আলফিয়্যাতুল হাদীস
সফরাবস্থায় রোজা রাখার বিধান -এর বিষয়সমূহ
৫ টি হাদীস
মিশকাতুল মাসাবীহ
হাদীস নং: ২০১৯
- রোযার অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম।
কোরআনে রহিয়াছেঃ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত থাকে অথবা ভ্রমণে থাকে (আর রোযা না রাখে) সে যেন অন্য দিনসমূহে এই সংখ্যা পূর্ণ করে।” –সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৪
এ ব্যাপারের হাদীসসমূহ আলোচনা করিয়া ওলামাসাধারণ (জমহুরে ওলামা) ও ইমামগণ একমত যে, ভ্রমণে বা সফরে রোযা রাখা ও না রাখা উভয় জায়েয। কেননা, হুযূর (ﷺ) সফরে রোযা রাখিয়াও ছিলেন, এবং ছাড়িয়াও ছিলেন। তবে উত্তম কোটি সে সম্পর্কে তাহাদের মধ্যে মতের বিভিন্নতা রহিয়াছে। ইমাম আ'যম আবু হানীফা, মালেক ও শাফেয়ী প্রমুখের মতে সক্ষম ও শক্তিবান ব্যক্তির পক্ষে সফরে রোযা রাখাই উত্তম। পক্ষান্তরে ইমাম আহমদ আওযায়ী প্রমুখের মতে না রাখাই উত্তম। আর কাহারও মতে রাখা না রাখা যাহার পক্ষে যাহা সহজ বিবেচিত হয়, তাহাই উত্তম। —আশে'অ্যা—অনুবাদক
২০১৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হামযা ইবনে আমর আসলামী বেশী রোযা রাখিত। একদা সে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করিল, হুযুর! আমি কি সফরে রোযা রাখিতে পারি? হুযুর (ছাঃ) বলিলেনঃ যদি চাহ রাখিতে পার আর যদি চাহ নাও রাখিতে পার। —মোত্তাঃ
كتاب الصوم
بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ
وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: إِنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الْأَسْلَمِيَّ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصُومُ فِي السَّفَرِ وَكَانَ كَثِيرَ الصِّيَامِ. فَقَالَ: «إِنْ شِئْتَ فَصم وَإِن شِئْت فَأفْطر»
তাহকীক:
মিশকাতুল মাসাবীহ
হাদীস নং: ২০২৩
- রোযার অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম
২০২৩। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মক্কা বিজয়ের বৎসর) রমযান মাসে মদীনা হইতে মক্কার দিকে রওয়ানা হইলেন এবং রোযা রাখিলেন যাবৎ উসফান নামক মঞ্জিলে পৌঁছিলেন। তথায় তিনি পানি আনাইলেন এবং আপন হাতের সীমা পর্যন্ত উহা উপরে উঠাইলেন যাহাতে লোকেরা উহা দেখে অতঃপর পান করিলেন। ইহার পর রোযা ভাঙ্গিতে রহিলেন যাবৎ না তিনি মক্কায় পৌঁছিলেন। আর ইহা ছিল রমযান মাসে।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সফরে) রোযা রাখিয়াও ছিলেন এবং ভাঙ্গিয়াও ছিলেন। অতএব, যে চাহে রোযা রাখিতে পারে এবং যে চাহে ভাঙ্গিতে পারে। – মোত্তাঃ
كتاب الصوم
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ عُسْفَانَ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَرَفَعَهُ إِلَى يَدِهِ لِيَرَاهُ النَّاسُ فَأَفْطَرَ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ. فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ: قَدْ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَفْطَرَ. فَمن شَاءَ صَامَ وَمن شَاءَ أفطر
তাহকীক:
সহীহ মুসলিম
হাদীস নং: ২৪৮৬
আন্তর্জাতিক নং: ১১১৬ - ১
- রোযার অধ্যায়
১৫. অবৈধ নয় এমন কাজে রমযান মাসে সফরকারী ব্যক্তির জন্য রোযা পালন করা এবং ইফতার করা উভয়ই জায়েয যদি দুই বা ততোধিক মঞ্জিলের উদ্দেশ্যে সফর করা হয়; অবশ্য সক্ষম ব্যক্তির জন্য রোযা পালন করা উত্তম এবং অক্ষম ব্যক্তির জন্য রোযা হতে বিরত থাকা উত্তম
২৪৮৬। হাদ্দাব ইবনে খালিদ (রাহঃ) ......... আবু সাঈদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রমযানের ষোল দিন অতিবাহিত করার পর আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এ সময় আমাদের কেউ রোযা পলন করছিলেন, আবার কেউ তা ছেড়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু এতে রোযা পালনকারী রোযা ভঙ্গকারীকে কোন দোষারোপ করেনি এবং রোযা ভংকারীও রোযা পালনকারীকে কোন প্রকার দোষারোপ করেনি।
كتاب الصيام
باب جواز الصوم والفطر في شهر رمضان للمسافر في غير معصية إذا كان سفره مرحلتين فأكثر وأن الأفضل لمن أطاقه بلا ضرر أن يصوم ولمن يشق عليه أن يفطر
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، - رضى الله عنه - قَالَ غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِسِتَّ عَشْرَةَ مَضَتْ مِنْ رَمَضَانَ فَمِنَّا مَنْ صَامَ وَمِنَّا مَنْ أَفْطَرَ فَلَمْ يَعِبِ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ وَلاَ الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ .
তাহকীক:
বর্ণনাকারী:
মিশকাতুল মাসাবীহ
হাদীস নং: ২০২২
- রোযার অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম
২০২২। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, একবার আমরা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এক সফরে ছিলাম। আমাদের মধ্যে কেহ রোযাদার ছিল আর কেহ বে-রোযা। এসময় আমরা এক গরমের দিনে এক মঞ্জিলে অবতরণ করিলাম। তখন রোযাদারগণ পড়িয়া রহিলেন আর বে-রোযাদারগণ উঠিয়া দাঁড়াইলেন, তাহারা তাঁবু খাটাইলেন এবং বাহনদিগকে পানি খাওয়াইলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেনঃ আজ বে-রোযাদাররাই সওয়াব লুটিল। — মোত্তাঃ
كتاب الصوم
بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي السَّفَرِ فَمِنَّا الصَّائِمُ وَمِنَّا الْمُفْطِرُ فَنَزَلْنَا مَنْزِلًا فِي وم حَارٍّ فَسَقَطَ الصَّوَّامُونَ وَقَامَ الْمُفْطِرُونَ فَضَرَبُوا الْأَبْنِيَةَ وَسَقَوُا الرِّكَابَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ذَهَبَ الْمُفْطِرُونَ
الْيَوْمَ بِالْأَجْرِ»
الْيَوْمَ بِالْأَجْرِ»
তাহকীক:
সহীহ বুখারী
হাদীস নং: ১৮২২
আন্তর্জাতিক নং: ১৯৪৬
- রোযার অধ্যায়
১২১৮. প্রচণ্ড গরমের জন্য যে ব্যক্তির উপর ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাঁর সম্পর্কে নবী (ﷺ) এর বাণীঃ সফরে রোযা পালন করায় নেকী নেই।
১৮২২। আদম (রাহঃ) ......... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক সফরে ছিলেন, হঠাৎ তিনি লোকের জটলা এবং ছায়ার নীচে এক ব্যক্তিকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেনঃ এর কী হয়েছে? লোকেরা বলল, সে রোযাদার। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ সফরে রোযা পালনে কোন নেকী নেই।
كتاب الصوم
بَابُ قَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمَنْ ظُلِّلَ عَلَيْهِ، وَاشْتَدَّ الْحَرُّ: لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْصَارِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهم ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ، فَرَأَى زِحَامًا، وَرَجُلاً قَدْ ظُلِّلَ عَلَيْهِ، فَقَالَ " مَا هَذَا ". فَقَالُوا صَائِمٌ. فَقَالَ " لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ ".
তাহকীক: