40 জন আমিন বললে নাকি দোয়া কবুল হয়?
প্রশ্নঃ ১৩৪১৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, 40 জন আমিন বললে নাকি দোয়া কবুল হয়? ফেসবুকে ঢুকলেই দেখা যায় ৪০ জন আমিন বলার জন্য। এর সত্যতা কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এর কোনো সত্যতা নাই। এগুলো শুধু লাইক কমেন্টের ব্যবসা ছাড়া বৈকি?
নিশ্চিত দোয়া কবুলের সেরা ১০টি সময়
আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার দোয়া সব সময় কবুল করে থাকেন। তারপরও প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুনির্দিষ্ট কিছু সময়ের কথা হাদিসে পাকে উল্লেখ করেছেন। যে সময়গুলো দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা নিশ্চিতভাবে বান্দার দোয়া কবুল করেন। আর তাহলো-
এক. রাতের শেষ তৃতীয়াংশে
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের রব সবচেয়ে নীচের (প্রথম) আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো? আমাকে ডাকো; আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কে আছে? আমার কাছে চাও; আমি তোমাকে দান করবো। কে আছো? আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী; আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব।’ (বুখারি)
দুই.আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (আবু দাউদ)
তিন. জুমআর দিনের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমআর দিনে একটি সময় আছে যে সময়টা কোনো মুমিন নামাজ পড়া অবস্থায় পায় এবং আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ অবশ্যই সে চাহিদা পুরণ করবেন। এবং তিনি তাঁর হাত দিয়ে ইশারা করে সে সময়ের সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি)
চার. সেজদার সময়ের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে সময়টাতে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে কাছে চলে যায়, তাহলো সেজদার সময়। সুতরাং তোমরা তখন আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও।’ (মুসলিম)
পাঁচ. ফরজ নামাজের পরের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রাতের শেষ সময় এবং ফরজ নামাজের পরে দোয়া কবুল হয়।’ (মুসলিম)
ছয়. কদরের রাতের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সাওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের (জীবনের) সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (বুখারি)
সাত. বৃষ্টি হওয়ার সময়ের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুই সময়ের দোয়া ফেরানো হয় না। আজানের সময়ের দোয়া আর বৃষ্টি বর্ষণের সময়ের দোয়া।’ (আবু দাউদ)
আট. আরাফাতের দিনের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দোয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো আরাফাতের দিনের দোয়া।’ (তিরমিজি)
নয়. জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল অন্য যে কোনে দিনের আমলের চেয়ে উত্তম।’ (বুখারি)
দশ. রোজাদার ব্যক্তির ইফতারের সময়ের দোয়া
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘৩ ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। যখন রোজাদার ব্যক্তি ইফতার করে। ন্যায় পরায়ন শাসক। নির্যাতিত ব্যক্তির দোয়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)
মুমিন মুসলমানের উচিত এ সময় ও দিনক্ষণগুলোতে বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নিজের একান্ত চাহিদাগুলো পূরণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত দিন ও সময়ে তাওবা-ইসতেগফারসহ দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
(কালেক্টেড জে/নি24)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন