আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৬২- চিকিৎসা - তদবীরের অধ্যায়

হাদীস নং: ৫৩৪৭
আন্তর্জাতিক নং: ৫৭৫৮
- চিকিৎসা - তদবীরের অধ্যায়
৩০৪৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৭। সা‘ঈদ ইবনে উফায়র (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার হুযায়ল গোত্রের দুই মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাদের একজন অন্য জনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের সন্তানকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নবী করীম (ﷺ) -এর নিকট অভিযোগ পেশ করে। তিনি বিচার করেন যে, এর পেটের সন্তানের পরিবর্তে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন আরোপিত হবে, যে পান করেনি, আহার করেনি, কথা বলেনি, এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা মউকুফ হওয়ার যোগ্য। তখন নবী করীম (ﷺ) বললেনঃ এ লোকটি তো (দেখা যায়) গণকদের ভাই।
كتاب الطب
باب الْكَهَانَةِ
5758 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى فِي امْرَأَتَيْنِ مِنْ هُذَيْلٍ اقْتَتَلَتَا، فَرَمَتْ إِحْدَاهُمَا الأُخْرَى بِحَجَرٍ، فَأَصَابَ بَطْنَهَا وَهِيَ حَامِلٌ، فَقَتَلَتْ وَلَدَهَا الَّذِي فِي بَطْنِهَا، فَاخْتَصَمُوا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَضَى: أَنَّ دِيَةَ مَا فِي بَطْنِهَا غُرَّةٌ عَبْدٌ أَوْ أَمَةٌ، فَقَالَ وَلِيُّ المَرْأَةِ الَّتِي غَرِمَتْ: كَيْفَ أَغْرَمُ، يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَنْ لاَ شَرِبَ وَلاَ أَكَلَ، وَلاَ نَطَقَ وَلاَ اسْتَهَلَّ، فَمِثْلُ ذَلِكَ يُطَلُّ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّمَا هَذَا مِنْ إِخْوَانِ الكُهَّانِ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

অশুভ লক্ষণ প্রসঙ্গ

বিনা হিসাবে জান্নাত লাভকারীদের গুণ- তারা কোনওকিছুকে অশুভ লক্ষণ মনে করে না। হাদীছের শব্দ হল لا يتطيرون । এর মূল শব্দ طير, যার অর্থ পাখি। জাহিলী যুগে মানুষ বিশেষ কোনও কাজ করার সময় বা কোনওদিকে যাত্রাকালে পাখির দিকে লক্ষ করত। যদি দেখত পাখি ডানদিকে উড়ে গেছে, তবে তাকে শুভলক্ষণ মনে করত এবং কাজটি সম্পন্ন করত। আর যদি বামদিকে উড়ত, তবে অশুভলক্ষণ মনে করত এবং সে কাজ থেকে বিরত থাকত। অনেক সময় তারা ইচ্ছাকৃতই পাখি উড়াত এবং লক্ষ করত সেটি ডানে যাচ্ছে না বামে। আর সে হিসেবে কাজ করা বা না করার ফয়সালা নিত। ইসলাম এটাকে নিষিদ্ধ করেছে। কেননা এটা মূর্খতা। পাখির ডানে বামে উড়ার সাথে শুভ-অশুভের কী সম্পর্ক? এটা একটা কুসংস্কার। ইসলাম কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দেয় না। তাছাড়া এটা তাওয়াক্কুলেরও পরিপন্থি। শুভ-অশুভ আল্লাহর হাতে। হবে সেটাই, যা তিনি চান। পাখির উড়ায় কিছু হবে না। এর প্রতি বিশ্বাস রাখা শিরকও বটে। এটা আল্লাহর একচ্ছত্র ক্ষমতায় অন্যকে অংশীদার বানানোর নামান্তর। সুতরাং এর থেকে বেঁচে থাকা অবশ্যকর্তব্য। এরকম আরও যত কুসংস্কার আছে, যেমন কাকের ডাককে কোনও বিপদের সংকেত মনে করা, যাত্রাকালে ঝাড়ু দেখলে যাত্রা অশুভ মনে করা, যাত্রাকালে কেউ হাঁচি দিলে তাকে বিপদসংকেত মনে করা ইত্যাদি, এসবই অবশ্যই পরিত্যাজ্য। ইসলামে এসব কুসংস্কারের কোনও স্থান নেই। এ জাতীয় ধারণা কঠিন পাপ।
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)