প্রশ্নঃ ১২১৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন মেয়ে শিক্ষার্থী।
আমি ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিবো এইবার।আমার প্রস্তুতি ভালো করে নেয়ার জন্য কোচিং-এর পাশাপাশি বাসায় প্রাইভেট টিউটর রেখে পড়তে চাচ্ছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি আমার কয়েকজন মেয়ে বান্ধবী মিলে বাসায় ভার্সিটির কোনো ভাইয়া রেখে পড়তে পারবো কি না?শরীয়ত কি সমর্থন করবে???
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নারীর জন্য পর্দা করা ফরয।পর্দার সারমর্ম হল,ফি মিক্সিং পরিবেশ থেকে যথাসম্ভব নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা।গায়রে মাহরাম পুরুষ থেকে সর্বদা নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা।
বেগানা নারী-পুরুষ খালওয়াত তথা নির্জনে একাকী অবস্থান করতে পারবে না। হাদীসে একে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে.......
ﻻَ ﻳَﺨْﻠﻮﻥَّ ﺭَﺟُﻞٌ ﺑِﺎﻣْﺮَﺃﺓٍ ﺇِﻻَّ ﻭَﻣَﻌَﻬﺎ ﺫُﻭ ﻣَﺤْﺮَﻡ )
কোনো পুরুষ কোনো মহিলার সাথে মহিলার মাহরাম না থাকা অবস্থায় নির্জনে একাকী বসবাস করতে পারবে না।(সহীহ বুখারী-৫২৩৩;সহীহ মুসলিম-১৩৪১)
পুরুষ শিক্ষক তিনি ছাত্রকে প্রাইভেট পড়াবেন।ছাত্রীদেরকে নারী শিক্ষকই প্রাইভেট পড়াবেন।যদি কোথাও পুরুষ শিক্ষক, ছেলে শিক্ষার্থীকে না পান,এবং মেয়ে শিক্ষার্থীরা, নারী শিক্ষিকা-কে না পায়।
এমন পরিস্থিতে শিক্ষার স্বার্থে কয়েকটি শর্তে বিপরিত লিঙ্গের কাউকে পড়ানোর ব্যাপারটা অনুমোদনযোগ্য হতে পারে।
(১)ফিতনার আশংকা থাকতে পারবে না।যখনই শয়তান মনের মমধ্যে কিছু আনয়ন করবে,সাথে সাথেই তখন পড়ানোকে বাদ দিতে হবে।
(২)যতক্ষণ পড়াবেন ততক্ষণ মেয়ে শিক্ষার্থীর একজন মাহরাম পুরুষ সেখানে উপস্থিত থাকবেন।বা এক সাথে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে পড়াবেন।
(৩)মেয়ে শিক্ষার্থীরা পরিপূর্ণ হেজাব পড়ে ক্লাস নিবেন।
(৪)মেয়ে শিক্ষার্থীর সাথে নরম ভাষায় কথা বলা যাবে না।
(৫)এছাড়া ফিতনামুক্ত পরিবেশ গড়ার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে হইবে।
সুতরাং,,,,
আপনি প্রথমে একজন ভিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মেয়ে শিক্ষিকার খোঁজ নিবেন।যদি পেয়ে যান তাহলে এটাই আপনাদের জন্য কল্যাণকর হবে।আপনার অন্তর শয়তানের ধোকা থেকে নিরাপদে থাকবে।
তবে যদি ভিজ্ঞ কোনো শিক্ষিকার খোঁজ না পান,তাহলে আপনি ততক্ষণই পড়তে পারবেন,যতক্ষণ অন্তরে কোনো ফিতনার উদ্রেক হবে না।যখন সামান্যতম ফিতনার উদ্রেক হবে,সাথে সাথেই এমন শিক্ষা থেকে নিজেকে অনেক দূরে রাখবেন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
রেফারেন্স উত্তর :
প্রশ্নঃ ১২০৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ছেলেদের ছাত্রী টিউশনি করানো যাবে কী? এবং ছাত্রী টিউশনি করিয়ে উপার্জিত টাকা কী হালাল হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
গায়রে মাহরাম ছেলে গায়রে মাহরাম মেয়ের টিউশনি করানো সম্পূর্ণ নাজায়েজ, হারাম।
গায়রে মাহরাম নারী পুরুষ নিভৃতে একটি কামরা একত্র হওয়া নাজায়েজ।
আরো বিস্তারিত জানতে নিম্নোক্ত প্রশ্নোত্তরটি দেখুন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রশ্নঃ ১১১৩৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সম্মানিত শায়েখ,আমি জানতে চাচ্ছি যে মেয়ে ছাত্রী পড়ানো যাবে কি? (যদিও সে পর্দা করে), কিন্তু আমি যুবক হওয়ায়; কিছু টপিক পড়াতে গিয়ে নিজের ভিতর উদ্ভূত চিন্তাধারায় নিজেই বিভ্রত হই৷ইমান মজবুত রাখার প্রয়োজনে এই টিউশন টা ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করলেও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ছাড়া সম্ভব হচ্ছেনা৷এমত অবস্থায় আমার করণীয় কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
পর্দা রক্ষা করা ফরয। হালাল কামাই করা যেমন ফরয, পর্দা রক্ষা করাও ফরয। টিউশনির অযুহাতে ফরয লঙ্ঘন করা জায়েয নয়।
দ্রুত সময়ের মধ্যে হালাল কামাইয়ের পথ খুঁজুন। ফিতনা থেকে বেরিয়ে আসুন।
আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবাহ ইস্তিগফার করুন।
গাইরে মাহরাম নারী পুরুষ নির্জন কামরায় একত্র হওয়া সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ أَبِيْ مَعْبَدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اكْتُتِبْتُ فِيْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتْ امْرَأَتِيْ حَاجَّةً قَالَ اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ
ইব্নু ‘আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, কোন পুরুষ যেন অপর মহিলার সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন কোন মাহরাম সঙ্গী ছাড়া সফর না করে। এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! অমুক যুদ্ধের জন্য আমার নাম লেখা হয়েছে। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্জযাত্রী। তখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তবে যাও তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ্জ কর।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০০৬
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন