মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৯৩২
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা
৫৯৩২। হযরত সাহল ইবনে হানযালিয়া (রাঃ) বলেন, হোনাইনের যুদ্ধের দিন তাহারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাথে সফরে বাহির হইলেন। সফরটি কিছুটা দীর্ঘ হইল, এমন কি সন্ধ্যা আসিয়া গেল। এমন সময় একজন অশ্বারোহী আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি অমুক অমুক পাহাড়ের উপর উঠিয়াছিলাম, তখন দেখিতে পাইলাম, হাওয়াযেন গোত্রের লোকেরা সর্বসাকল্যে আসিয়া পড়িয়াছে। তাহাদের সঙ্গে তাহাদের মহিলাগণ, মাল-সম্পদ এবং সর্বপ্রকারের গবাদিপশুসমূহ রহিয়াছে; আর তাহারা সকলে হোনাইন এলাকায় সমবেত হইয়াছে। এই কথা শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মৃদু হাসিলেন এবং বলিলেনঃ ইন্‌শাআল্লাহ্ ! আগামীকাল এই সমস্ত জিনিস মুসলমানদের গনীমতের মালে পরিণত হইবে।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, আজ রাতে (তোমাদের) কে আমাদিগকে পাহারা দিবে ? আনাস ইবনে আবু মারসাদ গানাভী (রাঃ) বলিলেন, আমিই ইয়া রাসুলাল্লাহ্! তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, আচ্ছা, আরোহণ কর। তখন তিনি তাঁহার অশ্বে সওয়ার হইলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, তুমি এই পাহাড়ী রাস্তায় অগ্রসর হও, এমন কি এই পাহাড়ের উপরে পৌঁছিয়া যাও। (বর্ণনাকারী বলেন,) যখন ভোর হইল, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নামাযের জন্য বাহির হইলেন। দুই রাকআত সুন্নত পড়িয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমরা তোমাদের অশ্বারোহীর আভাস পাইয়াছ কি ? তখন এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আভাস পাই নাই। অতঃপর নামাযের জন্য একামত দেওয়া হইল, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) নামায পড়াইতে পড়াইতে কানি চোখে সেই গিরিপথের দিকে তাকাইতেছিলেন। নামায শেষ করিয়াই তিনি বলিলেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। তোমাদের অশ্বারোহী আসিয়া পৌঁছিয়াছে। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমরা বৃক্ষরাজির মাঝে পাহাড়ী পথে সেই দিকে তাকাইয়া দেখিলাম, তিনি আসিয়া রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে দাঁড়াইলেন, অতঃপর বলিলেন, আমি রওয়ানা হইয়া ঐ পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠিয়াছিলাম, যেইখানে উঠিবার জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে নির্দেশ করিয়াছিলেন। যখন আমি ভোরে উপনীত হইলাম, তখন আমি উভয় পাহাড়ের চূড়ায় উঠিয়া এইদিক সেইদিক তাকাইলাম; কিন্তু কাহাকেও দেখিতে পাই নাই। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সেই অশ্বারোহী (আনাস )-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি রাতের বেলায় (সওয়ারীর উপর হইতে) অবতরণ করিয়াছিলে? তিনি বলিলেন, না। তবে শুধু নামাযের জন্য অথবা প্রাকৃতিক প্রয়োজন মিটানোর জন্য। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, (আজ রাতে যেই মহৎ ও বিরাট কাজ তুমি আঞ্জাম দিয়াছ,) ইহার পর তুমি অন্য কোন প্রকারের (নফল) আমল না করিলেও তোমার কোন ক্ষতি হইবে না। –আবু দাউদ
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَن سهل ابْن الْحَنْظَلِيَّةِ أَنَّهُمْ سَارُوا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ حُنَيْنٍ فَأَطْنَبُوا السَّيْرَ حَتَّى كَانَت عَشِيَّةً فَجَاءَ فَارِسٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي طَلِعْتُ عَلَى جَبَلِ كَذَا وَكَذَا فَإِذَا أَنَا بِهَوَازِنَ عَلَى بَكْرَةِ أَبِيهِمْ بِظُعُنِهِمْ وَنَعَمِهِمُ اجْتَمَعُوا إِلَى حُنَيْنٍ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ تِلْكَ غَنِيمَةٌ الْمُسْلِمِينَ غَدا إِن شَاءَ الله ثمَّ قَالَ مَنْ يَحْرُسُنَا اللَّيْلَةَ قَالَ أَنَسُ بْنُ أَبِي مَرْثَدٍ الْغَنَوِيُّ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ارْكَبْ فَرَكِبَ فَرَسًا لَهُ فَقَالَ: «اسْتَقْبِلْ هَذَا الشِّعْبَ حَتَّى تَكُونَ فِي أَعْلَاهُ» . فَلَمَّا أَصْبَحْنَا خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى مُصَلَّاهُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ قَالَ هَلْ حسستم فارسكم قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا حَسِسْنَا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي وَهُوَ يَلْتَفِتُ إِلَى الشِّعْبِ حَتَّى إِذَا قَضَى الصَّلَاةَ قَالَ أَبْشِرُوا فَقَدْ جَاءَ فَارِسُكُمْ فَجَعَلْنَا نَنْظُرُ إِلَى خِلَالِ الشَّجَرِ فِي الشِّعْبِ فَإِذَا هُوَ قَدْ جَاءَ حَتَّى وَقَفَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسلم فَقَالَ إِنِّي انْطَلَقْتُ حَتَّى كُنْتُ فِي أَعْلَى هَذَا الشِّعْبِ حَيْثُ أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا أَصبَحت اطَّلَعت الشِّعْبَيْنِ كِلَيْهِمَا فَلَمْ أَرَ أَحَدًا فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ نَزَلْتَ اللَّيْلَةَ قَالَ لَا إِلَّا مُصَلِّيَا أَوْ قَاضِيَ حَاجَةٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «فَلَا عَلَيْكَ أَنْ لَا تَعْمَلَ بعدَها» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

হাদীসের ব্যাখ্যা:

على بكرة أبيهم (বাপের উটে আসা) ইহা একটি প্রবাদ বাক্য। ইহার অর্থঃ, তাহারা সদলবলে আসিয়াছে, তাহাদের কেহই বাকী থাকে নাই। যদিও তাহাদের সাথে উট না থাকে।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান