মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬ টি
হাদীস নং: ৫৫৮৬
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৮৬। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ জাহান্নাম হইতে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত এবং সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশ কারীকে আমি খুব ভালভাবেই চিনি। সে এমন এক ব্যক্তি, যে হামাগুড়ি দিয়া দোযখ হইতে বাহির হইয়া আসিবে। আল্লাহ্ তাহাকে বলিবেনঃ যাও, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। সে আসিয়া ধারণা করিবে যে, উহা পরিপূর্ণ হইয়া আছে। তখন সে বলিবে, হে আমার রব। আমি তো উহাকে ভরতি পাইয়াছি, তখন আল্লাহ্ বলিবেন: তুমি যাও এবং জান্নাতে প্রবেশ কর। তোমাকে জান্নাতে দুনিয়ার সমপরিমাণ এবং উহার দশ গুণ জায়গা দেওয়া হইল। তখন সে বলিবে, হে রব। আপনি কি আমার সাথে হাসি-ঠাট্টা করিতেছেন? অথচ আপনি তো (সকল বাদশাহর) বাদশাহ্। ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি দেখিলাম, এই কথাটি বলিয়া রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হাসিলেন যে, তাঁহার মাঢ়ির দাত পর্যন্ত প্রকাশ হইয়া পড়িল। আর বলা হয়, এই ব্যক্তি মর্যাদার দিক দিয়া হইবে জান্নাতীদের সর্বনিম্ন স্তরের। —মোত্তাঃ
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا وَآخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولًا رَجُلٌ يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ حَبْوًا. فَيَقُولُ اللَّهُ: اذْهَبْ فَادْخُلِ الْجَنَّةَ فَإِنَّ لَكَ مِثْلَ الدُّنْيَا وَعَشَرَةَ أَمْثَالِهَا. فَيَقُولُ: أَتَسْخَرُ مِنِّي - أَوْ تَضْحَكُ مِنِّي - وَأَنْتَ الْمَلِكُ؟ وَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ وَكَانَ يُقَالُ: ذَلِكَ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৫৮৭
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৮৭। হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আমি এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে অবগত আছি, যে জান্নাতীদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করিবে এবং সর্বশেষ জাহান্নামী, যে উহা হইতে বাহির হইয়া আসিবে। কিয়ামতের দিন তাহাকে আল্লাহ্ তা'আলার সম্মুখে উপস্থিত করা হইবে। তখন ফিরিশতাদিগকে বলা হইবে, তাহার ছোট ছোট গোনাহসমূহ তাহার সম্মুখে উপস্থিত কর এবং বড় বড় গোনাহ্ গুলি সরাইয়া রাখ। তখন তাহার ছোট ছোট গোনাহ্গুলিই তাহার সম্মুখে উপস্থিত করা হইবে। তখন তাহাকে জিজ্ঞাসা করা হইবে; আচ্ছা বল তো, অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজটি তুমি করিয়াছিলে? সে বলিবে, হা, করিয়াছি। বস্তুতঃ উহা সে অস্বীকার করিতে পারিবে না। তবে তাহার বড় বড় গোনাহসমূহ উপস্থিত করা সম্পর্কে সে অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত থাকিবে। তখন তাহাকে বলা হইবে, যাও তোমার প্রতিটি গোনাহের স্থলে তোমাকে এক একটি নেকী দেওয়া হইল। তখন সে বলিবে, হে আমার পরওয়ারদিগার! আমি তো এমন কিছু (বড় বড়) গোনাহ্ করিয়াছিলাম, যেইগুলিকে আমি এখানে দেখিতে পাইতেছি না। বর্ণনাকারী হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন, এ সময় আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমনভাবে হাসিতে দেখিয়াছি যে, তাহার মাঢ়ির দাত পর্যন্ত প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। —মুসলিম
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لَأَعْلَمُ آخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولًا الْجَنَّةَ وَآخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْهَا رَجُلٌ يُؤْتَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ: اعْرِضُوا عَلَيْهِ صِغَارَ ذُنُوبِهِ وَارْفَعُوا عَنْهُ كِبَارهَا فتعرض عَلَيْهِ صغَار ذنُوبه وفيقال: عملت يَوْم كَذَا وَكَذَا وَكَذَا وَكَذَا وَعَمِلْتَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا كَذَا وَكَذَا؟ فَيَقُولُ: نَعَمْ. لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يُنْكِرَ وَهُوَ مُشْفِقٌ مِنْ كِبَارِ ذُنُوبِهِ أَنْ تُعْرَضَ عَلَيْهِ. فَيُقَالُ لَهُ فَإِنَّ لَكَ مَكَانَ كُلِّ سَيِّئَةٍ حَسَنَةً. فَيَقُولُ: رَبِّ قَدْ عَمِلْتُ أَشْيَاءَ لَا أَرَاهَا هَهُنَا وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَحِكَ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৫৮৮
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৮৮। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলিয়াছেন: জাহান্নাম হইতে চার ব্যক্তিকে বাহির করিয়া আল্লাহ্ তা'আলার সম্মুখে উপস্থিত করা হইবে। অতঃপর তাহাদিগকে পুনরায় জাহান্নামে পাঠানোর জন্য নির্দেশ করা হইবে। তখন তাহাদের একজন পিছন ফিরিয়া তাকাইবে এবং বলিবে, হে রব। আমি তো এই প্রত্যাশায় ছিলাম যে, যখন তুমি একবার আমাকে উহা হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছ, পুনরায় আমাকে সেখানে ফেরত পাঠাইবে না। তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে দোযখ হইতে নাজাত দিয়া দিবেন। —মুসলিম
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَخْرُجُ مِنَ النَّارِ أَرْبَعَةٌ فَيُعْرَضُونَ عَلَى اللَّهِ ثُمَّ يُؤْمَرُ بِهِمْ إِلَى النَّارِ فَيَلْتَفِتُ أَحَدُهُمْ فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ؟ لَقَدْ كنتُ أَرْجُو إِذا أَخْرَجْتَنِي مِنْهَا أَنْ لَا تُعِيدَنِي فِيهَا قَالَ: «فينجيه الله مِنْهَا» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৫৮৯
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৮৯। হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : ঈমানদারদিগকে দোযখ হইতে বাহির করিয়া জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী একটি পুলের উপর আটক রাখা হইবে এবং দুনিয়াতে পরস্পর পরস্পরে যাহা যাহা যুলুম অত্যাচার হইয়াছিল উহার প্রতিশোধ নেওয়া হইবে। অবশেষে যখন তাহারা পবিত্র এবং পরিচ্ছন্ন হইয়া যাইবে, তখন তাহাদিগকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হইবে। ঐ সত্তার কসম, যাঁহার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ। মু'মেনদের প্রত্যেকে পৃথিবীতে তাহার নিজ বাড়ীকে যেমনিভাবে চিনিত, উহা উপেক্ষা সে বেহেশতে তাহার স্থান ভালরূপে চিনিতে পারিবে। -বুখারী
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَخْلُصُ الْمُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ فَيُحْبَسُونَ عَلَى قَنْطَرَةٍ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَيُقْتَصُّ لِبَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ مَظَالِمُ كَانَتْ بَيْنَهُمْ فِي الدُّنْيَا حَتَّى إِذَا هُذِّبُوا وَنُقُّوا أُذِنَ لَهُمْ فِي دُخُولِ الْجَنَّةِ فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَأَحَدُهُمْ أَهْدَى بِمَنْزِلِهِ فِي الْجَنَّةِ مِنْهُ بِمَنْزِلِهِ كَانَ لَهُ فِي الدُّنْيَا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৫৯০
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৯০। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করিবে না যে পর্যন্ত না অপরাধ করিলে দোযখে তাহার যে স্থান হইত, উহা সে দেখিবে, যাহাতে সে অধিক শোকরগোয়ার হয়। আর কোন দোযখীকে দোযখে প্রবেশ করান হইবে না যে পর্যন্ত ভাল কাজ করিলে জান্নাতে তাহার যে স্থান হইত, তাহা সে দেখিবে না, যেন তাহার আফসোস ও অনুশোচনা বৃদ্ধি পায়। - বুখারী
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ أَحَدٌ الْجَنَّةَ إِلَّا أُرِيَ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ لَوْ أَسَاءَ لِيَزْدَادَ شُكْرًا وَلَا يَدْخُلُ النَّارَ أَحَدٌ إِلَّا أُرِيَ مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ لَوْ أَحْسَنَ ليَكُون عَلَيْهِ حسرة» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৫৯১
- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা
প্রথম অনুচ্ছেদ - হাওযে কাওসার ও শাফাআতের বর্ণনা
৫৫৯১। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ যখন জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করিবে, তখন মৃত্যুকে বেহেশত ও দোযখের মধ্যবর্তী স্থানে উপস্থিত করা হইবে এবং উহাকে জবাই করিয়া দেওয়া হইবে। অতঃপর একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করিবে, হে জান্নাতবাসীগণ! এখানে কোন মৃত্যু আর নাই। হে জাহান্নামীরা মৃত্যু আর নাই। ইহাতে বেহেশতবাসীদের আনন্দের উপর আনন্দ আরও অধিক মাত্রায় বাড়িয়া যাইবে, অপরদিকে দোযখীদের দুশ্চিন্তার উপর আরও দুশ্চিন্তা অধিক বৃদ্ধি পাইবে। —মোত্তাঃ
كتاب أحوال القيامة وبدء الخلق
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا صَارَ أَهْلُ الْجَنَّةِ إِلَى الْجَنَّةِ وَأَهْلُ النَّارِ إِلَى النَّارِ جِيءَ بِالْمَوْتِ حَتَّى يُجْعَلَ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُذْبَحَ ثُمَّ يُنَادِي مُنَادٍ: يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ لَا مَوْتَ وَيَا أَهْلَ النَّارِ لَا مَوْتَ. فَيَزْدَادُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَرَحًا إِلَى فَرَحِهِمْ وَيَزْدَادُ أَهْلُ النَّارِ حُزْنًا إِلَى حزنهمْ . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক: