আল্লাহ! আমার ঐ সকল গুনাহ ক্ষমা করুন, যা আমি আগে করেছি এবং যা পরে করেছি; যা গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি; আর ঐ সকল গুনাহও ক্ষমা করুন যে সম্পর্কে আপনি আমার চেয়ে অধিক অবগত। (কারণ, হতে পারে, আমি তা ভুলে গেছি; কিন্তু আপনি ভুলেন না। হতে পারে, তা অবচেতনে রয়েছে; কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে তো চেতন-অবচেতনের প্রশ্নই অবান্তর)।৬০
পরওয়ারদেগার! আমাকে মদদ দিন, আমার বিরুদ্ধে কাউকে মদদ দিয়েন না। আমাকে জয়ী করুন, আমার উপর অন্যকে জয়ী কোরেন না। আমার পক্ষে ব্যবস্থা নিন, আমার বিপক্ষে কারো ব্যবস্থা সফল কোরেন না। আমাকে হেদায়েত দিন এবং হেদায়েতকে আমার জন্য সহজ করুন। আমাকে সাহায্য করুন তার বিরুদ্ধে যে আমার উপর জুলুম করে। পরওয়ারদেগার! আপনাকে যেন বেশি বেশি স্মরণ করি। বেশি বেশি আপনার শোকরগোজারি করি। আপনাকেই যেন খুব ভয় করি। আপনার খুব ফরমাবরদারি করি। আপনার খুব অনুগত থাকি। আপনারই কাছে যেন প্রশান্তি পাই, আপনারই দরবারে যেন ফরিয়াদি হই এবং আপনারই দিকে রুজু করি। পরওয়ারদেগার! আমার তাওবা কবুল করুন। আমার পাপ ধৌত করুন। আমার প্রার্থনা মঞ্জুর করুন। আমার দ্বীনী দলিল অটল রাখুন। আমার জিহ্বাকে করুন সত্যভাষী, হৃদয়কে করুন সুপথগামী আর আমার বুক থেকে দূর করে দিন অস্বচ্ছতা, (যাতে সকল অবস্থায় দ্বীনের উপর থাকা এবং আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের হক আদায় করা আমার পক্ষে সহজ হয়।)৫৬
হে আল্লাহ! আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের উপর রহম করুন। আমাদের প্রতি রাজি-খুশি হোন। আমাদেরকে জান্নাতে দাখিল করুন এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত দিন। আমাদের (দুনিয়া-আখেরাতের) সবকিছু দুরস্ত করে দিন।৫৭
ইয়া আল্লাহ আমাদের অন্তরে প্রীতির সঞ্চার করুন এবং পরস্পরের সম্পর্ক সদ্ভাবপূর্ণ করুন। আমাদের সম্মুখে শান্তি ও নিরাপত্তার পথসমূহ খুলে দিন এবং সকল অন্ধকার থেকে মুক্ত করে এক আলোর দিকে পরিচালিত করুন। আমাদের দূরে রাখুন প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা ও গর্হিত কর্ম থেকে এবং বরকত দান করুন আমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তিতে, আমাদের কলব ও হৃদয়ে, আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের মাঝে। আর আমাদের তাওবা কবুল করুন। নিঃসন্দেহে আপনিই তাওবা কবুলকারী, মেহেরবান। আমাদের করুন আপনার নেয়ামতের শোকরকারী, গুণ-গানকারী ও তা গ্রহণকারী। আর তা আমাদের জন্য পূর্ণ করুন।৫৮
ইয়া আল্লাহ! আমাদের দিন আপনার এ পরিমাণ ভয়, যা দ্বারা আপনি আমাদের নাফরমানি থেকে বিরত রাখবেন এবং এ পরিমাণ আনুগত্য, যা দ্বারা আপনি আমাদের জান্নাতে দাখিল করবেন এবং এ পরিমাণ বিশ্বাস, যা দ্বারা দুনিয়ার বিপদাপদ আমাদের জন্য সহজ করে দিবেন। আর ততদিন আমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও সকল সক্ষমতা অটুট রাখেন, যতদিন আমাদের জীবিত রাখেন এবং এর কল্যাণ আমাদের পরেও জারি রাখবেন। যে আমাদের উপর জুলুম করে, তার উপর আমাদের পক্ষ হতে প্রতিশোধ নিন এবং যে আমাদের সাথে দুশমনি করে, তার বিরুদ্ধে আমাদের জয়যুক্ত করুন। দ্বীনের বিষয়ে আমাদের বিপদগ্রস্ত কোরেন না, দুনিয়াকে বানাবেন না আমাদের প্রধান মাকসুদ এবং না জ্ঞানের শেষ সীমা ও না চূড়ান্ত আগ্রহের বিষয় আর আমাদের উপর এমন কাউকে আরোপ কোরেন না, যে আমাদের প্রতি রহমদিল নয়। (কোনো জালিম শাসক বা অন্য কিছু)।৬১
আয় আল্লাহ! আমাদের বৃদ্ধি করুন, হ্রাস কোরেন না। সম্মান দিন, লাঞ্ছিত কোরেন না। আমাদের দান করুন, বঞ্চিত কোরেন না। আমাদের প্রাধান্য দিন, আমাদের বিরুদ্ধে অন্যদের প্রাধান্য দিয়েন না। আমাদের রাজি-খুশি রাখুন এবং আপনিও আমাদের উপর রাজি-খুশি থাকুন।৬২
ইয়া আল্লাহ! আমাকে আপনার ভালোবাসা দান করুন এবং যার ভালোবাসা আপনার কাছে আমার জন্য উপকারী হয়, তার ভালবাসাও দান করুন। আপনি যখন আমাকে আমার প্রিয় বস্তু দান করেছেন, তখন একে আমার জন্য সহায়ক করুন আপনার প্রিয় কাজে। (অর্থাৎ আমার প্রিয় ও কাম্য যা কিছু আমি লাভ করেছি, তা আপনার পছন্দের বিষয়টি অর্জনের উপায় বানিয়ে দিন।) হে আল্লাহ! আমার যেসব কাম্য বস্তু আমার থেকে দূরে রেখেছেন, সেগুলো (থেকে দূরে থাকা) আমার জন্য ঐসব বিষয়ে মশগুল হওয়ার অবকাশ বানিয়ে দিন, যা আপনার কাছে প্রিয়।৬৭ (অর্থাৎ স্বভাবগতভাবে যা কিছু আমার প্রিয়, তা থেকে যখন আপনি নিজ প্রজ্ঞায় আমাকে দূরে রাখবেন, তখন এই প্রতিক্রিয়া আমার মাঝে সৃষ্টি করুন যে, আমি শুধু এসবের স্থলে আপনার প্রিয় বিষয়গুলোকেই ভালোবাসতে শুরু করি।)
ইয়া আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে চাই আপনার মাগফিরাতের উপায়সমূহ ও নাজাতদানকারী আমলসমূহ এবং (আপনার কাছে চাই) সকল গুনাহ থেকে মুক্তি ও সকল ভালো কাজের তাওফীক; আর (প্রার্থনা করি) বেহেশতে যাওয়া ও দোযখ থেকে নাজাত পাওয়া।৪৫
ইয়া আল্লাহ! আমার দ্বীনদারী দুরস্ত করে দিন, যা আমার সকল বিষয়ের রক্ষাকবচ। আমার দুনিয়া দুরস্ত করে দিন, যাতে আমার অবস্থান এবং আমার আখিরাত দুরস্ত করে দিন, যাতে আমার প্রত্যাবর্তন। আর আমার জীবন যেন হয় সকল কল্যাণে অগ্রসরতা আর আমার মৃত্যু যেন হয় সকল অকল্যাণ থেকে মুক্তি।৫৩
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি অক্ষমতা ও আলস্য থেকে, ভীরুতা ও অতিবার্ধক্য থেকে এবং ঋণ ও পাপ থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) দোযখের আযাব ও দোযখের ফিতনা থেকে (আশ্রয় নিচ্ছি) কবরের ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) সম্পদের কুফল ও সম্পদহীনতার অনিষ্ট থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে ও জীবন ও মৃত্যুর পরীক্ষা থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) অন্তরের কাঠিন্য ও উদাসীনতা থেকে; নিঃস্বতা, অপদস্থতা ও মুখাপেক্ষিতা থেকে; কুফরী, ফাসেকী ও জেদাজেদি থেকে আর লোকদেখানো ও লোকশোনানোর প্রবণতা থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) বধিরতা ও মূকতা থেকে, মস্তিষ্ক বিকলন, কুষ্ঠ, খারাপ রোগ-ব্যাধি ও ঋণের বোঝা থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) দুঃখ-দুশ্চিন্তা থেকে, কৃপণতা ও লোকের কর্তৃত্বপরায়ণতা থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) অতি বার্ধক্যে উপনীত হওয়া ও দুনিয়ার ফিতনা থেকে। (আশ্রয় নিচ্ছি) ঐ জ্ঞান থেকে, যার উপকার নেই, ঐ মন থেকে, যাতে তুষ্টি নেই, ঐ অন্তর থেকে, যাতে বিনয়-নম্রতা নেই; আর ঐ দু‘আ থেকে, যা কবুল হয় না।৫৫
দু'আর বিষয়সমূহ
38টি বিষয় পাওয়া গেছে