মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৭- কিসাসের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
হাদীস নং: ৩৫৩৭
- কিসাসের অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৩৭। হযরত জারীর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হচ্ছে (-র ভাষণে) বলিয়াছেনঃ তোমরা আমার অবর্তমানে কাফেরের দলে পরিণত হইও না যে, পরস্পরে কাটাকাটি করিবে। – মোত্তাঃ
كتاب القصاص
وَعَنْ جَرِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ: «لَا تَرْجِعُنَّ بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَاب بعض»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৩৮
- কিসাসের অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৩৮। আবু বাক্বরা (রাঃ) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলিয়াছেন : যখন দুইজন মুসলমান মুখামুখি হইয়া একজন অপর ভাইয়ের উপর অস্ত্র উত্তোলন করে, তখন তাহারা উভয়েই জাহান্নামের গর্তের মুখে গিয়া পাড়ায়। অতঃপর যখন এক জন অন্যজনকে কতল করিয়া ফেলে, তখন উভয়েই জাহান্নামে পতিত হয়। অন্য এক রেওয়ায়তে উক্ত বর্ণনাকারী হইতে বর্ণিত হইয়াছে, যখন দুইজন মুসলমান তরবারি লইয়া পরস্পর যুদ্ধ করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত উভয়ই দোযখী হয়। আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল। হত্যাকারীর অবস্থা তো স্পষ্ট বুঝা যায়, তবে নিহত ব্যক্তির ব্যাপারটি কেমন হইল, সে কেন দোযখে যাইবে। তিনি বলিলেন, সে তাহার সাথী (মুসলমানকে হত্যা করিতে উদগ্রীব ছিল। -মোত্তাঃ
كتاب القصاص
وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ حَمَلَ أَحَدُهُمَا عَلَى أَخِيهِ السِّلَاحَ فَهُمَا فِي جُرُفِ جَهَنَّمَ فَإِذَا قَتَلَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ دَخَلَاهَا جَمِيعًا» . وَفِي رِوَايَةٍ عَنْهُ: قَالَ: «إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ بسيفهما فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ» قُلْتُ: هَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ؟ قَالَ: «إِنَّهُ كَانَ حَرِيصًا عَلَى قَتْلِ صَاحِبِهِ»
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৩৯
- কিসাসের অধ্যায়
৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৩৯। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, একবার 'উকল' গোত্রের কিছু সংখ্যক লোক (মদীনায়) নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসিয়া ইসলাম গ্রহণ করিল, কিন্তু মদীনার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূল হইল না। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে (বায়তুল মালের) সদকার উষ্ট্রীর নিকট যাইয়া উহাদের পেশাব ও দুধ পান করিতে আদেশ দিলেন। তাহারা গেল এবং তাহাই করিল, অবশেষে তাহারা সুস্থ হইয়া মুরতাদ হইয়া গেল এবং রাখালদিগকে হত্যা করিয়া উটগুলি হাকাইয়া লইয়া গেল। (হুযূর [ছাঃ)-এর নিকট এই সংবাদ পৌঁছিলে) তাহাদের খোঁজে লোক পাঠান হইল, (দুপুরের আগেই) তাহাদিগকে পাকড়াও করিয়া আনা হইল এবং (শাস্তি হিসাবে) তাহাদের হাত পা কাটিয়া দেওয়া হইল, তাহাদের চক্ষু কুঁড়িয়া দেওয়া হইল। অতঃপর (রক্ত বন্ধের জন্য) তাহাদের ক্ষতস্থান দাগান হইল, না, যাহাতে তাহাদের মৃত্যু ঘটিল। অন্য আরেক রেওয়ায়তে আছে, লোকেরা তাহাদের চোখ গরম (লৌহ) শলাকা দ্বারা মুছিয়া দিল। অপর আরেক রেওয়ায়তে আছে, হুযূর (ছাঃ) লৌহ শলাকা আনিবার জন্য আদেশ দিলেন। অতঃপর উহা গরম করা হইল এবং উহা তাহাদের চোখে সুরমার শলাকার ন্যায় টানিয়া দেওয়া হইল। ইহার পর তাহাদিগকে উত্তপ্ত মাটিতে ফেলিয়া রাখিলেন। তাহারা পানি চাহিল। কিন্তু তাহা পান করান হয় নাই। অবশেষে তাহারা এই অবস্থায় মারা গেল। — মোত্তাঃ
كتاب القصاص
وَعَن أَنَسٍ قَالَ: قَدِمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَفَرٌ مِنْ عُكْلٍ فَأَسْلَمُوا فَاجْتَوَوُا الْمَدِينَةَ فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَأْتُوا إِبِلَ الصَّدَقَةِ فَيَشْرَبُوا مِنْ أَبْوَالِهَا وَأَلْبَانِهَا فَفَعَلُوا فَصَحُّوا فَارْتَدُّوا وَقَتَلُوا رُعَاتَهَا وَاسْتَاقُوا الْإِبِلَ فَبَعَثَ فِي آثَارِهِمْ فَأُتِيَ بِهِمْ فَقَطَعَ أَيْدِيَهُمْ وَأَرْجُلَهُمْ وَسَمَلَ أَعْيُنَهُمْ ثُمَّ لَمْ يَحْسِمْهُمْ حَتَّى مَاتُوا . وَفِي رِوَايَةٍ: فَسَمَّرُوا أَعْيُنَهُمْ وَفِي رِوَايَةٍ: أَمَرَ بِمَسَامِيرَ فَأُحْمِيَتْ فَكَحَّلَهُمْ بِهَا وَطَرَحَهُمْ بِالْحَرَّةِ يَسْتَسْقُونَ فَمَا يُسْقَوْنَ حَتَّى مَاتُوا
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৪০
- কিসাসের অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪০। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদিগকে সদকা দেওয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করিতেন এবং কোন লোকের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাটিয়া বিকলাঙ্গ করিতে নিষেধ করিতেন। —আবু দাউদ।
كتاب القصاص
الْفَصْل الثَّانِي
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحُثُّنَا عَلَى الصَّدَقَةِ وَيَنْهَانَا عَنِ الْمُثْلَةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৪১
- কিসাসের অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪১। ইমাম নাসায়ী এই হাদীস আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।
كتاب القصاص
وَرَوَاهُ النَّسَائِيّ عَن أنس
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৪২
- কিসাসের অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪২। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। এক সময় তিনি ইসতেনজা করিতে গেলেন, এমন সময় আমরা দুইটি বাচ্চাসহ একটি 'হুম্মারা' দেখিতে পাইলাম (এক প্রকার ছোট পাখী, উহার ঠোঁট লাল)। আমরা উহার ছানা দুইটি (ধরিয়া) লইয়া আসিলাম। পাখীটি আসিয়া তাহার ডানাদ্বয় একেবারে যমীনের উপর চাপড়াইতে লাগিল। পরে নবী (ﷺ) আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, ইহার বাচ্চাগুলি আনিয়া কে উহাকে ব্যথিত করিয়াছে ? উহার বাচ্চাগুলি উহাকে ফেরত দিয়া দাও। আবার হুযূর (ﷺ) পিঁপড়ার একটি বস্তি দেখিলেন, যাহা আমরা জ্বালাইয়া দিয়াছিলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, কে ইহাদিগকে জ্বালাইয়াছে ? বলিলাম, আমরা। তিনি বলিলেনঃ আগুনের প্রভু (আল্লাহ্) ছাড়া আগুন দ্বারা শাস্তি দেওয়া অন্য কাহারও জন্য উচিত নহে। (জায়েয নাই।) — আবু দাউদ
كتاب القصاص
وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَانْطَلَقَ لِحَاجَتِهِ فَرَأَيْنَا حُمْرَةً مَعَهَا فَرْخَانِ فَأَخَذْنَا فَرْخَيْهَا فَجَاءَتِ الْحُمْرَةُ فَجَعَلَتْ تَفْرُشُ فَجَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «مَنْ فَجَعَ هَذِهِ بِوَلَدِهَا؟ رُدُّوا وَلَدَهَا إِلَيْهَا» . وَرَأَى قَرْيَةَ نَمْلٍ قَدْ حَرَّقْنَاهَا قَالَ: «مَنْ حَرَّقَ هَذِهِ؟» فَقُلْنَا: نَحْنُ قَالَ: «إِنَّهُ لَا يَنْبَغِي أَنْ يُعَذِّبَ بِالنَّارِ إِلاَّ ربُّ النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক:
হাদীস নং: ৩৫৪৩
- কিসাসের অধ্যায়
৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে
৩৫৪৩। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী ও আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে মতবিরোধ ও দলাদলি দেখা দিবে। তাহাদের মধ্যে একদল এমন হইবে যে, কথা বলিবে খুব চমকপ্রদ; কিন্তু তাহাদের কাজকর্ম হইবে মন্দ। কোরআন মজীদ পাঠ করিবে বটে; কিন্তু উহা তাহাদের গলার তলদেশে প্রবেশ করিবে না। (অর্থাৎ, তাহাদের মধ্যে ঈমান থাকিবে না।) তাহারা দ্বীন (ইসলাম) হইতে এমনভাবে বাহির হইয়া যাইবে, যেমন তীর শিকার ভেদ করিয়া বাহির হইয়া যায়। ফলে তীর তাহার (কাটা) ধনুকের দিকে ফিরিয়া না আসা পর্যন্ত তাহারাও দ্বীনের (ইসলামের) দিকে ফিরিয়া আসিবে না। (অর্থাৎ, তীর যেমন ফিরিয়া আসা সম্ভব নহে, তাহারাও ইসলামে ফিরিয়া আসা অসম্ভব।) উহারাই হইল সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্টতম এবং বস্তর জাতি। যাহারা উহাদিগকে হত্যা করিবে এবং তাহারা যাহাকে কতল করিবে, তাহাদের জন্য সুসংবাদ রহিয়াছে (জান্নাতের। কেননা, উহাদিগকে কতল করিলে হইবে গাযী, আর তাহারা যাহাদিগকে কতল করিবে, তাহারা হইবে শহীদ)। উহারা মানুষদিগকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আহ্বান করিবে। অথচ কোন কিছুতেই তাহারা আমাদের তরীকার উপর হইবে না। অতএব, যাহারা তাহাদের সহিত যুদ্ধ করিবে তাহারাই আল্লাহর বন্ধু, উহারা নহে। সাহাবাগণ আরয করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাহাদের পরিচয় চিহ্ন কি ? বলিলেন, (তাহাদের চিহ্ন হইল) মাথা মুড়ান। – আবু দাউদ
كتاب القصاص
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي اخْتِلَافٌ وَفُرْقَةٌ قَوْمٌ يُحسِنونَ القيلَ ويُسيئونَ الفِعلَ يقرؤون الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُروقَ السَّهمِ فِي الرَّمِيَّةِ لَا يَرْجِعُونَ حَتَّى يَرْتَدَّ السَّهْمُ عَلَى فُوقِهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ طُوبَى لِمَنْ قَتَلَهُمْ وَقَتَلُوهُ يَدْعُونَ إِلَى كِتَابِ اللَّهِ وَلَيْسُوا منَّا فِي شيءٍ مَنْ قاتلَهم كَانَ أَوْلَى بِاللَّهِ مِنْهُمْ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا سِيمَاهُمْ؟ قَالَ: «التَّحْلِيقُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
তাহকীক: