মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৮৫৭
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - নুবুওয়্যাতের নিদর্শনসমূহ
৫৮৫৭। হযরত আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, একদা অমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তাহার কাছে এক লোক আসিয়া দরিদ্রতার অনুযোগ করিল। ইহার পর আরেক ব্যক্তি আসিয়া রাস্তায় ডাকাতির অনুযোগ করিল। তখন হুযুর (ছাঃ) আমাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেনঃ হে আদী। তুমি কি কখনও হীরা শহরটি দেখিয়াছ। (ইহা কুফার একটি প্রসিদ্ধ শহর, বর্তমানে ইরাকের একটি প্রদেশ।) যদি তুমি দীর্ঘ দিন বাচিয়া থাক তাহা হইলে অবশ্যই দেখিতে পাইবে যে, একটি মহিলা হীরা হইতে সফর করিয়া মক্কায় গমন করিবে এবং নির্বিঘ্নে কা'বা শরীফ তওয়াফ করিবে, অথচ এক আল্লাহ্ ছাড়া তাহার অন্তরে আর কাহারও ভয় থাকিবে না।
আর যদি তুমি দীর্ঘ দিন বাচিয়া থাক তাহা হইলে দেখিতে পাইবে, অচিরেই পারস্যের ধন ভাণ্ডার বিজিত হইবে (অর্থাৎ, উহা গনীমত হিসাবে মুসলমানদের হাতে আসিবে, আর যদি তুমি দীর্ঘজীবী হও, তাহা হইলে এমনও দেখিবে যে, এক ব্যক্তি দান-খয়রাত করার উদ্দেশ্যে মুষ্টি ভরিয়া সোনা অথবা রূপা লইয়া বাহির হইয়াছে এবং তাহা গ্রহণ করিবার জন্য লোক তালাশ করিতেছে। কিন্তু তাহার নিকট হইতে উহা গ্রহণ করিবার মত কোন একজন লোকও সে খুঁজিয়া পাইবে না। আর নিশ্চয়ই তোমাদের কেহ একদিন আল্লাহর সম্মুখে এমন অবস্থায় উপস্থিত হইবে যে, তাহার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে এমন কোন ব্যক্তি থাকিবে না, যে তাহার অবস্থা আল্লাহর সম্মুখে পেশ করিবে। তখন আল্লাহ্ পাক তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবেন; আমি কি তোমার কাছে কোন রাসূল পাঠাই নাই, যিনি দ্বীন শরীআতের কথা তোমার কাছে পৌঁছাইবে? সে বলিবে, হ্যাঁ, নিশ্চয় পাঠাইয়াছেন। আল্লাহ্ আবার জিজ্ঞাসা করিবেন; আমি কি তোমাকে ধন-সম্পদ দান করি নাই এবং আমি তোমার উপর অনুগ্রহ করি নাই। সে বলিবে, হ্যাঁ, করিয়াছেন। অতঃপর সে নিজের ডানদিকে তাকাইবে, কিন্তু জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পাইবে না। আবার নিজের বামদিকে তাকাইবে, কিন্তু সেখানেও জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখিবে না। [এই দৃশ্য বর্ণনার পর হুযুর (ছাঃ) বলিলেন ;] তোমরা খেজুরের এক টুকরা দান করিয়া হইলেও নিজেকে দোযখের আগুন হইতে বাচাও। যদি কেহ এতটুকুও না পায়, তবে অন্ততঃ মিষ্টি কথা দ্বারা আত্মরক্ষা কর। বর্ণনাকারী আদী বলেন রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর বাণী মোতাবেক একজন মহিলাকে হীরা হইতে একাকিনী সফর করিয়া কা'বা শরীফ তওয়াফ করিতে আমি নিজে দেখিয়াছি। অথচ সে আল্লাহ্ ছাড়া আর কাহাকেও ভয় করে নাই। আর কিা ইবনে হরমুখের (অর্থাৎ, পারস্যের) ধনভাণ্ডার যাঁহারা উন্মুক্ত করিয়াছেন, আমিও তাহাদের সাথে শরীক ছিলাম। অতঃপর বর্ণনাকারী হযরত আদী (রাঃ) তাহার পরবর্তী লোকদিগকে উদ্দেশ্য করিয়া বলেন, যদি তোমরা দীর্ঘায়ু হও তাহা হইলে নবী আবুল কাসেম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ভবিষ্যদ্বাণী “কোন ব্যক্তি মুষ্টি ভরিয়া -ও দেখিতে পাইবে। —বুখারী
আর যদি তুমি দীর্ঘ দিন বাচিয়া থাক তাহা হইলে দেখিতে পাইবে, অচিরেই পারস্যের ধন ভাণ্ডার বিজিত হইবে (অর্থাৎ, উহা গনীমত হিসাবে মুসলমানদের হাতে আসিবে, আর যদি তুমি দীর্ঘজীবী হও, তাহা হইলে এমনও দেখিবে যে, এক ব্যক্তি দান-খয়রাত করার উদ্দেশ্যে মুষ্টি ভরিয়া সোনা অথবা রূপা লইয়া বাহির হইয়াছে এবং তাহা গ্রহণ করিবার জন্য লোক তালাশ করিতেছে। কিন্তু তাহার নিকট হইতে উহা গ্রহণ করিবার মত কোন একজন লোকও সে খুঁজিয়া পাইবে না। আর নিশ্চয়ই তোমাদের কেহ একদিন আল্লাহর সম্মুখে এমন অবস্থায় উপস্থিত হইবে যে, তাহার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে এমন কোন ব্যক্তি থাকিবে না, যে তাহার অবস্থা আল্লাহর সম্মুখে পেশ করিবে। তখন আল্লাহ্ পাক তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবেন; আমি কি তোমার কাছে কোন রাসূল পাঠাই নাই, যিনি দ্বীন শরীআতের কথা তোমার কাছে পৌঁছাইবে? সে বলিবে, হ্যাঁ, নিশ্চয় পাঠাইয়াছেন। আল্লাহ্ আবার জিজ্ঞাসা করিবেন; আমি কি তোমাকে ধন-সম্পদ দান করি নাই এবং আমি তোমার উপর অনুগ্রহ করি নাই। সে বলিবে, হ্যাঁ, করিয়াছেন। অতঃপর সে নিজের ডানদিকে তাকাইবে, কিন্তু জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখিতে পাইবে না। আবার নিজের বামদিকে তাকাইবে, কিন্তু সেখানেও জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই দেখিবে না। [এই দৃশ্য বর্ণনার পর হুযুর (ছাঃ) বলিলেন ;] তোমরা খেজুরের এক টুকরা দান করিয়া হইলেও নিজেকে দোযখের আগুন হইতে বাচাও। যদি কেহ এতটুকুও না পায়, তবে অন্ততঃ মিষ্টি কথা দ্বারা আত্মরক্ষা কর। বর্ণনাকারী আদী বলেন রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর বাণী মোতাবেক একজন মহিলাকে হীরা হইতে একাকিনী সফর করিয়া কা'বা শরীফ তওয়াফ করিতে আমি নিজে দেখিয়াছি। অথচ সে আল্লাহ্ ছাড়া আর কাহাকেও ভয় করে নাই। আর কিা ইবনে হরমুখের (অর্থাৎ, পারস্যের) ধনভাণ্ডার যাঁহারা উন্মুক্ত করিয়াছেন, আমিও তাহাদের সাথে শরীক ছিলাম। অতঃপর বর্ণনাকারী হযরত আদী (রাঃ) তাহার পরবর্তী লোকদিগকে উদ্দেশ্য করিয়া বলেন, যদি তোমরা দীর্ঘায়ু হও তাহা হইলে নবী আবুল কাসেম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই ভবিষ্যদ্বাণী “কোন ব্যক্তি মুষ্টি ভরিয়া -ও দেখিতে পাইবে। —বুখারী
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ: بَيْنَا أَنَا عِنْد النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَتَاهُ رَجُلٌ فَشَكَا إِلَيْهِ الْفَاقَةَ ثُمَّ أَتَاهُ الْآخَرُ فَشَكَا إِلَيْهِ قَطْعَ السَّبِيلِ. فَقَالَ: يَا عدي هَل رَأَيْتَ الْحِيرَةَ؟ فَإِنْ طَالَتْ بِكَ حَيَاةٌ فَلَتَرَيَنَّ الظَّعِينَةَ تَرْتَحِلُ مِنَ الْحِيرَةِ حَتَّى تَطُوفَ بِالْكَعْبَةِ لَا تَخَافُ أَحَدًا إِلَّا اللَّهَ وَلَئِنْ طَالَتْ بك حَيَاةٌ لَتُفْتَحَنَّ كُنُوزُ كِسْرَى وَلَئِنْ طَالَتْ بِكَ حَيَاةٌ لَتَرَيَنَّ الرَّجُلَ يَخْرُجُ مِلْءَ كَفِّهِ مِنْ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ يَطْلُبُ مَنْ يَقْبَلُهُ فَلَا يجد أحدا يقبله مِنْهُ وَلَيَلْقَيَنَّ اللَّهَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ يَلْقَاهُ وَلَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ يُتَرْجِمُ لَهُ فَلَيَقُولَنَّ: أَلَمْ أَبْعَثْ إِليك رَسُولا فليبلغك؟ فَيَقُولُ: بَلَى. فَيَقُولُ: أَلَمْ أُعْطِكَ مَالًا وَأُفْضِلْ عَلَيْكَ؟ فَيَقُولُ: بَلَى فَيَنْظُرُ عَنْ يَمِينِهِ فَلَا يَرَى إِلَّا جَهَنَّمَ وَيَنْظُرُ عَنْ يَسَارِهِ فَلَا يَرَى إِلَّا جَهَنَّمَ اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ فَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَبِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ قَالَ عَدِيٌّ: فَرَأَيْتُ الظَّعِينَةَ تَرْتَحِلُ مِنَ الْحِيرَةِ حَتَّى تَطُوفَ بِالْكَعْبَةِ لَا تَخَافُ إِلَّا اللَّهَ وَكُنْتُ فِيمَنِ افْتَتَحَ كُنُوزَ كِسْرَى بْنِ هُرْمُزَ وَلَئِنْ طَالَتْ بِكُمْ حَيَاةٌ لَتَرَوُنَّ مَا قَالَ النَّبِيُّ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَخْرُجُ ملْء كفيه» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে বলেছেন। জাহান্নাম পাপীদের ঠিকানা। সেখানে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা আছে। তার প্রধান শাস্তিالنار (আগুন)। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বার বার মানুষকে এ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এবং এর থেকে বাঁচার তাগিদ দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ হয়েছেঃ– فاتقوا النار التي وقودها الناس والحجارة অর্থ : তোমরা বাঁচ ওই আগুন থেকে, যার ইন্ধন মানুষ ও পাথর। জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে আল্লাহ তা'আলার আদেশ–নিষেধ পালন করা। অর্থাৎ সৎকর্ম করতে থাকা ও অসৎকর্ম পরিহার করে চলা। সৎকর্ম আছে বিভিন্ন রকম, যেমন পূর্বের হাদীছসমূহ দ্বারা আমরা জানতে পেরেছি। তার মধ্যে একটা সৎকর্ম বলা হয়েছে আল্লাহর পথে দান–সদাকা করা।
এ হাদীছেও প্রধানত সদাকার কথাই বলা হয়েছে যে, একটা খেজুরের একটি অংশ সদাকা করে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এর দ্বারা সর্বনিম্ন সামর্থ্যের কথা বোঝানো হয়েছে। কারও অবস্থা যদি এমন হয় যে, সে কোনও ক্ষুধার্তকে একটা মাত্র খেজুর দেওয়ারও সামর্থ্য রাখে না, অর্থাৎ দেওয়ার মত একটা খেজুরও তার কাছে নেই, একটা খেজুরের অর্ধেক মাত্র আছে, তবে সে সে অর্ধেকটুকুই দিয়ে দেবে। আল্লাহ তা'আলা মানুষের দানের অঙ্ক দেখেন না। তিনি দেখেন তার মন। অর্থাৎ তার মনে দেওয়ার ইচ্ছা আছে কি না। যদি দেওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী যা দেবে তা–ই আল্লাহর কাছে মূল্যবান। তাকেই আল্লাহ তার জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে কবূল করে নেবেন।
এরপর বলা হয়েছে যদি কারও অর্ধেকটুকু দেওয়ারও ক্ষমতা না থাকে, তবে তার যে আর জাহান্নাম থেকে বাঁচার কোনও উপায় রইল না এমন নয়, সে এর জন্য অন্য কোনও উপায় অবলম্বন করতে পারে। সেরকম একটি উপায় হচ্ছে উত্তম কথা বলা। উত্তম কথা বলাও সদাকাতুল্য। অর্থাৎ এর দ্বারাও সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং যে ব্যক্তি দান–সদাকা করার সামর্থ্য রাখে না, সে যদি উত্তম কথা বলে, তবে এর মাধ্যমেও সে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারবে।
উত্তম কথা অতি ব্যাপক। এর মধ্যে যেমন কুরআন তিলাওয়াত ও যিকর–তাসবীহ ইত্যাদি রয়েছে, তেমনি মানুষকে সুপরামর্শ দেওয়া, সৎকাজের আদেশ করা, অসৎকাজে নিষেধ করা, বৈধ সুপারিশ করা, দীনী ইলম শেখানো, শোকার্তকে সান্ত্বনা দেওয়া ইত্যাদিও এর অন্তর্ভুক্ত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ভালো ও মন্দ কোনও আমলকেই অবহেলা করতে নেই। আখিরাতে সবই নিজ চোখে দেখতে পাওয়া যাবে এবং তার পুরোপুরি প্রতিফলও দেওয়া হবে।
খ. দান–সদাকা জাহান্নাম থেকে বাঁচার একটি উপায়। কাজেই যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব দান–সদাকা করা উচিত।
গ. নিতান্ত গরীব ব্যক্তি যদি অতি সামান্য কিছুও দান করে, তবে তাও তার জাহান্নাম থেকে বাঁচার কারণ হতে পারে। কাজেই সামান্য বলে তাকে তুচ্ছ মনে করতে নেই।
ঘ. উত্তম কথা বলাও যেহেতু জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায়, তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যথাসম্ভব ভালো ভালো কথা বলতে সচেষ্ট থাকা এবং কোনও অবস্থাতেই কোনও মন্দ কথা না বলা।
এ হাদীছেও প্রধানত সদাকার কথাই বলা হয়েছে যে, একটা খেজুরের একটি অংশ সদাকা করে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এর দ্বারা সর্বনিম্ন সামর্থ্যের কথা বোঝানো হয়েছে। কারও অবস্থা যদি এমন হয় যে, সে কোনও ক্ষুধার্তকে একটা মাত্র খেজুর দেওয়ারও সামর্থ্য রাখে না, অর্থাৎ দেওয়ার মত একটা খেজুরও তার কাছে নেই, একটা খেজুরের অর্ধেক মাত্র আছে, তবে সে সে অর্ধেকটুকুই দিয়ে দেবে। আল্লাহ তা'আলা মানুষের দানের অঙ্ক দেখেন না। তিনি দেখেন তার মন। অর্থাৎ তার মনে দেওয়ার ইচ্ছা আছে কি না। যদি দেওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে তার সামর্থ্য অনুযায়ী যা দেবে তা–ই আল্লাহর কাছে মূল্যবান। তাকেই আল্লাহ তার জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে কবূল করে নেবেন।
এরপর বলা হয়েছে যদি কারও অর্ধেকটুকু দেওয়ারও ক্ষমতা না থাকে, তবে তার যে আর জাহান্নাম থেকে বাঁচার কোনও উপায় রইল না এমন নয়, সে এর জন্য অন্য কোনও উপায় অবলম্বন করতে পারে। সেরকম একটি উপায় হচ্ছে উত্তম কথা বলা। উত্তম কথা বলাও সদাকাতুল্য। অর্থাৎ এর দ্বারাও সদাকার ছাওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং যে ব্যক্তি দান–সদাকা করার সামর্থ্য রাখে না, সে যদি উত্তম কথা বলে, তবে এর মাধ্যমেও সে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারবে।
উত্তম কথা অতি ব্যাপক। এর মধ্যে যেমন কুরআন তিলাওয়াত ও যিকর–তাসবীহ ইত্যাদি রয়েছে, তেমনি মানুষকে সুপরামর্শ দেওয়া, সৎকাজের আদেশ করা, অসৎকাজে নিষেধ করা, বৈধ সুপারিশ করা, দীনী ইলম শেখানো, শোকার্তকে সান্ত্বনা দেওয়া ইত্যাদিও এর অন্তর্ভুক্ত।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. ভালো ও মন্দ কোনও আমলকেই অবহেলা করতে নেই। আখিরাতে সবই নিজ চোখে দেখতে পাওয়া যাবে এবং তার পুরোপুরি প্রতিফলও দেওয়া হবে।
খ. দান–সদাকা জাহান্নাম থেকে বাঁচার একটি উপায়। কাজেই যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব দান–সদাকা করা উচিত।
গ. নিতান্ত গরীব ব্যক্তি যদি অতি সামান্য কিছুও দান করে, তবে তাও তার জাহান্নাম থেকে বাঁচার কারণ হতে পারে। কাজেই সামান্য বলে তাকে তুচ্ছ মনে করতে নেই।
ঘ. উত্তম কথা বলাও যেহেতু জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায়, তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত যথাসম্ভব ভালো ভালো কথা বলতে সচেষ্ট থাকা এবং কোনও অবস্থাতেই কোনও মন্দ কথা না বলা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)