মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

১৯- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়

হাদীস নং: ৩৭৭০
- রাষ্ট্রনীতি ও আদালত-বিচার অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান
৩৭৭০। হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি নবী (ﷺ) হইতে এমন দুই ব্যক্তির ঝগড়া-বিবাদ সম্পর্কে বর্ণনা করেন, যাহারা মীরাস সম্পর্কীয় বিবাদ লইয়া হুযূর (ﷺ)-এর নিকট আসিয়াছিল, অথচ তাহাদের কাহারও কাছে কোন সাক্ষ্য প্রমাণ কিছুই ছিল না। শুধু দাবী-ই দাবী। তখন হুযুর ([ﷺ] তাহাদের উভয়কে লক্ষ্য করিয়া) বলিলেনঃ যদি আমি তোমাদের কাহাকেও তাহার ভাইয়ের হক প্রদান করি (অর্থাৎ, যে কেহ মিথ্যা বলিয়া অপরের হক আমার মাধ্যমে লইয়া যায়), তখন আমার সেই ফয়সালা তাহার জন্য হইবে (দোযখের) এক খণ্ড আগুন। হুযুরের এই কথা শুনিয়া তাহারা প্রত্যেকেই বলিয়া উঠিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আমার অংশটি আমার সঙ্গীকে (প্রতিপক্ষকে) প্রদান করিলাম এবং আমার দাবী প্রত্যাহার করিলাম। তখন হুযূর (ﷺ) বলিলেন, না। (এইভাবে হইবে না,) বরং তোমরা উভয়ে মিলিয়া মিশিয়া আধাআধি ভাগ করিয়া লইয়া যাও। আর বন্টনের মধ্যে ইনসাফ ও ন্যায়নীতির প্রতি লক্ষ্য রাখিবে। বন্টনের পর উভয় ভাগে লটারি করিবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যেকে নিজের প্রতিপক্ষ সঙ্গীকে ঐ অংশ হইতে মাফ করিয়া দিবে যাহার কাছে তোমার অংশ চলিয়া গিয়াছে। অন্য এক রেওয়ায়তে আছে, হুযূর (ﷺ) বলিয়াছেন, এই ফয়সালা আমি নিজের বুদ্ধি ও বিবেক দ্বারা তোমাদের মধ্যে করিব। কেননা, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন ওহী নাযিল হয় নাই। –আবু দাউদ
كتاب الإمارة والقضاء
وَعَنْ أُمِّ سَلَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فِي رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَيْهِ فِي مَوَارِيثَ لَمْ تَكُنْ لَهُمَا بَيِّنَةٌ إِلَّا دَعْوَاهُمَا فَقَالَ: «مَنْ قَضَيْتُ لَهُ بِشَيْءٍ مِنْ حَقِّ أَخِيهِ فَإِنَّمَا أَقْطَعُ لَهُ قِطْعَةً مِنَ النَّارِ» . فَقَالَ الرَّجُلَانِ: كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ حَقِّي هَذَا لِصَاحِبِي فَقَالَ: «لَا وَلَكِنِ اذْهَبَا فَاقْتَسِمَا وَتَوَخَّيَا الْحَقَّ ثُمَّ اسْتَهِمَا ثُمَّ لْيُحَلِّلْ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْكُمَا صَاحِبَهُ» . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «إِنَّمَا أَقْضِي بَيْنَكُمَا برأيي فِيمَا لم يُنزَلْ عليَّ فِيهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

হাদীসের ব্যাখ্যা:

যদি কোন একটি বস্তুর ব্যাপারে দাবীদার দুইজন হয় এবং কাহারও কাছে দাবীর সমর্থনে কোন সাক্ষ্য-প্রমাণ কিছুই না থাকে, এমতাবস্থায় ইমাম আহমদ ও ইসহাক বলেন, লটারি দ্বারা ফয়সালা করা হইবে। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা, সুফিয়ান সওরী এবং ইমাম শাফেয়ীর সর্বশেষ অভিমত এই যে, উভয়ের মধ্যে জিনিসটি আধাআধিভাবে ভাগ করিয়া দিতে হইবে। অবশ্য ভাগাভাগির পর অংশ নির্ধারণের জন্য লটারির আশ্রয় গ্রহণ করা উত্তম, যাহাতে আবার অংশ নির্ধারণে বিবাদ সৃষ্টি না হয়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মিশকাতুল মাসাবীহ - হাদীস নং ৩৭৭০ | মুসলিম বাংলা