আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২৬. অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
হাদীস নং: ৫৫৮২
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ: জাহান্নামের তাপের প্রচণ্ডতা ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৮২. হযরত ইব্ন আব্বাস (রা) থেকে আল্লাহ্ তা'আলার বাণী: إِذَا رَأَتْهُمْ مِنْ مَكَانٍ بَعِيدٍ "জাহান্নাম যখন তাদেরকে দূর থেকে দেখবে।” (২৫: ১২) প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, আয়াতে "দূর থেকে"-এর অর্থ একশ বছরের দূরত্ব থেকে। এটা হবে, যখন জাহান্নামকে হাযির করা হবে তখন তাকে সত্তর হাজার মাথা ধরে টানা হবে, প্রতিটি মাথা টানবে সত্তর হাজার ফিরিশতা। যদি তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে নেককার, বাদকার সবাইকে সে গ্রাস করবে। سَمِعُوا لَهَا تَغَيُّظًا وَزَفِيرًا "তারা তার তর্জন গর্জন শুনবে। (২৫: ১২( প্রসঙ্গে বর্ণিত। জাহান্নাম একটি গর্জন করবে। এতে প্রত্যেকের অক্ত ফোঁটা গড়িয়ে পড়বে। এরপর দ্বিতীয়বার গর্জন করবে, তখন কলজে স্বস্থান থেকে ছিন্ন করে দেবে এবং কণ্ঠ ও কণ্ঠ-পিট কেটে দেবে। আল্লাহ্ 'তা'আলার এ বাণীতে এ কথাই বলা হয়েছে: وَبَلَغَتِ الْقُلُوبُ الْحَنَاجِرَ " বললে কণ্ঠনালীতে পৌঁছে যায়।" (৩৩: ১০)
(আদম ইবন আবু ইয়াস তাঁর তাফসীরে মাওকূফ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
(আদম ইবন আবু ইয়াস তাঁর তাফসীরে মাওকূফ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
فصل فِي شدَّة حرهَا وَغير ذَلِك
5582- وَرُوِيَ عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا فِي قَوْله تَعَالَى إِذا رأتهم من مَكَان بعيد الْفرْقَان 21 من مسيرَة مائَة عَام وَذَلِكَ إِذا أُتِي بجهنم تقاد بسبعين ألف زِمَام يشد بِكُل زِمَام سَبْعُونَ ألف ملك لَو تركت لأتت على كل بر وَفَاجِر سمعُوا لَهَا تغيظا وزفيرا الْفرْقَان 21
تزفر زفرَة وَلَا تبقى قَطْرَة من دمع إِلَّا ندرت ثمَّ تزفر الثَّانِيَة فتقطع الْقُلُوب من أماكنها تقطع اللهوات والحناجر وَهِي قَوْله وَبَلغت الْقُلُوب الْحَنَاجِر الْأَحْزَاب 01
رَوَاهُ آدم بن أبي إِيَاس فِي تَفْسِيره مَوْقُوفا
تزفر زفرَة وَلَا تبقى قَطْرَة من دمع إِلَّا ندرت ثمَّ تزفر الثَّانِيَة فتقطع الْقُلُوب من أماكنها تقطع اللهوات والحناجر وَهِي قَوْله وَبَلغت الْقُلُوب الْحَنَاجِر الْأَحْزَاب 01
رَوَاهُ آدم بن أبي إِيَاس فِي تَفْسِيره مَوْقُوفا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
জাহান্নাম শব্দটি আরবী না অনারবী, সে সম্পর্কে মতভেদ আছে। কারও মতে আরবী। এর উৎপত্তি جهومة থেকে। অর্থ বীভৎস দর্শন। অথবা এর উৎপত্তি جهنام থেকে। অর্থ গভীর। উভয় অর্থই জাহান্নামের সঙ্গে খাটে। জাহান্নামের দৃশ্য বীভৎস এবং তা অনেক গভীরও।
যেদিন সমস্ত মানুষ হিসাবের জন্য আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়ানো থাকবে, সেদিন জাহান্নামকে টেনে তাদের সামনে উপস্থিত করা হবে। টানার জন্য তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে এবং প্রত্যেক লাগামের সঙ্গে থাকবে সত্তর হাজার ফিরিশতা। জাহান্নাম কেমন, তার লাগামই বা কেমন এবং কিভাবে তা টানা হবে, তা অদৃশ্য জগতের বিষয়। এ জগতে থেকে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা লাভ করা সম্ভব নয়।
জাহান্নামকে টেনে সামনে আনার উদ্দেশ্য হয়তো হাশরের ময়দানের বিভীষিকাকে অধিকতর ভয়ংকর করে তোলা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেদিনের বিভীষিকা থেকে তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা অনুমান করা যায় হাশরের ময়দান কতটা বিভীষিকাময় হবে।
খ. হাদীছটি দ্বারা জানা যায় জাহান্নাম অস্তিত্বমান বস্তু। সুতরাং জাহান্নামের শাস্তি কেবল মানসিক বিষয় নয়; বাস্তবিক শাস্তিই। এর দ্বারা জাহান্নামের বিশালতাও অনুভব করা যায়।
যেদিন সমস্ত মানুষ হিসাবের জন্য আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়ানো থাকবে, সেদিন জাহান্নামকে টেনে তাদের সামনে উপস্থিত করা হবে। টানার জন্য তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে এবং প্রত্যেক লাগামের সঙ্গে থাকবে সত্তর হাজার ফিরিশতা। জাহান্নাম কেমন, তার লাগামই বা কেমন এবং কিভাবে তা টানা হবে, তা অদৃশ্য জগতের বিষয়। এ জগতে থেকে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা লাভ করা সম্ভব নয়।
জাহান্নামকে টেনে সামনে আনার উদ্দেশ্য হয়তো হাশরের ময়দানের বিভীষিকাকে অধিকতর ভয়ংকর করে তোলা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেদিনের বিভীষিকা থেকে তাঁর রহমতের ছায়ায় আশ্রয় দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা অনুমান করা যায় হাশরের ময়দান কতটা বিভীষিকাময় হবে।
খ. হাদীছটি দ্বারা জানা যায় জাহান্নাম অস্তিত্বমান বস্তু। সুতরাং জাহান্নামের শাস্তি কেবল মানসিক বিষয় নয়; বাস্তবিক শাস্তিই। এর দ্বারা জাহান্নামের বিশালতাও অনুভব করা যায়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)