মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
১৭- কিসাসের অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৫৪৭
- কিসাসের অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৭। হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ছোট একটি সেনাদলকে 'খাসআম' গোত্রের দিকে অভিযানে পাঠাইলেন। উক্ত গোত্রের কিছুসংখ্যক লোক আত্মরক্ষার জন্য সদায় রত হইয়া পড়িল। কিন্তু সেনাদল (তাহাদের সজ্দার দিকে ভ্রুক্ষেপ না করিয়াই) তড়িৎ বেগে তাহাদিগকে হত্যা করিয়া ফেলিল। পরে নবী (ﷺ)-এর কাছে এই সংবাদ পৌঁছিলে তিনি নিহত ব্যক্তিদের ওয়ারিসদিগকে অর্ধেক দিয়ত (রক্তমূল্য) আদায় করিবার জন্য নির্দেশ দিলেন এবং বলিলেনঃ যে সমস্ত মুসলমান কাফেরদের মাঝে বসবাস করে, আমার উপর তাহাদের সম্পর্কে কোন দায়িত্ব নাই। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করিলেন কেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্? হুযূর বলিলেন, কেননা, তাহাদের উচিত ছিল যে, এতো দূরে দূরে অবস্থান করে, যেন একজন অপরজনের আগুন পর্যন্ত দেখিতে না পায়। –আবু দাউদ
كتاب القصاص
وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً إِلَى خَثْعَمَ فَاعْتَصَمَ نَاسٌ مِنْهُمْ بِالسُّجُودِ فَأَسْرَعَ فِيهِمُ الْقَتْلَ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ لَهُمْ بِنِصْفِ الْعَقْلِ وَقَالَ: «أَنَا بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ؟ قَالَ: «لَا تَتَرَاءَى نَارَاهُمَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মুসলমান সেনাদলকে দেখিয়া যাহারা সজদায় অবনত হইয়া পড়িয়াছিল, প্রকৃতপক্ষে তাহারাও মুসলমান ছিল, আর তাহারা সজদা করিয়া ইহাই বুঝাইতে চাহিয়াছিল যে, আমরাও মুসলমান, যদিও কাফেরদের সাথে আমাদের বসবাস। কিন্তু সেনাদল ধারণা করিয়াছিল যে, তাহারা জান বাঁচাইবার জন্য এই বাহানা করিতেছে। তাই হত্যা করিয়াছে। আর কাফেরদের সংস্রবে থাকিয়া তাহাদের সহিত সহাবস্থান করিয়াছিল বিধায় তাহাদের ওয়ারিসদিগকে অর্ধেক দিয়ত দেওয়া হইয়াছে। আর “মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে একে অন্যের আগুন দেখিতে না পায়”-এর অর্থ, তাহাদিগ হইতে এমনভাবে পৃথক থাকিবে, যেন সুস্পষ্ট প্রমাণ হইয়া যায় যে, কে মুসলিম আর কে কাফের? অথবা ইহাতে এই ইংগিত রহিয়াছে যে, চালচলন, আদর্শ ও নৈতিকতায় এবং সামাজিক জীবন যাপনে উভয়ের মধ্যে কোনই মিল থাকিতে পারিবে না। কিংবা মুসলমান পরকালে যেমন কাফেরদের হইতে দূরে থাকিবে, তদ্রূপ ইহকালেও তাহাদের সংস্রব হইতে দূরে থাকা চাই।