কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

كتاب السنن للإمام أبي داود

২৭. পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৪০৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৪
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪০. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... জাবির ইবনে সালিম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি এমন এক লোককে দেখতে পাই, তিনি যা বলতেন লোকেরা কবুল করতো। আমি জিজ্ঞাসা করিঃ এ ব্যক্তি কে? তারা বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। তখন আমি তাঁকে দু’বার বলিঃ আলাইকাস সালাম ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বলেনঃ আলাইকাস সালাম বলো না; কেননা মৃতদের এভাবে সালাম করা হয়। তুমি বলঃ আস্-সালামু আলাইকা। আমি জিজ্ঞাসা করিঃ আপনি কি আল্লাহর রাসূল? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমি সেই আল্লাহর রাসূল, যিনি বিপদের সময় তুমি দুআ করলে তোমার বিপদ দূর করে দেন এবং তোমার উপর দুর্ভিক্ষ আপতিত হলে, তোমার দুআর বরকতে তিনি খাদ্য-শস্য ও তৃণলতা পয়দা করেন। আর যখন তুমি এমন কোন স্থানে থাক, যার বিজন মরুভূমিতে তোমার উট হারিয়ে যায়, তখন তোমার দুআর ফলে তিনি তা তোমার কাছে ফিরিয়ে দেন। রাবী বলেন, তখন আমি বলিঃ আমাকে কিছু নসিহত করুন। তিনি বলেনঃ তুমি কখনো কাউকে গালি দেবে না।

রাবী জাবির (রাযিঃ) বলেনঃ এরপর থেকে আমি কোন দিন কোন স্বাধীন ব্যক্তি, গোলাম, উট এবং বকরীকে গালি দেইনি। তিনি আরো বলেনঃ তুমি কখনো কোন উত্তম বস্তুকে অধম মনে করবে না, যদি তুমি তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলার সময় হাসিমুখে কথা বল, এটাও একটা ভাল কাজ। আর তুমি তোমার লুঙ্গী ও পাজামাকে পায়ের গোছার উপর রাখবে, যদি তা সম্ভব না হয়, তবে পায়ের গিঁট পর্যন্ত রাখবে। সাবধান, তুমি লুঙ্গী বা পাজামাকে পায়ের গিঁটের নীচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরিধান করবে না। কেননা, এতে গর্ব ও অহংকার প্রকাশ পায় এবং মহান আল্লাহ গর্বকারীকে পছন্দ করেন না। আর যদি কেউ তোমাকে গালি দেয় এবং তোমার গোপন দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে দেয়, তবে তুমি তার গোপন দোষ-ত্রুটি যা জান তা প্রকাশ করবে না। কেননা, তার কৃতকর্মের ফল সে ভোগ করবে।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي غِفَارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو تَمِيمَةَ الْهُجَيْمِيُّ، - وَأَبُو تَمِيمَةَ اسْمُهُ طَرِيفُ بْنُ مُجَالِدٍ - عَنْ أَبِي جُرَىٍّ، جَابِرِ بْنِ سُلَيْمٍ قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً يَصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَأْيِهِ، لاَ يَقُولُ شَيْئًا إِلاَّ صَدَرُوا عَنْهُ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ عَلَيْكَ السَّلاَمُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَرَّتَيْنِ . قَالَ " لاَ تَقُلْ عَلَيْكَ السَّلاَمُ . فَإِنَّ عَلَيْكَ السَّلاَمُ تَحِيَّةُ الْمَيِّتِ قُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكَ " . قَالَ قُلْتُ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَنَا رَسُولُ اللَّهِ الَّذِي إِذَا أَصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ وَإِنْ أَصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ فَدَعَوْتَهُ أَنْبَتَهَا لَكَ وَإِذَا كُنْتَ بِأَرْضٍ قَفْرَاءَ أَوْ فَلاَةٍ فَضَلَّتْ رَاحِلَتُكَ فَدَعَوْتَهُ رَدَّهَا عَلَيْكَ " . قُلْتُ اعْهَدْ إِلَىَّ . قَالَ " لاَ تَسُبَّنَّ أَحَدًا " . قَالَ فَمَا سَبَبْتُ بَعْدَهُ حُرًّا وَلاَ عَبْدًا وَلاَ بَعِيرًا وَلاَ شَاةً . قَالَ " وَلاَ تَحْقِرَنَّ شَيْئًا مِنَ الْمَعْرُوفِ وَأَنْ تُكَلِّمَ أَخَاكَ وَأَنْتَ مُنْبَسِطٌ إِلَيْهِ وَجْهُكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنَ الْمَعْرُوفِ وَارْفَعْ إِزَارَكَ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ فَإِنْ أَبَيْتَ فَإِلَى الْكَعْبَيْنِ وَإِيَّاكَ وَإِسْبَالَ الإِزَارِ فَإِنَّهَا مِنَ الْمَخِيلَةِ وَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْمَخِيلَةَ وَإِنِ امْرُؤٌ شَتَمَكَ وَعَيَّرَكَ بِمَا يَعْلَمُ فِيكَ فَلاَ تُعَيِّرْهُ بِمَا تَعْلَمُ فِيهِ فَإِنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيْهِ " .
হাদীস নং: ৪০৪১
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৫
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪১. নুফায়লী (রাহঃ) .... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের গর্ব-অহংকার প্রকাশের জন্য নিজের কাপড় (পায়ের গিঁটের নীচে) ঝুলিয়ে পরে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না।

তখন আবু বকর (রাযিঃ) বলেনঃ আমার লুঙ্গীর প্রান্তভাগ ঝুলে থাকে, আর এটা আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ তুমি তাদের মধ্যে নও, যারা গর্বভরে এরূপ করে থাকে।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاَءَ لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّ أَحَدَ جَانِبَىْ إِزَارِي يَسْتَرْخِي إِنِّي لأَتَعَاهَدُ ذَلِكَ مِنْهُ . قَالَ " لَسْتَ مِمَّنْ يَفْعَلُهُ خُيَلاَءَ " .
হাদীস নং: ৪০৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৬
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪২. মুসা ইবনে ইসমাঈল (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা জনৈক ব্যক্তি তার লুঙ্গী পায়ের গিঁটের নীচে ঝুলিয়ে নামায আদায় করা কালে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বলেনঃ তুমি যাও এবং উযু কর। সে ব্যক্তি উযু করে আসলে, তিনি আবার বলেনঃ যাও, উযু কর। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার কী হয়েছে, আপনি তাকে উযু করতে বলছেন; আর সে উযু করার পর আপনি নীরব থাকছেন? তখন তিনি বলেনঃ এ ব্যক্তি লুঙ্গী ঝুলিয়ে নামায আদায় করে, অথচ যে এভাবে নামায আদায় করে, আল্লাহ্ তার নামায কবুল করেন না।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ يُصَلِّي مُسْبِلاً إِزَارَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اذْهَبْ فَتَوَضَّأْ " . فَذَهَبَ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ جَاءَ ثُمَّ قَالَ " اذْهَبْ فَتَوَضَّأْ " . فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَكَ أَمَرْتَهُ أَنْ يَتَوَضَّأَ ثُمَّ سَكَتَّ عَنْهُ قَالَ " إِنَّهُ كَانَ يُصَلِّي وَهُوَ مُسْبِلٌ إِزَارَهُ وَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَقْبَلُ صَلاَةَ رَجُلٍ مُسْبِلٍ " .
হাদীস নং: ৪০৪৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৭
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪৩. হাফস ইবনে আমর (রাহঃ) .... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না, আর না তাদের গুনাহ্ থেকে পবিত্র করবেন এবং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি।

তখন আমি জিজ্ঞাসা করিঃ এরা কারা, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যারা বরবাদী ও ধ্বংসের শিকার হবে? তিনি বলেনঃ যারা গর্বভরে কাপড় পায়ের গিঁটের নীচে ঝুলিয়ে পরে, উপকার করে খোঁটা দেয় এবং যে সব ব্যবসায়ী মিথ্যা কসম খেয়ে পণ্য বিক্রি করে।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ " . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا أَعَادَهَا ثَلاَثًا . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ خَابُوا وَخَسِرُوا فَقَالَ " الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ " . أَوِ " الْفَاجِرِ " .
হাদীস নং: ৪০৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৮
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪৪. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী (ﷺ) এরূপই বলেছেন। তবে প্রথমে বর্ণিত হাদিছটি অধিক সম্পূর্ণ। তিনি বলেনঃ ‘মান্নান’ হলো সে, যে কাউকে কিছু দেয়ার পর খোঁটা দেয়।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَالأَوَّلُ أَتَمُّ قَالَ " الْمَنَّانُ الَّذِي لاَ يُعْطِي شَيْئًا إِلاَّ مَنَّهُ " .
হাদীস নং: ৪০৪৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৯
পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪৫. হারূন ইবনে আব্দুল্লাহ (রাহঃ) .... কায়স ইবনে নসর তাগলিবী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমার পিতা আমাকে বলেছেন, যিনি আবু দারদা (রাযিঃ) এর বন্ধু ছিলেন। তিনি বলেনঃ দামিশ শহরে ইবনে হানজালিয়া (রাযিঃ) নামে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর একজন সাহাবী বাস করতেন। তিনি একাকী থাকতে পছন্দ করতেন এবং লোকদের সাথে মেলামেশা করতেন না। তিনি অধিকাংশ সময় নামাযে রত থাকতেন এবং অবশিষ্ট সময তাসবিহ ও তাকবীর পাঠে রত থাকতেন, এরপর নিজের ঘরে ফিরে যেতেন। রাবী বলেনঃ একদা তিনি ঘরে ফেরার সময় আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এ সময় আমরা আবু দারদা (রাযিঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন আবু দারদা (রাযিঃ) তাঁকে বলেনঃ আপনি আমাদের এমন কিছু বলুন, যা আমাদের উপকারে আসে এবং আপনার কোন ক্ষতি না হয়।

তিনি বলেনঃ একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুদ্ধের জন্য একদল সৈন্য পাঠান। তারা ফিরে আসে এবং তাদের এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যেখানে বসতেন সেখানে গিয়ে বসে পড়ে এবং তার পাশের লোককে সম্বোধন করে বলেঃ যদি তোমরা আমাদের দেখতে, যখন আমরা শত্রুদের সাথে যুদ্ধরত ছিলাম। তখন আমাদের অমুক ব্যক্তি বল্লম উচিয়ে বলেছিলঃ আমার এ আঘাত গ্রহণ কর এবং আমি গিফার গোত্রের লোক। তুমি তার এ কথাকে কিরূপ মনে কর? তখন সে ব্যক্তি বলেঃ আমার বিবেচনায় তার সাওয়াব বিনষ্ট হয়েছে। তার এ কথা শুনে অপর এক ব্যক্তি বলেঃ আমার মতে এরূপ বলাতে কোন ক্ষতি হয়নি। তারা ঝগড়া শুরু করলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা শুনে বলেনঃ সুবহানাল্লাহ! এতে ক্ষতির কি আছে, যদি সে সাওয়াব পায় এবং লোকেরা তার প্রশংসা করে?

রাবী বলেনঃ তখন আমি দেখতে পাই যে, আবু দারদা (রাযিঃ) তা শুনে খুব খুশি হয়েছেন। তিনি তাঁর মাথা উচু করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেনঃ আপনি কি ইহা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছেন? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। রাবী বলেনঃ এরপর আবু দারদা (রাযিঃ) বারবার প্রশ্ন করতে করতে শেষ ব্যক্তির এত নিকটবর্তী হল যে, আমার মনে হচ্ছিল, তিনি তাঁর কাঁধের উপর চেপে বসবেন।

(রাবী বিশর বলেনঃ) আরেকদিন সে ব্যক্তি আমাদের পাশ দিয়ে গমনকালে আবু দারদা (রাযিঃ) তাঁকে বলেনঃ এমন কিছু বলেন, যাতে আমাদের উপকার হয় এবং আপনার কোন ক্ষতি না হয়। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের বলেনঃ ঘোড়ার জন্য যে ব্যক্তি খরচ করে, তার তুলনা এরূপ, যে মুক্ত হস্তে দান করে এবং তা থেকে বিরত হয় না।

এরপর সে ব্যক্তি পুনরায় একদিন আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আবু দারদা (রাযিঃ) তাঁকে বলেনঃ আমাদের কিছু উপকারী কথা বলুনঃ যাতে আপনার কোন ক্ষতি না হয়। তখন তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের বলেনঃ খুরায়ম আসদী কি উত্তম ব্যক্তি। তবে যদি তার চুল লম্বা না হতো এবং লুঙ্গী ঝুলিয়ে না পরতো। এ খবর খুরায়ম (রাযিঃ) এর নিকট পৌছলে তিনি তৎক্ষণাৎ এক খানি ছুরি নিয়ে তার লম্বা চুল কেটে ছোট করেন এবং নিজের পরিধেয় বস্ত্র পায়ের গোছা পর্যন্ত উঠান।

পরে আরো একদিন সে ব্যক্তি আমাদের পাশ দিয়ে গমনকালে আবু দারদা (রাযিঃ) তাঁকে বলেনঃ আপনি আমদের এমন কিছু শোনান, যাতে আমাদের উপকার হয় এবং আপনার কোন ক্ষতি না হয়। তখন তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বলতে শুনেছিঃ এখন তোমরা তোমাদের ভাইদের সাথে মিলিত হতে চলেছ, কাজেই তোমরা তোমাদের যানবাহনকে ঠিক কর এবং তোমাদের পোশাক -পরিচ্ছদ পরিস্কার কর, যাতে তারা সহজে তোমাদের চিনতে পারে। জেনে রাখ! মহান আল্লাহ বেহুদা কথোপকথনকারী এবং ময়লা-অপরিস্কার থাকা ব্যক্তিকে ভালবাসেন না। যাতে তোমরা লোকদের মাঝে অপয়া হও।

ইমাম আবু দাউদ (রাহঃ) বলেনঃ আবু নুআয়ম (রাহঃ) হিশাম (রাহঃ) থেকে বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ এমনকি তোমরা লোকদের মাঝে অপয়া হও।
كتاب اللباس
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، - يَعْنِي عَبْدَ الْمَلِكِ بْنَ عَمْرٍو - حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ بِشْرٍ التَّغْلِبِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، - وَكَانَ جَلِيسًا لأَبِي الدَّرْدَاءِ - قَالَ كَانَ بِدِمَشْقَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُقَالُ لَهُ ابْنُ الْحَنْظَلِيَّةِ وَكَانَ رَجُلاً مُتَوَحِّدًا قَلَّمَا يُجَالِسُ النَّاسَ إِنَّمَا هُوَ صَلاَةٌ فَإِذَا فَرَغَ فَإِنَّمَا هُوَ تَسْبِيحٌ وَتَكْبِيرٌ حَتَّى يَأْتِيَ أَهْلَهُ فَمَرَّ بِنَا وَنَحْنُ عِنْدَ أَبِي الدَّرْدَاءِ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْدَاءِ كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً فَقَدِمَتْ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَجَلَسَ فِي الْمَجْلِسِ الَّذِي يَجْلِسُ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِرَجُلٍ إِلَى جَنْبِهِ لَوْ رَأَيْتَنَا حِينَ الْتَقَيْنَا نَحْنُ وَالْعَدُوُّ فَحَمَلَ فُلاَنٌ فَطَعَنَ فَقَالَ خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلاَمُ الْغِفَارِيُّ كَيْفَ تَرَى فِي قَوْلِهِ قَالَ مَا أُرَاهُ إِلاَّ قَدْ بَطَلَ أَجْرُهُ فَسَمِعَ بِذَلِكَ آخَرُ فَقَالَ مَا أَرَى بِذَلِكَ بَأْسًا فَتَنَازَعَا حَتَّى سَمِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " سُبْحَانَ اللَّهِ لاَ بَأْسَ أَنْ يُؤْجَرَ وَيُحْمَدَ " . فَرَأَيْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ سُرَّ بِذَلِكَ وَجَعَلَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ إِلَيْهِ وَيَقُولُ أَنْتَ سَمِعْتَ ذَلِكَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ نَعَمْ . فَمَا زَالَ يُعِيدُ عَلَيْهِ حَتَّى إِنِّي لأَقُولُ لَيَبْرُكَنَّ عَلَى رُكْبَتَيْهِ . قَالَ فَمَرَّ بِنَا يَوْمًا آخَرَ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْدَاءِ كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْمُنْفِقُ عَلَى الْخَيْلِ كَالْبَاسِطِ يَدَهُ بِالصَّدَقَةِ لاَ يَقْبِضُهَا " . ثُمَّ مَرَّ بِنَا يَوْمًا آخَرَ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْدَاءِ كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ . قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نِعْمَ الرَّجُلُ خُرَيْمٌ الأَسَدِيُّ لَوْلاَ طُولُ جُمَّتِهِ وَإِسْبَالُ إِزَارِهِ " . فَبَلَغَ ذَلِكَ خُرَيْمًا فَعَجِلَ فَأَخَذَ شَفْرَةً فَقَطَعَ بِهَا جُمَّتَهُ إِلَى أُذُنَيْهِ وَرَفَعَ إِزَارَهُ إِلَى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ . ثُمَّ مَرَّ بِنَا يَوْمًا آخَرَ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْدَاءِ كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ فَقَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّكُمْ قَادِمُونَ عَلَى إِخْوَانِكُمْ فَأَصْلِحُوا رِحَالَكُمْ وَأَصْلِحُوا لِبَاسَكُمْ حَتَّى تَكُونُوا كَأَنَّكُمْ شَامَةٌ فِي النَّاسِ فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْفُحْشَ وَلاَ التَّفَحُّشَ " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَكَذَلِكَ قَالَ أَبُو نُعَيْمٍ عَنْ هِشَامٍ قَالَ حَتَّى تَكُونُوا كَالشَّامَةِ فِي النَّاسِ .