আলফিয়্যাতুল হাদীস

রমজানের শেষ দশদিন ই'তেকাফ -এর বিষয়সমূহ

টি হাদীস

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং: ২০৯৭
- রোযার অধ্যায়
৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ইতিকাফ। কুরআনে রহিয়াছেঃ وَعَهِدْنَا إِلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ (بقرة ١٢٥) “এবং আমি ফরমান জারি করিলাম ইবরাহীম ও (তৎপুত্র) ইসমাঈলের প্রতি—তোমরা পাক পবিত্র রাখ আমার ঘরকে তওয়াফকারী, এ'তেকাফকারী ও রুকু সজদাকারীর জন্য।” —সূরা বাকারা, আয়াত ১২৫ এ'তেকাফ (اعتكاف) অর্থ, কোন স্থানে নিজেকে আব্দ্ধ রাখা। শরীঅতে ইহার অর্থ, এক বিশেষ সময় এক বিশেষ নিয়মে নিজকে মসজিদে আব্দ্ধ রাখা। এ'তেকাফ মানুষকে দুনিয়ার ঝামেলা ত্যাগ করার অভ্যাস শিক্ষা দেয় এবং অল্পকালের জন্য হইলেও আল্লাহর সাথে তাহার সম্পর্ক জুড়িয়া দেয়। ইহাতে মানুষের পক্ষে অন্তিম কালে দুনিয়া ত্যাগ করা সহজ হয় এবং দুনিয়ার মহব্বতের স্থলে আল্লাহর মহব্বত বৃদ্ধি পায়। এ'তেকাফকারীর উদাহরণ হইতেছে সেই হাজতী ব্যক্তির ন্যায়, যে কোন মহান ব্যক্তির দরবারে হাত পাতিয়া থাকে এবং বলে যে, যাবৎ না আমার হাজত পূর্ণ করা করা হয়, আমি এই দরবার ত্যাগ করিব না। এ'তেকাফ তিন প্রকার—ওয়াজিব, সুন্নত ও মোস্তাহাব। (১) এ'তেকাফ করার জন্য মান্নত করা হইলে উহা পূর্ণ করা ওয়াজিব। (২) রমযানের শেষ দশ দিন এ'তেকাফ করা সুন্নতে মোআক্কাদা। একবার ছাড়া নবী করীম (ﷺ) ইহা বরাবর করিয়াছেন। তবে আমাদের ফকীহগণ ইহাকে সুন্নতে মোআক্কাদা কেফায়া বলেন, অর্থাৎ মসজিদের অধিবাসীদের মধ্যে কেহ উহা করিলে, অপর লোকেরা গোনাহ্ হইতে বাঁচিয়া যাইবে। আর কেহই না করিলে সকলেই গোনাগার হইবে। (৩) ওয়াজিব ও সুন্নত এ'তেকাফ ছাড়া অপর এ'তেকাফ মোস্তাহাব। ইহা স্বল্প সময়ের জন্যও হইতে পারে। সুন্নত এ'তেকাফের জন্য রমযানের ২০ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করিতে এবং রমযানের শেষ তারিখে সূর্যাস্তের পর মসজিদ হইতে বাহির হইতে হয়। মসজিদে অবস্থানকালে চুপ করিয়া না থাকিয়া নফল নামায, কুরআন তেলাওয়াত বা আল্লাহ্ বিল্লাহ্ করা উচিত। পাঞ্জেগানা মসজিদ যাহাতে নিয়মিত জামাআত হয়, তাহাতে এ'তেকাফ করা জায়েয। তবে জুমার মসজিদে করা উত্তম। স্ত্রীলোক আপন ঘরে একটি স্থান ঘিরিয়া লইয়া তথায় এ'তেকাফ করিবে। — অনুবাদক
২০৯৭। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বরাবর রমযানের শেষ দশকে এ'তেকাফ করিয়াছেন যাবৎ না আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে উঠাইয়া লইয়াছেন এবং তাহার পর তাহার বিবিগণও এ'তেকাফ করিয়াছেন। মোত্তাঃ
كتاب الصوم
بَابُ الْاِعْتِكَافِ
وَعَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بعده
tahqiq

তাহকীক:

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং: ২১০২
- রোযার অধ্যায়
৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইতিকাফ
২১০২। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) প্রত্যেক রমযানের শেষ দশক এ'তেকাফ করিতেন; কিন্তু এক বৎসর তিনি তাহা করিতে পারিলেন না। অতঃপর যখন পরবর্তী বৎসর আসিল, তিনি বিশ দিন এ'তেকাফ করিলেন। —তিরমিযী।
كتاب الصوم
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ عَامًا. فَلَمَّا كَانَ الْعَامُ الْمقبل اعْتكف عشْرين. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

মিশকাতুল মাসাবীহ

হাদীস নং: ২১০৬
- রোযার অধ্যায়
৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইতিকাফ
২১০৬। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, এ'তেকাফকারীর পক্ষে এই নিয়ম পালন করা আবশ্যকঃ (১) সে যেন কোন পীড়িতকে দেখিতে না যায়, (২) কোন জানাযাতে হাযির না হয় (৩) স্ত্রী-সহবাস না করে এবং (৪) তাহার সাথে ঘেঁষাঘেঁষি না করে এবং (৫) কোন আবশ্যকে বাহির না হয়, যদি না উহার জন্য নাচার হইয়া পড়ে। এ ছাড়া (৬) এ'তেকাফ হয় না রোযা ব্যতীত এবং (৭) এ'তেকাফ হয় না জামে মসজিদ ব্যতীত। –আবু দাউদ
كتاب الصوم
وَعَن عَائِشَة رَضِي الله عَنْهَا قَالَتْ: السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لَا يَعُودَ مَرِيضًا وَلَا يَشْهَدُ جِنَازَةً وَلَا يَمَسُّ الْمَرْأَةَ وَلَا يُبَاشِرُهَا وَلَا يَخْرُجُ لِحَاجَةٍ إِلَّا لِمَا لابد مِنْهُ وَلَا اعْتِكَافَ إِلَّا بِصَوْمٍ وَلَا اعْتِكَافَ إِلَّا فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ