا تَكُونُوا بَنِي الدُّنْيَا فَافْعَلُوا فَإِنَّكُمُ الْيَوْمَ فِي دَارِ الْعَمَلِ وَلَا حِسَابَ وَأَنْتُمْ غَدًا فِي دَارِ الْآخِرَةِ وَلَا عَمَلَ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَان»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৫
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৫। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, দুনিয়া পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিয়া চলিয়া যাইতেছে, আর আখেরাত সম্মুখে আসিতেছে। আর ইহাদের প্রত্যেকটির সন্তানাদি রহিয়াছে। তবে তোমরা আখেরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার সন্তান হইও না। কেননা, আজ আমলের সময়, এখানে কোন হিসাব নাই। আর আগামীকাল হিসাব-নিকাশ হইবে, সেইখানে কোন আমল নাই। —হাদীসটি ইমাম বুখারী তরজমাতুল বাবে বর্ণনা করিয়াছেন
كتاب الرقاق
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: ارْتَحَلَتِ الدُّنْيَا مُدْبِرَةً وَارْتَحَلَتِ الْآخِرَةُ مُقْبِلَةً وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا بَنُونَ فَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الْآخِرَةِ وَلَا تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا فَإِنَّ الْيَوْمَ عَمَلٌ وَلَا حِسَابَ وَغَدًا حِسَابٌ وَلَا عَمَلَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৬
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৬। হযরত আমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা নবী (ﷺ) ভাষণদানকালে বলিলেনঃ সাবধান! দুনিয়া একটি অস্থায়ী জিনিস। উহা হইতে নেক্কার ও বদকার উভয়ই ভোগ করে। সাবধান! আখেরাত একটি সত্যিকার নির্দিষ্ট সময়। সেখানে বিচার করিবেন এমন এক বাদশাহ্ যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সাবধান! সর্বপ্রকার কল্যাণের স্থান হইল জান্নাত এবং সর্বপ্রকার মন্দের স্থান হইল জাহান্নাম। সাবধান! সুতরাং তোমরা আমল কর এবং আল্লাহকে ভয় করিতে থাক। আর এই কথাটি ভালভাবে জানিয়া রাখ, তোমাদিগকে তোমাদের কৃতকর্মসহ (আল্লাহর সম্মুখে) উপস্থিত করা হইবে। সুতরাং যে রেণু পরিমাণ নেক কাজ করিবে সে উহার ফল পাইবে এবং যে ব্যক্তি রেণু পরিমাণ মন্দ কাজ করিবে সে উহার ফল পাইবে।—শাফেয়ী
كتاب الرقاق
وَعَنْ عَمْرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ يَوْمًا فَقَالَ فِي خُطْبَتِهِ: «أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا عَرَضٌ حَاضِرٌ يَأْكُلُ مِنْهُ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ أَلا وَإِن الآحرة أَجَلٌ صَادِقٌ وَيَقْضِي فِيهَا مَلِكٌ قَادِرٌ أَلَا وَإِنَّ الْخَيْرَ كُلَّهُ بِحَذَافِيرِهِ فِي الْجَنَّةِ أَلَا وَإِنَّ الشَّرَّ كُلَّهُ بِحَذَافِيرِهِ فِي النَّارِ أَلَا فَاعْمَلُوا وَأَنْتُمْ مِنَ اللَّهِ عَلَى حَذَرٍ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ مَعْرُوضُونَ عَلَى أَعْمَالِكُمْ فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شرا يره» . للشَّافِعِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৭
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৭। হযরত শাদ্দাদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছিঃ হে লোকসকল! দুনিয়া একটি অস্থায়ী সম্পদ। উহা হইতে পুণ্যবান ও পাপী উভয়ই ভোগ করিয়া থাকে। আর আখেরাত একটি সত্য প্রতিশ্রুতি। সেখানে বিচার করিবেন ন্যায়পরায়ণ সর্বময় শক্তির অধিকারী বাদশাহ্। তিনি (নিজ ফয়সালায়) সত্যকে বহাল রাখিবেন এবং বাতিলকে মুছিয়া ফেলিবেন। সুতরাং তোমরা আখেরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার সন্তান হইও না। কেননা, প্রত্যেক মাতার সন্তান তাহার অনুগামী হইয়া থাকে।
كتاب الرقاق
وَعَنْ شَدَّادٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ الدُّنْيَا عَرَضٌ حَاضِرٌ يَأْكُلُ مِنْهَا الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ وَإِنَّ الْآخِرَةَ وَعْدٌ صَادِقٌ يَحْكُمُ فِيهَا مَلِكٌ عَادِلٌ قَادِرٌ يُحِقُّ فِيهَا الْحَقَّ وَيُبْطِلُ الْبَاطِلَ كُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الْآخِرَةِ وَلَا تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا فَإِنَّ كل أم يتبعهَا وَلَدهَا»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৮
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৮। হযরত আবুদদারদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ সূর্য উদয় হওয়ার সাথেই উহার দুই পার্শ্বে দুই জন ফিরিশতা ঘোষণা দিতে থাকেন, তাহা জ্বিন ও মানুষ ছাড়া আর সকল মাখলুককে শুনান হয়। হে মানুষ সকল! তোমরা তোমাদের প্রভুর দিকে আস। (শুনিয়া রাখ,) যেই সম্পদের প্রাচুর্য— আল্লাহ্ ও তাঁহার স্মরণ হইতে গাফেল করিয়া রাখে, তাহা অপেক্ষা প্রয়োজনমাফিক স্বল্প মালই উত্তম। –আবু নোআইম হিল্ইয়াহ্ গ্রন্থে হাদীস দুইটি বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ إِلَّا وَبِجَنْبَتَيْهَا مَلَكَانِ يُنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ الْخَلَائِقَ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ هَلُمُّوا إِلَى رَبِّكُمْ مَا قَلَّ وَكَفَى خَيْرٌ مِمَّا كَثُرَ وَأَلْهَى «رَوَاهُمَا أَبُو نُعَيْمٍ فِي» الْحِلْية
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২১৯
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হাদীসটি নবী (ﷺ) পর্যন্ত পৌঁছাইয়া বলিয়াছেন, যখন কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে তখন ফিরিশতাগণ বলেনঃ (এই ব্যক্তি) পরকালের জন্য অগ্রিম কি পাঠাইয়াছে ? আর মানুষেরা (ওয়ারিসগণ) বলে; সে কি রাখিয়া গিয়াছে ? – বায়হাকী শো'আবুল ঈমানে
كتاب الرقاق
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَبْلُغُ بِهِ قَالَ: إِذَا مَاتَ الْمَيِّتُ قَالَتِ الْمَلَائِكَةُ: مَا قَدَّمَ؟ وَقَالَ بَنُو آدَمَ: مَا خَلَّفَ؟ «. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي» شعب الْإِيمَان
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫২২০
- নম্রতা ও যুহদের অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২২০। হযরত মালেক (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হযরত লোকমান (আঃ) স্বীয় পুত্রকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, হে বৎস! মানুষের সাথে যে সমস্ত বিষয়ে প্রতিশ্রুতি করা হইয়াছে, (যথা—মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান, হিসাব-নিকাশ, পুরস্কার বা শাস্তি ) উহার দীর্ঘ যমানা অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। আর তাহারা পরকালের দিকে অতি দ্রুত চলিয়া যাইতেছে। হে বৎস! তুমি যেই দিন জন্ম নিয়াছ সেই দিন হইতে তুমি দুনিয়াকে পিছনে ছাড়িয়া আসিতেছ এবং ক্রমশঃ আখেরাতের দিকে অগ্রসর হইতেছ। বস্তুতঃ যেই ঘরের দিকে (পরকালের দিকে) তুমি যাইতেছ, উহা ঐ ঘর অপেক্ষা তোমার অতি নিকটবর্তী, যেই ঘর হইতে তুমি বাহির হইতেছ (অর্থাৎ, দুনিয়া হইতে)। — রাযীন
كتاب الرقاق
وَعَنْ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ لُقْمَانَ قَالَ لِابْنِهِ: «يَا بُنَيَّ إِنَّ النَّاسَ قَدْ تَطَاوَلَ عَلَيْهِمْ مَا يُوعَدُونَ وَهُمْ إِلَى الْآخِرَةِ سرَاعًا يذهبون وَإنَّك قداستدبرت الدُّنْيَا مُنْذُ كُنْتَ وَاسْتَقْبَلْتَ الْآخِرَةَ وَإِنَّ دَارًا تسيرإليها أقربُ إِليك من دارٍ تخرج مِنْهَا» . رَوَاهُ رزين
তাহকীক: