ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার দাস, পুত্র আপনার দাসের, পুত্র আপনার দাসীর। আমার ঝুঁটি (পূর্ণ সত্তা) আপনার কব্জায়। আমার উপর আপনার বিধানই কার্যকর। আমার সম্পর্কে আপনার ফয়সালা সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত। আমি আপনার সকল নামের তোফায়েলে যা দ্বারা নিজেকে আপনি গুণান্বিত করেছেন কিংবা আপন কিতাবে নাযিল করেছেন কিংবা নিজের কোনো সৃষ্টিকে শিক্ষা দিয়েছেন কিংবা আপনার কাছেই গোপন রেখেছেন, প্রার্থনা করছি, মহিমান্বিত কুরআনকে করুন আমার হৃদয়ের বসন্ত, আমার চোখের জ্যোতি, আমার বেদনার মলম ও আমার দুশ্চিন্তার উপশম।১০৬
১. ইয়া-ছীন। ২. ওয়াল কুরআ-নিল হাকীম। ৩. ইন্নাকা লামিনাল মুরছালীন। ৪. ‘আলা-সিরাতিম মুছতাকীম। ৫. তানঝীলাল ‘আঝীঝির রাহীম। ৬. লিতুনযিরা কাওমাম্মাউনযিরা আ-বাউহুম ফাহুম গা-ফিলূন। ৭. লাকাদ হাক্কাল কাওলু‘আলাআকছারিহিম ফাহুম লা-ইউ’মিনূন। ৮. ইন্না- জা‘আলনা-ফী আ‘না-কিহিম আগলা-লান ফাহিয়া ইলাল আযকা-নি ফাহুম মুকমাহূন। ৯. ওয়া জা‘আল না-মিম বাইনি আইদীহিম ছাদ্দাওঁ ওয়া মিন খালফিহিম ছাদ্দান ফাআগশাইনা-হুম ফাহুম লা-ইউবসিরূন। ১০. ওয়া ছাওয়াউন ‘আলাইহিম আ আনযারতাহুম আম লাম তুনযিরহুম লা-ইউ’মিনূন। ১১. ইন্নামা-তুনযিরু মানিত্তাবা‘আযযিকরা ওয়া খাশিয়াররাহমা-না বিলগাইবি ফাবাশশিরহু বিমাগফিরাতিওঁ ওয়া আজরিন কারীম। ১২. ইন্না-নাহনুনুহয়িল মাওতা-ওয়া নাকতুবুমা-কাদ্দামূওয়া আ-ছা-রাহুম ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহসাইনা-হু ফীইমা-মিম মুবীন। ১৩. ওয়াদরিব লাহুম মাছালান আসহা-বাল কারইয়াহ । ইযজাআহাল মুরছালূন। ১৪. ইয আরছালনা ইলাইলিমুছনাইনি ফাকাযযাবূহুমা-ফা‘আঝঝাঝনা-বিছা-লিছিন ফাকালূইন্নাইলাউকুম মুরছালূন। ১৫. কা-লূমাআনতুম ইল্লা-বাশারুম মিছলুনা- ওয়ামাআনঝালাররাহমা-নুমিনশাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা-তাকযিবূন। ১৬. কা-লূরাব্বুনা-ইয়া‘লামুইন্না-ইলাইকুম লামুরছালূন। ১৭. ওয়ামা-‘আলাইনাইল্লাল বালা-গুল মুবীন। ১৮. কা-লূইন্না-তাতাইয়ারনা বিকুম লাইল্লাম তানতাহূলানারজুমান্নাকুম ওয়ালাইয়ামাছছান্নাকুম মিন্না-‘আযা-বুন আলীম। ১৯. কা-লূতাইরুকুম মা‘আকুম আইন যুক্কিরতুম বাল আনতুম কাওমুম মুছরিফূন। ২০. ওয়াজাআ মিন আকসাল মাদীনাতি রাজুলুইঁ ইয়াছ‘আ- কা-লা ইয়াকাওমিত্তাবি‘উল মুরছালীন। ২১. ইত্তাবি‘ঊ মাল্লা-ইয়াছআলুকুম আজরাওঁ ওয়া হুম মুহতাদূন। ২২. ওয়া মা-লিয়া লাআ‘বুদুল্লাযী ফাতারানী ওয়া ইলাইহি তুর জা‘উন। ২৩. আআত্তাখিযুমিন দুনিহীআ-লিহাতান ইয়ঁইউরিদনির রাহমা-নুবিদু ররিল লা-তুগনি ‘আন্নী শাফা-‘আতুহুম শাইআওঁ ওয়ালা-ইউনকিযূন। ২৪. ইন্নী ইযাল্লাফী দালা-লিম্মুবীন। ২৫. ইন্নীআ-মানতুবিরাব্বিকুম ফাছমা‘ঊন। ২৬. কীলাদ খুলিল জান্নাতা কা-লা ইয়া-লাইতা কাওমী ইয়া‘লামূন। ২৭. বিমা-গাফারালী রাববী ওয়া জা‘আলানী মিনাল মুকরামীন। ২৮. ওয়ামাআনঝালনা-‘আলা-কাওমিহী মিম বা‘দিহী মিন জুনদিম মিনাছ ছামাইওয়ামা-কুন্নামুনঝিলীন। ২৯. ইন কা-নাত ইল্লা-সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান ফাইযা-হুম খা-মিদূন। ৩০. ইয়া-হাছরাতান ‘আলাল ‘ইবা-দি মা-ইয়া’তীহিম মির রাছূলিন ইল্লা-কা-নূবিহী ইয়াছতাহঝিউন। ৩১. আলাম ইয়ারাও কাম আহলাকনা- কাবলাহুম মিনাল কুরূনি আন্নাহুম ইলাইহিম লাইয়ারজি‘উন। ৩২. ওয়া ইন কুল্লুল লাম্মা-জামী‘উল লাদাইনা-মুহদারূন। ৩৩. ওয়া আ-য়াতুল লাহুমুল আরদুল মাইতাতু আহইয়াইনা-হা-ওয়াআখরাজনা-মিনহাহাব্বান ফামিনহু ইয়া’কুলূন। ৩৪. ওয়া জা‘আল না-ফীহা-জান্না-তিম মিন নাখীলিওঁ ওয়া আ‘না-বিও ওয়া ফাজ্জারনা-ফীহামিনাল ‘উইঊন। ৩৫. লিইয়া’কুলূমিন ছামারিহী ওয়ামা-‘আমিলাতহু আইদীহিম আফালা-ইয়াশকুরূন। ৩৬. ছুবহা-নাল্লাযী খালাকাল আঝাওয়া-জা কুল্লাহা- মিম্মা-তুমবিতুলআরদুওয়া মিন আনফুছিহিম ওয়া মিম্মা-লা-ইয়া‘লামূন। ৩৭. ওয়া আ-য়াতুল্লাহুমুল্লাইলু নাছলাখুমিনহুন্নাহা-রা ফাইযা-হুম মুজলিমূন। ৩৮. ওয়াশশামছুতাজরী লিমুছতাকাররিল লাহা- যা-লিকা তাকদীরুল ‘আঝীঝিল ‘আলীম। ৩৯. ওয়াল কামারা কাদ্দারনা-হু মানা-ঝিলা হাত্তা-‘আ-দাকাল ‘উরজুনিল কাদীম। ৪০. লাশশামছুইয়ামবাগী লাহাআন তুদরিকাল কামারা ওয়ালাল্লাইলুছা-বিকুন্নাহা-রি ওয়া কুল্লুন ফী ফালাকিইঁ ইয়াছবাহূন। ৪১. ওয়া আ-য়াতুল লাহুম আন্না-হামালনা-যুররিইয়াতাহুম ফিল ফুলকিল মাশহূন। ৪২. ওয়া খালাকনা-লাহুম মিম মিছলিহী মা ইয়ারকাবূন। ৪৩. ওয়া ইন নাশা’ নুগরিকহুম ফালা-ছারীখা লাহুম ওয়ালা-হুম ইউনকাযূন। ৪৪. ইল্লা-রাহমাতাম মিন্না -ওয়া মাতা-‘আন ইলা-হীন। ৪৫. ওয়া ইযা-কীলা লাহুমুত্তাকূ মা- বাইনা আইদীকুম ওয়ামা- খালফাকুম লা‘আল্লাকুম তুরহামূন। ৪৬. ওয়ামা-তা’তীহিম মিন আ-য়াতিম মিন আ-য়া-তি রাব্বিহিম ইল্লা-কা-নূ‘আনহা-মু‘রিদীন। ৪৭. ওয়া ইযা-কীলা লাহুম আনফিকূমিম্মা-রাঝাকাকুমুল্লা-হু কা-লাল্লাযীনা কাফারূ লিল্লাযীনা আমানূ আনুত‘ইমুমাল্লাও ইয়াশাউল্লা-হু আত‘আমাহূ ইন আনতুম ইল্লা-ফী দালা-লিম মুবীন। ৪৮. ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা-হা-যাল ওয়া‘দুইন কনতুম সা-দিকীন। ৪৯. মা-ইয়ানজু রূনা ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান তা’খুযুহুম ওয়া হুম ইয়াখিসসিমূন। ৫০. ফালা-ইয়াছতাতী‘ঊনা তাওছিয়াতাওঁ ওয়ালাইলাআহলিহিম ইয়ারজি‘ঊন। ৫১. ওয়ানুফিখা ফিসসূরি ফাইযা-হুম মিনাল আজদা-ছিইলা-রাব্বিহিম ইয়ানছিলূন। ৫২. কা-লূইয়া-ওয়াইলানা-মাম বা‘আছানা-মিম মারকাদিনা-হা-যা-মাওয়া‘আদার রাহমা-নুওয়া সাদাকাল মুরছালূন। ৫৩. ইন কা-নাত ইল্লা-সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান ফাইযা-হুম জামী‘উল লাদাইনা-মুহদারূন। ৫৪. ফালইয়াওমা লা-তুজলামুনাফছুন শাইয়াওঁ ওয়ালা-তুজঝাওনা ইল্লা-মা-কুনতুম তা‘মালূন। ৫৫. ইন্না আসহা-বাল জান্নাতিল ইয়াওমা ফী শুগুলিন ফা-কিহূন। ৫৬. হুম ওয়া আঝওয়া-জুহুম ফী জিলা-লিন ‘আলাল আরাইকি মুত্তাকিঊন। ৫৭. লাহুম ফীহা-ফা-কিহাতুওঁ ওয়া লাহুম মা-ইয়াদ্দা‘ঊন। ৫৮. ছালা-মুন কাওলাম মিররাব্বির রাহীম। ৫৯. ওয়াম তা-ঝুল ইয়াওমা আইয়ুহাল মুজরিমূন। ৬০. আলাম আ‘হাদ ইলাইকুম ইয়া-বানীআ-দামা আল্লা-তা‘বুদুশশাইতা-না ইন্নাহূলাকুম ‘আদুওউম মুবীন। ৬১. ওয়া আনি‘বুদূ নী হা-যা-সিরা-তুম মুছতাকীম। ৬২. ওয়ালাকাদ আদাল্লা মিনকুম জিবিল্লান কাছীরা- আফালাম তাকূনূতা‘কিলূন। ৬৩. হা-যিহী জাহান্নামুল্লাতী কুনতুম তূ‘আদূন। ৬৪. ইসলাওহাল ইয়াওমা বিমা-কুনতুম তাকফুরূন। ৬৫. আলইয়াওমা নাখতিমু‘আলাআফওয়া-হিহিম ওয়াতুকালিলমুনা আইদীহিম ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম বিমা-কা-নূইয়াকছিবূন। ৬৬. ওয়ালাও নাশাউলাতামাছনা- আলা আ‘ইউনিহিম ফাছতাবাকুসসিরা-তা ফাআন্নাইউবসিরূন। ৬৭. ওয়ালাও নাশাউ লামাছাখনা-হুম ‘আলা মাকা-নাতিহিম ফামাছতাতা-‘ঊ মুদিইয়াওঁ ওয়ালাইয়ারজি‘ঊন। ৬৮. ওয়ামান নু‘আম্মির হু নুনাক্কিছহু ফিল খালকি আফালা-ইয়া‘কিলূন। ৬৯. ওয়ামা-‘আল্লামনা-হুশশি‘রা ওয়ামা-ইয়ামবাগী লাহূ ইন হুওয়া ইল্লা-যিকরুওঁ ওয়া কুরআ-নুম মুবীন। ৭০. লিইউনযিরা মান কা-না হাইয়াওঁ ওয়া ইয়াহিক্কাল কাওলু‘আলাল কা-ফিরীন। ৭১. আওয়ালাম ইয়ারাও আন্না-খালাকনা- লাহুম মিম্মা- ‘আমিলাত আইদীনাআন‘আ-মান ফাহুম লাহা-মা-লিকূন। ৭২. ওয়া যাল্লালনা-হা-লাহুম ফামিনহা-রাকূবুহুম ওয়া মিনহা-ইয়া’কুলূন। ৭৩. ওয়া লাহুম ফীহা-মানা-ফি‘উ ওয়া মাশা-রিবু আফালা-ইয়াশকুরূন। ৭৪. ওয়াত্তাখাযূমিন দূনিল্লা-হি আ-লিহাতাল লা‘আল্লাহুম ইউনসারূন। ৭৫. লা-ইয়াছতাতী‘ঊনা নাসরাহুম ওয়াহুম লাহুম জুনদুম মুহদারূন। ৭৬. ফালা-ইয়াহঝুনকা কাওলুহুম । ইন্না-না‘লামুমা-ইউছিররূনা ওয়ামা-ইউ‘লিনূন। ৭৭. আওয়ালাম ইয়ারাল ইনছা-নুআন্না-খালাকনা-হুমিননুতফাতিন ফাইযা-হুওয়া খাসীমুম মুবীন। ৭৮. ওয়া দারাবা লানা-মাছালাওঁ ওয়া নাছিয়া খালকাহূ কা-লা মাইঁ ইউহয়িল ‘ইজা-মা ওয়া হিয়া রামীম। ৭৯. কুল ইউহয়ী হাল্লাযী আনশাআহা আওওয়ালা মাররাতিওঁ ওয়া হুয়া বিকুল্লি খালকিন ‘আলীমু। ৮০. আল্লাযী জা‘আলা লাকুম মিনাশশাজারিল আখদারি না-রান ফাইযা-আনতুম মিনহু তূকিদূন। ৮১. আওয়া লাইছাল্লাযী খালাকাছছামা-ওয়াতি ওয়াল আরদা বিকা-দিরিন ‘আলা আইঁ ইয়াখলুকা মিছলাহুম বালা- ওয়া হুওয়াল খাল্লা-কুল ‘আলীম। ৮২. ইন্নামাআমরুহূ ইযাআরা-দা শাইআন আইঁ ইয়াকূলা লাহূকুন ফাইয়াকূন। ৮৩. ফাছুবহা-নাল্লাযী বিয়াদিহী মালাকূতুকুল্লি শাইয়িওঁ ওয়া ইলাইহি তুর জা‘ঊন।
১. ইয়া-সীন। ২. হেকমতপূর্ণ কুরআনের শপথ! ৩. নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের একজন। ৪. সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। ৫. এ কুরআন অবতীর্ণ করা হচ্ছে সেই সত্তার পক্ষ হতে, যিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়াময়। ৬. যাতে তুমি সতর্ক কর এমন এক সম্প্রদায়কে, যাদের বাপ-দাদাদেরকে পূর্বে সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা উদাসীনতায় নিপতিত। ৭. বস্তুত তাদের অধিকাংশের ব্যাপারে কথা পূর্ণ হয়ে আছে। সুতরাং তারা ঈমান আনবে না। ৮. আমি তাদের গলায় চিবুক পর্যন্ত বেড়ি পরিয়েছি। ফলে তারা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে আছে। ৯. এবং আমি তাদের সামনে এক অন্তরাল দাঁড় করিয়ে দিয়েছি এবং পিছনেও এক অন্তরাল দাঁড় করিয়ে দিয়েছি আর এভাবে তাদেরকে সব দিক থেকে ঢেকে দিয়েছি, ফলে তারা কোন কিছু দেখতে পায় না। ১০. তুমি তাদেরকে সতর্ক কর অথবা সতর্ক নাই কর উভয়টাই তাদের জন্য সমান। তারা ঈমান আনবে না। ১১. তুমি তো কেবল এমন ব্যক্তিকেই সতর্ক করতে পার, যে উপদেশ অনুযায়ী চলে এবং দয়াময় আল্লাহকে না দেখে ভয় করে। সুতরাং এরূপ ব্যক্তিকে সুসংবাদ শোনাও মাগফিরাত ও সম্মানজনক পুরস্কারের। ১২. নিশ্চয়ই আমিই মৃতদেরকে জীবিত করব এবং তারা যা কিছু সামনে পাঠায় তা লিখে রাখি আর তাদের কর্মের যে ফলাফল হয় তাও। এক সুস্পষ্ট কিতাবে প্রতিটি বিষয় সংরক্ষণ করে রেখেছি। ১৩. এবং (হে রাসূল!) তুমি তাদের সামনে দৃষ্টান্ত পেশ কর এক জনপদবাসীর, যখন তাদের কাছে এসেছিল রাসূলগণ। ১৪. যখন আমি তাদের কাছে (প্রথমে) পাঠিয়েছিলাম দু’জন রাসূল, তখন তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলল। তারপর তৃতীয়জনের মাধ্যমে আমি তাদেরকে শক্তিশালী করেছিলাম। তারপর তারা সকলে বলল, নিশ্চয়ই আমাদেরকে তোমাদের কাছে রাসূল বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। ১৫. তারা বলল, তোমরা তো আমাদের মত মানুষই। দয়াময় আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা সম্পূর্ণ মিথ্যাই বলছ। ১৬. রাসূলগণ বলল, আমাদের প্রতিপালক ভালোভাবেই জানেন যে, আমাদেরকে বাস্তবিকই তোমাদের কাছে রাসূল বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। ১৭. আর আমাদের দায়িত্ব তো কেবল স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া। ১৮. জনপদবাসী বলল, আমরা তোমাদের মধ্যে অশুভতা লক্ষ করছি। তোমরা নিবৃত্ত না হলে আমরা অবশ্যই তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করব এবং অবশ্যই আমাদের হাতে তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি ভোগ করতে হবে। ১৯. রাসূলগণ বলল, তোমাদের অশুভতা খোদ তোমাদেরই সঙ্গে রয়েছে। তোমাদের কাছে উপদেশ-বাণী পৌঁছেছে বলেই কি (তোমরা একথা বলছ?) প্রকৃতপক্ষে তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ২০. শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এক ব্যক্তি ছুটে আসল। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলগণের অনুসরণ কর। ২১. অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চায় না এবং যারা সঠিক পথে আছে। ২২. আমার কী যুক্তি আছে যে, আমি সেই সত্তার ইবাদত করব না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? এবং তারই দিকে তোমাদের সকলকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। ২৩. আমি কি তাকে ছেড়ে এমন সব মাবুদ গ্রহণ করব, দয়াময় আল্লাহ আমার কোন অনিষ্ট করতে চাইলে যাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং যারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না? ২৪. তা করলে নিঃসন্দেহে আমি সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পতিত হব। ২৫. আমি তোমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি। সুতরাং তোমরা আমার কথা শোন। ২৬. (শেষ পর্যন্ত জনপদবাসী তাকে হত্যা করে ফেলল এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাকে) বলা হল, জান্নাতে প্রবেশ কর। সে (জান্নাতের নি‘আমত রাজি দেখে) বলল, আহা! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত ২৭. আল্লাহ কিভাবে আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিত লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন! ২৮. সেই ব্যক্তির পর আমি তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আসমান থেকে কোন বাহিনী পাঠাইনি এবং আমার তা পাঠানোর প্রয়োজনও ছিল না। ২৯. তা ছিল কেবল একটি মহানাদ, যাতে তারা সব নিভে নিথর হয়ে গেল। ৩০. আফসোস এসব বান্দার প্রতি! তাদের কাছে যে রাসূলই এসেছে তাকে নিয়ে তারা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করত। ৩১. তারা কি দেখেনি তাদের পূর্বে আমি কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছি, যারা তাদের কাছে ফিরে আসছে না? ৩২. এবং যত লোক আছে তাদের সকলকে অবশ্যই একত্র করে আমার সামনে হাজির করা হবে। ৩৩. আর তাদের জন্য একটি নিদর্শন হল মৃত ভূমি, যাকে আমি জীবন দান করেছি এবং তাতে শস্য উৎপন্ন করেছি অতঃপর তারা তা থেকে খেয়ে থাকে। ৩৪. আমি সে ভূমিতে সৃষ্টি করেছি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং তা থেকে উৎসারিত করেছি পানির প্রস্রবণ ৩৫. যাতে তারা তার ফল খেতে পারে। তাতো তাদের হাত তৈরি করেনি। তবুও কি তারা শোকর আদায় করবে না? ৩৬. পবিত্র সেই সত্তা, যিনি প্রতিটি জিনিস জোড়া-জোড়া সৃষ্টি করেছেন ভূমি যা উৎপন্ন করে তাও এবং তাদের নিজেদেরকেও আর তারা (এখনও) যা জানে না তাও। ৩৭. তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন হল রাত, যা থেকে আমি দিনের আবরণ সরিয়ে নেই, অমনি তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ৩৮. সূর্য আপন গন্তব্যের দিকে পরিভ্রমণ করছে। এসব পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ সত্তার স্থিরীকৃত (ব্যবস্থাপনা)। ৩৯. আর চাঁদের জন্য আমি নির্দিষ্ট করে দিয়েছি বিভিন্ন মনজিল। পরিশেষে তা (নিজ মনজিলসমূহ অতিক্রম করে) ফিরে আসে পুরানো খেজুর ডালার মত (সরু হয়ে)। ৪০. সূর্য পারে না চাঁদকে গিয়ে ধরতে আর রাতও পারে না দিনকে অতিক্রম করতে। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সাঁতার কাটে। ৪১. তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন এই যে, আমি তাদের সন্তান-সন্ততিকে বোঝাই নৌযানে আরোহন করিয়েছিলাম। ৪২. আমি তাদের জন্য অনুরূপ আরও জিনিস সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা সওয়ার হয়ে থাকে। ৪৩. আমি চাইলে তাদেরকে নিমজ্জিত করতে পারি, তখন তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না এবং তাদের প্রাণ রক্ষা সম্ভব হবে না ৪৪. তবে আমার পক্ষ হতে এক রহমত এবং এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত (জীবনের) আনন্দ ভোগের সুযোগ হিসেবে (আমিই তাদেরকে রক্ষা করে থাকি)। ৪৫. যখন তাদেরকে বলা হয়, বাঁচ তা হতে (সেই শাস্তি হতে) যা তোমাদের সামনে আছে এবং যা আছে তোমাদের পেছনে, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয় (তখন তারা তা গ্রাহ্য করে না)। ৪৬. এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদের কাছে এমন কোন নিদর্শন আসে না, যা থেকে তারা মুখ ফেরায় না। ৪৭. যখন তাদেরকে বলা হয় আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছেন তা থেকে (গরীবদের জন্যও) ব্যয় কর, তখন কাফেরগণ মুসলিমদেরকে বলে, আমরা কি তাদেরকে খাবার খাওয়াব, যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিজেই খাওয়াতেন? (হে মুসলিমগণ!) তোমাদের অবস্থা এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পড়ে রয়েছ। ৪৮. এবং তারা বলে, (কিয়ামতের) এ প্রতিশ্রুতি কবে পূর্ণ হবে? (হে মুসলিমগণ!) তোমরা সত্যবাদী হলে এটা বলে দাও। ৪৯. (প্রকৃতপক্ষে) তারা একটি মহানাদেরই অপেক্ষায় আছে, যা তাদেরকে পাকড়াও করবে তাদের বিতর্কে লিপ্ত থাকা অবস্থায়। ৫০. তখন আর তারা কোন অসিয়ত করতে পারবে না এবং পারবে না নিজ পরিবারবর্গের কাছে ফিরে যেতে। ৫১. এবং শিঙ্গায় (দ্বিতীয়) ফুঁ দেওয়া হবে। অমনি তারা আপন-আপন কবর থেকে বের হয়ে তাদের প্রতিপালকের দিকে ছুটে চলবে। ৫২. তারা বলতে থাকবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠাল? (উত্তর দেওয়া হবে,) এটা সেই জিনিস, যার প্রতিশ্রুতি দয়াময় আল্লাহ দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য কথা বলেছিল। ৫৩. আর কিছুই নয়, কেবল একটি মহানাদ হবে, অমনি তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। ৫৪. সুতরাং সে দিন কোন ব্যক্তির উপর জুলুম করা হবে না এবং তোমাদেরকে কেবল তোমাদের কৃতকর্মেরই প্রতিফল দেওয়া হবে। ৫৫. নিশ্চয়ই সে দিন জান্নাতবাসীগণ আপন ব্যস্ততায় মগ্ন থাকবে। ৫৬. তারা ও তাদের স্ত্রীগণ নিবিড় ছায়ায় আরামদায়ক আসনে হেলান দিয়ে থাকবে। ৫৭. সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফলমূল এবং তারা যা কিছুর ফরমায়েশ করবে তাই তারা পাবে। ৫৮. দয়াময় প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদেরকে সালাম বলা হবে। ৫৯. আর (কাফেরদেরকে বলা হবে) হে অপরাধীগণ! আজ তোমরা (মুমিনদের থেকে) পৃথক হয়ে যাও। ৬০. হে আদম সন্তানগণ! আমি কি তোমাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বলিনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? ৬১. এবং তোমরা আমার ইবাদত কর। এটাই সরল পথ? ৬২. বস্তুত শয়তান তোমাদের মধ্য হতে একটি বড় দলকে গোমরাহ করেছিল। তবুও কি তোমরা বোঝনি? ৬৩. এটিই সেই জাহান্নাম, যার ভয় তোমাদেরকে দেখানো হত। ৬৪. আজ এতে প্রবেশ কর। যেহেতু তোমরা কুফর করতে। ৬৫. আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেব। ফলে তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের। ৬৬. আমি চাইলে (ইহকালেই) তাদের চোখ লোপ করে দিতে পারতাম। তখন তারা পথের সন্ধানে ছোটাছুটি করত, কিন্তু তারা কোথায় কি দেখতে পেত? ৬৭. আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে স্ব-স্ব স্থানে বসিয়ে তাদেরকে বিকৃত (পঙ্গু) করে দিতে পারতাম ফলে তারা সামনে অগ্রসর হতে পারত না এবং পিছনেও ফিরে আসতে পারত না। ৬৮. আমি যাকে দীর্ঘায়ু দান করি সৃষ্টিগতভাবে তাকে উল্টিয়ে দেই। তথাপি কি তারা উপলব্ধি করবে না? ৬৯. আমি তাকে (অর্থাৎ রাসূলকে) কাব্য চর্চা করতে শিখাইনি এবং তা তার পক্ষে শোভনীয়ও নয়। এটা তো এক উপদেশবাণী এবং এমন কুরআন যা (সত্যকে) সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করে। ৭০. যাতে প্রত্যেক জীবিতজনকে সতর্ক করে দেয় এবং যাতে কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রমাণ চূড়ান্ত হয়ে যায়। ৭১. তারা কি দেখেনি যে, আমি নিজ হাতে সৃষ্ট বস্তু রাজির মধ্যে তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তারাই তার মালিক হয়ে গেছে? ৭২. আমি সে জন্তুগুলিকে তাদের বশীভূত করে দিয়েছি। সুতরাং সেগুলোর কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা আহার করে। ৭৩. এবং তাদের জন্যে এর মধ্যে আছে আরও বহু উপকারিতা এবং আছে পানীয় বস্তু। তথাপি কি তারা শোকর আদায় করবে না? ৭৪. তারা আল্লাহ ছাড়া বহু মাবুদ গ্রহণ করেছে এই আশায় যে, হয়ত তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। ৭৫. (অথচ) তারা তাদের সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না; বরং তারা তাদের জন্য এমন এক বিরোধী সৈন্য হয়ে যাবে, যাদেরকে (কিয়ামতের দিন তাদের সামনে) উপস্থিত করা হবে। ৭৬. সুতরাং (হে রাসূল!) তাদের কথা যেন তোমাকে দুঃখ না দেয়। আমি অবশ্যই জানি তারা কী গোপন রাখছে আর কী প্রকাশ করছে। ৭৭. মানুষ কি লক্ষ করেনি আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু দ্বারা? অতঃপর সহসাই সে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী হয়ে গেল। ৭৮. আমার সম্পর্কে সে উপমা রচনা করে, অথচ সে নিজ সৃজনের কথা ভুলে বসে আছে। সে বলে, কে এই অস্থিগুলিকে জীবিত করবে এগুলো পচে-গলে যাওয়া সত্ত্বেও? ৭৯. বলে দাও, সেগুলোকে জীবিত করবেন সেই সত্তা, যিনি তাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি প্রত্যেক সৃষ্টি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাত। ৮০. তিনিই সবুজ-সতেজ বৃক্ষ হতে তোমাদের জন্য আগুন সৃষ্টি করেছেন। অনন্তর তোমরা তা হতে প্রজ্বলনের কাজ নাও। ৮১. তবে কি যে সত্তা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ (পুনরায়) সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? কেন নয়? তিনি তো মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ! ৮২. তাঁর ব্যাপার তো এই যে, তিনি যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন, তখন কেবল বলেন, ‘হয়ে যা’। অমনি তা হয়ে যায়। ৮৩. অতএব পবিত্র সেই সত্তা, যার হাতে প্রতিটি জিনিসের শাসন-ক্ষমতা এবং তাঁরই কাছে তোমাদের সকলকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
বিসমিল্লা হিল্লাযী লা ইয়া দুররু মা আসমিহী শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম। (সকাল ও সন্ধায় ৩বার পাঠ করবে)
আমি শুরু করছি সে আল্লাহর নাম নিয়ে, যার নাম নিলে যমীন ও আসমানের কিছুই কোন ক্ষতি করতে পারে না এবং তিনি (সব কিছু) শুনেন ও জানেন।
ফাসুব হা-নাল্লা-হি হীনা তুম সু-না ওয়া হী-না তুছ্ব বিহূ-ন্। ওয়ালাহুল হামদু ফিস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি ওয়া‘আশিয়্যাও ওয়া হীনা তুজ-হিরুন। ইয়ুখরিজুল হাইয়্যা মিনাল্ মাইয়্যিতি ওয়া ইয়ুখরিজুল মাইয়্যিতা মিনাল হাইয়্যি ওয়া ইয়ুহইল আরদ্বা বা’দা মাওতিহা- ওয়া কাযা-লিকা তুখরজুন।
আল্লাহর তাসবীহতে লিপ্ত থাক যখন তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও এবং যখন তোমরা ভোরের সম্মুখীন হও। এবং তারই প্রশংসা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে, এবং বিকাল বেলায় (তার তাসবীহতে লিপ্ত হও) এবং জুহরের সময়ও। তিনি প্রাণহীন থেকে প্রাণবানকে বের করে আনেন এবং প্রাণবান থেকে প্রাণহীনকে বের করে আনেন। আর তিনি ভূমিকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করেন। এভাবেই তোমাদেরকে (কবর থেকে) বের করা হবে।
বিসমিকা রব্বী ওয়া য‘তু জাম্বী ওয়াবিকা আরফা ‘উহূ, ইন আমসাকতা নাফসী ফারহাম হা ওয়া ইন আরসালতাহা ফাহ ফাযহা বিমা তাহফাযু বিহী ‘ইবা দাকাস সালিহীন।
হে আমার রব! আমি আমার শরীরকে আপনার নামে বিছানায় রাখলাম (শয়ন করলাম) এবং আপনারই নামে বিছানা থেকে উঠাবো। আপনি যদি ঘুমের মধ্যে আমার নফসকে উঠিয়ে নেন তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদি না উঠিয়ে নেন তাহলে তাকে আপনার নেক বান্দাদের মত হিফাযত করবেন।
আল্লা–হুম্মা ইন্নি আসআলুকাস্ সাবা–তা ফিল আমরি, ওয়া আসআলুকা আযীমাতার্ রুশ্দি, ওয়া আসআলুকা শুকরা নি‘মাতিকা ওয়া হু্সনা ইবাদাতিকা, ওয়া আসআলুকা লিসানান ছাদিকান ওয়া ক্বালবান সালীমান, ওয়া খুলুকান মুস্তাকীমান, ওয়া আসআলুকা মিন খাইরি মা তা‘লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা মিম্মা তা‘লামু, ইন্নাকা আনতা আল্লামুল গুয়ুব।
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি দীনের বিষয়ে অবিচলতা এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করি উন্নত যোগ্যতা এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করি আপনার নেয়ামতের শোকরগোজারি ও বন্দেগীর সৌন্দর্য এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করি সত্যবাদী জিহ্বা, সুস্থ হৃদয় আর সুদৃঢ় চরিত্র। আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি কল্যাণ, যা আপনি জানেন এবং ক্ষমা চাই ঐ সকল গুনাহ থেকে, যে সম্পর্কে আপনি অবগত। সকল অদৃশ্য বিষয় তো আপনার জানা। (সুতরাং ঐ সকল গুনাহ সম্পর্কেও আপনি অবগত, যা কোনো সৃষ্টির জানা নেই)।৫৯
ইয়া আল্লাহ! আপনার কাছে প্রার্থনা করি ক্ষমা ও নিরাপত্তা আমার দ্বীনের জন্য, দুনিয়ার জন্য, পরিজন ও সম্পদের জন্য। ইয়া আল্লাহ! আমার দোষ আবৃত করুন এবং ভীতিকে নিরাপত্তার দ্বারা বদলে দিন। ইয়া আল্লাহ! আমাকে রক্ষা করুন আমার সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান থেকে, বাম থেকে এবং উপর থেকে (অর্থাৎ সম্ভাব্য সকল দিক থেকে)। আর আপনার বড়ত্বের দোহাই, আমি আশ্রয় চাই অতর্কিত নীচের দিক হতে আক্রান্ত হওয়া থেকে (অর্থাৎ দুনিয়া-আখিরাতের কোথাও যেন অতর্কিত শাস্তি ও বিপদের মুখোমুখি না হই)।৯৩
১. ইয়া-ছীন। ২. ওয়াল কুরআ-নিল হাকীম। ৩. ইন্নাকা লামিনাল মুরছালীন। ৪. ‘আলা-সিরাতিম মুছতাকীম। ৫. তানঝীলাল ‘আঝীঝির রাহীম। ৬. লিতুনযিরা কাওমাম্মাউনযিরা আ-বাউহুম ফাহুম গা-ফিলূন। ৭. লাকাদ হাক্কাল কাওলু‘আলাআকছারিহিম ফাহুম লা-ইউ’মিনূন। ৮. ইন্না- জা‘আলনা-ফী আ‘না-কিহিম আগলা-লান ফাহিয়া ইলাল আযকা-নি ফাহুম মুকমাহূন। ৯. ওয়া জা‘আল না-মিম বাইনি আইদীহিম ছাদ্দাওঁ ওয়া মিন খালফিহিম ছাদ্দান ফাআগশাইনা-হুম ফাহুম লা-ইউবসিরূন। ১০. ওয়া ছাওয়াউন ‘আলাইহিম আ আনযারতাহুম আম লাম তুনযিরহুম লা-ইউ’মিনূন। ১১. ইন্নামা-তুনযিরু মানিত্তাবা‘আযযিকরা ওয়া খাশিয়াররাহমা-না বিলগাইবি ফাবাশশিরহু বিমাগফিরাতিওঁ ওয়া আজরিন কারীম। ১২. ইন্না-নাহনুনুহয়িল মাওতা-ওয়া নাকতুবুমা-কাদ্দামূওয়া আ-ছা-রাহুম ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহসাইনা-হু ফীইমা-মিম মুবীন। ১৩. ওয়াদরিব লাহুম মাছালান আসহা-বাল কারইয়াহ । ইযজাআহাল মুরছালূন। ১৪. ইয আরছালনা ইলাইলিমুছনাইনি ফাকাযযাবূহুমা-ফা‘আঝঝাঝনা-বিছা-লিছিন ফাকালূইন্নাইলাউকুম মুরছালূন। ১৫. কা-লূমাআনতুম ইল্লা-বাশারুম মিছলুনা- ওয়ামাআনঝালাররাহমা-নুমিনশাইয়িন ইন আনতুম ইল্লা-তাকযিবূন। ১৬. কা-লূরাব্বুনা-ইয়া‘লামুইন্না-ইলাইকুম লামুরছালূন। ১৭. ওয়ামা-‘আলাইনাইল্লাল বালা-গুল মুবীন। ১৮. কা-লূইন্না-তাতাইয়ারনা বিকুম লাইল্লাম তানতাহূলানারজুমান্নাকুম ওয়ালাইয়ামাছছান্নাকুম মিন্না-‘আযা-বুন আলীম। ১৯. কা-লূতাইরুকুম মা‘আকুম আইন যুক্কিরতুম বাল আনতুম কাওমুম মুছরিফূন। ২০. ওয়াজাআ মিন আকসাল মাদীনাতি রাজুলুইঁ ইয়াছ‘আ- কা-লা ইয়াকাওমিত্তাবি‘উল মুরছালীন। ২১. ইত্তাবি‘ঊ মাল্লা-ইয়াছআলুকুম আজরাওঁ ওয়া হুম মুহতাদূন। ২২. ওয়া মা-লিয়া লাআ‘বুদুল্লাযী ফাতারানী ওয়া ইলাইহি তুর জা‘উন। ২৩. আআত্তাখিযুমিন দুনিহীআ-লিহাতান ইয়ঁইউরিদনির রাহমা-নুবিদু ররিল লা-তুগনি ‘আন্নী শাফা-‘আতুহুম শাইআওঁ ওয়ালা-ইউনকিযূন। ২৪. ইন্নী ইযাল্লাফী দালা-লিম্মুবীন। ২৫. ইন্নীআ-মানতুবিরাব্বিকুম ফাছমা‘ঊন। ২৬. কীলাদ খুলিল জান্নাতা কা-লা ইয়া-লাইতা কাওমী ইয়া‘লামূন। ২৭. বিমা-গাফারালী রাববী ওয়া জা‘আলানী মিনাল মুকরামীন। ২৮. ওয়ামাআনঝালনা-‘আলা-কাওমিহী মিম বা‘দিহী মিন জুনদিম মিনাছ ছামাইওয়ামা-কুন্নামুনঝিলীন। ২৯. ইন কা-নাত ইল্লা-সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান ফাইযা-হুম খা-মিদূন। ৩০. ইয়া-হাছরাতান ‘আলাল ‘ইবা-দি মা-ইয়া’তীহিম মির রাছূলিন ইল্লা-কা-নূবিহী ইয়াছতাহঝিউন। ৩১. আলাম ইয়ারাও কাম আহলাকনা- কাবলাহুম মিনাল কুরূনি আন্নাহুম ইলাইহিম লাইয়ারজি‘উন। ৩২. ওয়া ইন কুল্লুল লাম্মা-জামী‘উল লাদাইনা-মুহদারূন। ৩৩. ওয়া আ-য়াতুল লাহুমুল আরদুল মাইতাতু আহইয়াইনা-হা-ওয়াআখরাজনা-মিনহাহাব্বান ফামিনহু ইয়া’কুলূন। ৩৪. ওয়া জা‘আল না-ফীহা-জান্না-তিম মিন নাখীলিওঁ ওয়া আ‘না-বিও ওয়া ফাজ্জারনা-ফীহামিনাল ‘উইঊন। ৩৫. লিইয়া’কুলূমিন ছামারিহী ওয়ামা-‘আমিলাতহু আইদীহিম আফালা-ইয়াশকুরূন। ৩৬. ছুবহা-নাল্লাযী খালাকাল আঝাওয়া-জা কুল্লাহা- মিম্মা-তুমবিতুলআরদুওয়া মিন আনফুছিহিম ওয়া মিম্মা-লা-ইয়া‘লামূন। ৩৭. ওয়া আ-য়াতুল্লাহুমুল্লাইলু নাছলাখুমিনহুন্নাহা-রা ফাইযা-হুম মুজলিমূন। ৩৮. ওয়াশশামছুতাজরী লিমুছতাকাররিল লাহা- যা-লিকা তাকদীরুল ‘আঝীঝিল ‘আলীম। ৩৯. ওয়াল কামারা কাদ্দারনা-হু মানা-ঝিলা হাত্তা-‘আ-দাকাল ‘উরজুনিল কাদীম। ৪০. লাশশামছুইয়ামবাগী লাহাআন তুদরিকাল কামারা ওয়ালাল্লাইলুছা-বিকুন্নাহা-রি ওয়া কুল্লুন ফী ফালাকিইঁ ইয়াছবাহূন। ৪১. ওয়া আ-য়াতুল লাহুম আন্না-হামালনা-যুররিইয়াতাহুম ফিল ফুলকিল মাশহূন। ৪২. ওয়া খালাকনা-লাহুম মিম মিছলিহী মা ইয়ারকাবূন। ৪৩. ওয়া ইন নাশা’ নুগরিকহুম ফালা-ছারীখা লাহুম ওয়ালা-হুম ইউনকাযূন। ৪৪. ইল্লা-রাহমাতাম মিন্না -ওয়া মাতা-‘আন ইলা-হীন। ৪৫. ওয়া ইযা-কীলা লাহুমুত্তাকূ মা- বাইনা আইদীকুম ওয়ামা- খালফাকুম লা‘আল্লাকুম তুরহামূন। ৪৬. ওয়ামা-তা’তীহিম মিন আ-য়াতিম মিন আ-য়া-তি রাব্বিহিম ইল্লা-কা-নূ‘আনহা-মু‘রিদীন। ৪৭. ওয়া ইযা-কীলা লাহুম আনফিকূমিম্মা-রাঝাকাকুমুল্লা-হু কা-লাল্লাযীনা কাফারূ লিল্লাযীনা আমানূ আনুত‘ইমুমাল্লাও ইয়াশাউল্লা-হু আত‘আমাহূ ইন আনতুম ইল্লা-ফী দালা-লিম মুবীন। ৪৮. ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা-হা-যাল ওয়া‘দুইন কনতুম সা-দিকীন। ৪৯. মা-ইয়ানজু রূনা ইল্লা সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান তা’খুযুহুম ওয়া হুম ইয়াখিসসিমূন। ৫০. ফালা-ইয়াছতাতী‘ঊনা তাওছিয়াতাওঁ ওয়ালাইলাআহলিহিম ইয়ারজি‘ঊন। ৫১. ওয়ানুফিখা ফিসসূরি ফাইযা-হুম মিনাল আজদা-ছিইলা-রাব্বিহিম ইয়ানছিলূন। ৫২. কা-লূইয়া-ওয়াইলানা-মাম বা‘আছানা-মিম মারকাদিনা-হা-যা-মাওয়া‘আদার রাহমা-নুওয়া সাদাকাল মুরছালূন। ৫৩. ইন কা-নাত ইল্লা-সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতান ফাইযা-হুম জামী‘উল লাদাইনা-মুহদারূন। ৫৪. ফালইয়াওমা লা-তুজলামুনাফছুন শাইয়াওঁ ওয়ালা-তুজঝাওনা ইল্লা-মা-কুনতুম তা‘মালূন। ৫৫. ইন্না আসহা-বাল জান্নাতিল ইয়াওমা ফী শুগুলিন ফা-কিহূন। ৫৬. হুম ওয়া আঝওয়া-জুহুম ফী জিলা-লিন ‘আলাল আরাইকি মুত্তাকিঊন। ৫৭. লাহুম ফীহা-ফা-কিহাতুওঁ ওয়া লাহুম মা-ইয়াদ্দা‘ঊন। ৫৮. ছালা-মুন কাওলাম মিররাব্বির রাহীম। ৫৯. ওয়াম তা-ঝুল ইয়াওমা আইয়ুহাল মুজরিমূন। ৬০. আলাম আ‘হাদ ইলাইকুম ইয়া-বানীআ-দামা আল্লা-তা‘বুদুশশাইতা-না ইন্নাহূলাকুম ‘আদুওউম মুবীন। ৬১. ওয়া আনি‘বুদূ নী হা-যা-সিরা-তুম মুছতাকীম। ৬২. ওয়ালাকাদ আদাল্লা মিনকুম জিবিল্লান কাছীরা- আফালাম তাকূনূতা‘কিলূন। ৬৩. হা-যিহী জাহান্নামুল্লাতী কুনতুম তূ‘আদূন। ৬৪. ইসলাওহাল ইয়াওমা বিমা-কুনতুম তাকফুরূন। ৬৫. আলইয়াওমা নাখতিমু‘আলাআফওয়া-হিহিম ওয়াতুকালিলমুনা আইদীহিম ওয়া তাশহাদু আরজুলুহুম বিমা-কা-নূইয়াকছিবূন। ৬৬. ওয়ালাও নাশাউলাতামাছনা- আলা আ‘ইউনিহিম ফাছতাবাকুসসিরা-তা ফাআন্নাইউবসিরূন। ৬৭. ওয়ালাও নাশাউ লামাছাখনা-হুম ‘আলা মাকা-নাতিহিম ফামাছতাতা-‘ঊ মুদিইয়াওঁ ওয়ালাইয়ারজি‘ঊন। ৬৮. ওয়ামান নু‘আম্মির হু নুনাক্কিছহু ফিল খালকি আফালা-ইয়া‘কিলূন। ৬৯. ওয়ামা-‘আল্লামনা-হুশশি‘রা ওয়ামা-ইয়ামবাগী লাহূ ইন হুওয়া ইল্লা-যিকরুওঁ ওয়া কুরআ-নুম মুবীন। ৭০. লিইউনযিরা মান কা-না হাইয়াওঁ ওয়া ইয়াহিক্কাল কাওলু‘আলাল কা-ফিরীন। ৭১. আওয়ালাম ইয়ারাও আন্না-খালাকনা- লাহুম মিম্মা- ‘আমিলাত আইদীনাআন‘আ-মান ফাহুম লাহা-মা-লিকূন। ৭২. ওয়া যাল্লালনা-হা-লাহুম ফামিনহা-রাকূবুহুম ওয়া মিনহা-ইয়া’কুলূন। ৭৩. ওয়া লাহুম ফীহা-মানা-ফি‘উ ওয়া মাশা-রিবু আফালা-ইয়াশকুরূন। ৭৪. ওয়াত্তাখাযূমিন দূনিল্লা-হি আ-লিহাতাল লা‘আল্লাহুম ইউনসারূন। ৭৫. লা-ইয়াছতাতী‘ঊনা নাসরাহুম ওয়াহুম লাহুম জুনদুম মুহদারূন। ৭৬. ফালা-ইয়াহঝুনকা কাওলুহুম । ইন্না-না‘লামুমা-ইউছিররূনা ওয়ামা-ইউ‘লিনূন। ৭৭. আওয়ালাম ইয়ারাল ইনছা-নুআন্না-খালাকনা-হুমিননুতফাতিন ফাইযা-হুওয়া খাসীমুম মুবীন। ৭৮. ওয়া দারাবা লানা-মাছালাওঁ ওয়া নাছিয়া খালকাহূ কা-লা মাইঁ ইউহয়িল ‘ইজা-মা ওয়া হিয়া রামীম। ৭৯. কুল ইউহয়ী হাল্লাযী আনশাআহা আওওয়ালা মাররাতিওঁ ওয়া হুয়া বিকুল্লি খালকিন ‘আলীমু। ৮০. আল্লাযী জা‘আলা লাকুম মিনাশশাজারিল আখদারি না-রান ফাইযা-আনতুম মিনহু তূকিদূন। ৮১. আওয়া লাইছাল্লাযী খালাকাছছামা-ওয়াতি ওয়াল আরদা বিকা-দিরিন ‘আলা আইঁ ইয়াখলুকা মিছলাহুম বালা- ওয়া হুওয়াল খাল্লা-কুল ‘আলীম। ৮২. ইন্নামাআমরুহূ ইযাআরা-দা শাইআন আইঁ ইয়াকূলা লাহূকুন ফাইয়াকূন। ৮৩. ফাছুবহা-নাল্লাযী বিয়াদিহী মালাকূতুকুল্লি শাইয়িওঁ ওয়া ইলাইহি তুর জা‘ঊন।
১. ইয়া-সীন। ২. হেকমতপূর্ণ কুরআনের শপথ! ৩. নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের একজন। ৪. সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। ৫. এ কুরআন অবতীর্ণ করা হচ্ছে সেই সত্তার পক্ষ হতে, যিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়াময়। ৬. যাতে তুমি সতর্ক কর এমন এক সম্প্রদায়কে, যাদের বাপ-দাদাদেরকে পূর্বে সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা উদাসীনতায় নিপতিত। ৭. বস্তুত তাদের অধিকাংশের ব্যাপারে কথা পূর্ণ হয়ে আছে। সুতরাং তারা ঈমান আনবে না। ৮. আমি তাদের গলায় চিবুক পর্যন্ত বেড়ি পরিয়েছি। ফলে তারা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে আছে। ৯. এবং আমি তাদের সামনে এক অন্তরাল দাঁড় করিয়ে দিয়েছি এবং পিছনেও এক অন্তরাল দাঁড় করিয়ে দিয়েছি আর এভাবে তাদেরকে সব দিক থেকে ঢেকে দিয়েছি, ফলে তারা কোন কিছু দেখতে পায় না। ১০. তুমি তাদেরকে সতর্ক কর অথবা সতর্ক নাই কর উভয়টাই তাদের জন্য সমান। তারা ঈমান আনবে না। ১১. তুমি তো কেবল এমন ব্যক্তিকেই সতর্ক করতে পার, যে উপদেশ অনুযায়ী চলে এবং দয়াময় আল্লাহকে না দেখে ভয় করে। সুতরাং এরূপ ব্যক্তিকে সুসংবাদ শোনাও মাগফিরাত ও সম্মানজনক পুরস্কারের। ১২. নিশ্চয়ই আমিই মৃতদেরকে জীবিত করব এবং তারা যা কিছু সামনে পাঠায় তা লিখে রাখি আর তাদের কর্মের যে ফলাফল হয় তাও। এক সুস্পষ্ট কিতাবে প্রতিটি বিষয় সংরক্ষণ করে রেখেছি। ১৩. এবং (হে রাসূল!) তুমি তাদের সামনে দৃষ্টান্ত পেশ কর এক জনপদবাসীর, যখন তাদের কাছে এসেছিল রাসূলগণ। ১৪. যখন আমি তাদের কাছে (প্রথমে) পাঠিয়েছিলাম দু’জন রাসূল, তখন তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলল। তারপর তৃতীয়জনের মাধ্যমে আমি তাদেরকে শক্তিশালী করেছিলাম। তারপর তারা সকলে বলল, নিশ্চয়ই আমাদেরকে তোমাদের কাছে রাসূল বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। ১৫. তারা বলল, তোমরা তো আমাদের মত মানুষই। দয়াময় আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা সম্পূর্ণ মিথ্যাই বলছ। ১৬. রাসূলগণ বলল, আমাদের প্রতিপালক ভালোভাবেই জানেন যে, আমাদেরকে বাস্তবিকই তোমাদের কাছে রাসূল বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। ১৭. আর আমাদের দায়িত্ব তো কেবল স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া। ১৮. জনপদবাসী বলল, আমরা তোমাদের মধ্যে অশুভতা লক্ষ করছি। তোমরা নিবৃত্ত না হলে আমরা অবশ্যই তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করব এবং অবশ্যই আমাদের হাতে তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি ভোগ করতে হবে। ১৯. রাসূলগণ বলল, তোমাদের অশুভতা খোদ তোমাদেরই সঙ্গে রয়েছে। তোমাদের কাছে উপদেশ-বাণী পৌঁছেছে বলেই কি (তোমরা একথা বলছ?) প্রকৃতপক্ষে তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ২০. শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এক ব্যক্তি ছুটে আসল। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা রাসূলগণের অনুসরণ কর। ২১. অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চায় না এবং যারা সঠিক পথে আছে। ২২. আমার কী যুক্তি আছে যে, আমি সেই সত্তার ইবাদত করব না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? এবং তারই দিকে তোমাদের সকলকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। ২৩. আমি কি তাকে ছেড়ে এমন সব মাবুদ গ্রহণ করব, দয়াময় আল্লাহ আমার কোন অনিষ্ট করতে চাইলে যাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবে না এবং যারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না? ২৪. তা করলে নিঃসন্দেহে আমি সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পতিত হব। ২৫. আমি তোমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি। সুতরাং তোমরা আমার কথা শোন। ২৬. (শেষ পর্যন্ত জনপদবাসী তাকে হত্যা করে ফেলল এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাকে) বলা হল, জান্নাতে প্রবেশ কর। সে (জান্নাতের নি‘আমত রাজি দেখে) বলল, আহা! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত ২৭. আল্লাহ কিভাবে আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিত লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন! ২৮. সেই ব্যক্তির পর আমি তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আসমান থেকে কোন বাহিনী পাঠাইনি এবং আমার তা পাঠানোর প্রয়োজনও ছিল না। ২৯. তা ছিল কেবল একটি মহানাদ, যাতে তারা সব নিভে নিথর হয়ে গেল। ৩০. আফসোস এসব বান্দার প্রতি! তাদের কাছে যে রাসূলই এসেছে তাকে নিয়ে তারা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করত। ৩১. তারা কি দেখেনি তাদের পূর্বে আমি কত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছি, যারা তাদের কাছে ফিরে আসছে না? ৩২. এবং যত লোক আছে তাদের সকলকে অবশ্যই একত্র করে আমার সামনে হাজির করা হবে। ৩৩. আর তাদের জন্য একটি নিদর্শন হল মৃত ভূমি, যাকে আমি জীবন দান করেছি এবং তাতে শস্য উৎপন্ন করেছি অতঃপর তারা তা থেকে খেয়ে থাকে। ৩৪. আমি সে ভূমিতে সৃষ্টি করেছি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান এবং তা থেকে উৎসারিত করেছি পানির প্রস্রবণ ৩৫. যাতে তারা তার ফল খেতে পারে। তাতো তাদের হাত তৈরি করেনি। তবুও কি তারা শোকর আদায় করবে না? ৩৬. পবিত্র সেই সত্তা, যিনি প্রতিটি জিনিস জোড়া-জোড়া সৃষ্টি করেছেন ভূমি যা উৎপন্ন করে তাও এবং তাদের নিজেদেরকেও আর তারা (এখনও) যা জানে না তাও। ৩৭. তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন হল রাত, যা থেকে আমি দিনের আবরণ সরিয়ে নেই, অমনি তারা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ৩৮. সূর্য আপন গন্তব্যের দিকে পরিভ্রমণ করছে। এসব পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ সত্তার স্থিরীকৃত (ব্যবস্থাপনা)। ৩৯. আর চাঁদের জন্য আমি নির্দিষ্ট করে দিয়েছি বিভিন্ন মনজিল। পরিশেষে তা (নিজ মনজিলসমূহ অতিক্রম করে) ফিরে আসে পুরানো খেজুর ডালার মত (সরু হয়ে)। ৪০. সূর্য পারে না চাঁদকে গিয়ে ধরতে আর রাতও পারে না দিনকে অতিক্রম করতে। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সাঁতার কাটে। ৪১. তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন এই যে, আমি তাদের সন্তান-সন্ততিকে বোঝাই নৌযানে আরোহন করিয়েছিলাম। ৪২. আমি তাদের জন্য অনুরূপ আরও জিনিস সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা সওয়ার হয়ে থাকে। ৪৩. আমি চাইলে তাদেরকে নিমজ্জিত করতে পারি, তখন তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না এবং তাদের প্রাণ রক্ষা সম্ভব হবে না ৪৪. তবে আমার পক্ষ হতে এক রহমত এবং এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত (জীবনের) আনন্দ ভোগের সুযোগ হিসেবে (আমিই তাদেরকে রক্ষা করে থাকি)। ৪৫. যখন তাদেরকে বলা হয়, বাঁচ তা হতে (সেই শাস্তি হতে) যা তোমাদের সামনে আছে এবং যা আছে তোমাদের পেছনে, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয় (তখন তারা তা গ্রাহ্য করে না)। ৪৬. এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদের কাছে এমন কোন নিদর্শন আসে না, যা থেকে তারা মুখ ফেরায় না। ৪৭. যখন তাদেরকে বলা হয় আল্লাহ তোমাদেরকে যে রিযক দিয়েছেন তা থেকে (গরীবদের জন্যও) ব্যয় কর, তখন কাফেরগণ মুসলিমদেরকে বলে, আমরা কি তাদেরকে খাবার খাওয়াব, যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিজেই খাওয়াতেন? (হে মুসলিমগণ!) তোমাদের অবস্থা এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে পড়ে রয়েছ। ৪৮. এবং তারা বলে, (কিয়ামতের) এ প্রতিশ্রুতি কবে পূর্ণ হবে? (হে মুসলিমগণ!) তোমরা সত্যবাদী হলে এটা বলে দাও। ৪৯. (প্রকৃতপক্ষে) তারা একটি মহানাদেরই অপেক্ষায় আছে, যা তাদেরকে পাকড়াও করবে তাদের বিতর্কে লিপ্ত থাকা অবস্থায়। ৫০. তখন আর তারা কোন অসিয়ত করতে পারবে না এবং পারবে না নিজ পরিবারবর্গের কাছে ফিরে যেতে। ৫১. এবং শিঙ্গায় (দ্বিতীয়) ফুঁ দেওয়া হবে। অমনি তারা আপন-আপন কবর থেকে বের হয়ে তাদের প্রতিপালকের দিকে ছুটে চলবে। ৫২. তারা বলতে থাকবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠাল? (উত্তর দেওয়া হবে,) এটা সেই জিনিস, যার প্রতিশ্রুতি দয়াময় আল্লাহ দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য কথা বলেছিল। ৫৩. আর কিছুই নয়, কেবল একটি মহানাদ হবে, অমনি তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। ৫৪. সুতরাং সে দিন কোন ব্যক্তির উপর জুলুম করা হবে না এবং তোমাদেরকে কেবল তোমাদের কৃতকর্মেরই প্রতিফল দেওয়া হবে। ৫৫. নিশ্চয়ই সে দিন জান্নাতবাসীগণ আপন ব্যস্ততায় মগ্ন থাকবে। ৫৬. তারা ও তাদের স্ত্রীগণ নিবিড় ছায়ায় আরামদায়ক আসনে হেলান দিয়ে থাকবে। ৫৭. সেখানে তাদের জন্য থাকবে ফলমূল এবং তারা যা কিছুর ফরমায়েশ করবে তাই তারা পাবে। ৫৮. দয়াময় প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদেরকে সালাম বলা হবে। ৫৯. আর (কাফেরদেরকে বলা হবে) হে অপরাধীগণ! আজ তোমরা (মুমিনদের থেকে) পৃথক হয়ে যাও। ৬০. হে আদম সন্তানগণ! আমি কি তোমাদেরকে গুরুত্ব দিয়ে বলিনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? ৬১. এবং তোমরা আমার ইবাদত কর। এটাই সরল পথ? ৬২. বস্তুত শয়তান তোমাদের মধ্য হতে একটি বড় দলকে গোমরাহ করেছিল। তবুও কি তোমরা বোঝনি? ৬৩. এটিই সেই জাহান্নাম, যার ভয় তোমাদেরকে দেখানো হত। ৬৪. আজ এতে প্রবেশ কর। যেহেতু তোমরা কুফর করতে। ৬৫. আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেব। ফলে তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের। ৬৬. আমি চাইলে (ইহকালেই) তাদের চোখ লোপ করে দিতে পারতাম। তখন তারা পথের সন্ধানে ছোটাছুটি করত, কিন্তু তারা কোথায় কি দেখতে পেত? ৬৭. আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে স্ব-স্ব স্থানে বসিয়ে তাদেরকে বিকৃত (পঙ্গু) করে দিতে পারতাম ফলে তারা সামনে অগ্রসর হতে পারত না এবং পিছনেও ফিরে আসতে পারত না। ৬৮. আমি যাকে দীর্ঘায়ু দান করি সৃষ্টিগতভাবে তাকে উল্টিয়ে দেই। তথাপি কি তারা উপলব্ধি করবে না? ৬৯. আমি তাকে (অর্থাৎ রাসূলকে) কাব্য চর্চা করতে শিখাইনি এবং তা তার পক্ষে শোভনীয়ও নয়। এটা তো এক উপদেশবাণী এবং এমন কুরআন যা (সত্যকে) সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করে। ৭০. যাতে প্রত্যেক জীবিতজনকে সতর্ক করে দেয় এবং যাতে কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রমাণ চূড়ান্ত হয়ে যায়। ৭১. তারা কি দেখেনি যে, আমি নিজ হাতে সৃষ্ট বস্তু রাজির মধ্যে তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তারাই তার মালিক হয়ে গেছে? ৭২. আমি সে জন্তুগুলিকে তাদের বশীভূত করে দিয়েছি। সুতরাং সেগুলোর কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা আহার করে। ৭৩. এবং তাদের জন্যে এর মধ্যে আছে আরও বহু উপকারিতা এবং আছে পানীয় বস্তু। তথাপি কি তারা শোকর আদায় করবে না? ৭৪. তারা আল্লাহ ছাড়া বহু মাবুদ গ্রহণ করেছে এই আশায় যে, হয়ত তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। ৭৫. (অথচ) তারা তাদের সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না; বরং তারা তাদের জন্য এমন এক বিরোধী সৈন্য হয়ে যাবে, যাদেরকে (কিয়ামতের দিন তাদের সামনে) উপস্থিত করা হবে। ৭৬. সুতরাং (হে রাসূল!) তাদের কথা যেন তোমাকে দুঃখ না দেয়। আমি অবশ্যই জানি তারা কী গোপন রাখছে আর কী প্রকাশ করছে। ৭৭. মানুষ কি লক্ষ করেনি আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু দ্বারা? অতঃপর সহসাই সে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী হয়ে গেল। ৭৮. আমার সম্পর্কে সে উপমা রচনা করে, অথচ সে নিজ সৃজনের কথা ভুলে বসে আছে। সে বলে, কে এই অস্থিগুলিকে জীবিত করবে এগুলো পচে-গলে যাওয়া সত্ত্বেও? ৭৯. বলে দাও, সেগুলোকে জীবিত করবেন সেই সত্তা, যিনি তাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি প্রত্যেক সৃষ্টি সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাত। ৮০. তিনিই সবুজ-সতেজ বৃক্ষ হতে তোমাদের জন্য আগুন সৃষ্টি করেছেন। অনন্তর তোমরা তা হতে প্রজ্বলনের কাজ নাও। ৮১. তবে কি যে সত্তা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ (পুনরায়) সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? কেন নয়? তিনি তো মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ! ৮২. তাঁর ব্যাপার তো এই যে, তিনি যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন, তখন কেবল বলেন, ‘হয়ে যা’। অমনি তা হয়ে যায়। ৮৩. অতএব পবিত্র সেই সত্তা, যার হাতে প্রতিটি জিনিসের শাসন-ক্ষমতা এবং তাঁরই কাছে তোমাদের সকলকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
ইয়া হাইউ! ইয়া কাইয়ূমু! আপনার রহম-করমের তোফায়েলে ফরিয়াদ, আমার জন্য দুরস্ত করে দিন আমার সকল কিছু আর আমাকে এক লমহার জন্যও ছেড়ে দিয়েন না আমার নিজের দায়িত্বে।৯৪
ইয়া আল্লাহ! জিবরাইল, মিকাইল ও ইসরাফীলের মাবুদ! ইবরাহীম, ইসমাইল ও ইসহাকের মাবুদ! আমাকে আফিয়াত (সুস্থতা ও নিরাপত্তা) দান করুন। আপনার কোনো সৃষ্টিকে আমার উপর এমন কিছুর সাথে আরোপ কোরেন না, যা বহন করার শক্তি আমার নেই।১০৭
ওয়া আওহাইনাইলা-মূছাআন আলকি‘আসা-কা ফাইযা-হিয়া তালকাফুমাইয়া’ফিকূন। ফাওয়াকা‘আল হাক্কুওয়া বাতালা মা-কা-নূইয়া‘মালূন। ফাগুলিবূহুনা-লিকা ওয়ান কালাবূসা-গিরীন। ওয়া উলকিয়াছছাহারাতুছা-জিদীন। কা-লূআ-মান্না-বিরাব্বিল ‘আ-লামীন। রাব্বি মূছা-ওয়া হা-রূন।
(117) তখন আমি মূসাকে আদেশ দিলাম যে, তুমি তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ করো; আর অমনি তা তাদের বানানো বস্তুগুলোকে গিলে ফেলতে লাগল। (118) ফলে সত্য প্রমাণিত হল আর তাদের কর্মকাণ্ড অকার্যকর হয়ে গেল। (119) এভাবে তারা সেখানে পরাভূত হল এবং লাঞ্ছিত হয়ে ফিরে গেল। (120) যাদুকরেরা সেজদায় পড়ে গেল। (121) তারা বলল, “আমরা বিশ্বপ্রভুর প্রতি ঈমান এনেছি; (122) যিনি মূসা ও হারূনের প্রভু।”
ফালাম্মাআলকাও কা-লা মূছা- মা-জি’তুম বিহিছছিহরু ইন্নাল্লা-হা ছাইউবতিলুহূ ইন্নাল্লা-হা লা-ইউসলিহু‘আমালাল মুফছিদীন। ওয়া ইউহিক্কুল্লা-হুল হাক্কা বিকালিমা-তিহী ওয়ালাও কারিহাল মুজরিমূন।
(81) অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন মূসা বলল, “তোমরা যা এনেছো তা যাদু। অচিরেই আল্লাহ তা নস্যাৎ করে দেবেন। আল্লাহ তো অনর্থ সৃষ্টিকারীদের কর্ম ঠিক রাখেন না। (82) এবং অপরাধীরা পছন্দ না করলেও আল্লাহ তাঁর বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে থাকেন।”
(১)কুলঊহিয়া ইলাইইয়া আন্নাহুছতামা‘আ নাফারুম মিনাল জিন্নি ফাকা-লূইন্না-ছামি‘নাকুরআ-নান ‘আজাবা- । (২)ইয়াহদীইলাররুশদি ফাআ-মান্না- বিহী ওয়া লান নুশরিকা বিরাব্বিনাআহাদা- । (৩)ওয়া আন্নাহূতা‘আ- জাদ্দুরাব্বিনা- মাত্তাখাযা সা-হিবাতাওঁ ওয়ালা- ওয়ালাদা- । (৪)ওয়া আন্নাহূকা-না ইয়াকূলুছাফীহুনা- ‘আলাল্লা-হি শাতাতা- । (৫) ওয়া আন্না- জানান্নাআল্লান তাকূলাল ইনছুওয়াল জিন্নু‘আলাল্লা-হি কাযিবা- । (৬) ওয়া আন্নাহূকা-না রিজা-লুম মিনাল ইনছি ইয়া‘ঊযূনা বিরিজা-লিম মিনাল জিন্নি ফাঝা-দূহুম রাহাকা- । (৭) ওয়া আন্নাহুম জান্নুকামা-জানানতুম আল্লাইঁ ইয়াব‘আছাল্লা- হু আহাদা- । (৮) ওয়া আন্না-লামাছনাছছামাআ ফাওয়াজাদনা-হা- মুলিইয়াত হারাছান শাদীদাওঁ ওয়া শুহুবা-। (৯) ওয়া আন্না- কুন্না- নাক‘উদুমিনহা- মাকা-‘ইদা লিছছামা‘ই ফামাইঁ ইয়াছতামি‘ইল আনা ইয়াজিদ লাহূশিহা-বাররাসাদা-।
(1) বল, “আমাকে ওহীর মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, একদল জ্বিন কান পেতে (কোরআন) শুনেছে আর বলেছে, “আমরা এক বিস্ময়কর কোরআন শুনেছি, (2) যা (সকলকে) সৎপথ প্রদর্শন করে; তাই আমরা তা বিশ্বাস করেছি। আমরা আমাদের প্রভুর সাথে কাউকে শরীক করব না। (3) উচ্চ হোক আমাদের প্রভুর মর্যাদা! তিনি কোন সঙ্গিনী কিংবা কোন সন্তান গ্রহণ করেন নি।” (4) “আমাদের নির্বোধেরা আল্লাহ সম্পর্কে অসংযত মিথ্যা বলত; (5) অথচ আমরা মনে করেছিলাম যে, মানুষ ও জ্বিন আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলবে না।” (6) “কতক মানুষ ছিল, যারা কতক জ্বিনের কাছে আশ্রয় নিত; ফলে এই জ্বিনেরা ঐ মানুষগুলোর পাপ ও অন্যায় আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। (7) তারা মনে করেছিল, যেমন তোমরাও মনে করো যে, আল্লাহ কাউকে পুনরুত্থিত করবেন না।” (8) “আমরা আসমানে গিয়ে তার (আসমানের) তথ্য সংগ্রহ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাকে কঠোর প্রহরা ও উল্কায় পরিপূর্ণ দেখতে পেয়েছি। (9) আমরা আসমানের বিভিন্ন স্থানে (সেখানকার কথাবার্তা) শোনার জন্য বসতাম, কিন্তু এখন কেউ (তা) শুনতে চাইলে সে তার জন্য প্রস্তুত-রাখা উল্কা দেখতে পাবে।”
ওয়া আল কিমা-ফী ইয়ামীনিকা তালকাফ মা-সানা‘ঊ ইন্নামা-সানা‘ঊ কাইদুছাহিরিওঁ ওয়ালা-ইউফলিহুছছা-হিরু হাইছুআতা-।
তুমি তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ করো, (দেখবে) তারা যা কিছু তৈরী করেছে এটা তা সব গিলে ফেলবে। তারা যা তৈরী করেছে তা তো কেবল যাদুকরের কৌশল। যাদুকর যেখানেই আসুক (যাদুবিদ্যায় যতই পারদর্শী হোক), সফল হয় না।”
ওয়া আল কিমা-ফী ইয়ামীনিকা তালকাফ মা-সানা‘ঊ ইন্নামা-সানা‘ঊ কাইদুছাহিরিওঁ ওয়ালা-ইউফলিহুছছা-হিরু হাইছুআতা-।
তুমি তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ করো, (দেখবে) তারা যা কিছু তৈরী করেছে এটা তা সব গিলে ফেলবে। তারা যা তৈরী করেছে তা তো কেবল যাদুকরের কৌশল। যাদুকর যেখানেই আসুক (যাদুবিদ্যায় যতই পারদর্শী হোক), সফল হয় না।”
দু'আর বিষয়সমূহ
38টি বিষয় পাওয়া গেছে