মসজিদ-মাদরাসার অনুদান পেতে ঘুষ দেওয়া বৈধ হবে কি?
প্রশ্নঃ ৪৫৭৫৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের মসজিদে সরকার কতৃক ১০ লাখ টাকা দিবে। উক্ত টাকা আনার জন্য সরকারি অফিসে ১ লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। এই ১ লাখ টাকা ট্যাক্স / ভ্যাটের জন্য ও নিতে পারে। যেহেতু টাকা দিবে। অথবা বিল পাশ করতেও নিতে পারে। অথবা সরকারি কর্মকর্তারা ঘুষ হিসেবে ও নিতে পারে। নির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। এখন জানার বিষয় হলো, উক্ত টাকা আনার জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া যায়েজ আছে কিনা? দয়া করে জানালে উপকৃত হতাম।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী দ্বিনি ভাই!
নির্দিষ্টভাবে বলা না গেলে আমরা মাসয়ালা বলবো কি করে? সম্ভব্য সুরত ধরে মাসয়ালা বলা সঙ্গত নয়। তাই আমরা মৌলিক বিষয়টি তুলে ধরছি।
যদি সেখানে সরকারী বৈধ প্রসেসিংয়ের জন্য টাকা লাগে তাহলে সেখানে টাকা দেওয়া জায়েজ হবে। কিন্তু যদি অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে সেই খাতে মসজিদের টাকা দেওয়া জায়েজ হবে না।
কেননা ঘুষ একটি জঘন্যতম গুনাহ। যারা ঘুষ খায় এবং দেয় উভয়ের প্রতিই হাদীস শরীফে লানত করা হয়েছে। কাজেই মসজিদ মাদ্রাসার ন্যায় পবিত্র ও বরকতময় কাজে ঘুষের ন্যায় জঘন্যতম হারামের আশ্রয় না নেওয়াই কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা কারো উপর এই বাধ্যবাধকতা আরোপ করেননি যে, মসজিদ নির্মাণ করতে তিনি ঘুষের টাকা দিতে তিনি বাধ্য থাকবেন। বরং সর্বসাধারণের অনুদানে যতটুকু সম্ভব তা দিয়েই মসজিদ নির্মাণ করা উচিত।
আরেকটি কথা না বললেই নয়, তাহলো, আমাদের সামাজের কিছু মানুষের এই চিন্তা আছে যে, যেভাবেই হোক মসজিদ মাদরাসা করতেই হবে। সেটা হালাল পন্থায় হোক বা হারাম পন্থায়। তাদের মধ্যে “আল্লাহর জন্য করা”র মানসিকতার চেয়ে “আমি/আমরা করেছি” ভাব প্রকাশের মানসিকতা অধিক। ফলে তারাই এই জাতীয় সমস্যার সম্মুখীন হন। তারা প্রয়োজনে ঘুষের টাকা নিয়েও মসজিদ করতে চান। মানুষের দ্বীনদারীর অবস্থা দেখে আফসোস এবং হতাশ হতে হয়! মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতীমদের সম্পদও তাদের ঘুষখোরি থাবা থেকে নিরাপদ নয়। আল্লাহ হেফাজত করুন। কাজেই যদি ঘুষ ব্যতীত টাকা পাওয়া যায় তবেই এর ফিকির করা উচিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي فِي الْحُكْمِ .
আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিচার ক্ষেত্রে ঘুষখোর ও ঘুষদাতাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) লা‘নত করেছেন। - ইবনে মাজাহ ২৩১৩,
আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ (জামে' তিরমিযী)
হাদীস নং: ১৩৩৬ আন্তর্জাতিক নং: ১৩৩৬
হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/30977
والله اعلم بالصواب
উত্তর দাতা:
উস্তাজুল ইফতা, জামিয়া ইমাম বুখারী, উত্তরা, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
