২৫৭৭। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ হাজারে আসওয়াদ যখন বেহেশত হইতে অবতীর্ণ হয়, তখন উহা দুধ অপেক্ষা অধিক সাদা ছিল। পরে আদম সন্তানের গোনাহ্ উহাকে কাল করিয়া দেয়। – ইমাম আমদ ও তিরমিযী ইহা বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিরমিযী বলিয়াছেন যে, হাদীসটি হাসান সহীহ্ ।

২৫৭৮। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হাজারে আসওয়াদ সম্পর্কে বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্র কসম — কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ উহাকে উঠাইবেন, তখন উহার দুইটি চক্ষু হইবে, যদ্বারা উহা দেখিবে এবং উহার একটি জিহ্বা হইবে, যদ্দ্বারা উহা বলিবে এবং যে উহাকে ঈমানের সহিত চুম্বন করিয়াছে তাহার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিবে। —তিরমিযী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী

২৫৭৯। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, হাজারে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীম বেহেশতের ইয়াকূতসমূহের মধ্য হইতে দুইটি ইয়াকূত। আল্লাহ্ উহাদের জ্যোতি দূর করিয়া দিয়াছেন। যদি উহাদের জ্যোতি দূর করা না হইত, তবে উহারা পূর্ব-পশ্চিম দিগন্তের মধ্যে যাহা আছে তাহাকে জ্যোতির্ময় করিয়া দিত। —তিরমিযী

২৫৮০। (তাবেয়ী) ওবায়দ ইবনে ওমায়র হইতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হাজারে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানীর প্রতি যেভাবে ঝাপাইয়া পড়িতেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীদের অপর কাহাকেও উহাদের প্রতি এইরূপ ঝাঁপাইয়া পড়িতে দেখি নাই। ইবনে ওমর বলেন, যদি আমি এইরূপ করি (তাহাতে দোষের কিছুই নাই)। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, উহাদের স্পর্শ করা গোনাহের কাফফারাস্বরূপ এবং হুযূরকে আরও বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর চারিদিকে সাত পাক ঘুরিবে এবং উহাকে পূর্ণ করিবে, উহা তাহার জন্য গোলাম আযাদের অনুরূপ হইবে। ইবনে ওমর বলেন, আমি তাঁহাকে আরও বলিতে শুনিয়াছি, কোন ব্যক্তি উহাতে এক পা রাখিবে না এবং অপর পা উঠাইবে না, কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা উহা দ্বারা তাহার একটি গোনাহ মাফ করিয়া দিবেন এবং তাহার জন্য একটি নেকী নির্ধারণ করিবেন। —তিরমিযী

২৫৮১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে সায়েব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে হাজারে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানীর মধ্য জায়গায় এইরূপ দো'আ করিতে শুনিয়াছি, “হে পরওয়ারদেগার! তুমি আমাদিগকে দুনিয়াতে ভালাই ও আখেরাতে ভালাই দাও এবং আমাদিগকে দোযখের আগুন হইতে বাঁচাইও।” — আবু দাউদ

২৫৮২। সফীয়া বিনতে শায়বা বলেন, আবু তুজরাতের কন্যা আমাকে বলিয়াছেন, আমি কুরাইশের কতক মহিলার সাথে আবু হোসাইন পরিবারের একটি ঘরে প্রবেশ করিলাম, যাহাতে সাফা মারওয়ার সায়ীকালে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে আমরা দেখিতে পাই (তিনি কিরূপ কার্য করেন)। তখন আমি তাঁহাকে দেখিলাম, তিনি সায়ী করিতেছেন, আর জোরে পদক্ষেপ করার কারণে তাঁহার চাদর এদিক সেদিক দুলিতেছে। তখন আমি তাঁহাকে ইহাও বলিতে শুনিলাম যে, 'সায়ী কর! কেননা, আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি ইহা নির্ধারিত করিয়াছেন।' —বাগাবী শরহে সুন্নাহ্য় এবং ইমাম আহমদ তাঁহার মুসনাদে কিছু বিভিন্নতার সাথে।

২৫৮৩। হযরত কুদামা ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আম্মার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে উটে চড়িয়া সাফা মারওয়ার মধ্যে সায়ী করিতে দেখিয়াছি; কিন্তু কাহাকেও মারিতে বা হাঁকাইতে দেখি নাই অথবা সর সর বলিতেও শুনি নাই (যাহা আজকালের আমীর-উমারাগণ করিয়া থাকেন)। — শরহে সুন্নাহ

২৫৮৪। হযরত ইয়া'লা ইবনে উমাইয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বায়তুল্লাহ্ শরীফের তওয়াফ করিয়াছেন একটি সবুজ চাদর ‘এযতেবা'রূপে গায়ে দিয়া। —তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী

২৫৮৫। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাঁহার সাহাবীগণ জি'রানা হইতে উমরা করিয়াছেন এবং বায়তুল্লাহ্ শরীফের তওয়াফে তিন পাক 'রমল' করিয়াছেন। এ সময় তাঁহারা নিজেদের চাদরকে বগলের নীচে দিয়া উহাকে বাম কাঁধের উপর ফেলিয়াছেন। – আবু দাউদ