মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৫৫৬০
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬০। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়া কাঁদিয়া ফেলিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কেন কাঁদিতেছ? তিনি (আয়েশা) বলিলেন, দোযখের আগুনের কথা স্মরণ হইয়াছে তাই কাঁদিতেছি। (আচ্ছা বলুন তো!) কিয়ামতের দিন আপনি আপনার পরিবার-পরিজনকে স্মরণ করিবেন কি? জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ (হে আয়েশা !) জানিয়া রাখ, তিনটি জায়গা এমন হইবে যেখানে কেহ কাহাকেও স্মরণ করিবে না। একটি ‘মীযানের কাছে,' যতক্ষণ না সে জানিয়া লইবে যে, তাহার আমলের পাল্লা ভারী রহিয়াছে নাকি হাল্কা। দ্বিতীয়টি 'আমলনামার দফতর পাওয়ার অবস্থা,' যখন তাহাকে বলা হইবে, আরে অমুক ! এই লও তোমার আমলনামা এবং উহা পড়িয়া দেখ। যেপর্যন্ত না সে জানিয়া লইবে যে, উহা তাহাকে ডান হাতে দেওয়া হইয়াছে, নাকি পিছন হইতে বাম হাতে দেওয়া হইয়াছে? আর তৃতীয় হইল ‘পুলসিরাত’, যখন উহা জাহান্নামের উপর স্থাপন করা হইবে। –আবু দাউদ
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَن عائشةَ أَنَّهَا ذَكَرَتِ النَّارَ فَبَكَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا يُبْكِيكِ؟» . قَالَتْ: ذَكَرْتُ النَّارَ فَبَكَيْتُ فَهَلْ تَذْكُرُونَ أَهْلِيكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَّا فِي ثَلَاثَةِ مَوَاطِنَ فَلَا يَذْكُرُ أَحَدٌ أَحَدًا: عِنْدَ الْمِيزَانِ حَتَّى يَعْلَمَ: أَيَخِفُّ مِيزَانُهُ أَمْ يَثْقُلُ؟ وَعِنْدَ الْكِتَابِ حِينَ يُقَالُ (هاؤم اقرؤوا كِتَابيه) حَتَّى يَعْلَمَ: أَيْنَ يَقَعُ كِتَابُهُ أَفِي يَمِينِهِ أم فِي شِمَاله؟ أم مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ؟ وَعِنْدَ الصِّرَاطِ: إِذَا وُضِعَ بينَ ظَهْري جَهَنَّم . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ৫৫৬১
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬১। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে আসিয়া বসিল এবং বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার কাছে কতিপয় গোলাম আছে। উহারা আমার কাছে মিথ্যা কথা বলে, আমার মাল-সম্পদে খিয়ানত করে এবং আমার নির্দেশের নাফরমানী করে, তাই আমি উহাদিগকে গাল-মন্দ করি এবং মারধরও করিয়া থাকি। (কিয়ামতে) উহাদের ব্যাপারে আমার অবস্থা কি হইবে? তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ যখন কিয়ামত সংঘটিত হইবে তখন গোলামদের খিয়ানত, নাফরমানী, মিথ্যা বলা এবং তোমার শাস্তি দেওয়া সবকিছুর হিসাব লওয়া হইবে। যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের সমান হয়, তখন ব্যাপার সমান সমান থাকিবে। তুমি সওয়াবও পাইবে না এবং তোমাকে কোন শাস্তিও দেওয়া হইবে না। আর যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের তুলনায় কম হয়, তখন উহাদের বর্ধিত অপরাধের শাস্তি না দেওয়ার জন্য তুমি সওয়াব পাইবে। কিন্তু যদি তোমার শাস্তি প্রদান উহাদের অপরাধের তুলনায় বেশী হয়, তখন গোলামদের জন্য তোমার নিকট হইতে প্রতিশোধ লওয়া হইবে। এই সমস্ত কথা শুনিয়া লোকটি অন্যত্র সরিয়া বসিল এবং চীৎকার দিয়া কাঁদিতে লাগিল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, তুমি কি আল্লাহর এই বাণীটি পড় নাই ? وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ (অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন আমি ন্যায় ও নির্ভুল ওজনের পাল্লা স্থাপন করিব এবং কোন ব্যক্তির প্রতি সামান্য পরিমাণও অবিচার করা হইবে না, যদি আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয় আমি উহাও উপস্থিত করিব, আর আমি হিসাব গ্রহণকারী হিসাবে যথেষ্ট।) তখন লোকটি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমি আমার নিজের এবং ঐ সমস্ত গোলামদের ব্যাপারে উহাদিগকে আমার নিকট হইতে পৃথক করিয়া দেওয়া অপেক্ষা উত্তম আর কিছু পাইতেছি না। আমি আপনাকে সাক্ষী করিয়া বলিতেছি যে, উহারা সকলেই মুক্ত। — তিরমিযী
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: جَاءَ رَجُلٌ فَقَعَدَ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي مَمْلُوكِينَ يَكْذِبُونَنِي وَيَخُونُونَنِي وَيَعْصُونَنِي وَأَشْتِمُهُمْ وَأَضْرِبُهُمْ فَكَيْفَ أَنَا مِنْهُمْ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يُحْسَبُ مَا خَانُوكَ وَعَصَوْكَ وَكَذَّبُوكَ وَعِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ بِقَدْرِ ذُنُوبِهِمْ كَانَ كَفَافًا لَا لَكَ وَلَا عَلَيْكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ دُونَ ذَنْبِهِمْ كَانَ فَضْلًا لَكَ وَإِنْ كَانَ عِقَابُكَ إِيَّاهُمْ فَوْقَ ذُنُوبِهِمْ اقْتُصَّ لَهُمْ مِنْكَ الْفَضْلُ فَتَنَحَّى الرَّجُلُ وَجَعَلَ يَهْتِفُ وَيَبْكِي فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَمَا تَقْرَأُ قَوْلَ اللَّهِ تَعَالَى: (وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ) فَقَالَ الرَّجُلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَجِدُ لِي وَلِهَؤُلَاءِ شَيْئًا خَيْرًا مِنْ مُفَارَقَتِهِمْ أُشْهِدُكَ أَنهم كلَّهم أحرارٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬২
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬২। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি কোন কোন নামাযে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিতেনঃ اللَّهُمَّ حَاسِبْنِيْ حِسَابًا يُسِيرًا (অর্থাৎ, হে আল্লাহ্! আমার নিকট হইতে সহজ হিসাব নিও।) আমি বলিলাম, হে আল্লাহর নবী! সহজ হিসাব কি? তিনি বলিলেনঃ বান্দা তাহার (কৃত গোনাহসমূহের) আমলনামা দেখিবে, অতঃপর আল্লাহ্ তাহাকে মাফ করিয়া দিবেন। হে আয়েশা। জানিয়া রাখ, সেই দিন যাহার হিসাবে যাচাই-বাচাই করা হইবে, সে নিশ্চিত ধ্বংস হইবে। ——আহমদ
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْهَا قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ فِي بَعْضِ صَلَاتِهِ: اللَّهُمَّ حَاسِبْنِي حِسَابًا يَسِيرًا قُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَا الْحِسَابُ الْيَسِيرُ؟ قَالَ: «أَنْ يَنْظُرَ فِي كِتَابه فيتجاوز عَنْهُ إِنَّهُ مَنْ نُوقِشَ الْحِسَابَ يَوْمَئِذٍ يَا عَائِشَة هلك» . رَوَاهُ أَحْمد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৩
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হিসাব-নিকাশ, প্রতিশোধ গ্রহণ ও মীযানের বর্ণনা
৫৫৬৩। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া বলিলেন, যেইদিন সম্পর্কে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলিয়াছেনঃ “সেই দিন সমস্ত মানুষ উভয় জাহানের প্রভুর সম্মুখে দণ্ডায়মান হইবে।” আমাকে বলুন! কোন ব্যক্তির সেই কিয়ামতের দিন আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়াইবার সাধ্য হইবে? তখন তিনি বলিলেনঃ সেই দিন (-এর ভয়াবহতা) ঈমানদারের জন্য অতি হালকা করা হইবে। এমন কি ঐ দিন তাহার জন্য একটি ফরয নামায (আদায়ের সময়ের) ন্যায় হইবে।
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: أَخْبِرْنِي مَنْ يَقْوَى عَلَى الْقِيَامِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِي قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: (يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لربِّ الْعَالمين) ؟ فَقَالَ: «يُخَفَّفُ عَلَى الْمُؤْمِنِ حَتَّى يَكُونَ عَلَيْهِ كَالصَّلَاةِ الْمَكْتُوبَة»
tahqiq

তাহকীক: