মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৮৫২
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - নুবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৫৮৫২। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, (বাল্যকালে দুধ-মা হালীমার কাছে থাকা কালীন) একদা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমবয়সী বালকদের সহিত খেলাধুলা করিতেছিলেন। এমন সময় হযরত জিবরাঈল (আঃ) তাঁহার নিকট আসিলেন এবং তাঁহাকে ধরিয়া মাটিতে শোয়াইয়া ফেলিলেন। অতঃপর তাহার বক্ষ বিদীর্ণ করিয়া কলিজা হইতে একখণ্ড রক্তপিও বাহির করিয়া বলিলেন, তোমার দেহের অভ্যন্তরে ইহা শয়তানের অংশ। তারপর উহাকে একটি স্বর্ণ-পাত্রে রাখিয়া যমযমের পানি দ্বারা ধৌত করিলেন। অতঃপর উক্ত পিশুটিকে যথাস্থানে রাখিয়া জোড়া লাগাইয়া দিলেন। এই ঘটনা দেখিয়া খেলার সঙ্গী বালকেরা দৌড়াইয়া আসিয়া তাহার দুধ-মা হালীমার কাছে বলিল যে, মুহাম্মাদকে হত্যা করা হইয়াছে। এই সংবাদ শুনিয়া তাহারা ঘটনাস্থলে আসিয়া তাহাকে সুস্থ পাইল, তবে তাঁহার চেহারার বর্ণ অতিশয় বিষণ্ণ । বর্ণনাকারী হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমি প্রায়শঃ হুযুর (ছাঃ)-এর বক্ষের সেলাইটি দেখিতে পাইতাম। —মুসলিম
كتاب الفضائل والشمائل
بَاب عَلَامَات النُّبُوَّة: الْفَصْل الأول
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَاهُ جِبْرِيلُ وَهُوَ يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ فَأَخَذَهُ فَصَرَعَهُ فَشَقَّ عَنْ قَلْبِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ عَلَقَةً. فَقَالَ: هَذَا حَظُّ الشَّيْطَانِ مِنْكَ ثُمَّ غَسَلَهُ فِي طَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ لَأَمَهُ وَأَعَادَهُ فِي مَكَانِهِ وَجَاءَ الْغِلْمَانُ يَسْعَوْنَ إِلَى أُمِّهِ يَعْنِي ظِئْرَهُ. فَقَالُوا: إِنْ مُحَمَّدًا قَدْ قُتِلَ فَاسْتَقْبَلُوهُ وَهُوَ مُنْتَقَعُ اللَّوْنِ قَالَ أَنَسٌ: فَكُنْتُ أَرَى أَثَرَ الْمِخْيَطِ فِي صَدْرِهِ. رَوَاهُ مُسلم
হাদীসের ব্যাখ্যা:
নবুওতের নিদর্শন ও নবীদের মু'জেযা — মূলতঃ বস্তু দুইটি একই পর্যায়ের। তবে উভয়ের মধ্যে এতটুকু পার্থক্য বলা যায় যে, প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জের মুকাবিলায় যাহা পেশ করা হইয়াছে উহাই নবীদের মু'জেযা। যেমন, চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত করা। আর যেইটিতে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ ছিল না, যেমন, খাদ্য বৃদ্ধি হওয়া, লোকদের অযুর জন্য নবী (ﷺ)-এর হাতের অঙ্গুলী হইতে পানির ফোয়ারা নির্গত হওয়া প্রভৃতি নবুওতের নিদর্শন বলা হয়। মোটকথা; উভয়টিই অলৌকিক ও গায়েব সম্পর্কীয় ব্যাপার। তাই দুইটিকে এক পর্যায়ভুক্ত বলা যায়। যদিও গ্রন্থকার উভয়টির জন্য পৃথক পৃথক অধ্যায় স্থাপন করিয়াছেন। — অনুবাদক
'শরহে মাওয়াহিব' গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বক্ষ বিদীর্ণ (সীনা চাক্) ঘটনা চারবার সংঘটিত হইয়াছে। যথা- (১) শিশুকালে হালীমার কাছে থাকাকালীন— যাহা আলোচ্য হাদীসে বর্ণিত হইয়াছে। (২) দশ বৎসর বয়সে — মুসনাদে আহমদ, হাকেম ও ইবনে হাব্বান বর্ণনা করিয়াছেন। (৩) নবুওত প্রাপ্তিকালে —হযরত আয়েশা হইতে বায়হাকী ও আবু দাউদ বর্ণনা করিয়াছেন। (৪) মে'রাজের প্রাক্কালে — বুখারী ও মুসলিম হযরত আনাস হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। (তা'লীক)
'শরহে মাওয়াহিব' গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বক্ষ বিদীর্ণ (সীনা চাক্) ঘটনা চারবার সংঘটিত হইয়াছে। যথা- (১) শিশুকালে হালীমার কাছে থাকাকালীন— যাহা আলোচ্য হাদীসে বর্ণিত হইয়াছে। (২) দশ বৎসর বয়সে — মুসনাদে আহমদ, হাকেম ও ইবনে হাব্বান বর্ণনা করিয়াছেন। (৩) নবুওত প্রাপ্তিকালে —হযরত আয়েশা হইতে বায়হাকী ও আবু দাউদ বর্ণনা করিয়াছেন। (৪) মে'রাজের প্রাক্কালে — বুখারী ও মুসলিম হযরত আনাস হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। (তা'লীক)