মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ২০ টি
হাদীস নং: ৬২০৬
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২০৬। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, সা'দ ইবনে মুআযের মৃত্যুতে আরশ নড়িয়া উঠিয়াছিল। অপর এক রেওয়ায়তে আছে, সা'দ ইবনে মুআযের মৃত্যুতে রহমানের আরশ কাপিয়া উঠিয়াছিল। মোত্তা
كتاب المناقب
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «اهْتَزَّ الْعَرْشُ لِمَوْتِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ» وَفِي رِوَايَةٍ: «اهْتَزَّ عَرْشُ الرَّحْمَنِ لِمَوْتِ سَعْدِ بن معَاذ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২০৭
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২০৭। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাদিয়াস্বরূপ রেশমী পোশাক পেশ করা হইল। তখন সাহাবাগণ উহা স্পর্শ করিয়া উহার কোমলতায় বিস্ময় প্রকাশ করিতে লাগিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন: তোমরা ইহার কোমলতা দেখিয়া বিস্ময় বোধ করিতেছ! অথচ সা'দ ইবনে মুআযের রুমাল, যাহা জান্নাতে তিনি প্রাপ্ত হইয়াছেন, ইহার চাইতে অধিক উত্তম এবং আরও অনেক নরম। -মোত্তা
كتاب المناقب
وَعَنِ الْبَرَاءِ قَالَ: أُهْدِيَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُلَّةُ حَرِيرٍ فَجَعَلَ أَصْحَابُهُ يَمَسُّونَهَا وَيَتَعَجَّبُونَ مِنْ لِينِهَا فَقَالَ: «أَتَعْجَبُونَ مِنْ لِينِ هَذِهِ؟ لَمَنَادِيلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فِي الجنَّةِ خيرٌ مِنْهَا وألين» . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২০৮
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২০৮। হযরত উম্মে সুলাইম (রাঃ) বলেন, একদা তিনি [রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট আসিয়া] বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনার খাদেম আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দো'আ করুন। তখন তিনি এইভাবে দোআ করিলেন, হে আল্লাহ্! তাহার ধন ও সন্তান বৃদ্ধি করিয়া দাও। আর তুমি তাহাকে যাহাকিছু দান করিবে উহাতে বরকত প্রদান কর। হযরত আনাস বলেন,আল্লাহর কসম। আমার মাল-সম্পদ প্রচুর এবং আমার সন্তান-সন্তুতির সংখ্যা আজ প্রায় এক শত অতিক্রম করিয়াছে। মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ أُمِّ سُلَيْمٍ أَنَّهَا قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَسٌ خَادِمُكَ ادْعُ اللَّهَ لَهُ قَالَ: «اللهمَّ أَكثر مَاله وَولده وَبَارك فِيمَا أَعْطيته» قَالَ أنس: فو الله إِنَّ مَالِي لَكَثِيرٌ وَإِنَّ وَلَدِي وَوَلَدَ وَلَدِي لَيَتَعَادُّونَ عَلَى نَحْوِ الْمِائَةِ الْيَوْمَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২০৯
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২০৯। হযরত সা'দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম ব্যতীত ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী কোন লোকের উদ্দেশ্যে আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনি নাই—নিশ্চয় সে জান্নাতবাসী।” -মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: مَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لِأَحَدٍ يَمْشِي عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ «إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ» إِلَّا لِعَبْدِ اللَّهِ بن سَلام. مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১০
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১০। হযরত কায়স ইবনে উবাদ (রাঃ) বলেন, একদা আমি মদীনার মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় এক লোক মসজিদে প্রবেশ করিলেন, যাহার মুখমণ্ডলে ছিল বিনয়ের ছাপ। (তাহাকে দেখিয়া ) লোকেরা বলিয়া উঠিল, এই লোকটি জান্নাতী। (আগন্তুক) লোকটি সংক্ষিপ্তভাবে দুই রাকআত নামায পড়িলেন, অতঃপর মসজিদ হইতে বাহির হইলেন।(বর্ণনাকারী কায়স বলেন,) আমিও তাঁহার পিছনে পিছনে চলিলাম এবং বলিলাম, 'আপনি যখন মসজিদে প্রবেশ করিয়াছিলেন, তখন লোকেরা (আপনার প্রতি ইংগিত করিয়া) বলিয়াছিল, এই ব্যক্তি জান্নাতী। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম! কোন লোকের পক্ষে এমন কথা বলা উচিত নয়, যাহা সে জানে না। আসল ব্যাপারটি আমি তোমাকে সবিস্তারে বলিতেছি, লোকেরা আমার সম্পর্কে এমন ধারণা কেন করে। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যমানায় আমি একটি স্বপ্ন দেখিয়াছিলাম এবং তাহা নবী (ছাঃ)-এর কাছে বর্ণনা করিলাম। আমি স্বপ্নে দেখিলাম, আমি যেন একটি বাগানের মধ্যে। এই বলিয়া তিনি ঐ বাগানের বিশালতা ও উহার সবুজ-শ্যামল শোভা দৃশ্যের কথা উল্লেখ করিলেন। অতঃপর বলিলেন, বাগানের মধ্যভাগে ছিল লোহার একটি গুপ্ত। স্তম্ভটির নিম্নাংশ মাটিতে এবং উহার উপরের অংশ আসমান পর্যন্ত। সেই স্তম্ভের উপরের প্রান্তে রহিয়াছে একটি কড়া। আমাকে বলা হইল এই স্তম্ভে আরোহণ কর। আমি বলিলাম, উঠিতে তো পারিতেছি না। এমন সময় একজন খাদেম আমার নিকট আসিয়া আমার পিছনের কাপড় উঁচু করিয়া ধরিল। তখন আমি স্তত্ত্বে আরোহণ করিতে লাগিলাম। অবশেষে স্তম্ভটির উপরের প্রান্তে পৌঁছিয়া আমি কড়াটি ধরিয়া ফেলিলাম। তখন আমাকে বলা হইল; শক্তভাবে ধরিয়া রাখ। অতঃপর ঐ কড়াটি আমার হাতে ধরা অবস্থায় আমি ঘুম হইতে জাগিয়া উঠিলাম।
তারপর আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এই স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করিলে তিনি (ইহার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে) বলিলেন ঐ বাগানটি হইল "ইসলাম", ঐ স্বপ্নটা হইল ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ কড়াটি হইল ইসলামের সুদৃঢ় কড়া। সুতরাং তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের উপর অবিচল থাকিবে। (রাবী বলেন, আর ঐ লোকটি ছিলেন আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম। -মোত্তাঃ
তারপর আমি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এই স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করিলে তিনি (ইহার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে) বলিলেন ঐ বাগানটি হইল "ইসলাম", ঐ স্বপ্নটা হইল ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ কড়াটি হইল ইসলামের সুদৃঢ় কড়া। সুতরাং তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামের উপর অবিচল থাকিবে। (রাবী বলেন, আর ঐ লোকটি ছিলেন আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম। -মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا فِي مَسْجِدِ الْمَدِينَةِ فَدَخَلَ رَجُلٌ عَلَى وَجْهِهِ أَثَرُ الْخُشُوعِ فَقَالُوا: هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ تَجَوَّزَ فِيهِمَا ثُمَّ خَرَجَ وَتَبِعْتُهُ فَقُلْتُ: إِنَّكَ حِينَ دَخَلْتَ الْمَسْجِدَ قَالُوا: هَذَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ. قَالَ: وَاللَّهِ مَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ مَا لَا يَعْلَمُ فَسَأُحَدِّثُكَ لِمَ ذَاكَ؟ رَأَيْتُ رُؤْيَا عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَصَصْتُهَا عَلَيْهِ وَرَأَيْتُ كَأَنِّي فِي رَوْضَةٍ - ذَكَرَ مِنْ سَعَتِهَا وَخُضْرَتِهَا - وَسَطَهَا عَمُودٌ مِنْ حَدِيدٍ أَسْفَلُهُ فِي الْأَرْضِ وَأَعْلَاهُ فِي السَّمَاءِ فِي أَعْلَاهُ عُرْوَةٌ فَقِيلَ لِيَ: ارْقَهْ. فَقُلْتُ: لَا أَسْتَطِيعُ فَأَتَانِي مِنْصَفٌ فَرَفَعَ ثِيَابِي مِنْ خَلْفِي فرقِيتُ حَتَّى كُنْتُ فِي أَعْلَاهُ فَأَخَذْتُ بِالْعُرْوَةِ فَقِيلَ: اسْتَمْسِكْ فَاسْتَيْقَظْتُ وَإِنَّهَا لَفِي يَدِي فَقَصَصْتُهَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «تِلْكَ الرَّوْضَةُ الْإِسْلَامُ وَذَلِكَ الْعَمُودُ عَمُودُ الْإِسْلَامِ وَتِلْكَ العروة الْعُرْوَةُ الْوُثْقَى فَأَنْتَ عَلَى الْإِسْلَامِ حَتَّى تَمُوتَ وَذَاكَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَامٍ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১১
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১১। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, হযরত সাবেত ইবনে কায়স ইবনে শাম্মাস (রাঃ) ছিলেন আনসারদের মুখপাত্র। যখন আল্লাহর বাণী, “হে ঈমানদারগণ। তোমাদের কণ্ঠ স্বরকে নবী (ছাঃ)-এর কণ্ঠস্বরের উপরে উঁচু করিও না...... নাযিল হইল, তখন হযরত সাবেত নিজের ঘরের মধ্যে বসিয়া রহিলেন এবং নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাওয়া আসা বন্ধ করিয়া দিলেন। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত সা'দ ইবনে মুআযকে সাবেত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন- সাবেতের কি হইয়াছে, সে কি অসুস্থ? অতঃপর সা'দ (অবস্থা জানার জন্য) তাহার কাছে আসিলেন এবং রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথাটিও তাহার নিকট বলিলেন। উত্তরে সাবেত বলিলেন, এই আয়াতটি নাযিল হইয়াছে, আর তোমরা জান যে,তোমাদের মধ্যে আমার কণ্ঠস্বর রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আওয়াজ হইতে বুলন্দ। সুতরাং আমি তো দোযখী হইয়া গিয়াছি। অতঃপর সা'দ রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া সাবেতের অনুপস্থিতির ব্যাপারটি জানাইলে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন: আরে না, সে তো জান্নাতী। — মুসলিম
كتاب المناقب
عَن أَنَسٍ قَالَ: كَانَ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شماس خطيب الْأَنْصَار فَلَمَّا نزلت هَذِه الْآيَة: [يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوق صَوت النَّبِي] إِلَى آخِرِ الْآيَةِ جَلَسَ ثَابِتٌ فِي بَيْتِهِ وَاحْتَبَسَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ فَقَالَ: «مَا شَأْنُ ثَابِتٍ أَيَشْتَكِي؟» فَأَتَاهُ سَعْدٌ فَذَكَرَ لَهُ قَوْلُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ ثَابِتٌ: أُنْزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ وَلَقَدْ عَلِمْتُمْ أَنِّي مِنْ أَرْفَعِكُمْ صَوْتًا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَنَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَذَكَرَ ذَلِكَ سَعْدٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَلْ هُوَ من أهل الْجنَّة» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১২
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১২। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমরা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে বসা ছিলাম, ঠিক এমন সময় সূরা জুমুআ নাযিল হইল। (উক্ত সুরার মধ্যে) যখন এই আয়াত নাযিল হয়, وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ (আর তাহাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রহিয়াছে যাহারা এ যাবত তাহাদের সাথে মিলিত হয় নাই), তখন লোকেরা জিজ্ঞাসা করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। তাহারা কাহারা ? বর্ণনাকারী আবু হোরায়রা বলেন, সেই সময় আমাদের মাঝে হযরত সালমান ফারেসী উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমান ফারেসীর গায়ে হাত রাখিয়া বলিলেন যদি ঈমান ধ্রুব তারকার কাছেও থাকে, এই সমস্ত লোকদের কতিপয় ব্যক্তি নিশ্চয় তথা হইতে উহাকে হাসিল করিবে। মোত্তা
كتاب المناقب
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ نَزَلَتْ سُورَةُ الْجُمُعَةِ فَلَمَّا نَزَلَتْ [وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يلْحقُوا بهم] قَالُوا: مَنْ هَؤُلَاءِ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: وَفِينَا سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ قَالَ: فَوَضَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ ثُمَّ قَالَ: «لَوْ كَانَ الْإِيمَانُ عِنْدَ الثُّرَيَّا لَنَالَهُ رجالٌ من هَؤُلَاءِ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৩
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৩। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার আমার ও আমার মা এবং পরিবারস্থ সকলের জন্য এইভাবে দোআ করিলেন) এবং বলিলেন: হে আল্লাহ্ তোমার নগণ্য এই বান্দা আবু হোরায়রাকে এবং তাহার মাতাকে সমস্ত ঈমানদারদের জন্য প্রিয়তর বানাইয়া দাও। আর সমস্ত ঈমানদারদিগকেও ইহাদের কাছে প্রিয়তর বানাইয়া দাও। -মুসলিম
كتاب المناقب
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ حَبِّبْ عُبَيْدَكَ هَذَا» يَعْنِي أَبَا هُرَيْرَةَ «وَأُمَّهُ إِلَى عِبَادِكَ الْمُؤْمِنِينَ وَحَبِّبْ إِليهم الْمُؤمنِينَ» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৪
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৪। হযরত আয়েয ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, আবু সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মদীনায় আসিলে) একদা হযরত সালমান, সুহায়ব ও বেলাল প্রমুখ (রাঃ)-এর নিকট দিয়া অতিক্রম করিলেন। এই সময় তাহারা বলিলেন, আল্লাহর তলোয়ার কি আল্লাহর এই দুশমনের গর্দানটি এখনও উড়াইয়া দেয় নাই। তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) বলিলেন, তোমরা কি কোরাইশদের দলপতি এবং তাহাদের নেতা সম্পর্কে এইরূপ উক্তি করিতেছ ? অতঃপর তিনি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া তাহাকেও অবহিত করিলেন। তাহার কথা শুনিয়া নবী (ছাঃ) বলিলেন: হে আবু বকর। সম্ভবত তুমি তাহাদের মনে দুঃখ দিয়াছ। যদি তুমি তাহাদের মনে দুঃখ দিয়া থাক, তাহা হইলে নিশ্চয় তুমি তোমার রবকে নারায করিয়াছ।এই কথা শুনিয়া হযরত আবু বকর (রাঃ) সালমান ও তাহার সঙ্গীদের কাছে আসিয়া বলিলেন, হে আমার ভাইসব! আমি তোমাদের মনে ব্যথা দিয়াছি (সুতরাং, তোমরা আমাকে ক্ষমা করিয়া দাও)। জওয়াবে তাহারা বলিলেন, হে আমাদের ভাই। আমাদের মনে কোন দুঃখ-ব্যথা নাই। আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন। —মুসলিম
كتاب المناقب
وَعَن عَائِذ بن عَمْرو أَن أَبَا سُفْيَان أَتَى عَلَى سَلْمَانَ وَصُهَيْبٍ وَبِلَالٍ فِي نَفَرٍ فَقَالُوا: مَا أَخَذَتْ سُيُوفُ اللَّهِ مِنْ عُنُقِ عَدُوِّ اللَّهِ مَأْخَذَهَا. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: أَتَقُولُونَ هَذَا لِشَيْخِ قُرَيْشٍ وَسَيِّدِهِمْ؟ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ لَعَلَّكَ أَغْضَبْتَهُمْ لَئِنْ كُنْتَ أَغْضَبْتَهُمْ لَقَدْ أَغْضَبْتَ رَبَّكَ فَأَتَاهُمْ فَقَالَ: يَا إِخْوَتَاهْ أَغْضَبْتُكُمْ قَالُوا: لَا يَغْفِرُ اللَّهُ لَكَ يَا أَخِي. رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৫
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৫। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন : আনসারদের প্রতি ভালবাসা ঈমানের চিহ্ন, আর আনসারদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ মুনাফেকীর (কপটতার) চিহ্ন। -মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «آيَةُ الْإِيمَانِ حُبُّ الْأَنْصَارِ وَآيَةُ النِّفَاقِ بُغْضُ الْأَنْصَارِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৬
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৬। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিতে শুনিয়াছি, আনসারদিগকে একমাত্র মু'মিনরাই ভালবাসে, আর মুনাফেক মাত্রই তাহাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। সুতরাং যেই ব্যক্তি তাহাদিগকে ভালবাসিবে, তাহাকে আল্লাহ্ ভালবাসিবেন। আর যেই ব্যক্তি তাহাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করিবে, তাহার প্রতি আল্লাহ্ শত্রুতা রাখিবেন। --মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنِ الْبَرَاءِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «الْأَنْصَارُ لَا يُحِبُّهُمْ إِلَّا مُؤْمِنٌ وَلَا يَبْغَضُهُمْ إِلَّا مُنَافِقٌ فَمَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللَّهُ وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ اللَّهُ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৭
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৭। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা যখন তাঁহার রাসুল (ছাঃ)-কে হাওয়াযেন গোত্রের সম্পদরাজি গনীমত আকারে হস্তগত করাইলেন, তখন তিনি উহা হইতে কোরাইশদের বিশেষ বিশেষ লোককে একশত করিয়া উট প্রদান করিলেন। ইহা দেখিয়া আনসারদের কিছু লোক বলিল, আল্লাহ্ তাহার রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ক্ষমা করুন। তিনি আমাদিগকে না দিয়া কোরাইশদিগকে প্রদান করিতেছেন, অথচ (ইসলামের জন্য) আমাদের তরবারি হইতে এখনও তাহাদের রক্ত ঝরিতেছে। (বর্ণনাকারী হযরত আনাস বলেন,) তাহাদের এই কথা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানান হইলে তিনি লোক পাঠাইয়া আনসারদিগকে ডাকিয়া চামড়ায় নির্মিত একটি তাবুর মধ্যে সমবেত করিলেন এবং তাহারা (আনসারগণ) ব্যতীত আর কাহাকেও তথায় ডাকিলেন না। অতঃপর যখন তাহারা সমবেত হইলেন, তখন রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেইখানে গিয়া বলিলেন: ইহা কেমন কথা, যাহা আমি তোমাদের পক্ষ হইতে শুনিতে পাইতেছি? তখন তাহাদের জ্ঞানী লোকেরা বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমাদের বুদ্ধিমান লোকেরা কিছুই বলেন নাই, অবশ্য কিছুসংখ্যক অল্পবয়স্ক তরুণ বলিয়াছে যে, আল্লাহ্ তাহার রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ক্ষমা করুন, তিনি আনসারদেরে রাখিয়া কোরাইশদিগকে প্রদান করিতেছেন। অথচ আমাদের তরবারি হইতে তাহাদের শোণিত এখনও ঝরিতেছে। তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, সবেমাত্র কুফর পরিত্যাগ করিয়াছে এমন কিছু লোককে (ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট ও তাহাদের মনঃতুষ্টির জন্য) মাল-সম্পদ প্রদান করিতেছি। তোমরা কি ইহাতে সন্তুষ্ট নও যে, এই সমস্ত লোকেরা অর্থ-সম্পদ লইয়া চলিয়া যাক, আর তোমরা আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সঙ্গে করিয়া বাড়ী ফিরিয়া যাও? তাহার এই কথা শুনিয়া আনসারগণ সকলেই বলিলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ্। আপনি যাহা বলিয়াছেন, ইহাতে আমরা সন্তুষ্ট আছি। --মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: إِنَّ نَاسًا مِنَ الْأَنْصَارِ قَالُوا حِينَ أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ مَا أَفَاءَ فَطَفِقَ يُعْطِي رِجَالًا مِنْ قُرَيْشٍ الْمِائَةَ مِنَ الْإِبِلِ فَقَالُوا: يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَدَعُنَا وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ فَحَدَّثَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَقَالَتِهِمْ فَأَرْسَلَ إِلَى الْأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ مَنْ أَدَمٍ وَلَمْ يَدْعُ مَعَهُمْ أَحَدًا غَيْرَهُمْ فَلَمَّا اجْتَمَعُوا جَاءَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ: «مَا كَانَ حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ؟» فَقَالَ فُقَهَاؤُهُمْ: أَمَّا ذَوُو رَأْيِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَلَمْ يَقُولُوا شَيْئًا وَأَمَّا أُنَاسٌ مِنَّا حَدِيثَةٌ أَسْنَانُهُمْ قَالُوا: يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَدَعُ الْأَنْصَارَ وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي أُعْطِي رِجَالًا حَدِيثِي عَهْدٍ بِكُفْرٍ أَتَأَلَّفُهُمْ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالْأَمْوَالِ وَتَرْجِعُونَ إِلَى رِحَالِكُمْ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قد رَضِينَا. مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৮
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৮। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যদি হিজরত না হইত, তাহা হইলে আমি আনসারদের একজন হইতাম। যদি লোকজন কোন উপত্যকার দিকে চলে, আর আনসারগণ অন্য কোন উপত্যকা বা ঘাঁটির দিকে চলে, তবে অবশ্যই আমি আনসারদের উপত্যকা বা ঘাঁটির দিকে চলিব। আনসারগণ হইল ভিতরের পোশাকস্বরূপ, আর অন্যান্য লোকেরা হইল বাহিরের পোশাকস্বরূপ। আমার পরে খুব শিগগিরই তোমরা পক্ষপাতিত্ব দেখিতে পাইবে। (অর্থাৎ তোমাদের উপর অন্যদিগকে প্রাধান্য দেওয়া হইবে।) কাজেই তোমরা হাউযে কাউসারের নিকট আমার সাথে মিলিত হওয়া পর্যন্ত ধৈর্যধারণ করিবে। -বুখারী
كتاب المناقب
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْلَا الْهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرَءًا مِنَ الْأَنْصَارِ وَلَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتِ الْأَنْصَارُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الْأَنْصَارِ وشعبها وَالْأَنْصَار شِعَارٌ وَالنَّاسُ دِثَارٌ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي عَلَى الْحَوْضِ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২১৯
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২১৯। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আমরা রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। এই সময় তিনি ঘোষণা দিলেন, যেই ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের গৃহে প্রবেশ করিবে, সে নিরাপদ আর যেই ব্যক্তি অস্ত্র ফেলিয়া দিবে, সেও নিরাপদ। তখন আনসারগণ [রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর প্রতি ইংগিত করিয়া] বলিতে লাগিল, লোকটির মধ্যে আপন আত্মীয়-স্বজনের মায়া ও স্বীয় জন্মস্থানের প্রতি আকর্ষণ দেখা দিয়াছে। এমন সময় আল্লাহ তা'আলা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ওহী নাযিল করিলেন। (এবং তাহাদের উক্তি জানাইয়া দিলেন।) অতঃপর রাসুলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন: তোমরা তো আমার সম্পর্কে এইরূপ মন্তব্য করিয়াছ যে, লোকটিকে আত্মীয়-স্বজন ও জন্মভূমির মায়া অভিভূত করিয়া ফেলিয়াছে। কখনও নহে। নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা ও তাহার রাসুল। আমি আল্লাহর রাস্তায় এবং তোমাদের দিকে হিজরত করিয়াছি। তোমাদের মধ্যেই আমার জীবন আর তোমাদের মধ্যেই আমার মরণ। এই কথা শুনিয়া তাহারা বলিল, আল্লাহর কসম। আমরা উক্ত কথাটি শুধুমাত্র আল্লাহ ও তাহার রাসুলের ব্যাপারে নিজ কার্পণ্য হিসাবে বলিয়াছি। (অর্থাৎ, যেই নেয়ামত আমরা আমাদের মাঝে পাইয়াছি, উহা হইতে যেন আমরা কোন দিনই বঞ্চিত না হই।) তখন রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ) বলিলেন, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল তোমাদের সত্যবাদিতা গ্রহণ করিয়াছেন এবং তোমাদের ওযর কবুল করিয়াছেন। -মুসলিম
كتاب المناقب
وَعَنْهُ قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الْفَتْحِ فَقَالَ: «مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَلْقَى السِّلَاحَ فَهُوَ آمِنٌ» . فَقَالَتِ الْأَنْصَارُ: أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ. وَنَزَلَ الْوَحْيُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «قُلْتُمْ أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ كَلَّا إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ هَاجَرْتُ إِلَى الله وإليكم فالمحيا مَحْيَاكُمْ وَالْمَمَاتُ مَمَاتُكُمْ» قَالُوا: وَاللَّهِ مَا قُلْنَا إِلَّا ضِنًّا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ. قَالَ: «فَإِنَّ اللَّهَ وَرَسُوله يصدقانكم ويعذرانكم» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২০
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২০। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখিলেন (আনসারীদের) কতিপয় শিশু ও মহিলা কোন এক বিবাহ উৎসব হইতে আসিতেছে। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়াইয়া বলিলেন আয় আল্লাহ্ । (তুমি সাক্ষী থাক।) তোমরা (অর্থাৎ, আনসারগণ) সমস্ত মানুষের চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয়। আয় আল্লাহ্। তোমরা অর্থাৎ আনসারগণ আমার কাছে সমস্ত মানুষ অপেক্ষা অধিক প্রিয়। -মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَأَى صِبْيَانًا وَنِسَاءً مُقْبِلِينَ مِنْ عُرْسٍ فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «اللَّهُمَّ أَنْتُمْ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ اللَّهُمَّ أَنْتُمْ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ» يَعْنِي الْأَنْصَار. مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২১
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২১। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, [নবী (ছাঃ) যখন অন্তিম পীড়ায় আক্রান্ত, তখন] হযরত আবু বকর ও আব্বাস (রাঃ) একদিন আনসারদের কোন এক মজলিসের নিকট দিয়া গমন করেন। এই সময় তাহারা কাদিতেছিল। ইহা দেখিয়া ইহারা উভয়ে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনারা কাদিতেছেন কেন? তাহারা বলিলেন, আমাদের সঙ্গে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উঠাবসার কথা আমরা স্মরণ করিতেছিলাম। অতঃপর তাহাদের একজন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গেলেন এবং তাঁহাকে এই ব্যাপারে অবহিত করিলেন। [রাবী হযরত আনাস (রাঃ) বলেন,] তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একখানা চাদরের এক প্রাপ্ত মাথায় বাধা অবস্থায় ঘর হইতে বাহিরে আসিলেন এবং মিম্বরে আরোহণ করিলেন। ঐ দিনের পর তিনি আর মিম্বরে আরোহণ করেন নাই। অতঃপর তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলী বর্ণনা করিলেন, তারপর বলিলেন আনসারদের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিবার জন্য আমি তোমাদিগকে অসিয়ত করিয়া যাইতেছি। কেননা, তাঁহারাই আমার অন্তরং্গ এবং আমার বিশ্বস্ত। তাহাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব তাহারা যথাযথ সম্পাদন করিয়াছেন, কিন্তু তাহাদের যাহাকিছু প্রাপ্য তাহা বাকী রহিয়াছে। অতএব, তাহাদের উত্তম ব্যক্তিদের (উত্তম কাজকে) তোমরা সাগ্রহে কবুল কর এবং তাহাদের মন্দ ব্যক্তিদের (মন্দকে) তোমরা ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখ। -বুখারী
كتاب المناقب
وَعَنْهُ قَالَ: مَرَّ أَبُو بَكْرٍ وَالْعَبَّاسُ بِمَجْلِسٍ من مجَالِس الْأَنْصَار وهم يَبْكُونَ فَقَالَ: مَا يُبْكِيكُمْ؟ قَالُوا: ذَكَرْنَا مَجْلِسَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَّا فَدَخَلَ أَحَدُهُمَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ بِذَلِكَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ عَصَّبَ عَلَى رَأْسِهِ حَاشِيَةَ بُرْدٍ فَصَعِدَ الْمِنْبَر وَلم يَصْعَدهُ بعد ذَلِك الْيَوْم. فَحَمدَ الله وَأَثْنَى عَلَيْهِ. ثُمَّ قَالَ: «أُوصِيكُمْ بِالْأَنْصَارِ فَإِنَّهُمْ كَرِشِي وَعَيْبَتِي وَقَدْ قَضَوُا الَّذِي عَلَيْهِمْ وَبَقِيَ الَّذِي لَهُمْ فَاقْبَلُوا مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَتَجَاوَزُوا عَنْ مسيئهم» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২২
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, যেই পীড়ায় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইনতেকাল করিয়াছেন, সেই পীড়ার সময় তিনি একদিন ঘর হইতে বাহির হইলেন এবং আসিয়া (মসজিদের) মিম্বরে বসিলেন। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা ও তাহার গুণা বলী বর্ণনা করিলেন। তারপর বলিলেন আম্মা বা'দ (হে লোকসকল। শোন। মু'মিন) লোকদের সংখ্যা বাড়িতে থাকিবে আর আনসারদের সংখ্যা হ্রাস পাইতে থাকিবে। অবশেষে তাহারা খাদ্যের মধ্যকার লবণতুল্য হইয়া দাঁড়াইবে। অতএব, তোমাদের কেহ যদি কোন ক্ষমতার অধিকারী হয়, যাহার ফলে সে (ইচ্ছা করিলে) কোন কওমের ক্ষতিও করিতে পারে কিংবা উপকারও করিতে পারে, তাহার উচিত হইবে যেন সে আনসারদের ভাল ব্যক্তিদের (সৎকর্মকে) সাদরে গ্রহণ করে এবং তাহাদের মন্দ ব্যক্তিদের (অন্যায় আচরণকে ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে। -বুখারী
كتاب المناقب
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ حَتَّى جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ النَّاسَ يَكْثُرُونَ وَيَقِلُّ الْأَنْصَارُ حَتَّى يَكُونُوا فِي النَّاسِ بِمَنْزِلَةِ الْمِلْحِ فِي الطَّعَامِ فَمَنْ وَلِيَ مِنْكُمْ شَيْئًا يَضُرُّ فِيهِ قَوْمًا وَيَنْفَعُ فِيهِ آخَرين فليقبل عَن محسنهم وليتجاوز عَن مسيئهم» رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২৩
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২৩। হযরত যায়দ ইবনে আরকাম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্, ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দো'আ করিলেন, হে আল্লাহ্। আনসার ও আনসারদের সন্তান-সন্ততি এবং তাহাদের সন্তানদের সন্তান-সন্ততিদিগকে তুমি ক্ষমা করিয়া দাও। -মুসলিম
كتاب المناقب
وَعَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «الله اغْفِرْ لِلْأَنْصَارِ وَلِأَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ وَأَبْنَاءِ أَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ» . رَوَاهُ مُسلم
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২৪
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২৪। হযরত আবু উসায়দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন আনসার গোত্রসমূহের মধ্যে উত্তম হইল বনু নাজ্জার, তারপর বনু আব্দে আশহাল, তারপর বনু হারেস ইবনে খাযরাজ এবং অতঃপর বনু সায়েদাহ। বস্তুত আনসারদের প্রতিটি পরিবারেই কল্যাণ রহিয়াছে। মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ أَبِي أُسَيْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خَيْرُ دُورِ الْأَنْصَارِ بَنُو النَّجَّارِ ثُمَّ بَنُو عَبْدِ الْأَشْهَلِ ثُمَّ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ ثُمَّ بَنُو سَاعِدَةَ وَفَى كُلِّ دُورِ الْأَنْصَارِ خَيْرٌ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৬২২৫
- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল
প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬২২৫। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে এবং যোবায়র ও মিকদাদকে অপর এক বর্ণনায় মিকদাদের পরিবর্তে আছে, আবু মারসাদকে পাঠাইলেন এবং বলিলেন: তোমরা "রওযায়ে খাখ" নামক স্থানে যাও, তথায় যাইয়া এক উষ্ট্রারোহী মহিলাকে পাইবে। তাহার নিকট একখানা চিঠি আছে। সুতরাং তোমরা তাহার নিকট হইতে উক্ত পত্রখানা লইয়া আসিবে। [হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমরা সকলে খুব দ্রুত ঘোড়া দৌড়াইয়া রওয়ানা হইলাম। অবশেষে উক্ত রওযা নামক স্থানে পৌঁছিয়া আমরা উষ্ট্রারোহী মহিলাকে পাইলাম। অতঃপর আমরা বলিলাম, "পত্রখানা বাহির কর।” সে বলিল, আমার কাছে কোন পত্র নাই। আমরা বলিলাম, স্বেচ্ছায় পত্রখানা বাহির করিয়া দাও, নতুবা আমরা তোমাকে উলঙ্গ করিয়া তল্লাশি চালাইব। শেষ পর্যন্ত সে তাহার চুলের বেণীর ভিতর হইতে পত্রখানা বাহির করিয়া দিল। অতঃপর আমরা উহা লইয়া নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আসিয়া পৌঁছিলাম। চিঠিখানা খুলিতেই দেখা গেল, (উক্ত চিঠিখানা) মক্কার মুশরিকদের কতিপয় লোকদের প্রতি হযরত হাতেব ইবনে আবু বালতাআর পক্ষ হইতে। ইহাতে তিনি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাহাদিগকে অবহিত করিতেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতেবকে (ডাকিয়া) জিজ্ঞাসা করিলেন, হে হাতেব। ইহা কি ব্যাপার? তিনি বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমার বিরুদ্ধে ত্বরিত কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না। প্রকৃত ব্যাপার হইল, আমি হইলাম কোরাইশদের মধ্যে একজন বহিরাগত ব্যক্তি। আমি তাহাদের বংশের অন্তর্ভুক্ত নই। আর আপনার সাথে যেইসমস্ত মুহাজির রহিয়াছেন, তাহাদের বংশীয় আত্মীয়-স্বজন সেইখানে (মক্কায়) রহিয়াছে, ফলে মক্কার মুশরিকগণ উক্ত আত্মীয়তার প্রেক্ষিতে ঐ সমস্ত মুহাজিরদের মাল-সম্পদ এবং অবশিষ্ট আপনজনদের হেফাযত করিয়া থাকে। কোরাইশদের মধ্যে যখন আমার কোন আত্মীয়-আপনজন নাই, তখন আমি ইহাই চাহিয়াছি যে, মক্কার শত্রু কওমের প্রতি কিছু এহসান করি, যাহাতে তাহারা আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয় এবং তাহাদের অনিষ্ট হইতে আমার আত্মীয়-স্বজন নিরাপদে থাকে। আমি এই কাজটি এই জন্য করি নাই যে, আমি কাফের কিংবা দ্বীন হইতে মুরতাদ হইয়া গিয়াছি। আর না ইসলাম গ্রহণ করিবার পর আমি কুফরীর দিকে আকৃষ্ট থাকিয়া এইরূপ করিয়াছি।
তাহার বক্তব্য শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হাতেব তোমাদের সম্মুখে সত্য কথাই বলিয়াছে। ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমাকে অনুমতি দিন, আমি এক্ষুণি এই মুনাফেকের গর্দান উড়াইয়া দেই। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [ওমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করিয়া] বলিলেন, নিশ্চয় ইনি একজন বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী। তুমি প্রকৃত ব্যাপারটি কি জান? সম্ভবত আল্লাহ তা'আলা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি লক্ষ্য করিয়াই বলিয়াছেন তোমরা যাহা ইচ্ছা কর, তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত। অন্য বর্ণনায় রহিয়াছে, আমি তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়া দিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা (হাতেব ও অন্যান্যদিগকে সতর্ক করার জন্য) নাযিল করিলেন- “হে ঈমানদারগণ! আমার ও তোমাদের শত্রুদের (কাফের-মুশরিকদের) সহিত কোন প্রকারের বন্ধুত্ব স্থাপন করিও না..মোত্তাঃ
তাহার বক্তব্য শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, হাতেব তোমাদের সম্মুখে সত্য কথাই বলিয়াছে। ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমাকে অনুমতি দিন, আমি এক্ষুণি এই মুনাফেকের গর্দান উড়াইয়া দেই। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [ওমর (রাঃ)-কে লক্ষ্য করিয়া] বলিলেন, নিশ্চয় ইনি একজন বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী। তুমি প্রকৃত ব্যাপারটি কি জান? সম্ভবত আল্লাহ তা'আলা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি লক্ষ্য করিয়াই বলিয়াছেন তোমরা যাহা ইচ্ছা কর, তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত। অন্য বর্ণনায় রহিয়াছে, আমি তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়া দিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা (হাতেব ও অন্যান্যদিগকে সতর্ক করার জন্য) নাযিল করিলেন- “হে ঈমানদারগণ! আমার ও তোমাদের শত্রুদের (কাফের-মুশরিকদের) সহিত কোন প্রকারের বন্ধুত্ব স্থাপন করিও না..মোত্তাঃ
كتاب المناقب
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا وَالزُّبَيْر والمقداد - وَفِي رِوَايَة: أَبَا مَرْثَدٍ بَدَلَ الْمِقْدَادِ - فَقَالَ: «انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِينَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوا مِنْهَا» فَانْطَلَقْنَا تَتَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا الرَّوْضَة فَإِذا نَحن بِالظَّعِينَةِ قُلْنَا لَهَا: أَخْرِجِي الْكتاب قَالَت: مَا معي كِتَابٍ. فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا فَأَتَيْنَا بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا فِيهِ: مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا حَاطِبُ مَا هَذَا؟» فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ لَا تَعْجَلْ عَلَيَّ إِنِّي كُنْتُ امْرَأً مُلْصَقًا فِي قُرَيْشٍ وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهِمْ وَكَانَ مَنْ مَعَك من الْمُهَاجِرين من لَهُم قَرَابَات يحْمُونَ بهَا أَمْوَالهم وأهليهم بِمَكَّةَ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِي ذَلِكَ مِنَ النَّسَبِ فِيهِمْ يَدًا يَحْمُونَ بِهَا قَرَابَتِي وَمَا فَعَلْتُ كفرا وَلَا ارْتِدَادًا عَن ديني وَلَا رضى بِالْكُفْرِ بَعْدَ الْإِسْلَامِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكُمْ» فَقَالَ عُمَرُ: دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ: اعْمَلُوا مَا شِئْتُم فقد وَجَبت لكم الجنةُ « وَفِي رِوَايَة فقد غَفَرْتُ لَكُمْ» فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى [يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ] . مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক: