ফায়ার সার্ভিসের চাকরী করা কি জায়েজ?
প্রশ্নঃ ২৬৮৯৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ চাকরি করি। আমরা যে কোনো দুর্যোগ দুর্ঘটনায় কোনো অর্থ ছাড়া কাজ করি। আমাদের চাকরিটা ইসলামি শরিয়া হালাল নাকি হারাম। আর আমাদের চাকরির শেষে যে ফেনশন পেয়ে তাকি সেটা নেওয়া ইসলামি শরিয়া কি বলে।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সন্মানিত প্রশ্নকারী!
হাদিস শরীফে রাসুলুল্লাহ সা বলেছেন
إن هذه النار عدو لكم، فإذا نمتم، فأطفئوه
এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের জন্য চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘুমাতে যাবে, তখন তোমাদেরই হিফাযতের জন্য তা নিভিয়ে ফেলবে। (বুখারী ও মুসলিম)
https://muslimbangla.com/hadith/6501
এখানে যদিও রাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তবে সঠিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ না হলে আগুন সবখানেই ক্ষতিকর ও বিপদজনক। তাই অগ্নিনির্বাপণ নিঃসন্দেহে একটি ভালো এবং সাওয়াবের কাজ।
আর শর্তসাপেক্ষে সরকারের অধীনে চাকুরী করা এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত পেনশন গ্রহন করা জায়েজ আছে। তাই আপনাদের চাকরি করা এবং পেনশন গ্রহণ করা (যদি সেখানে অন্যকোনো শরিয়া বিরোধী বিষয় যেমন, মিথ্যা, প্রতারণা, ধোঁকা, কাজে ফাঁকি দেওয়া ইত্যাদি না থাকে) বৈধ।
উল্লেখ্য, চাকরির বেতনের সাথে সুদ যুক্ত হয় কি না? সেই বিষয়টি এবং পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সংক্রান্ত মাসায়েল ভিন্নভাবে জেনে নিন। আমাদের মাসায়েল সেকশনেও এজাতীয় অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। দয়া করে সার্চ করে দেখে নিন।
باب النهي عن ترك النار في البيت عند النومتطريز رياض الصالحين
عن أبي موسى الأشعري - رضي الله عنه - قال: احترق بيت بالمدينة على أهله من الليل، فلما حدث رسول الله - صلى الله عليه وسلم - بشأنهم، قال: «إن هذه النار عدو لكم، فإذا نمتم، فأطفئوها» متفق عليه.
----------------
فيه: حكمة النهي وهي خشية الاحتراق قوله: «إن هذه النار عدو لكم» . في رواية البخاري: «إن هذه النار إنما هي عدو لكم» . قال الحافظ: هكذا أورده بصيغة الحصر مبالغة في تأكيد ذلك. قال ابن العربي: معنى كون النار عدوا لنا، أنها تنافي أبداننا وأموالنا منافاة العدو، وإن كانت لنا بها منفعة، لكن لا يحصل لنا منها إلا بواسطة، فأطلق أنها عدو لنا، لوجود معنى العداوة فيها. والله أعلم.
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ২৫৩১২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী ডাক্তার। একজন বললো যে সরকারি চাকরি করা তাকওয়ার খেলাফ, তাগুতের অনুসরণ করতে হয়। এজন্য অন্য কোথাও চাকরি বা ব্যবসা করা ভালো।আসলেই কি তাকওয়ার খেলাফ হচ্ছে? আমার বেতন কি হালাল হচ্ছে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সরকারী চাকুরী জায়েয এবং এর বেতনও হালাল। তবে–
কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কিছু বাস্তবায়ন করার কাজ হলে বা এমন কোনো চাকুরী যেখানে গেলে কুরআন-হাদীসকে সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায় না তাহলে এমন চাকুরী কখনো বৈধ হবে না। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১৭/৫০৪)
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। (সূরা মায়েদা ২)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
فَإِنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ
অসৎকাজে আনুগত্য নয় ; আনুগত্য কেবলমাত্র সৎকাজের ক্ষেত্রেই হতে হবে। (বুখারী ৭১৪৫ মুসলিম ১৮৪০)
যেমন–
১. সরকারী চাকুরীর মাধ্যমে যদি মানুষের উপর জুলুম ও অন্যায়ভাবে তাদের মাল ভক্ষণ উদ্দেশ্য হয় তাহলে এ ধরনের চাকুরী করা জায়েয নয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّمَا ٱلسَّبِيلُ عَلَى ٱلَّذِينَ يَظْلِمُونَ ٱلنَّاسَ وَيَبْغُونَ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ ۚ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
কেবল তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের উপর জুলুম করে এবং জমিনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। (সূরা শূরা ৪২)
২. সুদের সহযোগিতা হয় এমন চাকুরীও নাজায়েয। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন