আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
হাদীস নং: ৯৭৪
আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ
৪৪১- মোসাফাহা (করমর্দন)।
৯৭৪. হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাযিঃ) বলেন, যখন ইয়েমেনবাসীগণ নবী করীম (ﷺ)-এর খেদমতে উপস্থিত হইলেন তখন নবী করীম (ﷺ) বলিলেনঃ ইয়েমেনবাসীগণ আসিয়াছেন। তোমাদের তুলনায় তাহাদের অন্তর কোমলতর। তাহারাই সর্বপ্রথম মোসাফাহার (করমর্দনের) প্রচলন করেন।
أبواب الأدب المفرد للبخاري
بَابُ الْمُصَافَحَةِ
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: لَمَّا جَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: قَدْ أَقْبَلَ أَهْلُ الْيَمَنِ وَهُمْ أَرَقُّ قُلُوبًا مِنْكُمْ، فَهُمْ أَوَّلُ مَنْ جَاءَ بِالْمُصَافَحَةِ.
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এখানে হাদীছটি সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। বিস্তারিত বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীছের বক্তব্যটি প্রদান করেছিলেন ইয়ামানবাসী আসার আগের দিন। অর্থাৎ ইয়ামান থেকে আশ'আর গোত্রীয় একটি কাফেলা মদীনা মুনাউওয়ারার উদ্দেশে আসছিল। সে কাফেলায় বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু মুসা আশ'আরী রাযি.-ও ছিলেন। তারা মদীনায় পৌঁছার আগের দিন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, শীঘ্রই একদল লোক তোমাদের কাছে এসে পৌছাচ্ছে। ইসলামের প্রতি তাদের মন তোমাদের চেয়ে বেশি নরম। ঈমান ইয়ামানী বিষয়, হিকমতও ইয়ামানী (অর্থাৎ প্রকৃত ঈমান ও হিকমত ইয়ামানের লোকদের মধ্যে পাওয়া যায়)। পরের দিন কাফেলাটি মদীনা মুনাউওয়ারায় এসে পৌঁছায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাক্ষাৎলাভের প্রচণ্ড আগ্রহ তারা তাদের অন্তরে লালন করছিল। তারা কবিতা আবৃত্তি করছিল-
غَدًا نَلْقَى الْأَحِبَّة
مُحَمَّدًا وَحِزْبَه
'আগামীকাল আমরা মিলিত হব বন্ধুদের সঙ্গে
মুহাম্মাদ ও তাঁর সহচরদের সঙ্গে’।
(মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ৩২২৫৭; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৮২৯৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ৩৮৪৫; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৮০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭১৯২)
এ হাদীছটিতে قَدْ جَاءَكُمْ أَهْلُ اليَمَنِ (ইয়ামানবাসীরা তোমাদের কাছে এসেছে)- কেবল এতটুকু কথা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের। শেষের বাক্য- وَهُمْ أَوَّلُ مَنْ جَاءَ بالمُصَافَحَةِ (আর তারাই সর্বপ্রথম মুসাফাহা শুরু করেছে) হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর। এর মানে এমন নয় যে, ইয়ামানের কাফেলাটি আসার আগে মদীনায় কেউ কারও সঙ্গে মুসাফাহা করত না। মুসাফাহা আগেও ছিল। প্রাচীন ইরাকীদের মধ্যেও এর প্রচলন ছিল বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের অনারবেরাও এটা করত। যেমন হযরত বারা' রাযি. থেকে বর্ণিত আছে যে, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে মুসাফাহা করলে তিনি বলেছিলেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো মনে করতাম এটা কেবল অনারবদেরই প্রথা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুই মুসলিম যখন পরস্পর সাক্ষাৎ করে এবং মুসাফাহা করে, তখন তাদের পাপরাশি ঝড়ে যায়। (খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক: ৮৫৭)
তবে হাঁ, মদীনায় মুসাফাহার ব্যাপক রেওয়াজ ছিল না। ইয়ামানের কাফেলাটি মদীনায় পৌঁছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামকে যেমন সালাম দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁদের সঙ্গে মুসাফাহাও করেছিলেন। তাদের আগে মুসাফাহা করা হত কম। তারাই এ আমলটির ব্যাপকতা দান করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মদীনায় ইয়ামানী সাহাবীদের দ্বারাই মুসাফাহার ব্যাপক প্রচলন ঘটে।
খ. কোনও ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশেষ কোনও গুণ বা বিশেষত্ব থাকলে তা স্বীকার করা চাই।
غَدًا نَلْقَى الْأَحِبَّة
مُحَمَّدًا وَحِزْبَه
'আগামীকাল আমরা মিলিত হব বন্ধুদের সঙ্গে
মুহাম্মাদ ও তাঁর সহচরদের সঙ্গে’।
(মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ৩২২৫৭; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৮২৯৪; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ৩৮৪৫; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৮০৬; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭১৯২)
এ হাদীছটিতে قَدْ جَاءَكُمْ أَهْلُ اليَمَنِ (ইয়ামানবাসীরা তোমাদের কাছে এসেছে)- কেবল এতটুকু কথা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের। শেষের বাক্য- وَهُمْ أَوَّلُ مَنْ جَاءَ بالمُصَافَحَةِ (আর তারাই সর্বপ্রথম মুসাফাহা শুরু করেছে) হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি.-এর। এর মানে এমন নয় যে, ইয়ামানের কাফেলাটি আসার আগে মদীনায় কেউ কারও সঙ্গে মুসাফাহা করত না। মুসাফাহা আগেও ছিল। প্রাচীন ইরাকীদের মধ্যেও এর প্রচলন ছিল বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের অনারবেরাও এটা করত। যেমন হযরত বারা' রাযি. থেকে বর্ণিত আছে যে, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে মুসাফাহা করলে তিনি বলেছিলেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো মনে করতাম এটা কেবল অনারবদেরই প্রথা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুই মুসলিম যখন পরস্পর সাক্ষাৎ করে এবং মুসাফাহা করে, তখন তাদের পাপরাশি ঝড়ে যায়। (খারাইতী, মাকারিমুল আখলাক: ৮৫৭)
তবে হাঁ, মদীনায় মুসাফাহার ব্যাপক রেওয়াজ ছিল না। ইয়ামানের কাফেলাটি মদীনায় পৌঁছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামকে যেমন সালাম দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁদের সঙ্গে মুসাফাহাও করেছিলেন। তাদের আগে মুসাফাহা করা হত কম। তারাই এ আমলটির ব্যাপকতা দান করেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. মদীনায় ইয়ামানী সাহাবীদের দ্বারাই মুসাফাহার ব্যাপক প্রচলন ঘটে।
খ. কোনও ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশেষ কোনও গুণ বা বিশেষত্ব থাকলে তা স্বীকার করা চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)