মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
হাদীস নং: ৫৯৬৯
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওফাতের পর সাহাবীদের মক্কাহ্ হতে হিজরত করা সম্পর্কে
৫৯৬৯। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন সূরা নাযিল হইল, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হযরত ফাতেমাকে ডাকিয়া বলিলেনঃ আমাকে আমার মৃত্যুর সংবাদ দেওয়া হইয়াছে। এই কথা শুনিয়া ফাতেমা কাঁদিয়া দিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, তুমি কাদিও না। কেননা, আমার পরিবারের মধ্যে তুমিই প্রথম আমার সঙ্গে মিলিত হইবে। তখন ফাতেমা হাসিলেন। হযরত ফাতেমার এই অবস্থা দেখিয়া নবী (ﷺ)-এর কোন এক বিবি জিজ্ঞাসা করিলেন, হে ফাতেমা ! আমরা প্রথমে একবার তোমাকে দেখিলাম কাঁদিতে। আবার পরে দেখিলাম হাসিতে (ইহার হেতু কি)? উত্তরে ফাতেমা বলিলেন, প্রথমে তিনি আমাকে বলিয়াছেন, “তাহাকে তাহার মৃত্যু-সংবাদ দেওয়া হইয়াছে।” ইহা শুনিয়া আমি কাঁদিয়া ফেলি। অতঃপর তিনি আমাকে বলিলেন, “তুমি কাঁদিও না। কারণ, আমার পরিবারের মধ্য হইতে তুমিই সর্বপ্রথম আমার সাথে মিলিত হইবে।” এই কথা শুনিয়া আমি হাসিলাম। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, যখন আল্লাহর সাহায্য আসিয়াছে এবং মক্কাও বিজিত হইয়াছে এবং ইয়ামনবাসীগণ (ইসলাম গ্রহণ করিয়া) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে আসিয়াছে, তাহারা কোমল অন্তরের অধিকারী, ঈমান ইয়ামনবাসীদের মধ্যে এবং হিকমতও ইয়ামনবাসীদের মধ্যে রহিয়াছে। — দারেমী
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ [إِذَا جَاءَ نصر الله وَالْفَتْح] دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ قَالَ: «نُعِيَتْ إِلَيَّ نَفْسِي» فَبَكَتْ قَالَ: «لَا تَبْكِي فَإِنَّكِ أَوَّلُ أَهْلِي لَاحِقٌ بِي» فَضَحِكَتْ فَرَآهَا بَعْضُ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْنَ: يَا فَاطِمَةُ رَأَيْنَاكِ بَكَيْتِ ثُمَّ ضَحِكْتِ. قَالَتْ: إِنَّهُ أَخْبَرَنِي أَنَّهُ قَدْ نُعِيَتْ إِلَيْهِ نَفْسُهُ فَبَكَيْتُ فَقَالَ لِي: لَا تبْكي فإِنك أوَّلُ أَهلِي لاحقٌ بِي فضحكتُ. وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا جَاءَ نصرُ الله وَالْفَتْح وَجَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً وَالْإِيمَانُ يمانٍ وَالْحكمَة يَمَانِية» . رَوَاهُ الدَّارمِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
“ইয়ামনবাসী” দ্বারা কাহারও মতে মক্কাবাসীকে বুঝান হইয়াছে। কেননা, ঈমানের প্রথম সূচনা হইয়াছে মক্কা হইতে। মক্কার একাংশ “তিহামা” এবং তিহামা হইল ইয়ামনের অংশ। আবার কাহারও মতে, “ইয়ামনী” দ্বারা মদীনার আনসারীগণের প্রতি ইংগিত করা হইয়াছে। কেননা, আনসারীদের আদি বংশ ইয়ামনী। কিন্তু প্রসিদ্ধ মত হইল, আলে-ইয়ামন দ্বারা হযরত আবু মূসা আশআরী ও তাঁহার সঙ্গী-সাথীদেরে বুঝান হইয়াছে, তাঁহারা ইসলামের আহ্বানে সাড়া দিয়া নিজ ইচ্ছায় হুযুরের খেদমতে হাযির হইয়াছিলেন। এই কথাটি সূরার দ্বিতীয় আয়াত وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا -এর ব্যাখ্যাস্বরূপ নবী (ﷺ) এরশাদ করেন। নবী (ﷺ)-এর ওফাতের মাত্র ছয় মাস পর হযরত ফাতেমা ইনতেকাল করিয়াছেন, তাঁহার আগে আহলে বায়তের আর কেহ ওফাত পান নাই।