আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১৯. অধ্যায়ঃ বিচার ব্যবস্থা
হাদীস নং: ৩২৯৭
অধ্যায়ঃ বিচার ব্যবস্থা
অধ্যায়: বিচার ব্যবস্থা ও অন্যান্য বিষয়।
নিজের উপর আস্থাশীল না হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি রাজা বাদশাহ ও শাসক নিযুক্ত হয়। বিচার করে এবং নেতৃত্ব গ্রহণ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং যে ব্যক্তি নিজকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে করে উপরোক্ত বিষয় প্রার্থনা করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
নিজের উপর আস্থাশীল না হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি রাজা বাদশাহ ও শাসক নিযুক্ত হয়। বিচার করে এবং নেতৃত্ব গ্রহণ করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং যে ব্যক্তি নিজকে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে করে উপরোক্ত বিষয় প্রার্থনা করে তার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৩২৯৭. হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে আল্লাহ্ তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন যে, সে কি তার অধীনস্থদের হক যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেছে, না ধ্বংস করে দিয়েছে।
(ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থে বর্ণিত।)
(ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থে বর্ণিত।)
كتاب القضاء
كتاب الْقَضَاء وَغَيره
التَّرْهِيب من تولي السلطنة وَالْقَضَاء والإمارة سِيمَا لمن لَا يَثِق بِنَفسِهِ وترهيب من وثق بِنَفسِهِ أَن يسْأَل شَيْئا من ذَلِك
التَّرْهِيب من تولي السلطنة وَالْقَضَاء والإمارة سِيمَا لمن لَا يَثِق بِنَفسِهِ وترهيب من وثق بِنَفسِهِ أَن يسْأَل شَيْئا من ذَلِك
3297- وَعَن أنس بن مَالك رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن الله سَائل كل رَاع عَمَّا استرعاه حفظ أم ضيع
رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه
رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে জানানো হয়েছে যে-প্রত্যেক দায়িত্বশীলকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। নিজ আওতা ও ক্ষমতার বিস্তারভেদে জান-মালের যা-কিছুই যার অধীনে আছে, সে তার বা তাদের দায়িত্বশীল। তার কর্তব্য ন্যায়নিষ্ঠতার সঙ্গে তার রক্ষণাবেক্ষণ করা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে তা পরিচালনা করা। কেননা আখেরাতে তাকে তার সে দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। যেসব ব্যক্তির পরিচালনাভার তার উপর ন্যস্ত ছিল, আখেরাতে জিজ্ঞেস করা হবে সে শরীআত মোতাবেক তাদের পরিচালনা করেছিল কি না, তাদের পরিচালনায় সে ন্যায় ও ইনসাফ রক্ষা করেছিল কি না এবং তাদের দ্বীনী ও দুনিয়াবী প্রয়োজন সমাধার চেষ্টা সে ঠিক কতটুকু করেছিল? এমনিভাবে যেসব মালামালের রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব তার উপর অর্পিত ছিল, সে কতটুকু বিশ্বস্ততার সঙ্গে তার রক্ষণাবেক্ষণ করেছিল? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলে তো সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং আল্লাহর কাছ থেকে অভাবনীয় পুরস্কার লাভ হবে। অন্যথায় পরিণাম হবে ভয়াবহ। সেদিন তার কাছ থেকে তার অধীনস্থ বা তার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রত্যেকে আপন আপন হক বুঝে নিতে চাইবে।
হাদীসে আছে كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته (তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে)। راع শব্দটির উৎপত্তি رعاية , থেকে, যার মূল অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ করা। রাখালকে راع বলা হয়। কারণ সে তার দায়িত্বভুক্ত গবাদিপশুর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। হাদীছে প্রত্যেককে راع বলা হয়েছে। কেননা প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দায়িত্ব রয়েছে এবং প্রত্যেকেরই দায়িত্বে কেউ না কেউ থাকে। আর কেউ না থাকুক, অন্ততপক্ষে নিজ সত্তা তো থাকেই। যার অধীনে আর কেউ নেই, তার কর্তব্য নিজের রক্ষণাবেক্ষণ করা। অর্থাৎ নিজেকে অন্যায়-অপরাধ থেকে বাঁচানো ও ক্ষতিকর কাজ থেকে হেফাজত করা, যাতে নিজ সত্তা জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পায়।
আল্লাহ তাআলা ন্যায়বিচারক। তাঁর আদালতে যখন হকদারগণ আপন আপন হক দাবি করবে, কী অবস্থা তখন হবে? এ হাদীছ সাবধান করছে যে, প্রত্যেকেই যখন কোনও না কোনওভাবে দায়িত্বশীল, তখন প্রত্যেকেরই কর্তব্য আপন আপন দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা, যাতে দায়িত্বপালনে ত্রুটির কারণে মহাবিচারের সে দিনে আটকা পড়তে না হয়।
একদিন এ সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে। এক হাদীছে আছে-
فأعدوا للمسائل جوابا، قالوا: يا رسول الله! وما جوابها؟ قال: أعمال البر
“তোমরা জিজ্ঞাসাবাদের উত্তর প্রস্তুত কর। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, তার উত্তর কী? তিনি বললেন, সৎকর্মসমূহ।৩৫২
শরীআত যে ক্ষেত্রে যেসকল কর্তব্য স্থির করেছে তাই সৎকর্ম। অতএব আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য আপন আপন ক্ষেত্রে শরীআত-নির্দেশিত কর্তব্য জেনে নেওয়া ও তা পালনে সচেষ্ট থাকা। একান্ত মনে সেই চেষ্টা থাকলে আশা করা যায় আখেরাতে আল্লাহ তাআলা আসানীর সঙ্গে পার করে দেবেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকেরই সচেষ্ট থাকা চাই।
খ. জানা গেল আখেরাত সত্য, আখেরাতে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে এবং আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
৩৫২, তাবারানী, আল মুজামুস্ সগীর, হাদীছ নং ৪৫০
হাদীসে আছে كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته (তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে)। راع শব্দটির উৎপত্তি رعاية , থেকে, যার মূল অর্থ রক্ষণাবেক্ষণ করা। রাখালকে راع বলা হয়। কারণ সে তার দায়িত্বভুক্ত গবাদিপশুর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। হাদীছে প্রত্যেককে راع বলা হয়েছে। কেননা প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু দায়িত্ব রয়েছে এবং প্রত্যেকেরই দায়িত্বে কেউ না কেউ থাকে। আর কেউ না থাকুক, অন্ততপক্ষে নিজ সত্তা তো থাকেই। যার অধীনে আর কেউ নেই, তার কর্তব্য নিজের রক্ষণাবেক্ষণ করা। অর্থাৎ নিজেকে অন্যায়-অপরাধ থেকে বাঁচানো ও ক্ষতিকর কাজ থেকে হেফাজত করা, যাতে নিজ সত্তা জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পায়।
আল্লাহ তাআলা ন্যায়বিচারক। তাঁর আদালতে যখন হকদারগণ আপন আপন হক দাবি করবে, কী অবস্থা তখন হবে? এ হাদীছ সাবধান করছে যে, প্রত্যেকেই যখন কোনও না কোনওভাবে দায়িত্বশীল, তখন প্রত্যেকেরই কর্তব্য আপন আপন দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা, যাতে দায়িত্বপালনে ত্রুটির কারণে মহাবিচারের সে দিনে আটকা পড়তে না হয়।
একদিন এ সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে। এক হাদীছে আছে-
فأعدوا للمسائل جوابا، قالوا: يا رسول الله! وما جوابها؟ قال: أعمال البر
“তোমরা জিজ্ঞাসাবাদের উত্তর প্রস্তুত কর। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, তার উত্তর কী? তিনি বললেন, সৎকর্মসমূহ।৩৫২
শরীআত যে ক্ষেত্রে যেসকল কর্তব্য স্থির করেছে তাই সৎকর্ম। অতএব আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য আপন আপন ক্ষেত্রে শরীআত-নির্দেশিত কর্তব্য জেনে নেওয়া ও তা পালনে সচেষ্ট থাকা। একান্ত মনে সেই চেষ্টা থাকলে আশা করা যায় আখেরাতে আল্লাহ তাআলা আসানীর সঙ্গে পার করে দেবেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল দায়িত্ব পালনে প্রত্যেকেরই সচেষ্ট থাকা চাই।
খ. জানা গেল আখেরাত সত্য, আখেরাতে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হবে এবং আপন আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।
৩৫২, তাবারানী, আল মুজামুস্ সগীর, হাদীছ নং ৪৫০
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)