মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)
الفتح الرباني لترتيب مسند الإمام أحمد بن حنبل الشيباني
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
হাদীস নং: ১
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(১) 'আবদুল জাব্বার আল-খাওলানী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলের (ﷺ) সাহাবীগণের মধ্য থেকে জনৈক সাহাবী (রা) মসজিদে প্রবেশ করেন। সেই সময় মসজিদে কা'ব কিস্সা বর্ণনা (ওয়াজ) করছিলেন। সাহাবী (রা) জিজ্ঞেস করলেন, ইনি কে? লোকজন বললো, ইনি কা'ব, কিস্সা বর্ণনা (ওয়াজ) করছেন। তখন সেই সাহাবী (রা) বললেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে (ﷺ) বলতে শুনেছি- কিস্সা বর্ণনা (ওয়াজ) করে কেবল (তিন প্রকার ব্যক্তি)। আমীর, মা'মুর (আমীর কর্তৃক নির্দেশপ্রাপ্ত), অথবা 'মুখতাল' (অহংকারী) ব্যক্তি। কা'বের কাছে এই সংবাদ পৌঁছানোর পর তাঁকে আর কখনও কিস্সা বর্ণনা করতে দেখা যায়নি।
(হাইছামী, এর সনদ হাসান)
(হাইছামী, এর সনদ হাসান)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
عن عبد الجبار الخولانى (3) قال دخل رجل من أصحاب النبى صلي الله عليه وسلم المسجد فإذا كعب (4) يقص فقال من هذا؟ قالوا كعب يقص، فقال سمعت رسول الله صلي الله عليه وسلم يقول لا يقص (5) إلا أمير أو مأمور أو مختال، قال فبلغ ذلك كعب فما رؤى يقص بعد

তাহকীক:
হাদীস নং: ২
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(২) 'আমর ইব্ন শু'আইব তাঁর পিতা থেকে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, মানুষকে কিস্সা কাহিনী শোনায় (ওয়াজ করে) কেবল (তিন প্রকার লোক) আমীর (নেতা), মা'মুর (আমীর কর্তৃক নির্দেশপ্রাপ্ত) অথবা রিয়াকারী ব্যক্তি।
(ইবন মাজাহ, সনদ হাসান।)
(ইবন মাজাহ, সনদ হাসান।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
عن عمرو بن شعيب (6) عن أبيه عن جده أن النبى صلي الله عليه وسلم قال لا يقص على الناس إلا أمير أو مأمور أو مراء

তাহকীক:
হাদীস নং: ৩
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(৩) 'আউফ ইব্ন মালিক আল-আজ্জা'য়ী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে (ﷺ) বলতে শুনেছি, মানুষের কাছে কিস্সা-কাহিনী বলে (ওয়াজ করে) থাকেন কেবল আমীর অথবা মা'মুর অথবা 'মুখতাল' (অহংকারী) (অন্য শব্দে এসেছে) কিস্সা বর্ণনা (ওয়াজ) করে কেবল- আমীর, অথবা মা'মূর অথবা কৃত্রিমতা অবলম্বনকারী ব্যক্তি।
(আবূ দাউদ ও তাইয়ালিসী, সনদ উত্তম।)
(আবূ দাউদ ও তাইয়ালিসী, সনদ উত্তম।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
عن عوف بن مالك الأشجعى (7) قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا يقص على الناس إلا أمير أو مأمور أو مختال (1) (وفى لفظ) لا يقص إلا أمير أو مأمور أو متكلف

তাহকীক:
হাদীস নং: ৪
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(৪) সায়িব ইব্ন ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূলের (ﷺ) সময়ে এবং আবু বকরের (রা) সময়ে কেউ কিস্সা বর্ণনা (ওয়াজ) করতো না। সর্বপ্রথম কিস্সা বর্ণনা করেন তামীম আদ্ দারী। তিনি 'উমরের (রা) নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন লোকজনদের উদ্দেশ্যে দণ্ডায়মান হয়ে কিস্সা-কাহিনী বর্ণনা করার নিমিত্তে। 'উমর (রা) তাঁকে অনুমতি প্রদান করেন।
(হাইছামী, তাবারানী)
(হাইছামী, তাবারানী)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
عن السائب بن يزيد (2) قال أنه لم يكن يقص على عهد رسول الله صلي الله عليه وسلم ولا أبى بكر وكان أول من قص تميما الدارىّ استأذن عمر بن الخطاب رضى الله عنه أن يقص على الناس قائما فأذن له عمر

তাহকীক:
হাদীস নং: ৫
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(৫) 'আবদুল মালেক ইবনে মায়সারা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কুরদূস ইবন ক্বাইসকে বলতে শুনেছি (উল্লেখ্য যে, তিনি কুফায় জনসমক্ষে কিস্সা-কাহিনী (ওয়াজ) বর্ণনা করতেন), তিনি বলেন, আমাকে জনৈক বদরী সাহাবী (রা) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কাছ থেকে সংবাদ দিয়েছেন, রাসূল (ﷺ) বলেন, এই ধরনের বৈঠকে বসা আমার কাছে চারজন দাসমুক্তি অপেক্ষা অধিক প্রিয়। শু'বা বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম কী ধরনের বৈঠক (মজলিশ) বুঝাতে চাচ্ছেন? তিনি উত্তরে বললেন, সেই মজলিশে একজন কিস্সা বর্ণনাকারী (ওযায়েজ) ছিলেন। (অর্থাৎ সেই মজলিশটি ছিল আমীর কর্তৃক নির্দেশপ্রাপ্ত লোকের ওয়াজের মজলিশ।)
(হাইছামী ও ইব্ন হিব্বান)
(হাইছামী ও ইব্ন হিব্বান)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
حدثنا هاشم (3) ثنا شعبة عن عبد الملك بن ميسرة قال سمعت كردوس أبن قيس وكان قاص العامة بالكوفة قال فأخبرنى رجل من أصحاب بدر أنه سمع النبى صلي الله عليه وسلم يقول لأن اقعد فى مثل هذا المجلس أحب إلى من ان أعتق أربع رقاب، قال شعبة فقلت أى مجلس تعنى؟ قال كان قاصا

তাহকীক:
হাদীস নং: ৬
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(৬) 'আবদুল্লাহ ইব্ন আহমদ (র) বলেন, আমি মুস'আব আল-যুবাইরীকে (র) বলতে শুনেছি- একদা কাহিনীকার আবু তালহা মালিক ইব্ন আনাসের (রা) সমীপে আরজ করলেন, ইয়া আবা আবদিল্লাহ, একদল লোক আছেন এমন, যাঁরা এই হাদীসটি বর্ণনা করতে আমাকে নিষেধ করেছেন (হাদীসটি হচ্ছে) "আল্লাহ্ তা'আলা ইব্রাহীমের উপর রহমত বর্ষণ করুন, নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী। আর আল্লাহ্ তা'আলা রহমত বর্ষণ করেন মুহাম্মদের (ﷺ) উপর, তাঁর পরিবার পরিজনের উপর ও তাঁর স্ত্রীগণের উপর।" মালিক (রহ.) বললেন, তুমি এই হাদীস বয়ান ও বর্ণনা করবে। 
(আবু দাউদ ও নাসাঈ)
(আবু দাউদ ও নাসাঈ)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
قال عبد الله (5) سمعت مصعب الزبيرى قال جاء أبو طلحة القاص على مالك أبن أنس فقال يا أبا عبد الله أن قوما قد نهونى أن أقص هذا الحديث صلى الله على إبراهيم إنك حميد مجيد وعلى محمد وعلى أهل بيته وعلى أزواجه، فقال مالك حدث به وقص به

তাহকীক:
হাদীস নং: ৭
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
পরিচ্ছেদ : কিস্সা-কাহিনী বর্ণনাকারী (ওয়াজ-নসীহতকারী) প্রসংগ
(৭) আবূ উমামা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) জনৈক কাহিনীকারের কাহিনী বর্ণনার সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। কাহিনীকার (রাসূলকে (ﷺ) দেখে) থেমে গেল। রাসূল (ﷺ) তখন বললেন, তুমি বলে যাও। কেননা আমার কাছে এই ধরনের মজলিশে এক সকাল-সূর্য উদ্ভাসিত হওয়া পর্যন্ত বসা চারজন দাসমুক্তি অপেক্ষা অধিক প্রিয় এবং আসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত বসা চারজন দাসমুক্তি অপেক্ষা অধিক প্রিয়।
(হাইছামী, আহমদ ও তাবারানী।)
(হাইছামী, আহমদ ও তাবারানী।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم الى آخر زمن الفترة وذكر أيام العرب وجاهليتهم
باب ما جاء فى القصاصين
باب ما جاء فى القصاصين
عن أبى أمامة (1) قال خرج رسول الله صلي الله عليه وسلم على قاص يقص فأمسك، فقال رسول الله صلي الله عليه وسلم قص فلأن أقعد غدوة (2) الى أن تشرق الشمس أحب الى من أن اعتق أربع رقاب: وبعد العصر حتى تغرب الشمس أحب الى من أن أعتق أربع رقاب

তাহকীক:
হাদীস নং: ৮
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: বনী ইসরাঈলের সংবাদাদি সম্পর্কিত বর্ণনা
(৮) আবূ নামলা আল-আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, যখন আহলে-কিতাব তোমাদেরকে কোন কথা শোনায়, তখন তোমরা তাদেরকে সত্যায়নও করবে না এবং মিথ্যাচারীও বলবে না। বরং তোমরা বলবে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি। এতে করে তাদের বক্তব্য যদি সত্য হয়, তাহলে তাকে তোমরা মিথ্যা সাব্যস্ত করছো না; আর যদি তা বাতিল বা অসত্য হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তাকে সত্যায়ন করছো না।
(আবূ দাউদ, এর সনদ উত্তম)
(আবূ দাউদ, এর সনদ উত্তম)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء فى الرواية والتحديث عن أخبار بنى أسرائيل
عن أبى نملة الأنصارى (3) قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم إذا حدثكم أهل الكتاب فلا تصدقوهم ولا تكذبوهم، وقولوا آمنا بالله وكتبه ورسله، فان كان حقا لم تكذبوهم وان كان باطلا لم تصدقوهم

তাহকীক:
হাদীস নং: ৯
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: বনী ইসরাঈলের সংবাদাদি সম্পর্কিত বর্ণনা
(৯) জাবির ইবন 'আবদিল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমরা আহলে কিতাবদের নিকট কোন বিষয়ে (জানার জন্য) প্রশ্ন করো না। কারণ, তারা কখনই তোমাদেরকে সঠিক (পথের দিশা বা) উত্তর দিবে না, যেহেতু তারা নিজেরাই গোমরাহ (পথভ্রষ্ট) হয়ে রয়েছে। (সুতরাং তোমরা যদি তাদের কাছে প্রশ্ন কর) হয় কোন অসত্যকে সত্য বলবে, অথবা কোন সত্যকে মিথ্যা বলবে। (জেনে রাখ) আজ যদি তোমাদের সম্মুখে মূসা (আ) জীবিত থাকতেন, তাহলে তাঁর পক্ষেও আমার অনুসরণ ব্যতীত কোন গত্যন্তর থাকতো না।
(এই হাদীসের সনদ, ব্যাখ্যা ও তাখরীজ "কিতাবুল ইল্ম"-এর উল্লেখিত রয়েছে।)
(এই হাদীসের সনদ, ব্যাখ্যা ও তাখরীজ "কিতাবুল ইল্ম"-এর উল্লেখিত রয়েছে।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء فى الرواية والتحديث عن أخبار بنى أسرائيل
عن جابر بن عبد الله (4) قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم لا تسألوا أهل الكتاب عن شئ فانهم لن يهدوكم وقد ضلوا، فانكم اما ان تصدقوا بباطل أو تكذبوا بحق، فانه لو كان موسى حيًا بين اظهركم ما حل له الا ان يتبعنى

তাহকীক:
হাদীস নং: ১০
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: বনী ইসরাঈলের সংবাদাদি সম্পর্কিত বর্ণনা
(১০) 'ইমরান ইবন হুসাইন (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) প্রায়শঃ রাত্রিবেলায় বনী ইসরাঈল সম্পর্কে আমাদেরকে বর্ণনা শোনাতেন। (অন্য রিওয়াতে-তিনি বনী ইসরাইল সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করতেন, এমনকি কখনও কখনও সকাল হয়ে যেত) তিনি এইসব হাদীস বর্ণনা থেকে ফরয সালাত ব্যতীত অন্য কোন কারণে উঠে যেতেন না। 
(হাইছামী, বাযযার ও তাবারানী।)
(হাইছামী, বাযযার ও তাবারানী।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء فى الرواية والتحديث عن أخبار بنى أسرائيل
عن عمر ابن بن حصين (5) قال كان رسول الله صلي الله عليه سلم يحدثنا عامة ليله عن بنى اسرائيل (وفى رواية يحدثنا عن بنى اسرائيل حتى يصبح) لا يقوم إلا إلى عُظم (6) صلاة.

তাহকীক:
হাদীস নং: ১১
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: ফিরআউন তনয়ার সেবিকা এবং কোলের শিশুর কথা বলা বিষয়ক
(১১) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, যে রাত্রিতে আমাকে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করানো হয়, সেই সময় আমার কাছে একটি সুমিষ্ট গন্ধ অনুভূত হয়। আমি তখন জিব্রাইলকে (আ) জিজ্ঞেস করলাম, এই সুগন্ধি কিসের? তিনি উত্তরে বললেন, এটি ফিরআউন তনয়ার কেশবিন্যাসকারিনী ও তাঁর সন্তানদের সুগন্ধি। আমি বললাম, তাদের ঘটনা কী? জিব্রাইল (আ) বললেন, একদা তিনি ফিরআউনের কন্যার কেশবিন্যাস করছিলেন, এমন সময় তাঁর হাত থেকে চিরুনী পড়ে যায়। তখন তিনি বলেন, বিছমিল্লাহ (অর্থাৎ আল্লাহর নামে তিনি চিরুনীটি উঠিয়ে নেন)। ফিরআউন কন্যা তাঁকে বলেন, আমার পিতা? (অর্থাৎ আপনি কি আল্লাহ্ বলতে আমার পিতাকে বোঝাচ্ছেন?) তিনি উত্তরে বললেন, না বরং আমার প্রভু ও তোমার পিতার প্রভু আল্লাহ্। ফিরআউন কন্যা বললো, আমি কি আমার পিতাকে এ খবর জানাবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন সে তার পিতাকে এই সংবাদ জানিয়ে দিল। তখন ফিরআউন মেয়েকে তলব করে বললো, আমি ভিন্ন তোমার অন্য কোন রব (প্রভু) আছে? তিনি বললেন, হাঁ, আমার রব ও তোমার রব আল্লাহ্ (অন্য বর্ণনায় আবার রব ও তোমার রব্ব হচ্ছেন সেই সত্তা যিনি আকাশে আছেন)। তখন ফিরআউন একটি পিতলের বড় ডেগে (পানি বা তেল) ফুটানোর নির্দেশ দিল এবং তা ফুটানো হল। তারপর তাতে ঐ মহিলা ও তাঁর সন্তানদেরকে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিল। এই সময় মহিলাটি ফিরআউনকে বললেন, আপনার কাছে আমার একটি আর্জি আছে। সে বলল, কী তোমার আর্জি? তিনি বললেন, আমি চাই (মৃত্যুর পর) আমার ও আমার সন্তানের অস্থিসমূহ একত্রিত করে একটি কাপড়ে রেখে দাফন করা হবে। সে বললো, ঠিক আছে, তোমার জন্য এটি আমার একটি দায়িত্ব হিসেবে রইল। এরপর তাঁর সন্তানদের তাতে নিক্ষেপের নির্দেশ দিল। তারা তাঁর সম্মুখে এক এক করে তাঁর সন্তানদেরকে নিক্ষেপ করলো। অবশেষে তাঁর দুগ্ধপোষ্য শিশুটির পালা আসলে তিনি শিশুটির জন্য একটু ইতস্ততঃ করছিলেন। এই সময় শিশুটি বলে উঠলো, আম্মি, তুমি ঢুকে যাও (ইতস্ততঃ করো না) কেননা দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় অনেক হাল্ক্কা। তখন তিনি তাতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। এ পর্যায়ে (রাবী বলেন), ইব্ন আব্বাস (রা) বলেছেন, চারটি দুগ্ধপোষ্য শিশু (বিজ্ঞচিত) কথা বলেছিল: ঈসা ইবন মারইয়াম (আ), জুরাইজের সান্নিধ্যপ্রাপ্ত শিশু, ইউসুফ (আ)-এর সাক্ষী ও ফেরআউন তনয়ার কেশবিন্যাসকারিনী মহিলার শিশু।
(হাইছামী, বাযযার, তাবারানী ও তায়ালিসী।)
(হাইছামী, বাযযার, তাবারানী ও তায়ালিসী।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر ماشطة ابنة فرعون ومن تكلم فى المهد
عن ابن عباس (1) قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما كانت الليلة التى أسرى بى فيها أتت علىّ رائحة طيبة، فقلت يا جبريل ما هذه الرائحة الطيبة؟ فقال هذه رائحة ماشطة أبنة فرعون وأولادها، قال قلت وما شأنها؟ قال بينا هى تمشط ابنة فرعون ذات يوم اذ سقطت المدرى (2) من يديها فقالت بسم الله، فقالت لها أبنة فرعون أبى؟ قالت لا ولكن ربى ورب أبيك الله، قالت أخبره بذلك؟ قالت نعم فأخبرته فدعاها فقال يا فلانة وإن لك ربا غيرى، قالت نعم، ربى وربك الله، (وفى رواية ربى وربك من فى السماء) فأمر ببقرة (3) من نحاس فأحميت ثم أمر بها أن تلقى هى وأولادها فيها، قالت له أن لى اليك حاجة، قال وما حاجتك؟ قالت أحب أن تجمع عظامى وعظام ولدى فى ثوب واحد وتدفننا قال ذلك لك علينا من الحق، قال فأمر بأولادها فالقوا بين يديها واحداً واحداً إلى أن انتهى ذلك إلى صبى لها مرضع وكأنها تقاعست (4) من أجله فقال يا أمَّه اقتحمى فان عذاب الدنيا أهون من من عذاب الآخرة فاقتحمت، قال قال أبن عباس تكلم أربعة صغار عيسى أبن مريم عليه السلام وصاحب جريج وشاهد يوسف وأبن ماشطة ابنة فرعون

তাহকীক:
 হাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীসের ব্যাখ্যাহাদীস নং: ১২
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: আসহাবুল উখদূদ এর ঘটনা এবং দুগ্ধপোষ্য শিশুর কথা বলা
(১২) আবদুর রহমান ইব্ন আবু লাইলা সুহাইব (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে এক বাদশাহ ছিল। তার ছিল এক যাদুকর। সে যখন বৃদ্ধ হয়ে গেল, তখন বাদশাহকে বললো, আমি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছি এবং আমার মৃত্যুও সন্নিকটে। কাজেই একটি বালককে আমার নিকট পাঠিয়ে দিন। আমি তাকে যাদু শিক্ষা দেব। বাদশাহ একটি বালককে যাদু শিক্ষা করার জন্য তার কাছে প্রেরণ করলো। যাদুকর তাকে যাদু শিক্ষা দিতে লাগলো। বাদশাহ এবং যাদুকরের যাতায়াতস্থলের মাঝে এক খ্রীষ্টান দরবেশ থাকত। বালক পথিমধ্যে এই দরবেশের কাছে এসে তাঁর কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেল। (এভাবে সে যাদুকরের কাছে আসার পথে দরবেশের কাছে বসতে লাগলো।) ফলে সে যাদুকরের কাছে (বিলম্বে গেলে সে তাকে মারধর করতো এবং জিজ্ঞেস করত, কে তোমাকে আটকে রেখেছিল? আর সে যখন তার পরিবারবর্গের কাছে (বিলম্বে) ফিরে আসতো, তখন তারা তাকে মারতো এবং জিজ্ঞেস করতো- কে তোমাকে আটকে রেখেছিল? বালক এ বিষয়ে দরবেশের কাছে অভিযোগ করলো। দরবেশ বলেন, যখন তুমি যাদুকরের জিজ্ঞাসাবাদের ভয় করবে, তখন তাকে বলবে, আমার পরিবারবর্গ আমাকে আটকে রেখেছিল। আর যখন তোমার পরিবারবর্গের ভয় করবে, তখন বলবে, যাদুকর আমাকে আটকে রেখেছিল। এইভাবেই চলছিল। এমতাবস্থায় একদিন একটি বিরাট ভয়াল জানোয়ার এসে লোকদের পথ আটকে দিল। লোকজন কোনক্রমেই চলাচল করতে পারছিলো না। বালকটি তখন (মনে মনে) বললো, আজ আমি জেনে যাব, আল্লাহর কাছে দরবেশের কাজ পছন্দনীয় নাকি যাদুকরের? তখন বালক একটি পাথর খণ্ড হাতে নিয়ে বললো, হে আল্লাহ্ দরবেশের কাজ যাদুকরের কাজ অপেক্ষা তোমার কাছে যদি অধিক পছন্দনীয় ও সন্তোষজনক হয়, তবে এই জানোয়ারটিকে মেরে ফেল, যাতে করে লোকজন চলাচল করতে পারে। এই বলে পাথরটি নিক্ষেপ করবো, জানোয়ারটি মারা গেল এবং লোকজন চলাচল করতে পারলো। তারপর সে দরবেশের কাছে এসে তাকে এ খবর জানালো। দরবেশ বললেন, বৎস, আজ তুমি আমার চেয়ে উত্তম। তুমি শীঘ্রই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। যদি তুমি পরীক্ষায় পড়ে যাও, তবে আমার সন্ধান দেবে না। অতঃপর বালক অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ভাল করে দিত এবং মানুষের সব রকম রোগের চিকিৎসা করতো। বাদশাহের পারিষদবর্গের একজন অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে এ খবর শুনে বালকটির কাছে বহু উপহার-উপঢৌকনসহ উপস্থিত হল এবং বললো, তুমি আমাকে আরোগ্য করে দাও, বিনিময়ে এ সবই তোমার। বালক বললো, আমি কাউকে আরোগ্য দান করি না। আল্লাহই আরোগ্য দান করেন। যদি আপনি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনেন, তবে আমি আল্লাহর নিকট দোয়া করবো, তিনি আপনাকে আরোগ্য দান করবেন। সে তখন আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলো, বালক দোয়া করলো, আল্লাহ্ তাকে শেফা দান করলেন। তারপর সে পূর্বের ন্যায় বাদশাহর দরবারে বসে গেল। বাদশাহ জিজ্ঞেস করলো, কে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিল? সে উত্তর দিল, আমার প্রতিপালক। বাদশাহ বললো, আমি? সে বললো না। বরং আল্লাহ্, যিনি আমার প্রতিপালক এবং আপনারও প্রতিপালক। বাদশাহ বললো, আমি ছাড়াও তোমার রব আছে? সে উত্তর করলো, হ্যাঁ। এতে বাদশাহ তাকে ধরে শাস্তি দিতে লাগলো। অবশেষে সে বাদশাহকে বালকটির কথা বলে দিল। তখন বালকটিকে আনা হলো। বাদশাহ তাকে জিজ্ঞেস করলো, হে বৎস, তোমার যাদুশক্তি এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তুমি অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য দান করতে পার এবং এমনি আরো অনেক রোগের চিকিৎসা করতে সক্ষম হও? বালকটি বললো, আমি কাউকে আরোগ্য দান করি না। আরোগ্য দান করেন আল্লাহ্ তা'আলা। বাদশাহ বললো, আমি? বালক বললো, না। বাদশাহ বললো, আমি ছাড়াও তোমার রব আছে? বালক উত্তর দিল, হ্যাঁ। আমার রব এবং আপনার রব আল্লাহ্। বাদশাহ বালকটিকে শাস্তি দিতে লাগলো। অবশেষে সে সেই দরবেশের কথা বলে দিল। তখন দরবেশকে আনা হল এবং তাকে বললো, তুমি তোমার দ্বীন থেকে ফিরে আস। সে অস্বীকার করলো। তখন বাদশাহ করাত আনতে বললো। তারপর করাতটি তার মাথার মাঝখানে রাখা হলো এবং করাত তাকে চিরে ফেললো। এমনকি সে দু'টুকরো হয়ে পড়ে গেল। তারপর বাদশাহ সেই অন্ধ পারিষদকে বললো, তোমার দ্বীন থেকে ফিরে আস। কিন্তু সে অস্বীকার কলো। তখন তার মাথার মাঝখানে করাত রাখা হলো, (করাত তাকে চিরে ফেললো) এবং দু'টুকরো হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। এবার বাদশাহ বালকটিকে বললো, তোমার দ্বীন থেকে ফিরে আস। সে অস্বীকার করলো। তখন তাকে বাদশাহ কতিপয় লোকের নিকট সোপর্দ করে একটি বিশেষ পাহাড়ে নিয়ে যেতে বললো এবং বলে দিল, পাহাড়ের উচ্চ শিখরে তাকে নিয়ে যখন পৌছবে, তখন সে যদি তার দ্বীন থেকে ফিরে আসে, তাহলে ভাল। নতুবা তাকে সেখান থেকে ফেলে দেবে। তারা তাকে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ে উঠলো। বালক বললো, হে আল্লাহ্, তুমি যেভাবে চাও এদের হাত থেকে আমাকে মুক্তি দান কর। তখন পাহাড়টি কেঁপে উঠলো এবং তারা সবাই নীচে পড়ে গেল (এবং মৃত্যুবরণ করলো)। বালক ফিরে এসে বাদশাহর কাছে উপস্থিত হলো। বাদশাহ বললো, তোমার সঙ্গীদের কী হলো? সে বললো, আমার পক্ষ হতে আল্লাহ্ তা'আলাই তাদের নিপাত করেছেন। তখন বাদশাহ তাকে অন্য একদল লোকের সাথে একটি নৌকায় করে পাঠাল এবং বলে দিল, তোমরা যখন তাকে নিয়ে মাঝ সাগরে যাবে, তখন সে যদি তার দ্বীন থেকে প্রত্যাবর্তন করে, ভাল। অন্যথায় তাকে সাগরে ফেলে দিবে। বালকটি বললো, ইয়া আল্লাহ্, তুমি যেভাবে চাও, এদের কাছ থেকে আমাকে মুক্তি দাও। এতে নৌকা তাদেরকে নিয়ে ডুবে গেল এবং তারা সবাই ডুবে মরলো। আর বালক চলে এল এবং বাদশাহর কাছে উপস্থিত হলো। বাদশাহ জিজ্ঞেস করলো, তোমার সঙ্গীদের কী হলো? সে বললো, আল্লাহই আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট হয়েছেন। সে বাদশাহকে আরো বললো, আপনি আমাকে হত্যা করতে সক্ষম হবেন না যতক্ষণ না আপনি আমার নির্দেশমত কাজ করবেন। আপনি যদি আমার নির্দেশমত কাজ করেন, আমাকে হত্যা করতে পারবেন, অন্যথায় আপনি আমাকে হত্যা করতে পারবেন না। বাদশাহ বললো, তা কী? সে বললো, একটি মাঠে লোকদেরকে একত্রিত করুন, তারপর আমাকে শূলের অগ্রভাগে উঠাবেন এবং আমার তূনীর থেকে একটি তীর নিয়ে ধনুকে যোজনা করবেন। তারপর বলবেন "বিসমিল্লাহি রাব্বিল গুলামি" অর্থাৎ আল্লাহর নামে, যিনি বালকের প্রতিপালক। এইরূপ করলেই কেবল আপনি আমাকে হত্যা করতে পারবেন। তখন বাদশাহ তাই করলো। ধনুকে তীর যোজনা করে "বিছমিল্লাহি রাব্বিল গুলামি" বলে ছুঁড়ে দিল। তীরটি বালকের কানের কাছে মাথায় বিদ্ধ হলো। বালক সেখানে তার একটি হাত রাখলো এবং মৃত্যুবরণ করলো। উপস্থিত জনতা বলে উঠলো: আমরা এই বালকের রবের প্রতি ঈমান আনলাম। তখন বাদশাহকে বলা হলো, যে আশংকা আপনার ছিল, তাই তো হয়ে গেল। সকল মানুষ (উপস্থিত) (আল্লাহর প্রতি) ঈমান এনেছে। বাদশাহ তখন রাস্তার পার্শ্বে বিশালাকৃতির গর্ত করার নির্দেশ দেয় এবং তাতে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করা হয়। বাদশাহ ঘোষণা দিল, যে ব্যক্তি তার দ্বীন থেকে ফিরে আসবে, তাকে ছেড়ে দিবে। অন্যথায় অগ্নিতে নিক্ষেপ করবে। অতঃপর যারা তাদের দ্বীন থেকে ফিরে এল না, তাদেরকে সেই অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো। অবশেষে একটি মহিলা তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে এগিয়ে এল। সে যেন অগ্নিকুণ্ডে প্রবেশে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়লো। তখন সেই শিশুটি বলে উঠলো, মাতা, ধৈর্য ধারণ কর, কারণ তুমি সত্যের উপর (রয়েছ)। (সুতরাং এই অগ্নিকে ভয় করো না।)
(মুসলিম, তিরমিযী ও অন্যান্য)
(মুসলিম, তিরমিযী ও অন্যান্য)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة أصحاب الأخدود وفيها من تكلم فى المهد أيضاً
عن عبد الرحمن بن أبى ليلى (5) عن صهيب أن رسول الله صلي الله عليه وسلم قال كان ملِك فيمن كان قبلكم (6) وكان له ساحر فلما كبِر الساحر قال للملك أنى قد كبِرت سنى وحضر أجلى فادفع الىّ خادما فلأعلمه السحر، فدفع اليه غلاما فكان يعلمه السحر، وكان بين الساحر وبين الملِك راهب فأتى الغلام على الراهب فسمع من كلامه فأعجبه نحوه وكلامه، فكان أذا أتى الساحر ضربه وقال ما حبسك؟ واذا أتى أهله ضربوه وقالوا ما حبسك؟ فشكى ذلك الى الراهب، فقال أذا أراد الساحر أن يضربك فقل حبسنى أهلى، وأذا أراد أهلك أن يضربوك فقل حبسنى الساحر وقال فبينما هو كذلك اذ أتى ذات يوم على دابة فظيعة عظيمة وقد حبست الناس فلا يستطيعون أن يجوزوا، فقال اليوم أعلم أمر الراهب أحب الى الله أم أمر الساحر، فأخذ حجراً فقال اللهم أن كان أمر الراهب أحب أليك وأرضى لك من أمر الساحر فاقتل هذه الدابة حتى يجوز الناس ورماها فقتلها ومشى الناس، فأخبر الراهب بذلك، فقال أى نبى أنت أفضل منى وأنك ستبتلى، فان ابتليت فلا تدل علىّ، فكان الغلام يبرئ الأكمة (1) وسائر الأدواء ويشفيهم، وكان يجلس للملك جليس فعمى فسمع به فأتاه بهدايا كثيرة فقال أشفنى ولك ما هنا أجمع، فقال ما أشفى أنا أحدا إنما يشفى الله عز وجل فان أنت آمنت به دعوت الله فشفاك، فآمن فدعا الله له فشفاه، ثم أتى الملك فجلس منه نحو ما كان يجلس، فقال له الملك يا فلان من رد عليك بصرك؟ فقال ربى فقال أنا؟ قال لا ولكن ربى وربك الله، قال لك رب غيرى؟ قال نعم، فلم يزل يعذبه حتى دله على الغلام فبعث اليه فقال أى بنى قد بلغ من سحرك أن تبرئ الأكمة والأبرص (2) وهذه الأدواء قال ما أشفى أنا أحدا، ما يشفى غير الله عز وجل، قال أنا؟ قال لا، قال أولك رب غيرى؟ قال نعم ربى وربك الله، فآخذه أيضا بالعذاب فلم يزل به حتى دل على الراهب، فأنى بالراهب فقال ارجع عن دينك فأبى، فوضع المنشار (3) فى مَفِرق رأسه حتى وقع شقاه وقال للأعمى أرجع عن دينك فأبى فوضع المنشار فى مَفْرِق رأسه حتى وقع شقاه على الأرض، وقال للغلام أرجع عن دينك فأبى فبعث مع نفرالى جبل كذا وكذا فقال أذا بلغتم ذروته (1) فان رجع عن دينه وألا فدهدهوه (2) من فوقه فذهبوا به فلما علوا به الجبل قال اللهم اكفنيهم بما شئت فرَجف (3) بهم الجبل فدهدهوا أجمعون، وجاء الغلام يتلمس حتى دخل على الملك فقال ما فعل أصحابك؟ فقال كفانيهم الله عز وجل فبعثه فى قرقور (4) فقال أذا لججتم به البحر (5) فان رجع عن دينه وألا فغرقوه، فلججوا به البحر فقال الغلام اللهم اكفنيهم بما شئت فغرقوا أجمعون وجاء الغلام يتلمس حتى دخل على الملك فقال ما فعل أصحابك؟ فقال كفانيهم الله عز وجل، ثم قال للملك إنك لست بقاتلى حتى تفعل ما آمرك به، فان أنت فعلت ما آمرك به قتلتنى والا فأنك لا تستطيع قتلى، قال وما هو؟ قال تجمع الناس فى صعيد (6) ثم تصلبنى على جزع فتأخذ سهما من كنانتى (7) ثم قل بسم الله رب الغلام فانت إذا فعلت ذلك قتلتنى، ففعل ووضع السهم فى كبد قوسه (8) ثم رمى فقال بسم الله رب الغلام فوقع السهم فى صدغه فوضع الغلام يده على موضع السهم ومات فقال الناس آمنا برب الغلام، فقيل للملك أرأيت ما كنت تحذر فقد والله نزل بك (9) قد آمن الناس كلهم فأمر بأفواه السكك فخدت فيها الأخاديد (10) وأضرمت فيها النيران وقال من رجع عن دينه فدعوه والا فأقحموه (11) فيها قال فكانوا يتعادون فيها ويتدافعون، فجاءت امرأة بابن لها ترضعه فكأنها تقاعست (12) أن تقع فى النار، فقال الصبى يا أسمه اصبرى فانك على حق

তাহকীক:
 হাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীসের ব্যাখ্যাহাদীস নং: ১৩
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : বনী ইসরাঈলের জুরাইজ নামক জনৈক আবিদ ব্যক্তির ঘটনা ও কোলের শিশুর কথা বলা
(১৩) আবূ হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, মায়ের কোলে থাকা অবস্থায় তিনজন মানব শিশু ব্যতীত অন্য কোন শিশু কথা বলেনি। তাদের একজন হচ্ছে- 'ঈসা ইবন মারইয়াম। আর বনী ইসরাঈলের জুরাইজ নামক একজন আবিদ (তাপস) ব্যক্তি ছিলেন। তিনি একটি ছোট ডেরা তৈয়ার করে তাতে ইবাদত-বন্দেগী করতেন। বনী ইসরাঈল একদা তাঁর ইবাদত সম্পর্কে আলোচনা করলো (অর্থাৎ তাঁর ইবাদতের আধিক্য বা নিবিষ্টতা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়)। জনৈকা পতিতা বললো, তোমরা চাইলে আমি তাঁকে একটু বাজিয়ে দেখতে পারি। তারা বললো, "হ্যাঁ, আমরা চাই"। এরপর সেই পতিতা তার কাছে এসে নিজকে তাঁর সম্মুখে উপস্থাপন করলো। কিন্তু তিনি তার প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন না। অগত্যা সেই পতিতা এক রাখালের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়, সে জুরাইজের ডেরার পাশে মেষ-বকরি চড়াতো। এতে সে গর্ভবতী হয়ে একটি শিশু জন্ম দেয়। লোকজন পতিতাকে জিজ্ঞেস করলো এই শিশু কার ঔরসজাত? সে বললো, জুরাইজের। তখন তারা তাঁর কাছে এসে তাঁকে টেনে-হেঁচড়ে ডেরা থেকে নামিয়ে দেয়, গালিগালাজ করে, মারধর করে এবং তার ডেরা ভেঙ্গে দেয়। জুরাইজ (কিছু বুঝতে না পেরে) জিজ্ঞেস করেন, তোমাদের কী হল, ব্যাপার কি? তারা বললো, তুমি এই পতিতার সাথে ব্যভিচার করেছ, এই শিশু তার ফসল। তিনি বললেন, কোথায় শিশু? তারা বললো, এইতো সেই শিশু। অতঃপর তিনি সালাত আদায় করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন এবং শিশুটির কাছে ফিরে এসে তাঁর আংগুল দিয়ে শিশুটিকে খোঁচা মেরে বললেন, হে বাচ্চা, আল্লাহর শপথ, বল- তোমার পিতা কে? তখন শিশুটি বলে উঠলো, আমি রাখালের পুত্র। তখন লোকজন জুরাইজের দিকে হুমড়ি খেয়ে পড়লো এবং তাঁকে চুমু দিতে লাগলো। তারা বললো, আমরা তোমার ডেরা স্বর্ণ দিয়ে নির্মাণ করে দেব। জুরাইজ বললেন, তার কোন প্রয়োজন নেই। ডেরাটি যেমন ছিল তেমনি মাটি দিয়ে তৈয়ার করে দাও। 
(অন্য একটি ঘটনা এরূপঃ) একদা এক স্ত্রীলোক তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে কোলে নিয়ে দুধ পান করাচ্ছিল। এমন সময় তার পাশ দিয়ে জমকালো বেশভূষাধারী এক আরোহী যাচ্ছিল। স্ত্রীলোকটি বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমার পুত্রকে এই লোকের মত করে দিও। শিশুটি তৎক্ষণাত স্তনবৃন্ত ছেড়ে দিল। তারপর সেই আরোহীর দিকে লক্ষ্য করে বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমাকে এর মত করো না। কথা শেষ করেই সে পুনরায় মায়ের দুধের বাট চুষতে থাকে। আবূ হুরাইরা (রা) বলেন, আমি যেন রাসূলকে (ﷺ) দেখতে পাচ্ছি তিনি সেই শিশুর ন্যায় অভিনয় করে দেখাচ্ছেন এবং তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি মুখে দিয়ে চুষতে থাকেন। এরপর তাদের কাছ দিয়ে জনৈকা দাসীকে পেটাতে পেটাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল! স্ত্রীলোকটি বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমার পুত্রকে এর মত করো না। শিশুটি তৎক্ষণাৎ তার স্তনবৃন্ত ছেড়ে দিল এবং সেই দাসীর দিকে মুখ করে বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমাকে এর মত করে দিও।
স্ত্রীলোকটি বললো, কী আশ্চর্য! একজন জমকালো বেশ-ভূষাধারী লোক যাচ্ছিল আর আমি বললাম, আল্লাহ্ আমার পুত্রকে এঁর মত করে দিও, তখন তুমি বললে, ইয়া আল্লাহ্ আমাকে এর মত করো না। আবার ওই দাসীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্ আমার পুত্রকে এর মত করো না; তখন তুমি বললে, ইয়া আল্লাহ্ আমাকে এর ন্যায় (নিষ্পাপ!) করে দিও! তখন শিশুটি বললো, সেই জমকালো আরোহী লোকটি একজন স্বৈরাচারী, আর ঐ দাসীটি যার সম্পর্কে লোকজন বলছিল সে ব্যভিচার করেছে, চুরি করেছে, প্রকৃতপক্ষে সে ব্যভিচার করেনি, চুরিও করেনি। সে বলছিল আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
(আবূ হুরাইরা (রা) থেকে দ্বিতীয় বর্ণনায় এসেছে) রাসূল (ﷺ) বলেছেন, মাতৃক্রোড়ে মাত্র তিনজন শিশু কথা বলেছে- ঈসা ইবন মারইয়াম (আ), জুরাইজের সময়কার এক শিশু এবং অন্য আরেকটি শিশু। (এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করেন।) জুরাইজ ছিলেন বনী ইসরাঈলের একজন আবিদ ব্যক্তি। তাঁর মা জীবিত ছিলেন। জুরাইজ একদা সালাত আদায়ে রত ছিলেন; এমন সময় তাঁর মা কোন প্রয়োজনে তাঁকে ডাক দিলেন- "হে জুরাইজ,” জুরাইজ মনে মনে বললেন, হে রব, আমার জন্য সালাত উত্তম নাকি মায়ের আহ্বানে সাড়া দেওয়া? এরপর তিনি সালাত আদায়ে মনোনিবেশ করেন। তাঁর মা আবার ডাকলেন, আর তিনি মনে মনে ঐরূপ ভাবলেন। এরপর আবারও তাঁর মা ডাকলেন; এবং তিনি পূর্ববৎ করলেন এবং সালাত আদায় করলেন। মায়ের মনে এতে কষ্ট লাগে এবং তিনি বলেন, ইয়া আল্লাহ্, জুরাইজকে বেশ্যার সম্মুখীন করো। এরপর জুরাইজ তাঁর ডেরায় (ইবাদতের উদ্দেশ্যে) উঠে যান এবং বনী ইসরাঈলের জনৈকা বেশ্যা বা পতিতা... অতঃপর পূর্বোক্ত ধারার ন্যায় বর্ণনা করেন।
আবূ হুরাইরা (রা) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, বনী ইসরাঈলের মধ্যে ছিলেন এক ব্যবসায়ী। তিনি কখনো লোকসান গুনতেন আবার কখনও লাভবান হতেন। তখন তিনি (এই জাতীয় ব্যবসায়ের প্রতি বিরক্ত হয়ে) বললেন, এই ব্যবসায় কোন কল্যাণ নেই। আমি অবশ্যই এই ব্যবসার চেয়ে উত্তম ব্যবসার অন্বেষণ করব। অতপর তিনি (ইবাদতের জন্য)- ডেরা তৈয়ার করেন এবং নির্জনে ইবাদতে মগ্ন হন। তাঁকে জুরাইজ নামে ডাকা হতো।... অতপর পূর্বোক্ত ধারার ন্যায় হাদীস বর্ণনা করেন।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য)
(অন্য একটি ঘটনা এরূপঃ) একদা এক স্ত্রীলোক তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে কোলে নিয়ে দুধ পান করাচ্ছিল। এমন সময় তার পাশ দিয়ে জমকালো বেশভূষাধারী এক আরোহী যাচ্ছিল। স্ত্রীলোকটি বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমার পুত্রকে এই লোকের মত করে দিও। শিশুটি তৎক্ষণাত স্তনবৃন্ত ছেড়ে দিল। তারপর সেই আরোহীর দিকে লক্ষ্য করে বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমাকে এর মত করো না। কথা শেষ করেই সে পুনরায় মায়ের দুধের বাট চুষতে থাকে। আবূ হুরাইরা (রা) বলেন, আমি যেন রাসূলকে (ﷺ) দেখতে পাচ্ছি তিনি সেই শিশুর ন্যায় অভিনয় করে দেখাচ্ছেন এবং তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি মুখে দিয়ে চুষতে থাকেন। এরপর তাদের কাছ দিয়ে জনৈকা দাসীকে পেটাতে পেটাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল! স্ত্রীলোকটি বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমার পুত্রকে এর মত করো না। শিশুটি তৎক্ষণাৎ তার স্তনবৃন্ত ছেড়ে দিল এবং সেই দাসীর দিকে মুখ করে বললো, ইয়া আল্লাহ্, আমাকে এর মত করে দিও।
স্ত্রীলোকটি বললো, কী আশ্চর্য! একজন জমকালো বেশ-ভূষাধারী লোক যাচ্ছিল আর আমি বললাম, আল্লাহ্ আমার পুত্রকে এঁর মত করে দিও, তখন তুমি বললে, ইয়া আল্লাহ্ আমাকে এর মত করো না। আবার ওই দাসীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্ আমার পুত্রকে এর মত করো না; তখন তুমি বললে, ইয়া আল্লাহ্ আমাকে এর ন্যায় (নিষ্পাপ!) করে দিও! তখন শিশুটি বললো, সেই জমকালো আরোহী লোকটি একজন স্বৈরাচারী, আর ঐ দাসীটি যার সম্পর্কে লোকজন বলছিল সে ব্যভিচার করেছে, চুরি করেছে, প্রকৃতপক্ষে সে ব্যভিচার করেনি, চুরিও করেনি। সে বলছিল আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
(আবূ হুরাইরা (রা) থেকে দ্বিতীয় বর্ণনায় এসেছে) রাসূল (ﷺ) বলেছেন, মাতৃক্রোড়ে মাত্র তিনজন শিশু কথা বলেছে- ঈসা ইবন মারইয়াম (আ), জুরাইজের সময়কার এক শিশু এবং অন্য আরেকটি শিশু। (এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করেন।) জুরাইজ ছিলেন বনী ইসরাঈলের একজন আবিদ ব্যক্তি। তাঁর মা জীবিত ছিলেন। জুরাইজ একদা সালাত আদায়ে রত ছিলেন; এমন সময় তাঁর মা কোন প্রয়োজনে তাঁকে ডাক দিলেন- "হে জুরাইজ,” জুরাইজ মনে মনে বললেন, হে রব, আমার জন্য সালাত উত্তম নাকি মায়ের আহ্বানে সাড়া দেওয়া? এরপর তিনি সালাত আদায়ে মনোনিবেশ করেন। তাঁর মা আবার ডাকলেন, আর তিনি মনে মনে ঐরূপ ভাবলেন। এরপর আবারও তাঁর মা ডাকলেন; এবং তিনি পূর্ববৎ করলেন এবং সালাত আদায় করলেন। মায়ের মনে এতে কষ্ট লাগে এবং তিনি বলেন, ইয়া আল্লাহ্, জুরাইজকে বেশ্যার সম্মুখীন করো। এরপর জুরাইজ তাঁর ডেরায় (ইবাদতের উদ্দেশ্যে) উঠে যান এবং বনী ইসরাঈলের জনৈকা বেশ্যা বা পতিতা... অতঃপর পূর্বোক্ত ধারার ন্যায় বর্ণনা করেন।
আবূ হুরাইরা (রা) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, বনী ইসরাঈলের মধ্যে ছিলেন এক ব্যবসায়ী। তিনি কখনো লোকসান গুনতেন আবার কখনও লাভবান হতেন। তখন তিনি (এই জাতীয় ব্যবসায়ের প্রতি বিরক্ত হয়ে) বললেন, এই ব্যবসায় কোন কল্যাণ নেই। আমি অবশ্যই এই ব্যবসার চেয়ে উত্তম ব্যবসার অন্বেষণ করব। অতপর তিনি (ইবাদতের জন্য)- ডেরা তৈয়ার করেন এবং নির্জনে ইবাদতে মগ্ন হন। তাঁকে জুরাইজ নামে ডাকা হতো।... অতপর পূর্বোক্ত ধারার ন্যায় হাদীস বর্ণনা করেন।
(বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة جريج أحد عباد بنى اسرائيل وفيه من تكلم فى المهد أيضا
عن أبى هريرة (13) قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يتكلم فى المهد ألا ثلاثة (14) عيسى بن مريم: وكان من بني إسرائيل رجل عابد يقال له جريج فابتنى صومعة (1) وتعبد فيها قال فذكر بنو اسرائيل يوما عبادة جريج فقالت بَغِيّ (2) منهم لئن شئتم لأصِيبَنَّه، قالوا قد شئنا: قال فأتته فتعرضت له فلم يلتفت اليها فأمكنت نفسها من راع كان يَؤوِى غنمه الى أصل صومعة جريج فحملت فولدت غلاما، فقالوا ممن؟ قالت من جريج، فأتوه استنزلوه فشتموه وضربوه وهدموا صومعته؟ فقال ما شأنكم؟ قالوا أنك زنيت بهذه البِغىِّ فولدت غلاما، قال وأين هو؟ قالوا ها هو ذا؟ قال فقام فصلى ودعا ثم أنصرف الى الغلام فطعنه بإصبعه وقال بالله يا غلام من أبوك؟ (3) قال أنا أبن الراعى، فوثبوا الى جريج فجعلوا يقلبونه وقالوا نبنى صومعتك من ذهب، قال لا حاجة لى فى ذلك، أبنوها من طين كما كانت، قال وبينما امرأة فى حرجها أين ترضعه إذ مر بها راكب ذو شارة (4) فقالت اللهم أجل أبنى مثل هذا، قال فترك ثديها وأقبل على الراكب فقال اللهم لا تجعلنى مثله، قال ثم عاد الى ثديها يمصه، قال أبو هريرة فكأنى أنظر الى رسول الله صلى الله عليه وسلم يحكى على صنيع الصبى ووضعه إصبعه فى فمه فجعل يمصها، ثم مُر بامةُ تضربُ (5) فقالت اللهم لا تجعل ابنى مثلها، قال فترك ثديها وأقبل على الأمة فقال اللهم أجعلنى مثلها (6) يا أماه قال فذلك حين تراجعا الحديث (7) فقالت خَلقَى (8) مُرَّ الراكب ذو الشارة فقلتَ اللهم أجعل مثله فقلتَ اللهم لا تجعلنى مثله ومُرِّ بهذه الأمة فَقلت اللهم لا تجعل أبنى مثلها اللهم أجعلنى مثلها، فقال يا أماه أن الراكب ذو الشارة جبار من الجبابرة، وأن هذه الأمة يقولون زنت ولم تزن وسرقت ولم تسرق وهى تقول حسبى الله (وعنه من طريق ثان) (9) عن النبى صلى الله عليه وسلم قال لم يتكلم فى المهد إلا ثلاثة عيسى بن مريم عليه السلام وصبى كان فى زمان جريج وصى آخر (10) فذكر الحديث: قال (وأما جريج) فكان جلا عابدا فى بنى اسرائيل عابدا فى نبى اسرائيل وكانت له أم وكان يوما يصلي إذ اشتاقت إليه أمه فقالت يا جريج (1) فقال يارب الصلاة خير أم أمى آتيها، ثم صلى، ودعته فقال مثل ذلك ثم دعته فقال مثل ذلك وصلى، فاشتد على أمه وقالت (2) اللهم أرجريجا المومسات (3) ثم صعِد صومعة له وكانت زانية من بنى اسرائيل فذكره نحوه (4) (وعنه من طريق ثالث) (5) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال كان رجل فى بنى اسرائيل تاجرا وكان ينقص مرة ويزيد أخرى (6) قال ما فى هذه التجارة خير التمس تجارة هى خير من هذه، فبنى صومعة ترهّب وكان يقال له جريج فذكر نحوه

তাহকীক:
 হাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীসের ব্যাখ্যাহাদীস নং: ১৪
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: সেই তিন ব্যক্তির ঘটনা যাঁরা গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং গুহার প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল
(১৪) ইবন 'উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এক ফারাক চাল (প্রায় পনের সের)-এর মালিকের মত হওয়ার সামর্থ্য রাখে, সে যেন ঐরূপ হয়ে যায় (বা হওয়ার চেষ্টা করে)। সাহাবীগণ (রা) জিজ্ঞেস করেন, এক ফারাক চালের মালিক কে? রাসূল (ﷺ) বলেন, তিন ব্যক্তি (একদা সফরে) বের হন। হঠাৎ তাঁদের উপর আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। তাঁরা একটি পাহাড়ের গুহার মধ্যে আশ্রয় নেন। পাহাড়ের উপর দিক থেকে একটি পাথর গড়িয়ে পড়ে এবং তাঁদের প্রবেশদ্বার বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা অনেক চেষ্টা-তদবীর করেন, কিন্তু প্রস্তরখণ্ড সরাতে সক্ষম হননি। তখন তাঁরা পরস্পর একে অপরকে বললেন, তোমরা নিদারুণ বিপদে আপতিত। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত তার জীবনের সর্বোত্তম আমলের উসিলা দিয়ে দোয়া করা; হতে পারে আল্লাহ্ তা'আলা এর বদৌলতে আমাদেরকে এই মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করবেন। তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, ইয়া আল্লাহ্, আপনি জানেন যে, আমার পিতা-মাতা উভয়ই অত্যন্ত বৃদ্ধ। আমিই তাঁদের জন্য ছাগীর দুধ দোহন করে পান করাতাম (এটি ছিল তাঁদের রাতের খাবার বা পানীয়; তো একদিন কাঠ সংগ্রহের কাজে অনেক দূরে চলে যাওয়ায় রাতে ফিরে আসতে বেশ বিলম্ব হয়)। আমি এসে দেখি তাঁরা দু'জনই ঘুমিয়ে পড়েছেন। আমি তাদের জন্য হাতে দুধের পেয়ালা নিয়ে দাঁড়িয়ে রাতভর জেগে রইলাম। তাঁদের পূর্বে অন্য কাউকে দুধ দিতে আমার পছন্দ হচ্ছিল না; আবার তাঁদেরকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলাও ভাল মনে হচ্ছিল না। অন্যদিকে আমার সন্তানরা ক্ষুধার জ্বালায় আমারই পাশে চিৎকার করছিল। সুতরাং (হে আল্লাহ্।) তুমি যদি জেনে থাক যে, এই কাজটি, আমি তোমারই ভয়ে করেছিলাম, তাহলে এই বিপদ আমাদের থেকে দূর করে দাও। এতে প্রস্তরখণ্ডটি নড়াচড়া করলো (এবং কিছুটা ফাঁকা হলো)। 
দ্বিতীয়জন বললো, ইয়া আল্লাহ্, আপনি জানেন যে, আমার এক চাচাত বোন ছিল। সে ছিল আমার কাছে আপনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, তন্মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রিয়। আমি তার সাথে মিলনের আকাংখা প্রকাশ করলাম। কিন্তু সে একশত দীনার না দেওয়া পর্যন্ত রাজি হল না। তাই আমি একশত দীনার সংগ্রহ করলাম এবং তা তাকে দিলাম (সে রাজী হল)। অবশেষে আমি যখন তার উপর উঠে বসলাম, তখন সে বললো, আল্লাহকে ভয় করো এবং অবৈধভাবে আমার সতীত্ব হরণ করো না। তখনই আমি তাকে ছেড়ে উঠে গেলাম। হে আল্লাহ্, আপনি যদি মনে করেন যে, আমি আপনারই ভয়ে এইরূপ করেছিলাম, তাহলে আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। তখন প্রস্তরখণ্ডটি হেলে গেল এবং আকাশ দৃষ্টিগোচর হল।
তৃতীয়জন বললো, ইয়া আল্লাহ্, আপনি জানেন যে, আমি একদা মজুরীর বিনিময়ে (এক ফারাক চাল এর বিনিময়ে) আমি একজন মজুর রেখেছিলাম। দিন শেষে সন্ধ্যাবেলায় আমি তার মজুরী পেশ করলাম, কিন্তু সে তা গ্রহণে অস্বীকার করে চলে গেল। আমি তাকে খুঁজে পেলাম না। আমি তার মজুরীটা ব্যবসায়ে খাটালাম, তা বৃদ্ধি পেল এবং অবশেষে তা দিয়ে একটি গরু খরিদ করলাম এবং রাখালও রাখলাম। অবশেষে একদা দীর্ঘদিন পর সে আমার সাথে সাক্ষাত করে আমাকে বললো, আল্লাহকে ভয় কর, আমার পারিশ্রমিক প্রদান কর এবং জুলুম করো না। আমি তাকে বললাম, ঐ গরুর পাল ও রাখালের দিকে যাও এবং ঐসব নিয়ে যাও। সে বললো, আল্লাহকে ভয় কর, আমার সাথে উপহাস করো না। আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না। পরিশেষে সে সবকিছু নিয়ে চলে গেল। ইয়া আল্লাহ্, আপনি যদি জেনে থাকেন যে, এ সবই আমি করেছি আপনার সন্তুষ্টির আশায় এবং আপনার ভয়ে, তাহলে আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। এবার প্রস্তরখণ্ড সরে গেল এবং তাঁরা গুহা থেকে বের হয়ে চলে গেল।
(বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ ও অন্যান্য।)
দ্বিতীয়জন বললো, ইয়া আল্লাহ্, আপনি জানেন যে, আমার এক চাচাত বোন ছিল। সে ছিল আমার কাছে আপনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, তন্মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রিয়। আমি তার সাথে মিলনের আকাংখা প্রকাশ করলাম। কিন্তু সে একশত দীনার না দেওয়া পর্যন্ত রাজি হল না। তাই আমি একশত দীনার সংগ্রহ করলাম এবং তা তাকে দিলাম (সে রাজী হল)। অবশেষে আমি যখন তার উপর উঠে বসলাম, তখন সে বললো, আল্লাহকে ভয় করো এবং অবৈধভাবে আমার সতীত্ব হরণ করো না। তখনই আমি তাকে ছেড়ে উঠে গেলাম। হে আল্লাহ্, আপনি যদি মনে করেন যে, আমি আপনারই ভয়ে এইরূপ করেছিলাম, তাহলে আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। তখন প্রস্তরখণ্ডটি হেলে গেল এবং আকাশ দৃষ্টিগোচর হল।
তৃতীয়জন বললো, ইয়া আল্লাহ্, আপনি জানেন যে, আমি একদা মজুরীর বিনিময়ে (এক ফারাক চাল এর বিনিময়ে) আমি একজন মজুর রেখেছিলাম। দিন শেষে সন্ধ্যাবেলায় আমি তার মজুরী পেশ করলাম, কিন্তু সে তা গ্রহণে অস্বীকার করে চলে গেল। আমি তাকে খুঁজে পেলাম না। আমি তার মজুরীটা ব্যবসায়ে খাটালাম, তা বৃদ্ধি পেল এবং অবশেষে তা দিয়ে একটি গরু খরিদ করলাম এবং রাখালও রাখলাম। অবশেষে একদা দীর্ঘদিন পর সে আমার সাথে সাক্ষাত করে আমাকে বললো, আল্লাহকে ভয় কর, আমার পারিশ্রমিক প্রদান কর এবং জুলুম করো না। আমি তাকে বললাম, ঐ গরুর পাল ও রাখালের দিকে যাও এবং ঐসব নিয়ে যাও। সে বললো, আল্লাহকে ভয় কর, আমার সাথে উপহাস করো না। আমি বললাম, আমি তোমার সাথে উপহাস করছি না। পরিশেষে সে সবকিছু নিয়ে চলে গেল। ইয়া আল্লাহ্, আপনি যদি জেনে থাকেন যে, এ সবই আমি করেছি আপনার সন্তুষ্টির আশায় এবং আপনার ভয়ে, তাহলে আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। এবার প্রস্তরখণ্ড সরে গেল এবং তাঁরা গুহা থেকে বের হয়ে চলে গেল।
(বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ ও অন্যান্য।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة الثلاثة الذين آوو الى الغار فانطبق عليهم
عن ابن عمر (8) قال قال رسول الله صلى الله عليه وعلى آله وسلم من أستطاع منكم أن يكون مثل صاحب أنه كان لى أبوان شيخان كبيران وكنت أحلب حلابهما فأجيئهما وقد ناما، فكنت أبيت قائما وحلابهما على يدى أكره أن ابدأ باحد قبلهما أو أن أوقظهما من نومهما وصببّى يتضاّغْون حولى (2) فان كنت تعلم انى انما فعلته من خشيتك فافُرج عنا، قال فتحركت الصخرة، قال (وقال الثانى) اللهم أنك تعلم أنه كانت لى ابنة عم لم يكن شئ مما خلقت أحب الىّ منها فسمتها نفسها (3) فقالت لا والله دون مائة دينار فجمعتها ودفعتها اليها حى أذا جلست منها مجلس الرجل فقالت أتق الله ولا تفض الخاتم (4) ألا بحقه، فقمت عنها: فان كنت تعلم انما فعلته من خشيتك فافرج عنا، قال فزالت الصخرة حتى بدت السماء (وقال الثالث) اللهم أنك تعلم انى كنت استأجرت أجيرا بفرق من أرز فلما أمسى عرضت عليه حقه فأبى أن يأخذه وذهب وتركنى، فتحرجت منه وثمّرته له وأصلحته حتى أشتريت منه بقرا وراعيها فلقينى بعد حين فقال اتق الله وأعطنى أجرى ولا تظلمنى، فقلت أنطلق الى ذلك البقر وراعيها فخذها، فقال أتق الله ولا تسخر بى فقلت انى لست أسخر بك، فانطلق فأستاق ذلك، فان كنت تعلم أنى انما فعلته أبتغاء رضاتك خشية منك فافرُج عنا فتدحرجت الصخرة فخرجوا يمشون

তাহকীক:
হাদীস নং: ১৫
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: সেই তিন ব্যক্তির ঘটনা যাঁরা গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং গুহার প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল
(১৫) নু'মান ইব্ন বাশীর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে 'রাক্বীম' সম্পর্কে বলতে শুনেছেন (রাক্বীম হচ্ছে গুহাযুক্ত পাহাড়)। তিনি বলেন, তিন ব্যক্তি পাহাড়ের গুহায় অবস্থান করছিলেন। এমতাবস্থায় পাহাড়ের একটি অংশ গুহার দরজায় ধসে পড়ে। ফলে তারা গুহায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, তোমরা কে কী ভাল কাজ করেছ, তা স্মরণ কর। সেই ভাল কাজের উছিলায় আল্লাহ্ তা'আলা হয়তো বা নিজ কৃপায় আমাদের উপর রহমত করতে পারেন।
তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমার কিছুসংখ্যক মজুর ছিল, তারা আমার কাজে নিয়োজিত ছিল। (একদা) কয়েকজন শ্রমিক আমার কাছে আসে, আমি তাদের প্রত্যেককে নির্ধারিত মজুরীর বিনিময়ে রেখে দিলাম। কিন্তু একদিন দুপুরে একজন শ্রমিক এসে হাজির হয় (এবং কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে)। আমি তাকে অন্যদের তুলনায় অর্ধেক মজুরীতে কাজ দিলাম। সে দিবসের অবশিষ্টাংশে সেই পরিমাণ কাজ করলো, যা অন্য শ্রমিকরা সারা দিনে করেছিল। সুতরাং আমার বিবেক তার মজুরী বা পারিশ্রমিক কম না করার পক্ষে রায় দিল, কারণ সে তার কাজে অধিক শ্রম দিয়েছে। (তাই আমি তাকে পূর্ণ দিনের মজুরী দিলাম) তখন অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে একজন আমাকে বললো, আপনি একে আমার সমপরিমাণ মজুরী দান করলেন, অথচ সে কাজ করেছে অর্ধ দিবস? আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা, আমি তো তোমার চুক্তি থেকে তোমাকে কিছু কম দেইনি। বাকী আমার সম্পদে আমি ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তখন সে (আমার এ কথা শুনে) রাগান্বিত হয়ে চলে গেল এবং তার পারিশ্রমিক রেখে গেল। তখন আমি তার সেই প্রাপ্য পারিশ্রমিকের অংশ ঘরের এক পাশে আল্লাহর ইচ্ছায় রেখে দেই। পরে তার সেই পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে একটি গরুর বাছুর খরিদ করি, এরপর আল্লাহর ইচ্ছায় তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। দীর্ঘদিন পর জনৈক দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি আমার কাছে উপস্থিত হল, আমি তাকে চিনতে পারলাম না। সে বললো, তোমার কাছে আমার ন্যায্য পাওনা রয়েছে, এই বলে সে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিল এবং আমি তাকে চিনতে পারলাম। আমি বললাম, আমি তো তোমাকেই খুঁজছি। এই হচ্ছে তোমার সেই প্রাপ্য। এই বলে আমি তার সবকিছুই উপস্থাপন করলাম, সে তখন আমাকে বললো, হে আল্লাহর বান্দা, যদি তুমি দান করতে না চাও, অন্ততঃ আমার সাথে ঠাট্টা করো না। আমার ন্যায্য অধিকারই আমাকে দিয়ে দাও। আমি বললাম, আল্লাহ্ শপথ, আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না; এ সবই তোমার অধিকারভুক্ত। এখানে আমার কিছু নেই। অতঃপর আমি সবকিছু তাকে দিয়ে দিলাম। হে আল্লাহ্, আমি যদি ঐ কর্মটি তোমার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। তখন সেটি (পাহাড়ের ঐ অংশটি একটু) সরে গেল এবং তারা গুহার বাইরের দৃশ্য দেখতে পেলেন।
অন্য একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমি ছিলাম অর্থ, বিত্তের মালিক। (একদা) লোকজন দুর্ভিক্ষে পতিত হয়। এ সময় জনৈকা মহিলা আমার কাছে দান পাওয়ার আশায় আসে। কিন্তু আমি তাকে বললাম, আল্লাহর শপথ, তুমি নিজকে সমর্পণ না করা পর্যন্ত কোন দান পাবে না। কিন্তু সে অস্বীকার করে এবং চলে যায়। সে তার স্বামীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে। তার স্বামী তাকে আমার কাছে সমর্পিত হতে এবং পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে পরামর্শ দেয়। তাই সে পুনরায় আমার কাছে ফিরে আসে এবং আল্লাহর নামে আমার কাছে প্রার্থনা করে। কিন্তু আমি রাজি না হয়ে বলি, আল্লাহর শপথ, তোমাকে না পাওয়া ভিন্ন তা হবে না। সে যখন আমার দৃঢ়তা লক্ষ্য করলো, তখন (অনন্যোপায় হয়ে) নিজকে আমার কাছে সমর্পণ করলো। যখন আমি তাকে অনাবৃত করে উপগত হওয়ার নিকটবর্তী হই, তখন সে নড়ে ওঠে। আমি বললাম, তোমার কী হলো? সে বললো, আমি বিশ্বজাহানের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি। আমি বললাম, তুমি এই কষ্টের মধ্যেও তাঁকে ভয় কর অথচ আমি এই প্রাচুর্যের মধ্যে থেকেও তাঁকে ভয় করছি না। এরপর আমি তাকে ছেড়ে দিই এবং তাকে তার প্রাপ্য দিয়ে দিই। হে আল্লাহ্, আমি যদি এই কর্ম আপনার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আমাদেরকে উদ্ধার করুন। তখন পাহাড় আরও একটু সরে গেল, তাঁরা পরস্পর পরস্পরকে চিনতে পারলেন এবং সবকিছু তাঁদের কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠলো।
অন্য একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমার পিতা-মাতা ছিলেন অত্যন্ত বৃদ্ধ। আমার কয়েকটি বকরি ছিল। আর আমিই আমার পিতামাতার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করতাম এবং দায়িত্ব পালন শেষে বকরি পালের কাছে ফিরে যেতাম। একদিন অধিক পরিমাণে বৃষ্টির কারণে আমি আটকে পড়লাম। সন্ধ্যার পর আমি পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরলাম। দুধ দোয়ানোর পাত্র নিয়ে দুধ দোয়ালাম। আমার বকরিগুলো ঐ অবস্থায় দণ্ডায়মান ছিল। যাহোক, আমি দুধ নিয়ে পিতা- মাতার কাছে গিয়ে দেখলাম, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তখন আমার কাছে তাঁদেরকে জাগ্রত করা এবং আমার বকরিগুলোকে ছেড়ে দেওয়া দুটোই কষ্টকর মনে হচ্ছিল। তখন আমি সেইভাবেই দুধের পাত্র হাতে নিয়ে বসে রইলাম। প্রত্যুষে তাঁদের নিদ্রা ভঙ্গ হলো এবং আমি তাঁদেরকে দুধ পান করালাম। হে আল্লাহ্, আমি যদি এই কর্মটি আপনার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন।
নু'মান বলেন, আমি যেন এই ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট থেকে শুনতে পাচ্ছি। তিনি যেন বলছেন, পাহাড়টির (গুহার) দ্বার বন্ধ ছিল। (তাঁদের দোয়ার বরকতে) আল্লাহ্ তা ফাঁক করে দিলেন আর তাঁরা (গুহা থেকে) বের হয়ে আসলেন।
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা)
তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমার কিছুসংখ্যক মজুর ছিল, তারা আমার কাজে নিয়োজিত ছিল। (একদা) কয়েকজন শ্রমিক আমার কাছে আসে, আমি তাদের প্রত্যেককে নির্ধারিত মজুরীর বিনিময়ে রেখে দিলাম। কিন্তু একদিন দুপুরে একজন শ্রমিক এসে হাজির হয় (এবং কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে)। আমি তাকে অন্যদের তুলনায় অর্ধেক মজুরীতে কাজ দিলাম। সে দিবসের অবশিষ্টাংশে সেই পরিমাণ কাজ করলো, যা অন্য শ্রমিকরা সারা দিনে করেছিল। সুতরাং আমার বিবেক তার মজুরী বা পারিশ্রমিক কম না করার পক্ষে রায় দিল, কারণ সে তার কাজে অধিক শ্রম দিয়েছে। (তাই আমি তাকে পূর্ণ দিনের মজুরী দিলাম) তখন অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে একজন আমাকে বললো, আপনি একে আমার সমপরিমাণ মজুরী দান করলেন, অথচ সে কাজ করেছে অর্ধ দিবস? আমি তাকে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা, আমি তো তোমার চুক্তি থেকে তোমাকে কিছু কম দেইনি। বাকী আমার সম্পদে আমি ইচ্ছামত সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তখন সে (আমার এ কথা শুনে) রাগান্বিত হয়ে চলে গেল এবং তার পারিশ্রমিক রেখে গেল। তখন আমি তার সেই প্রাপ্য পারিশ্রমিকের অংশ ঘরের এক পাশে আল্লাহর ইচ্ছায় রেখে দেই। পরে তার সেই পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে একটি গরুর বাছুর খরিদ করি, এরপর আল্লাহর ইচ্ছায় তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। দীর্ঘদিন পর জনৈক দুর্বল বৃদ্ধ ব্যক্তি আমার কাছে উপস্থিত হল, আমি তাকে চিনতে পারলাম না। সে বললো, তোমার কাছে আমার ন্যায্য পাওনা রয়েছে, এই বলে সে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিল এবং আমি তাকে চিনতে পারলাম। আমি বললাম, আমি তো তোমাকেই খুঁজছি। এই হচ্ছে তোমার সেই প্রাপ্য। এই বলে আমি তার সবকিছুই উপস্থাপন করলাম, সে তখন আমাকে বললো, হে আল্লাহর বান্দা, যদি তুমি দান করতে না চাও, অন্ততঃ আমার সাথে ঠাট্টা করো না। আমার ন্যায্য অধিকারই আমাকে দিয়ে দাও। আমি বললাম, আল্লাহ্ শপথ, আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না; এ সবই তোমার অধিকারভুক্ত। এখানে আমার কিছু নেই। অতঃপর আমি সবকিছু তাকে দিয়ে দিলাম। হে আল্লাহ্, আমি যদি ঐ কর্মটি তোমার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। তখন সেটি (পাহাড়ের ঐ অংশটি একটু) সরে গেল এবং তারা গুহার বাইরের দৃশ্য দেখতে পেলেন।
অন্য একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমি ছিলাম অর্থ, বিত্তের মালিক। (একদা) লোকজন দুর্ভিক্ষে পতিত হয়। এ সময় জনৈকা মহিলা আমার কাছে দান পাওয়ার আশায় আসে। কিন্তু আমি তাকে বললাম, আল্লাহর শপথ, তুমি নিজকে সমর্পণ না করা পর্যন্ত কোন দান পাবে না। কিন্তু সে অস্বীকার করে এবং চলে যায়। সে তার স্বামীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে। তার স্বামী তাকে আমার কাছে সমর্পিত হতে এবং পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে পরামর্শ দেয়। তাই সে পুনরায় আমার কাছে ফিরে আসে এবং আল্লাহর নামে আমার কাছে প্রার্থনা করে। কিন্তু আমি রাজি না হয়ে বলি, আল্লাহর শপথ, তোমাকে না পাওয়া ভিন্ন তা হবে না। সে যখন আমার দৃঢ়তা লক্ষ্য করলো, তখন (অনন্যোপায় হয়ে) নিজকে আমার কাছে সমর্পণ করলো। যখন আমি তাকে অনাবৃত করে উপগত হওয়ার নিকটবর্তী হই, তখন সে নড়ে ওঠে। আমি বললাম, তোমার কী হলো? সে বললো, আমি বিশ্বজাহানের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি। আমি বললাম, তুমি এই কষ্টের মধ্যেও তাঁকে ভয় কর অথচ আমি এই প্রাচুর্যের মধ্যে থেকেও তাঁকে ভয় করছি না। এরপর আমি তাকে ছেড়ে দিই এবং তাকে তার প্রাপ্য দিয়ে দিই। হে আল্লাহ্, আমি যদি এই কর্ম আপনার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আমাদেরকে উদ্ধার করুন। তখন পাহাড় আরও একটু সরে গেল, তাঁরা পরস্পর পরস্পরকে চিনতে পারলেন এবং সবকিছু তাঁদের কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠলো।
অন্য একজন বললেন, আমি একবার একটি ভাল কাজ করেছিলাম। আমার পিতা-মাতা ছিলেন অত্যন্ত বৃদ্ধ। আমার কয়েকটি বকরি ছিল। আর আমিই আমার পিতামাতার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করতাম এবং দায়িত্ব পালন শেষে বকরি পালের কাছে ফিরে যেতাম। একদিন অধিক পরিমাণে বৃষ্টির কারণে আমি আটকে পড়লাম। সন্ধ্যার পর আমি পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরলাম। দুধ দোয়ানোর পাত্র নিয়ে দুধ দোয়ালাম। আমার বকরিগুলো ঐ অবস্থায় দণ্ডায়মান ছিল। যাহোক, আমি দুধ নিয়ে পিতা- মাতার কাছে গিয়ে দেখলাম, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তখন আমার কাছে তাঁদেরকে জাগ্রত করা এবং আমার বকরিগুলোকে ছেড়ে দেওয়া দুটোই কষ্টকর মনে হচ্ছিল। তখন আমি সেইভাবেই দুধের পাত্র হাতে নিয়ে বসে রইলাম। প্রত্যুষে তাঁদের নিদ্রা ভঙ্গ হলো এবং আমি তাঁদেরকে দুধ পান করালাম। হে আল্লাহ্, আমি যদি এই কর্মটি আপনার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন।
নু'মান বলেন, আমি যেন এই ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর নিকট থেকে শুনতে পাচ্ছি। তিনি যেন বলছেন, পাহাড়টির (গুহার) দ্বার বন্ধ ছিল। (তাঁদের দোয়ার বরকতে) আল্লাহ্ তা ফাঁক করে দিলেন আর তাঁরা (গুহা থেকে) বের হয়ে আসলেন।
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة الثلاثة الذين آوو الى الغار فانطبق عليهم
عن النعمان بن بشير (5) أنه سمع رسول الله صلي الله عليه وسلم يذكر الرقيم (6) فقال أن ثلاثة كانوا فى كهف فوقع الجبل على باب الكهف فأوصد عليهم (7) قال قائل منهم تذاكروا ايكم عمل حسنة لعل الله عز وجل برحمته يرحمنا، فقال رجل منهم قد عملت حسنة مرة: كان لى أجراء يعملون فجاءنى عمال لى فاستأجرت كل رجل منهم بأجر معلوم، فجاءنى رجل ذات يوم وسط النهار فاستأجرته بشطر أصحابه فعمل فى بقية نهاره كما عمل كل رجل منهم فى نهاره كله، فرأيت علىّ فى الذمام (8) أن لا انقصه مما استأجرت به أصحابه لما جهد فى عمله، فقال رجل منهم أتعطى هذا مثل ما أعطيتنى ولم يعمل إلا نصف نهار؟ فقلت يا عبد الله لم ابخسك شيئا من شرطك وانما هو مالى أحكم فيه ما شئت، قال فغضب وذهب وترك أجره، قال فوضعت حقه فى جانب من البيت ما شاء الله ثم مرت بي بعد ذلك بقر فاشتريت به فصيلة (1) من البقر فبلغت ما شاء الله، فمر بي بعد حين شيخًا ضعيفًا لا أعرفه فقال أن لي عندك حقًا فذكرنيه متى عرفته، فقلت إياك أبغي (2) هذا حقك فعرضتها عليها جميعًا، فقال يا عبد الله لا تسخر بي أن لم تصدق علي فأعطني حقي، قال والله لا أسخر بك أنها لحقك مالي منها شيء، فدفعتها إليه جميعًا، اللهم إن كنت فعلتُ ذلك لوجهك فأخرج عنا، قال فنصدع الجبل حتى رأوا منه وأبصروا (قال الآخر) قد عملت حسنة مرة كان لي فضل (3) فأصابت الناس شدة (4) فجاءتني امرأة تطلب مني معروفًا (5) قال فقلت والله ما هو دون نفسك (6) فأبت علي فذهبت ثم رجعت فذكرتني بالله فأبيت عليها وقلت لا والله ما هو دون نفسك، فأبت علي وذهبت، فذكرت لزوجها فقال لها أعطيه نفسك وأغني عيالك فرجت إلي فناشدتني بالله فأبيت عليها وقلت والله ما هو دون نفسك، فلما رأت ذلك أسلمت إلي نفسها، فلما تكشفتها وهممت بها ارتعدت من تحتي، فقلت لها ما شأنك؟ قالت أخاف الله رب العالمين قلت لها خفتيه في الشدة ولم أخفه في الرخاء (7) فتركتها وأعطيتها ما بحق علي مما تكشفتها: اللهم إن كنت فعلت ذلك لوجهك فأفرج عنا، قال فانصدع حتى عرفوا وتبين لهم (قال الآخر) عملت حسنة مرة كان لي أبوان شيخان كبيران وكانت لي غنم فكنت أطعم أبوي وأسقيهما ثم رجعت إلي غنمي قال فأصابني يوما غيث (8) حبسني فلم أبرح حتى أمسيت فأتيت أهلي وأخذت محلبي (9) فحلبت وغنمي قاتمة فمضيت إلى أبوي فوجدتهما قد ناما فشق علي أن أوقظهما وشق علي أن أترك غنمي، فما برحت جالسًا ومحلبي على يدي حتى أيقظهما الصبح فسقيتهما، اللهم أن كنت فعلت ذلك لوجهك فأفرج عنا، قال النعمان فكان أسمع هذه من رسول الله صلى الله عليه وسلم قال الجبل طاق (10) ففرج الله عنهم فخرجوا

তাহকীক:
হাদীস নং: ১৬
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: কিফল ও যুল কিফ্ল-এর ঘটনা
(১৬) ইবন 'উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছ থেকে একটি হাদীস শুনেছি। এই হাদীসটি একবার দুইবার কিংবা সাতবার নয়, বরং এর চেয়েও অধিকবার শুনেছি।
(সেই হাদীসটি এইরূপ:) কিফ্ল নামক বনী ইসরাঈলে জনৈক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি তার কাজে গোনাহকে ভয় করতেন না। একদা তার কাছে একজন স্ত্রীলোক আসে, তিনি তাকে ষাটটি দীনার দেন এই শর্তে যে, সে তাঁর সাথে উপগত হবে। যখন সে সেই স্ত্রীলোকের কাছে সেভাবে বসলেন যেভাবে পুরুষ তার স্ত্রীকে সহবাস করতে বসে, স্ত্রীলোকটি কেঁপে উঠলো এবং কান্না জুড়ে দিল। কিফল জিজ্ঞেস করলেন, কী হল, কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে বাধ্য করেছি? সে বললো, না। বরং এই কাজটি আমি জীবনে কখনও করিনি। আর্থিক প্রয়োজনই আমাকে এ কাজে নিয়ে এসেছে। কি বললেন, তুমি কখনও এ কাজ করোনি, অথচ আজ তা করছো? এরপর তিনি সঙ্গমস্থল থেকে নেমে এলেন এবং বললেন, তুমি চলে যাও, এই দীনারগুলোও তোমার। এরপর বললেন, আল্লাহর শপথ, কিফল কখনও আল্লাহর নাফরমানী করবেনা। সেই রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়, সকালে তাঁর দরজায় লেখা পাওয়া যায় : قَدْ غَفَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِلْكِفْلِ আল্লাহ কিফলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
(আল-মুনযিরী, তিরমিযী ও ইবন্ হিব্বান)
(সেই হাদীসটি এইরূপ:) কিফ্ল নামক বনী ইসরাঈলে জনৈক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি তার কাজে গোনাহকে ভয় করতেন না। একদা তার কাছে একজন স্ত্রীলোক আসে, তিনি তাকে ষাটটি দীনার দেন এই শর্তে যে, সে তাঁর সাথে উপগত হবে। যখন সে সেই স্ত্রীলোকের কাছে সেভাবে বসলেন যেভাবে পুরুষ তার স্ত্রীকে সহবাস করতে বসে, স্ত্রীলোকটি কেঁপে উঠলো এবং কান্না জুড়ে দিল। কিফল জিজ্ঞেস করলেন, কী হল, কাঁদছ কেন? আমি কি তোমাকে বাধ্য করেছি? সে বললো, না। বরং এই কাজটি আমি জীবনে কখনও করিনি। আর্থিক প্রয়োজনই আমাকে এ কাজে নিয়ে এসেছে। কি বললেন, তুমি কখনও এ কাজ করোনি, অথচ আজ তা করছো? এরপর তিনি সঙ্গমস্থল থেকে নেমে এলেন এবং বললেন, তুমি চলে যাও, এই দীনারগুলোও তোমার। এরপর বললেন, আল্লাহর শপথ, কিফল কখনও আল্লাহর নাফরমানী করবেনা। সেই রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়, সকালে তাঁর দরজায় লেখা পাওয়া যায় : قَدْ غَفَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِلْكِفْلِ আল্লাহ কিফলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
(আল-মুনযিরী, তিরমিযী ও ইবন্ হিব্বান)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة الكفل وذي الكفل
عن ابن عمر (2) قال لقد سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم حديثًا لو لم أسمعه إلا مرة أو مرتين حتى عد سبع مرات ولكن قد سمعته أكثر من ذلك قال كان الكفل من بني إسرائيل لا يتورع من ذنب عمله، فأتته امرأة فأعطاها ستين دينارًا على أن يطأها، فلما قعد منها مقعد الرجل من امرأته أرعدت وبكت فقال ما يبكيك أكرهتُكِ؟ قالت لا ولكن هذا عمل لم أعمله قط، وإنما حملني عليه الحاجة، قال فتفعلين هذا ولم تفعليه قط، قال ثم نزل فقال أذهبي فالدنانير لك، ثم قال والله لا يعصي الله الكفل أبدا فمات من ليلته فأصبح مكتوبا على بابه قد غفر الله للكفل

তাহকীক:
হাদীস নং: ১৭
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : দুই বাদশাহর কাহিনী যাঁরা দুনিয়া ও দুনিয়ার সাজসজ্জা থেকে বিমুখ হয়ে গিয়েছিলেন
(১৭) ইবন মাস'উদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে জনৈক ব্যক্তি (বাদশাহ) তাঁর সাম্রাজ্যে অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি গভীরভাবে চিন্তা করে অনুধাবন করতে পারলেন যে, তাঁর এই সাম্রাজ্য তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং তাঁর এই পরিবেশ তাঁকে তাঁর প্রভুর ইবাদত থেকে অমনোযোগী করে রেখেছে এবং তার ব্যস্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং এক রাতে (গোপনে) তিনি তাঁর প্রাসাদ ছেড়ে রওয়ানা হলেন এবং ভোর হতে হতে আরেক সাম্রাজ্যে পৌঁছে গেলেন। সেখানে তিনি সমুদ্রের তীরে আশ্রয় নিলেন এবং অর্থের বিনিময়ে নিজের শ্রম দিয়ে ইট তৈরীর কাজ গ্রহণ করলেন। এতে তাঁর খাবার খরচ বাদে অতিরিক্ত যে অর্থ থাকত, তা সাদকা করে দিতেন। এভাবেই তাঁর দিন মাস চলছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর ইবাদত, সাদকা ও রহস্যময় জীবন যাপনের বিষয়টি সেখানকার বাদশাহর নিকট পৌঁছে যায়। বাদশাহ তাঁকে তাঁর দরবারে ডেকে পাঠান; কিন্তু তিনি সেখানে যেতে অস্বীকার করেন। এভাবে দ্বিতীয়বার এবং তৃতীয়বার বাদশাহ তাঁকে ডেকে পাঠান কিন্তু তিনি বারংবার অস্বীকার করেন এবং বলেন, বাদশাহর কাছে আমার কী প্রয়োজন আর বাদশাহরই বা কী প্রয়োজন আমার কাছে? অবশেষে বাদশাহ নিজেই তাঁর কাছে রওয়ানা দিলেন। বাদশাহকে দেখতে পেয়ে তিনি পালাতে লাগলেন। বাদশাহও সাওয়ারী নিয়ে তার পশ্চাদ্ধাবন করলো। কিন্তু তাঁর নাগাল পেলেননা। শেষে বাদশাহ ডাক দিয়ে বললেন, হে আবদুল্লাহ, আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না। তখন তিনি থামেন এবং বাদশাহ তাঁকে নাগালে পান। বাদশাহ জিজ্ঞেস করেন, আল্লাহ্ আপনার প্রতি রহমত করুন, আপনি কে? তখন তিনি উত্তরে বললেন, আমি অমুকের পুত্র অমুক এবং অমুক সাম্রাজ্যের অধিপতি। কিন্তু আমি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে বুঝতে পেরেছি যে, যে পরিবেশের মধ্যে আমি আবদ্ধ, তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং এই পরিবেশ আমাকে আমার রবের ইবাদত থেকে গাফেল করে রেখেছে; তাই আমি তা ছেড়ে এসেছি এবং এখানে এসে আমার মহাপ্রভুর ইবাদত-বন্দেগী করছি। তখন বাদশাহ বললেন, আপনি যা করেছেন, তার প্রয়োজনীয়তা আপনার চেয়ে আমার কাছে মোটেও কম নয়। এই বলে তিনি তাঁর সাওয়ারী থেকে অবতরণ করে সাওয়ারী ছেড়ে দেন এবং তাঁর অনুসরণ করতে থাকেন। তাঁরা দু'জন মিলে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হন। তাঁরা একসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন তাঁদের মৃত্যু যেন একই সময়ে হয়। অতঃপর তাঁরা মৃত্যুবরণ করেন। আবদুল্লাহ (এই হাদীসের রাবী) বলেন, আমি যদি এক্ষণে মিশরের রুমাইলায় থাকতাম, তাহলে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদেরকে যেসব চিহ্ন-বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দিয়েছেন, সে সবের আলোকে তাঁদের দু'জনের কবর দেখিয়ে দিতে পারতাম। 
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা।)
(হাইছামী, আহমদ ও আবূ ই'য়ালা।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ذكر قصة الملكين اللذين تخليا عن الدنيا وزخرفها
عن ابن مسعود (3) قال بينما رجل فيمن كان قبلكم كان في مملكته فتفكر فعلم إن ذلك منقطع عنه وأن ما هو فيه قد شغله عن عبادة ربه فتسرب فانساب ذات ليلة من قصره فأصبح في مملكة غيره، وأتى ساحل البحر وكان به يضرب اللبن (1) بالأجر فيأكل ويتصدق بالفضل، فلم يزل كذلك حتى رقى أمره إلى ملكهم وعبادته وفضله، فأرسل ملكهم إليه أن يأتيه فأبى أن يأتيه، فأعاد ثم أعاد إليه فأبى أن يأتيه وقال ماله ومالي، قال فركب الملك فلما رآه الرجل ولى هاربًا، فلما رأى ذلك الملك ركض في أثره فلم يدركه، قال فناداه يا عبد الله أنه ليس عليك مني بأس، فأقام حتى أدركه فقال له من أنت رحمك الله؟ قال أن فلان بن فلان صاحب ملك كذا وكذا تفكرت في أمري فعلمت أن ما أنا فيه منقطع فأنه قد شغلني عن عبادة ربي فتركته وجئت ههنا أعبد ربي عز وجل، فقال ما أنت بأحوج إلي ما صنعت مني، قال ثم نزل عن دابته فسيبها ثم تبعه فكانا جميعًا يعبدان الله عز وجل فدعوا الله أن يميتهما جميعا، قال فماتا، قال عبد الله لو كنت برميلة (2) مصر لأريتكم قبورهما بالنعت الذي نعت لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم

তাহকীক:
হাদীস নং: ১৮
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : সাবা' ও তার সাথে সম্পৃক্ত বংশাবলী
(১৮) ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে সাবা সম্পর্কে প্রশ্ন করে: অর্থাৎ এটি কি পুরুষ না কি নারী না কোন ভূখণ্ড? রাসূল (ﷺ) উত্তরে বলেন, সাবা বরং একজন পুরুষ, তাঁর বংশে দশজন সন্তান জন্মলাভ করে। এঁদের মধ্যে ছয়জন ইয়ামানে, চারজন শামে (সিরিয়ায়) আবসিত হন। ইয়ামনীগণ হচ্ছেন- মাযহিজ, কিন্দা, আয্দ, আশআরিউন, আনমার ও হিময়ার; এঁরা সবাই আরব। আর শামীগণ হচ্ছেন- লাখম, জুযাম, আমিলা ও গাস্সান।
(এই হাদীসের বরাত ১৮শ খণ্ডে "কিতাবু ফাযাইলিল কুরআন" অধ্যায়ে ৩৯৮ নং হাদীসে দ্রষ্টব্য।)
(এই হাদীসের বরাত ১৮শ খণ্ডে "কিতাবু ফাযাইলিল কুরআন" অধ্যায়ে ৩৯৮ নং হাদীসে দ্রষ্টব্য।)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء في العرب العاربة والمستعربة وإلى من يتسبون وذكر قحطان وقصة سبا
عن عباس (3) أن رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم عن سبأ ما هو أرجل أم امرأة أم أرض؟ فقال بل هو رجل ولد عشرة فسكن اليمن منهم ستة، وبالشام منهم أربعة، فأما اليمانيون فمذحج وكندة والأزد والأشعريون وأنمار وحمير عربا كلها، وأما الشامية فلخم وجدام وعمالة وغسان

তাহকীক:
হাদীস নং: ১৯
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : সাবা' ও তার সাথে সম্পৃক্ত বংশাবলী
(১৯) ফারওয়াহ ইবন্ মুসাইক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ) আমার সম্প্রদায়ের ইসলাম গ্রহণকারীদের নিয়ে কি সেই সব লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব, যারা ইসলাম থেকে বিমুখ? রাসূল (ﷺ) বলেন, হ্যাঁ, তোমার সম্প্রদায়ের ইসলাম গ্রহণকারীদের নিয়ে ইসলাম হতে যারা বিমুখ, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আমি যখন ফিরে যাচ্ছিলাম, তখন তিনি আমাকে ডাকলেন এবং বললেন, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না যতক্ষণ না তাদেরকে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দিবে। এরপর আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (ﷺ)! সাবা কী? এটি কোন উপত্যকা, নাকি পাহাড়, না অন্য কিছু? রাসূল (ﷺ) বললেন, না। তিনি হচ্ছেন একজন আরবীয় পুরুষ। তাঁর বংশে জন্ম নেয় দশ সন্তান। তন্মধ্যে ছয়জন ইয়ামানে ও চারজন শামে বসতি স্থাপন করে। ইয়ামানে বসতি স্থাপনকারীরা হচ্ছে- আযদ, আশ'আরিয়্যুন, হিময়ার, কিন্দা, মাযহিজ ও আনমার যাদেরকে "বাজালিয়্যাহ ও খাছআম" বলা হয়। শামে (সিরিয়ায়) বসতি স্থাপনকারীরা হচ্ছে- লাখম, জুযাম, আমিলা ও গাস্সান।
(আবু দাউদ ও তিরমিযী)
(আবু দাউদ ও তিরমিযী)
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء في العرب العاربة والمستعربة وإلى من يتسبون وذكر قحطان وقصة سبا
عن فروة بن مسيك (4) قال أتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فقلت يا رسول الله أقاتل بمقبل قومي مدبرهم (5)؟ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم وعلى آله وصحبه أجمعين وصحبه وسلم نعم فقاتل بمقبل قومك مدبرهم، فلما وليت دعاني فقال لا تقاتلهم حتى تدعوهم إلى الإسلام (6) فقلت يا رسول الله أرأيت سبأ (1) أواد هو أو جبل أو ما هو؟ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بل هو رجل من العرب ولد له عشرة (2) فتيامن ستة وتشاءم أربعة (3) تيامن الأزد والأشعريون وحمير وكندة ومذحج وأنمار الذي يقال لهم برجيلة وخثعم، وتشاءم لخم وجذام وعاملة وغسان

তাহকীক:
হাদীস নং: ২০
বনী ইসরাঈল ও অতীতের অন্যান্য জাতিসমূহের ঘটনাবলী, আইয়্যামূল আরব তথা আরবদের ইতিহাস ও তাঁদের জাহিলিয়াত সংক্রান্ত ঘটনাবলী অধ্যায়
পরিচ্ছেদ : সাবা' ও তার সাথে সম্পৃক্ত বংশাবলী
(২০) যূমিখমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, এই রাজত্ব বা সাম্রাজ্য ছিল হিময়ার বংশে। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা তাদের কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেন এবং কুরাইশদের কাছে সমর্পণ করেন এবং ভবিষ্যতে তা পুনরায় তাদেও কাছে (হিময়ার বংশে) প্রত্যাবর্তন করবে।
আবু মুকাত্তি-এর পাণ্ডুলিপিতে وَسَیَعُوَدُ إِلَيْهِمْ শব্দ দু'টি ছিল এইরূপ وَسَ يَ عُ ودُ إِلَ يْ هِ مْ । কিন্তু তিনি বর্ণনার সময় সোজা সরলভাবেই উচ্চারণ করেন।
(হাইছামী, আহমদ ও তাবারানী।
আবু মুকাত্তি-এর পাণ্ডুলিপিতে وَسَیَعُوَدُ إِلَيْهِمْ শব্দ দু'টি ছিল এইরূপ وَسَ يَ عُ ودُ إِلَ يْ هِ مْ । কিন্তু তিনি বর্ণনার সময় সোজা সরলভাবেই উচ্চারণ করেন।
(হাইছামী, আহমদ ও তাবারানী।
كتاب قصص الماضين من بنى اسرائيل وغيرهم
باب ما جاء في العرب العاربة والمستعربة وإلى من يتسبون وذكر قحطان وقصة سبا
عن ذي مخمر (1) أن رسول الله صلى الله عليه وسلم وعلى آله وصحبه أجمعين وصحبه وسلم قال كان هذا الأمر في حمير (2) فنزعه الله عز وجل منهم فجعله في قريش (وس ي ع ود ال ي هـ م) (3) وكذا كان في كتاب أبي مقطع وحيث حدثنا به تكلم على الاستواء

তাহকীক: