রিয়াযুস সালিহীন-ইমাম নববী রহঃ

رياض الصالحين من كلام سيد المرسلين

৪. পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২০ টি

হাদীস নং: ৭৭৮
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক

পোশাক মানুষের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। আল্লাহ তা'আলা মানুষকে সৃষ্টিই করেছেন পোশাকের উপর নির্ভরশীল করে। পোশাক দ্বারা সে তার শরীর আবৃত করে। এটা তাকে করতেই হয়। অন্যথায় সে অন্যান্য জীবজন্তুর মতো হয়ে যায়। অর্থাৎ নগ্ন মানুষ পশুতুল্য। বস্তুত তার মনুষ্যত্বের স্বাতন্ত্র্য পোশাক দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাছাড়া শীত ও তাপ থেকে আত্মরক্ষার জন্যও মানুষের পোশাকের প্রয়োজন হয়। তার ত্বক বড় স্পর্শকাতর। শীত ও তাপের স্পর্শে তা কষ্ট পায় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যান্য জীব সেরকম নয়। তাই তাদের পোশাকেরও প্রয়োজন হয় না।
পোশাক মানুষের শোভাও বটে। মানুষের সৌন্দর্য পোশাকের দ্বারাই পরিস্ফুট হয়। মানুষ যে এক সুন্দরতম সৃষ্টি, তা কখনও বিনাপোশাকে উপলব্ধি করা যায় না। পোশাকবিহীন মানুষ কেবল অসুন্দরই নয়, নয় দর্শনযোগ্যও। নগ্নতা এমনই কদর্য যে, কোনও সভ্য লোক নিজেও অন্যের সামনে নগ্ন হতে পারে না, অন্যের নগ্নতাও সে পছন্দ করে না। কোনও রুচিশীল ব্যক্তি কখনও কোনও নগ্ন লোকের দিকে ফিরে তাকাতে পারে না।
এ সমস্ত কারণে পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্তর্ভুক্ত। তাই সভ্যতার শুরু বলতে কোনও কথা নয়; বরং সৃষ্টির সূচনা থেকেই মানুষ পোশাক ব্যবহার করে আসছে। বস্তুত মানুষ শুরু থেকেই সভ্য। আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে যখন সৃষ্টি করা হয়, তখন তাঁকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ও মা হাওয়া আলাইহাস সালাম জান্নাতে পোশাক পরিহিতা অবস্থায়ই ছিলেন। ইবলীস শয়তান তাঁদেরকে নগ্ন করতে চাইল। সে লক্ষ্যে তাঁদেরকে নানাভাবে প্ররোচনা দিল।
আল্লাহ তা'আলার নামে কসম করে মিথ্যা কথা পর্যন্ত বলল। শেষপর্যন্ত তাঁদের দ্বারা ভুল হয়ে গেল। তাঁরা জান্নাতের নিষিদ্ধ ফল খেয়ে ফেললেন। ফলে তাঁদের শরীর থেকে জান্নাতী পোশাক উড়ে গেল। তাঁরা নগ্ন হয়ে পড়লেন। কিন্তু লজ্জাশীলতা ছিল তাঁদের স্বভাবগত। তাঁরা জান্নাতের গাছের পাতা দিয়ে নিজেদের শরীর ঢাকতে শুরু করলেন। পরিশেষে তাঁদেরকে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হল। ইরশাদ হয়েছে-
فَوَسْوَسَ إِلَيْهِ الشَّيْطَانُ قَالَ يَاآدَمُ هَلْ أَدُلُّكَ عَلَى شَجَرَةِ الْخُلْدِ وَمُلْكٍ لَا يَبْلَى (120) فَأَكَلَا مِنْهَا فَبَدَتْ لَهُمَا سَوْآتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِنْ وَرَقِ الْجَنَّةِ
'অতঃপর শয়তান তার অন্তরে কুমন্ত্রণা দিল। সে বলল, হে আদম! তোমাকে কি এমন একটা গাছের সন্ধান দেব, যা দ্বারা অনন্ত জীবন ও এমন রাজত্ব লাভ হয়, যা কখনও ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না? অতঃপর তারা সে গাছ থেকে কিছু খেয়ে ফেলল। ফলে তাদের লজ্জাস্থানসমূহ তাদের সামনে প্রকাশ হয়ে গেল। তখন তারা জান্নাতের পাতা নিজেদের উপর জুড়তে লাগল। ( সূরা তোয়াহা, আয়াত ১২০-১২১)
বোঝা যাচ্ছে মানুষকে নগ্নতায় লিপ্ত করা ইবলীস শয়তানের কাম্য। কেননা এটা হাজারও পাপের পথ খুলে দেয়। এর ফলে মানুষ লজ্জা হারিয়ে ফেলে। পরিণামে সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা ধ্বংস হয়ে যায়। তাই ইসলাম সতর ঢাকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। কুরআন সতর্ক করেছে যাতে শয়তান নগ্নতা বিস্তারের তৎপরতায় সফল হতে না পারে। ইরশাদ হয়েছে-
يَابَنِي آدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا
হে আদমের সন্তান-সন্ততিগণ! শয়তান যেন কিছুতেই তোমাদেরকে প্রতারিত করতে না পারে, যেমন তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল। সে তাদেরকে পরস্পরের লজ্জাস্থান দেখানোর উদ্দেশ্যে তাদের দেহ থেকে তাদের পোশাক অপসারণ করিয়েছিল। (সূরা আ'রাফ, আয়াত ২৭)
পোশাক আল্লাহ তা'আলার কুদরতের এক নিদর্শন। পোশাকের ব্যবহার বড় বৈচিত্র্যময়। দুনিয়ায় একেক জাতির একেক রকম পোশাক। পোশাক দেখে বলে দেওয়া যায় কে কোন দেশের লোক, কে কোন ধর্মের অনুসারী। পোশাক মানুষের পসন্দ ও রুচিভেদেরও নির্দেশক। যুগ ও কালভেদেও পোশাকে পরিবর্তন আসে। তাই সেই দূরঅতীত থেকে আজ পর্যন্ত পোশাকের উপর মানুষ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছে। এর পেছনে মানুষের মেধা ও কায়িক শ্রমের রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন লিপ্ততা। মানুষের পোশাককেন্দ্রিক কর্মব্যস্ততার কোনও সীমা-পরিসীমা নেই। এর কাঁচামাল থেকে শুরু করে তৈরিপোশাক পর্যন্ত রয়েছে নানা ধাপে ও নানা প্রসঙ্গে নানা গবেষণা ও নানা কর্মপ্রক্রিয়া। এটা মানুষের জীবন ও জীবিকারও এক প্রধান অবলম্বন।
পোশাক যেহেতু মানুষের এক মৌলিক চাহিদা ও তার অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ, তাই এ সম্পর্কে ইসলামের রয়েছে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা। কোন পোশাক বৈধ কোন পোশাক অবৈধ, পুরুষের পোশাক কেমন হবে, নারীর জন্য কেমন, পোশাক পরিধানে কী আদব-কায়দা অনুসরণীয় ইত্যাদি সকল বিষয়ে ইসলাম সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে।


পরিচ্ছেদ: ১
সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা

'সাদা পোশাকের উত্তমতা...' সম্পর্কিত দু'টি আয়াত
• এক নং আয়াত
يَابَنِي آدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ
অর্থ: হে আদমের সন্তান-সন্ততি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, যা তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দূষণীয় তা আবৃত করে এবং তা শোভাস্বরূপ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক, সেটাই সর্বোত্তম।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতে পোশাককে আল্লাহ তা'আলার এক গুরুত্বপূর্ণ দান ও নি'আমতরূপে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, মানুষের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা আল্লাহ তা'আলাই করেছেন। আল্লাহ তা'আলা যদি মানবস্বভাবে পোশাক পরিধানের মাধ্যমে নিজ সতর ঢেকে রাখার প্রবণতা সৃষ্টি না করতেন, তারপর পোশাক তৈরির কলাকৌশল মানুষকে না শেখাতেন, তবে মানুষকে অন্যান্য জীবের মতোই নগ্ন থাকতে হত। তখন অন্যান্য জীব থেকে তার কোনও স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠিত হত না এবং তার আলাদা কোনও মর্যাদা থাকত না। আল্লাহ তা'আলা মানুষকে তাঁর খলীফা ও শ্রেষ্ঠ মাখলুক বানিয়েছেন বলে অন্যান্য জীব থেকে তার স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন ছিল। পোশাকের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তাকে সে স্বাতন্ত্র্য দান করেছেন। কাজেই এটা মানুষের প্রতি আল্লাহ তা'আলার এক বিশেষ অনুগ্রহ।
আয়াতে পোশাকের প্রথম উপকারিতারূপে ইরশাদ হয়েছে يُوَارِي سَوْآتِكُمْ (যা তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দূষণীয় তা আবৃত করে)। سَوْآتِ শব্দটি سواة এর বহুবচন। এর উৎপত্তি سوء থেকে। سوء এর অর্থ মন্দ, ঘৃণ্য। গোপন অঙ্গ প্রকাশ করা একটি মন্দ ও ঘৃণ্য কাজ। তাই গোপন অঙ্গকে سَوْآتِ বলা হয়। আমরা একে সতর বলে থাকি। সতর শব্দটি মূলত আরবী। এর অর্থ ঢাকা। গোপন অঙ্গকে যেহেতু ঢেকে রাখা হয়, তাই একে সতর বলে। নারী ও পুরুষের সতর আলাদা। পোশাক দ্বারা উভয়ে আপন আপন সতর ঢেকে রাখতে পারে। যার শরীরের যতটুকু সতরের অন্তর্ভুক্ত, ততটুকু ঢেকে রাখার মধ্যেই পোশাক পরার সার্থকতা। আয়াতে যেহেতু সতর ঢাকাকে পোশাকের প্রথম উপকারিতারূপে উল্লেখ করা হয়েছে, সেহেতু নারী ও পুরুষকে পোশাক পরার বেলায় আপন আপন সতর যাতে ঢাকা পড়ে সেদিকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে। পোশাক পরা সত্ত্বেও যদি সতরের কোনও অংশ খোলা থেকে যায়, তবে পোশাকের যথাযথ ব্যবহার হল না। তা দ্বারা শয়তানের ইচ্ছা পূরণ হয়। শয়তানের ইচ্ছা মানুষকে নগ্ন করা, তা পুরোপুরি হোক বা আংশিক। এ আয়াতের পরের আয়াতেই সে কথা জানানো হয়েছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন-
يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا
(সে তাদেরকে পরস্পরের লজ্জাস্থান দেখানোর উদ্দেশ্যে তাদের দেহ থেকে তাদের পোশাক অপসারণ করিয়েছিল)। শয়তান যাতে তার সে চাওয়ায় সফল হতে না পারে, তাই প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর পোশাক দ্বারা আপন আপন সতর ঢেকে রাখার ব্যাপারে পূর্ণ সচেতন থাকা একান্ত কর্তব্য।
আয়াতে পোশাকের দ্বিতীয় ফায়দা বর্ণনা করা হয়েছে- وَرِيشًا (এবং তা শোভাস্বরূপ)। নিঃসন্দেহে পোশাক মানুষের শোভা। পোশাকবিহীন মানুষ দৃশ্যত নিতান্তই কদাকার। পোশাক যত পূর্ণাঙ্গ হয়, শোভাও ততো পরিপূর্ণ হয়। তাই পরিপূর্ণ শোভার জন্য মানুষের উচিত এমন পোশাক পরিধান করা, যা দ্বারা সতর পুরোপুরি আচ্ছাদিত হয়; বরং সতর ঢাকার পরও শরীরের যে অংশ ঢাকা ভদ্রতার মধ্যে পড়ে, তাও যাতে ঢেকে যায়। বিশেষত অতিথিদের সামনে উপস্থিত হওয়া কিংবা মজলিসে, মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়ার সময় কেবল সতর ঢাকায় ক্ষান্ত না হয়ে পরিপূর্ণ পোশাক পরাই বাঞ্ছনীয়।
সুতরাং ইরশাদ হয়েছে-
يَابَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ
'হে আদমের সন্তান-সন্ততিগণ! যখনই তোমরা কোনও মসজিদে আসবে, তখন নিজেদের শোভার বস্তু (অর্থাৎ শোভনীয় পোশাক) নিয়ে আসবে। (সূরা আ'রাফ, আয়াত ৩১)
আয়াতে দু'রকম পোশাকের কথা বলা হয়েছে। এক হচ্ছে দৃশ্যমান পোশাক। আরেক হচ্ছে অদৃশ্য বা গুপ্ত পোশাক। উভয় পোশাকই মানুষের জন্য জরুরি। আয়াতে এ পর্যন্ত যা বলা হয়েছে তার সম্পর্ক দৃশ্যমান পোশাকের সঙ্গে। তারপর অদৃশ্য পোশাক সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে-

وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ (বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক, সেটাই সর্বোত্তম)। তাকওয়া মানে আল্লাহভীতি। আল্লাহভীতিকে পোশাকের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। পোশাক যেমন মানুষকে শীত ও তাপ থেকে রক্ষা করে এবং মানুষকে সুসজ্জিত করে, তেমনি আল্লাহর ভয় মানুষকে সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে রক্ষা করে এবং সৎকর্মের মাধ্যমে তার মানবিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে। আয়াতে তাকওয়ার পোশাককে সর্বোত্তম বলা হয়েছে। কেননা শীত ও তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেয়ে পাপকর্ম থেকে রক্ষা করার গুরুত্ব অনেক বেশি। শীত ও তাপ দ্বারা মানুষ দুনিয়ায় কষ্ট পায় এবং সে কষ্ট ক্ষণস্থায়ী। পক্ষান্তরে পাপকর্মের কারণে আখিরাতে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, যার কষ্ট স্থায়ী ও অনন্ত। সেই স্থায়ী ও অনন্ত কষ্ট থেকে যে তাকওয়া ও আল্লাহভীতি দ্বারা রক্ষা পাওয়া যায়, তা শারীরিক পোশাকের তুলনায় উত্তম বৈ কি।
সুতরাং মানুষ শারীরিক পোশাকের যে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, তারচে' অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার এ অদৃশ্য পোশাক অর্থাৎ তাকওয়ার। আমরা পোশাকের জন্য অর্থ খরচ করি এবং সে অর্থ উপার্জনের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলি। কিন্তু তাকওয়া অর্জনের জন্য সেরকম কোনও চেষ্টা করি না। এটা আমাদের চরম গাফলাতি। যে তাকওয়ার উপর আখিরাতের নাজাত নির্ভর করে, তা অর্জনে গাফলাতি করা উচিত নয়। এর জন্য আরও অনেক বেশি চেষ্টা ও সাধনা করা জরুরি। আয়াত এ পোশাককে সর্বোত্তম বলে আমাদেরকে সে উৎসাহই দান করছে।
আয়াতে এদিকেও ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, শারীরিক পোশাকও সর্বোত্তম হয় তখনই, যখন তাতে তাকওয়ার পরিচয় দেওয়া হয়। সুন্দর থেকে সুন্দর পোশাক পরিধানের আগ্রহ থাকে সকলেরই। তাই পোশাক সংগ্রহের সময় মানুষ আপন সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোত্তমটি খুঁজে বেড়ায়। আয়াত বলছে, তুমি যত অভিনব স্টাইলই খোঁজ না কেন, যদি তাকওয়ার ছাপ না থাকে, তবে সে পোশাক কখনওই উত্তম হবে না। পোশাকে তাকওয়ার ছাপ থাকার অর্থ হল পোশাকে শরী'আতের নির্দেশনা অনুসরণ করা। যেমন পোশাক এমন হওয়া, যাতে সতর পুরোপুরি ঢাকা পড়ে। যেন খুব বেশি আঁটোসাঁটো না হয় এবং অতিরিক্ত পাতলা না হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে যেন টাখনুর নিচে ঝুলে না পড়ে এবং পোশাক রেশমের না হয়। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই অহমিকা পরিত্যাজ্য। যে পোশাক অহমিকা সৃষ্টি করে, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। মোটকথা জীবনের অন্যসব ক্ষেত্রের মতো পোশাকের বেলায়ও তাকওয়া ও আল্লাহভীতির পরিচয় দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

আয়াতটির শিক্ষা
ক. পোশাক আল্লাহ তা'আলার অতি বড় এক নি'আমত। এর জন্য শোকর আদায় করতে হবে।
খ. পোশাক মানুষের বিশেষত্ব। নগ্নতা মনুষ্যত্বের পরিপন্থি।
গ. পোশাক পরিধানে সতর ঢাকার প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে, যাতে করে সতরের তুলনায় পোশাক ছোট না হয়, বেশি আঁটোসাঁটো না হয় এবং অতিরিক্ত পাতলাও না হয়।
ঘ. তাকওয়াও এক রকম পোশাক; বরং সর্বোত্তম পোশাক। তাই তাকওয়া অর্জনের জন্য শারীরিক পোশাক অর্জনের চেয়েও বেশি চেষ্টা করতে হবে।
ঙ. পোশাক অবশ্যই তাকওয়াসম্মত হতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে যাতে পোশাকের কোনও দিকই শরী'আতের খেলাফ না হয়।
• দুই নং আয়াত
وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُمْ بَأْسَكُم
অর্থ: আর তোমাদের জন্য বানিয়েছেন এমন পোশাক, যা তোমাদেরকে তাপ থেকে রক্ষা করে এবং এমন পোশাক, যা যুদ্ধকালে তোমাদেরকে রক্ষা করে।( সূরা নাহল, আয়াত ৮১)

ব্যাখ্যা
এটা সূরা নাহলের ৮১ নং আয়াতের অংশবিশেষ। এ সূরায় আল্লাহ তা'আলা তাঁর কুদরতের বিভিন্ন নিদর্শন এবং মানুষকে দেওয়া তাঁর বহু নি'আমত তুলে ধরেছেন। সে প্রসঙ্গেই এখানে পোশাকের উল্লেখ করা হয়েছে। পোশাক মানুষের জন্য আল্লাহ তা'আলার এক বিরাট নি'আমত। এর দ্বারা কেবল লজ্জা নিবারণই হয় না; শীত ও তাপ থেকেও আত্মরক্ষা হয়। এ আয়াতে কেবল তাপ থেকে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। শীতের উল্লেখ করা হয়নি এ কারণে যে, তা এমনিই বুঝে আসে। তাপের কথা বললে শীতের বিষয়টি এমনিই চলে আসে। তাই আলাদা করে এর উল্লেখের প্রয়োজন হয় না। তা সত্ত্বেও অনুগ্রহকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য অপর এক আয়াতে শীতের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে ইরশাদ হয়েছে-
وَالْأَنْعَامَ خَلَقَهَا لَكُمْ فِيهَا دِفْءٌ
'তিনিই চতুষ্পদ জন্ত সৃষ্টি করেছেন, যার মধ্যে তোমাদের জন্য শীত থেকে বাঁচার উপকরণ রয়েছে।’ (সূরা নাহল, আয়াত ৫)
অর্থাৎ পশুর পশম দ্বারা এমন পোশাক তৈরি কর, যা দ্বারা তোমরা শীতের কষ্ট থেকে বাঁচতে পার।
এ আয়াতে পোশাকের আরেকটি উপকার বলা হয়েছে যুদ্ধ-বিগ্রহে আত্মরক্ষা। অর্থাৎ শত্রুর আঘাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য লোহা দ্বারা বর্ম তৈরি করা হয় এবং শিরস্ত্রাণ বানানো হয়। তাছাড়া রেশম ও অন্যান্য উপকরণ দ্বারা এমন মোটা কাপড়ও তৈরি করা হয়, যা দ্বারা শত্রুর আঘাত থেকে আত্মরক্ষা করা যায়। মোটকথা পোশাক মানুষের নানাবিধ উপকারে আসে। এহেন উপকারী পোশাক আল্লাহ তা'আলারই দান। কাজেই মানুষের কর্তব্য এর জন্য আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা এবং সর্বপ্রকার শিরক হতে বিরত থেকে কেবল তাঁরই ইবাদত-বন্দেগী করা।

আয়াতটির শিক্ষা
পোশাক দ্বারা আমরা বহুবিধ উপকার পেয়ে থাকি। তাই এর জন্য একান্তভাবে আল্লাহ তা'আলার শোকর আদায় করা উচিত।
সাদা রঙের পোশাকের শ্রেষ্ঠত্ব
হাদীছ নং: ৭৭৮

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সাদা রঙের কাপড় পড়বে। কেননা এটাই তোমাদের সর্বোত্তম কাপড়। এর দ্বারাই তোমাদের মৃতদের কাফন পরাবে। -আবু দাউদ ও তিরমিযী"
( সুনানে আবূ দাউদ: ৩৮৭৮; জামে তিরমিযী: ৯৯৪; সুনানে নাসাঈ ১৮৯৬; মুসনাদে আহমাদ: ২০৪৫; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৬২০০; সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৪২৩; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ১২৪৮৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ৮৯৫১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৭৭)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
قَالَ الله تَعَالَى: {يَا بَنِي آدَمَ قَدْ أنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَاري سَوْآتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ} [الأعراف: 26]، وقال تَعَالَى: {وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُمْ بَأسَكُمْ} [النحل: 81].
778 - وعن ابن عباس رضي الله عنهما: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ:
«الْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمْ البَيَاضَ؛ فَإنَّهَا مِنْ خَيْرِ ثِيَابِكُمْ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ». رواه أَبُو داود والترمذي، (1) وقال: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৭৭৯
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
হাদীছ নং: ৭৭৯
হযরত সামুরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সাদা কাপড় পরো। কারণ এটা পবিত্রতম ও সর্বোৎকৃষ্ট। এর দ্বারাই তোমাদের মৃতদের কাফন পরাবে। -নাসাঈ ও হাকিম
(সুনানে নাসাঈ ১৮৯৬; জামে তিরমিযী: ২৮১০; সুনানে ইবন মাজাহ ৩৫৬৭; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৬৭৫৯; হাকিম, আল মুস্তাদরাক: ১৩০৯)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
779 - وعن سَمُرَة - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «الْبَسُوا البَيَاضَ؛ فَإنَّهَا أَطْهَرُ وَأَطْيَبُ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ». رواه النسائي والحاكم، (1) وقال: «حديث صحيح».
হাদীস নং: ৭৮০
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
পুরুষের জন্য লাল রঙের পোশাক
হাদীছ নং: ৭৮০

হযরত বারা' ইবন আযিব রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধ্যম আকৃতির ছিলেন। আমি তাঁকে লাল পোশাকে দেখেছি। আমি তাঁর চেয়ে বেশি সুন্দর কোনও জিনিস কখনও দেখিনি। -বুখারী ও মুসলিম"
(সহীহ বুখারী: ৫৮৪৮; সহীহ মুসলিম: ২৩৩৭; সুনানে নাসাঈ ৫২৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৬২৮৪; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান ৬০৫৩; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩০৮৯)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
780 - وعن البراءِ - رضي الله عنه - قَالَ: كَانَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - مَرْبُوعًا (1)، وَلَقَدْ رَأيْتُهُ في حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مَا رَأيْتُ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ. متفقٌ عَلَيْهِ. (2)
হাদীস নং: ৭৮১
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
বিদায় হজ্জের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লাল ডোরাযুক্ত কাপড় পরিধান করা
হাদীছ নং: ৭৮১

হযরত আবূ জুহায়ফা ওয়াহব ইবন আব্দুল্লাহ রাযি. বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মক্কায় দেখেছি। তিনি আবতাহ নামক স্থানে চামড়ার একটি লাল তাঁবুতে ছিলেন। বিলাল তাঁর ওযুর (অবশিষ্ট) পানি নিয়ে আসলেন। কেউ সে পানির একটা অংশ পেলেন এবং কেউ নিজ অংশ থেকে (তার ভাইকে খানিকটা) ঢেলে দিলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি লাল পোশাক পরিহিত অবস্থায় বের হয়ে আসলেন। আমি যেন তাঁর দুই নলার শুভ্রতা দেখতে পাচ্ছি। তিনি ওযু করলেন এবং বিলাল আযান দিলেন। আমি তার মুখ এদিকে-ওদিকে অনুসন্ধান করছিলাম। তিনি ডান ও বাম দিকে ফিরে বলছিলেন- حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، حَيَّ عَلَى الفَلَاحِ )এসো নামাযের দিকে, এসো সফলতার দিকে)। তারপর তাঁর সামনে একটি বর্শা গেড়ে দেওয়া হল। তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন এবং নামায পড়লেন। তাঁর সম্মুখ দিয়ে কুকুর ও গাধা অতিক্রম করছিল, কিন্তু বাধা দেওয়া হচ্ছিল না। -বুখারী ও মুসলিম
( সহীহ বুখারী: ৩৭৬; সহীহ মুসলিম: ৫০৩; সুনানে আবূ দাউদ: ৫২০; জামে তিরমিযী: ১৯৫; মুসনাদে আহমাদ: ১৮৭৫৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা ২৯৯৫; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা : ৩২৪৮৯; সহীহ ইবনে হিব্বান ২৩৯৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ২৮৯; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৫৪৯৭; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৪০৯)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
781 - وعن أَبي جُحَيفَةَ وَهْب بن عبد الله - رضي الله عنه - قَالَ: رَأيتُ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - بِمكّةَ وَهُوَ بالأبْطَحِ في قُبَّةٍ لَهُ حَمْرَاءَ مِنْ أَدمِ، فَخَرَجَ بِلاَلٌ بِوَضُوئِهِ، فَمِنْ نَاضِحٍ وَنَائِلٍ، فَخَرَجَ النبيُّ - صلى الله عليه وسلم - وعليه حُلَّةٌ حَمْرَاءُ، كَأنِّي أنْظُرُ إِلَى بَيَاضِ سَاقَيْهِ، فَتَوَضّأ وَأذَّنَ بِلاَلٌ، فَجَعَلْتُ أتَتَبَّعُ فَاهُ هاهُنَا وَهَاهُنَا، يقولُ يَمِينًا وَشِمَالًا: حَيَّ عَلَى الصَّلاَةِ، حَيَّ عَلَى الفَلاَحِ، ثُمَّ رُكِزَتْ لَهُ عَنَزَةٌ، فَتَقَدَّمَ فَصَلَّى يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الْكَلْبُ وَالْحِمَارُ لاَ يُمْنَعُ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
«العنَزة» بفتح النون: نحو العُكازَة.
হাদীস নং: ৭৮২
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
সবুজ রঙের পোশাক পরা
হাদীছ নং: ৭৮২

হযরত আবু রিমছা রিফা'আ আত-তায়মী রাযি. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দু'টি সবুজ কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখেছি।-আবু দাউদ ও তিরমিযী
(সুনানে আবু দাউদ: ৪০৬৫; জামে তিরমিযী: ২৮১৩; সুনানে নাসাঈ ৫৩১৯; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৫০৭৮; মুসনাদে আহমাদ: ৭১১১; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ৭২১: বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৫৮৯৮; শু'আবুল ঈমান: ১৪৩৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩০৯১)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
782 - وعن أَبي رمْثَة رفَاعَةَ التَّيْمِيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: رأيتُ رسولَ الله - صلى الله عليه وسلم - وعليه ثوبانِ أخْضَرَان. رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد صحيح. (1)
হাদীস নং: ৭৮৩
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
কালো রঙের পাগড়ি
হাদীছ নং: ৭৮৩

হযরত জাবির রাযি. থেকে বর্ণিত, মক্কাবিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কালো পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় প্রবেশ করলেন। -মুসলিম
(সহীহ মুসলিম: ১৩৫৮; সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৭৬; জামে' তিরমিযী: ১৭৩৫; সুনানে নাসাঈ: ২৮৬৯; সুনানে ইবন মাজাহ: ২৮১৭; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৯৫২; সুনানে দারিমী: ১৯৮২; মুসনাদে আবু ইয়া'লা: ১৪৬০; সহীহ ইবনে হিব্বান ৩৭২২; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৪৪৬৩; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৫৯৭৮)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
783 - وعن جابر - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - دَخَلَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاء. رواه مسلم. (1)
হাদীস নং: ৭৮৪
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
কালো রঙের পাগড়ি
হাদীছ নং: ৭৮৪

হযরত আবু সা'ঈদ আমর ইবন হুরায়ছ রাযি. বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি কালো পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি। তিনি সেটির প্রান্ত দুই কাঁধের মাঝখানে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। -মুসলিম'
(১৭. সহীহ মুসলিম: ১৩৫৯; সুনানে ইবন মাজাহ: ২৮২১; সুনানে আবু দাউদ: ৪০৭৭; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৯৮০; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ৫৯৭৭: বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩১১০; শু'আবুল ঈমান: ৫৮৩৪)

মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের সামনে ভাষণ দিলেন। তখন তাঁর মাথায় ছিল কালো পাগড়ি।
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
784 - وعن أَبي سعيد عمرو بن حُرَيْثٍ - رضي الله عنه - قَالَ: كأنّي أنْظُرُ إِلَى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - وعليه عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ، قَدْ أرْخَى طَرَفَيْهَا بَيْنَ كَتِفَيْهِ. رواه مسلم. (1)
وفي روايةٍ لَهُ: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - خَطَبَ النَّاسَ، وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ.
হাদীস নং: ৭৮৫
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাফনের বর্ণনা
হাদীছ নং: ৭৮৫

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনটি সাদা সুতি সাহূলী কাপড় দ্বারা কাফন পরানো হয়েছে। তাতে কামীস ও পাগড়ি ছিল না। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ১২৬৪; সহীহ মুসলিম: ৯৪১; সুনানে আবু দাউদ: ৩১৫১; সুনানে নাসাঈ ১৮৯৭; সুনানে ইবন মাজাহ ১৪৭০; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৬১৭১; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা: ৪৪০২; সহীহ ইবনে হিব্বান ৩০৩৭; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৮৩৭৩; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৬৬৭১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৭৬)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
785 - وعن عائشة رضي الله عنها، قالت: كُفِّنَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - في ثلاثةِ أثْوَاب بيضٍ سَحُولِيَّةٍ مِنْ كُرْسُفٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
«السَّحُولِيَّة» بفتح السين وضمها وضم الحاء المهملتين: ثيابٌ تُنْسَبُ إِلَى سَحُول: قَرْيَة باليَمنِ «وَالكُرْسُف»: القُطْنُ.
হাদীস নং: ৭৮৬
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
পশমের তৈরি পোশাক ও নিষ্প্রাণ বস্তুর ছবিযুক্ত পোশাক পরার বৈধতা
হাদীছ নং: ৭৮৬

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ভোরবেলা কালো পশমের তৈরি, হাওদার ছবি অঙ্কিত চাদর পরে বের হলেন। -মুসলিম ( সহীহ মুসলিম: ২০৮১: সুনানে আবু দাউদ: ৪০৩২; জামে' তিরমিযী: ৩০২২; মুসনাদে আহমাদ: ২৫২৯৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ২৮৫৮; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৯১১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ৩২১০২;)
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
786 - وعنها، قالت: خرج رسول الله - صلى الله عليه وسلم - ذات غَدَاةٍ، وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مرَحَّلٌ مِنْ شَعرٍ أسْوَد. رواه مسلم. (1) [ص:249]
«المِرْط» بكسر الميم: وَهُوَ كساءٌ وَ «المُرَحَّلُ» بالحاء المهملة: هُوَ الَّذِي فِيهِ صورةُ رحال الإبل، وهِيَ الأَكْوَارُ.
হাদীস নং: ৭৮৭
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
চতুর্থ ভাগ: পোশাক
পরিচ্ছেদ:১ সাদা পোশাকের উত্তমতা; লাল, সবুজ, হলুদ ও কালো রঙের পোশাক পরার বৈধতা এবং রেশম ছাড়া সুতা, পশম ইত্যাদির তৈরি পোশাক পরার বৈধতা
অমুসলিম জাতির তৈরিকৃত পোশাক পরিধান করা
হাদীছ নং: ৭৮৭

হযরত মুগীরা ইবন শু'বা রাযি. বলেন, কোনও এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সফরে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, তোমার কাছে কি পানি আছে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি সাওয়ারি থেকে নামলেন। তারপর হাঁটতে থাকলেন। এমনকি তিনি রাতের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তারপর ফিরে আসলেন। আমি পাত্র থেকে তাঁর হাতে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি মুখ ধুইলেন। তাঁর গায়ে একটি পশমের জুব্বা ছিল। তিনি তার ভেতর থেকে বাহুদু'টি বের করতে পারলেন না। শেষে জুব্বার নিচ দিয়ে সে দু'টি বের করলেন। তারপর তা ধুইলেন। তারপর মাথা মাসাহ করলেন। আমি তাঁর মোজাদু'টি খুলতে উদ্যত হলাম। তিনি বললেন, এ দু'টি ছেড়ে দাও। আমি এ দু'টি পরেছি পবিত্র অবস্থায়। তিনি তার উপর মাসাহ করলেন। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৭৯৯; সহীহ মুসলিম: ২৭৪; সুনানে নাসাঈ ৮২; সহীহ ইবনে খুযায়মা: ১৬৪৫; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার ৫৬৫৩; সুনানে দারিমী ৭৪০; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৮৬৪; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ২৩৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা : ১৩৩৬; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক: ৭৪৭; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ১৮৫)
এক বর্ণনায় আছে, তাঁর পরিধানে ছিল একটি শামী জুব্বা, যার হাতা ছিল সংকীর্ণ।
অপর এক বর্ণনায় আছে, এ ঘটনাটি তাবুকের যুদ্ধকালীন।
كتاب اللباس
كتَاب اللّبَاس
باب استحباب الثوب الأبيض، وجواز الأحمر والأخضر والأصفر والأسود، وجوازه من قطن وكتان وشعر وصوف وغيرها إِلاَّ الحرير
787 - وعن المغيرة بن شُعْبَةَ - رضي الله عنه - قَالَ: كُنْتُ مَعَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - ذاتَ لَيْلَةٍ في مسير، فَقَالَ لي: «أمَعَكَ مَاءٌ؟» قلتُ: نَعَمْ، فَنَزَلَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَمَشَى حَتَّى تَوَارَى في سَوَادِ اللَّيْلِ، ثُمَّ جَاءَ فَأفْرَغْتُ عَلَيْهِ مِنَ الإدَاوَةِ، فَغَسَلَ وَجْهَهُ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ، فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُخْرِجَ ذِرَاعَيْهِ مِنْهَا حَتَّى أخْرَجَهُمَا مِنْ أسْفَلِ الْجُبَّةِ، فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ وَمَسَحَ بِرَأسِهِ، ثُمَّ أهْوَيْتُ لأَنْزَعَ خُفَّيْهِ، فَقَالَ: «دَعْهُمَا فَإنِّي أَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ» وَمَسحَ عَلَيْهِمَا. متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
وفي رواية: وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَامِيَّةٌ ضَيِّقَةُ الكُمَّيْنِ.
وفي رواية: أنَّ هذِهِ القَضِيَّةَ كَانَتْ في غَزْوَةِ تَبُوكَ.
হাদীস নং: ৭৮৮
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:২ জামা পরার ইস্তিহবাব
হাদীছ নং: ৭৮৯

উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মু সালামা রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বাপেক্ষা বেশি প্রিয় পোশাক ছিল কামীস। -আবু দাউদ ও তিরমিযী
(সুনানে আবু দাউদ: ৪০২৫; জামে’ তিরমিযী: ১৭৬২; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা: ৯৫৮৯; মুসনাদে আহমাদ: ২৬৬৯৫; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ৩২৯২; শু'আবুল ঈমান: ৬২৪০; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩০৬৭)
كتاب اللباس
باب استحباب القميص
788 - عن أُمِّ سَلَمَة رضي الله عنها، قالت: كَانَ أحَبُّ الثِّيَابِ إِلَى رسول الله - صلى الله عليه وسلم - الْقَمِيص. رواه أَبُو داود والترمذي (1)، وقال: «حديث حسن».
হাদীস নং: ৭৮৯
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
জামার হাতা কতটুকু লম্বা হবে
হাদীছ নং: ৭৮৯

হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামার আস্তিন ছিল কব্জি পর্যন্ত। -আবূ দাউদ ও তিরমিযী
(সুনানে আবু দাউদ: ৪০২৭; জামে তিরমিযী: ১৭৬৫; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৮৫১; বায়হাকী,শু'আবুল ঈমান ৫৭৫৮; বাগাবী, শারহুস্ সুন্নাহ: ৫০৭২)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
789 - عن أسماءَ بنتِ يزيد الأنصاريَّةِ رَضِيَ الله عنها، قالت: كَانَ كُمُّ قَمِيص رسول الله - صلى الله عليه وسلم - إِلَى الرُّسْغِ. رواه أَبُو داود والترمذي، (2) وقال: «حديث حسن».
হাদীস নং: ৭৯০
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
টাখনুর নিচে পোশাক পরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ
হাদীছ নং: ৭৯০

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশে তার কাপড় হেঁচড়িয়ে চলে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। তখন আবু বকর রাযি. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার লুঙ্গি ঝুলে পড়ে, যদি না আমি বিশেষভাবে লক্ষ রাখি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নও, যারা অহংকারবশে এটা করে। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৭৮৪; সহীহ মুসলিম: ২০৮৫; সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৮৫; জামে তিরমিযী: ১৭৩০; সুনানে নাসাঈ ৫৩৩৫; মুসনাদে আহমাদ: ৫৩৫১; মুসনাদুল হুমায়দী: ৬৫১; মুসনাদুল বাযযার: ৭৯৫০; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা: ৫৫৭২; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৫৪৪৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ১৩১৭৮; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ;৩৩১৪)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
790 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما: أنَّ النبيَّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ خُيَلاءَ لَمْ يَنْظُرِ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ» فَقَالَ أَبُو بكر: يَا رسول الله، إنَّ إزاري يَسْتَرْخِي إِلاَّ أَنْ أَتَعَاهَدَهُ، فَقَالَ لَهُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «إنَّكَ لَسْتَ مِمَّنْ يَفْعَلُهُ خُيَلاءَ». رواه البخاري وروى مسلم بعضه. (1)
হাদীস নং: ৭৯১
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
টাখনুর নিচে পোশাক পরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ

হাদীছ নং: ৭৯১
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তির দিকে তাকাবেন না, যে অহংকারবশে তার লুঙ্গি হেঁচড়ায়। -বুখারী ও মুসলিম
(সহীহ বুখারী: ৫৭৮৮; সহীহ মুসলিম: ২০৮৭; সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৯৩; সুনানে ইবন মাজাহ : ৩৫৭৭; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ৯৬৩১; মুআত্তা মালিক ৩৩৯০; মুসনাদে আবু দাউদ তয়ালিসী: ২৬০৯; মুসনাদুল হুমায়দী: ৬৫১; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৮০৯)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
791 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه: أنَّ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «لا يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ إِلَى مَنْ جَرَّ إزارَه بَطَرًا». متفقٌ عَلَيْهِ. (1)
হাদীস নং: ৭৯২
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
পোশাক টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ

হাদীছ নং: ৭৯২
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, টাখনুর নিচে যতটুকু অংশ লুঙ্গি স্পর্শ করে, তা জাহান্নামে যাবে।
(সহীহ বুখারী: ৫৭৮৭; সুনানে ইবন মাজাহ: ২৫৭৪; মুআত্তা মালিক: ১২; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৮২৪; মুসনাদুল হুমায়দী: ৭৫৪; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৩৩১৮)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
792 - وعنه، عن النبيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «مَا أَسْفَل مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإزْارِ فَفِي النار». رواه البخاري. (1)
হাদীস নং: ৭৯৩
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
আখিরাতে তিন শ্রেণির লোকের ভয়ংকর পরিণাম

হাদীছ নং: ৭৯৩
হযরত আবূ যার্র রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআ’লা তিন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাময় শাস্তি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা তিনবার বললেন। আবু যার্র বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরূপ লোক তো ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল! তারা কারা? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি কাপড় নিচে ঝুলিয়ে পরে, যে ব্যক্তি উপকার করে খোঁটা দেয় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ দ্বারা তার পণ্য বিক্রি করে। -মুসলিম
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি তার লুঙ্গি ঝুলিয়ে পরে।
(সহীহ মুসলিম: ১০৬; জামে তিরমিযী: ১২৫৪; সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৮৭; সুনানে নাসাঈ: ২৫৬৩; সুনানে ইবন মাজাহ: ২২০৮; মুসনাদে আহমাদ: ২১৩১৮; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা : ২৪৮১৩; সুনানে দারিমী;২৬৪৭; মুসনাদুল বাযযার ৪০২৪; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৪৯০৭; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৪৫১০)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
793 - وعن أَبي ذر - رضي الله عنه - عن النبيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «ثلاثةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ، وَلاَ يَنْظُرُ إلَيْهِمْ، وَلاَ يُزَكِّيهِمْ، وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ» قَالَ: فقَرأها رسول الله - صلى الله عليه وسلم - ثلاثَ مِرار، قَالَ أَبُو ذرٍّ: خَابُوا وَخَسِرُوا! مَنْ هُمْ يَا رسول الله؟ قَالَ: «المُسْبِلُ (1)، وَالمنَّانُ (2)، وَالمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالحَلِفِ الكاذِبِ». رواه مسلم. (3)
وفي رواية لَهُ: «المُسْبِلُ إزَارَهُ».
হাদীস নং: ৭৯৪
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
সর্বপ্রকার পোশাক টাখনুর নিচে নামিয়ে পরার অবৈধতা
হাদীছ নং: ৭৯৪

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ইসবাল (ঝুলিয়ে দেওয়াটা) হয় লুঙ্গি, কামীস ও পাগড়িতে। যে ব্যক্তি অহংকারবশে এর কোনওটি হেঁচড়িয়ে চলে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। -আবু দাউদ ও নাসাঈ
(সুনানে আবু দাউদ: ৪০৯৪; সুনানে নাসাঈ ৫৩৩৪; সুনানে ইবন মাজাহ ৩৫৭৬; মুসান্নাফে ইবন আবী শায়বা: ২৪৮৪০; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর ১৩২০৯; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩০৭৬)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
794 - وعن ابن عمر رضي الله عنهما، عن النبيِّ - صلى الله عليه وسلم - قَالَ: «الإسْبَالُ في الإزار، وَالقَمِيصِ، وَالعِمَامةِ، مَنْ جَرَّ شَيْئًا خُيَلاءَ لَمْ ينْظُرِ الله إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ». رواه أَبُو داود والنسائي بإسناد صحيح. (1)
হাদীস নং: ৭৯৫
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি.-এর কৌতূহলোদ্দীপক সাক্ষাৎকার
হাদীছ নং: ৭৯৫

হযরত আবূ জুরায়্য জাবির ইবন সুলায়ম রাযি. বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে দেখলাম, মানুষ ফিরে যায় যার মত নিয়ে। তিনি যা-ই বলেন তারা তা-ই নিয়ে চলে যায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ ব্যক্তি কে? তারা বলল, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আমি বললাম- عَلَيْكَ السَّلَامُ يَا رَسُولَ اللهِ (ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার প্রতি সালাম)। তিনি এটা দু'বার বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, عَلَيْكَ السَّلامُ বলো না। কেননা عَلَيْكَ السَّلَامُ মৃতদের অভিবাদন। বরং السَّلَامُ عَلَيْكَ বলো। আমি বললাম, আপনি আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, আমি সেই আল্লাহর রাসূল, যাঁকে তুমি কোনও কষ্টে পড়ে ডাক, ফলে তিনি তোমার কষ্ট দূর করে দেন, যাঁকে তুমি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে ডাক, ফলে তিনি তোমার জন্য শস্য উৎপন্ন করেন এবং যাঁকে তুমি কোনও মরুভূমিতে থাকা অবস্থায় তোমার সওয়ারী হারিয়ে গেলে ডাক, ফলে তিনি সেটি তোমাকে ফিরিয়ে দেন। আমি বললাম, আপনি আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বললেন, কাউকে কখনও গালি দেবে না। জাবির বলেন, তারপর আমি কখনও কোনও স্বাধীন ব্যক্তি, কোনও গোলাম এমনকি কোনও উট বা ছাগলকেও গালি দিইনি। (তিনি বললেন,) কোনও সৎকর্মকে তুচ্ছ গণ্য করো না। তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে। এটিও একটি সৎকর্ম। তোমার লুঙ্গি পায়ের নলার অর্ধেক পর্যন্ত তুলে রাখবে। এতে যদি রাজি না থাক, তবে টাখনু পর্যন্ত। সাবধান। লুঙ্গি এর নিচে ঝোলাবে না। কেননা এটা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ অহংকার পসন্দ করেন না। কোনও ব্যক্তি যদি তোমাকে গালি দেয় এবং তোমার সম্পর্কে সে যা জানে তা নিয়ে তোমার নিন্দা করে, তবে তুমি তার সম্পর্কে যা জান তা নিয়ে তার নিন্দা করবে না। কেননা সে নিন্দার পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে। -আবু দাউদ ও তিরমিযী
(সুনানে আবু দাউদ: ৪০৮৪; জামে তিরমিযী: ২৯২০; সুনানে নাসাঈ ১০০৭৮; মুসনাদে আহমাদ: ২০৬৩৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা ২১০৯৩; শু'আবুল ঈমান: ৫৭৩০)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
795 - وعن أَبي جُرَيٍّ جابر بن سُلَيْم - رضي الله عنه - قَالَ: رَأَيْتُ رَجُلًا يَصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَأْيهِ، لا يَقُولُ شَيْئًا إِلاَّ صَدَرُوا عَنْهُ، قُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ قالوا: رسولُ الله - صلى الله عليه وسلم. قُلْتُ: عَلَيْكَ السَّلامُ يَا رسول الله - مرّتين - قَالَ: «لاَ تَقُلْ: عَلَيْكَ السَّلامُ، عَلَيْكَ السَّلامُ تَحِيَّةُ المَوْتَى، قُلْ: السَّلامُ عَلَيْكَ» قَالَ: قُلْتُ: أنْتَ رسول اللهِ؟ قَالَ: «أنَا رسول الله الَّذِي إِذَا أصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ، وَإِذَا أصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ (1) فَدَعَوْتَهُ أَنْبَتَهَا لَكَ، وَإِذَا [ص:251] كُنْتَ بِأَرْضٍ قَفْرٍ أَوْ فَلاَةٍ فَضَلَّتْ رَاحِلَتُكَ، فَدَعَوْتَهُ رَدَّهَا عَلَيْكَ» قَالَ: قُلْتُ: اعْهَدْ إِلَيَّ. قَالَ: «لاَ تَسُبَّنَ أحَدًا» قَالَ: فَمَا سَبَبْتُ بَعْدَهُ حُرًّا، وَلاَ عَبْدًا، وَلاَ بَعِيرًا، وَلاَ شَاةً، «ولاَ تَحْقِرَنَّ مِنَ المَعْرُوفِ شَيْئًا، وأَنْ تُكَلِّمَ أخَاكَ وَأَنْتَ مُنْبَسِطٌ إِلَيْهِ وَجْهُكَ، إنَّ ذَلِكَ مِنَ المَعْرُوفِ، وَارْفَعْ إزَارَكَ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ، فَإنْ أبَيْتَ فَإلَى الكَعْبَينِ، وَإيَّاكَ وَإسْبَالَ الإزَار، فَإنَّهَا مِنَ المَخِيلَةِ. وَإنَّ اللهَ لاَ يُحِبُّ المَخِيلَةَ؛ وَإن امْرُؤٌ شَتَمَكَ وعَيَّرَكَ بِمَا يَعْلَمُ فِيكَ فَلاَ تُعَيِّرْهُ بِمَا تَعْلَمُ فِيهِ، فَإنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيْهِ». رواه أَبُو داود والترمذي بإسناد صحيح، (2) وقال الترمذي: «حديث حسن صحيح».
হাদীস নং: ৭৯৬
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
টাখনুর নিচে পোশাক ঝুলিয়ে নামায পড়লে
হাদীছ নং: ৭৯৬

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বলেন, এক ব্যক্তি লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে নামায় পড়ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে তাকে বললেন, যাও, ফের ওযু করো। সে গিয়ে ওযু করে আসল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও, ফের ওযু করো। তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কেন তাকে ওযু করতে আদেশ করলেন, তারপর তার সম্পর্কে নীরব থাকলেন? তিনি বললেন, সে তার লুঙ্গি টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে নামায পড়ছিল। অথচ আল্লাহ ওই ব্যক্তির নামায কবুল করেন না, যে টাখনুর নিচে পোশাক ঝুলিয়ে দেয়। -আবু দাউদ
(সুনানে আবু দাউদ: ৬৩৮; নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ৯৭০৩; মুসনাদে আহমাদ: ১১৬২৮; মুসনাদুল বাযযার: ৮৭৬২; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ৩৩০৫)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
796 - وعن أَبي هريرة - رضي الله عنه - قَالَ: بينما رَجُلٌ يُصَلَّي مسبلٌ إزَارَهُ، قَالَ لَهُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «اذْهَبْ فَتَوَضَّأ» فَذَهَبَ فَتَوَضّأَ، ثُمَّ جَاءَ، فَقَالَ: «اذْهَبْ فَتَوَضّأ» فَقَالَ لَهُ رجُلٌ: يَا رسولَ اللهِ، مَا لَكَ أمَرْتَهُ أَنْ يَتَوَضّأَ ثُمَّ سَكَتَّ عَنْهُ؟ قَالَ: «إنّهُ كَانَ يُصَلِّي وَهُوَ مُسْبِلٌ إزَارَهُ، وَإنَّ اللهَ لاَ يَقْبَلُ صَلاَةَ رَجُلٍ مُسْبلٍ». رواه أَبُو داود بإسناد صحيح عَلَى شرط مسلم. (1)
হাদীস নং: ৭৯৭
পোষাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ:৩ জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি ও পাগড়ির শামলার দৈর্ঘ্য, অহংকারবশত এগুলোর কোনওটি ঝুলিয়ে দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা এবং বিনা অহংকারে হলে তার কারাহাত
হযরত আবুদ দারদা রাযি. ও হযরত ইবনুল হানযালিয়্যাহ রাযি.-এর পারস্পরিক সাক্ষাৎ ও অপূর্ব নসীহত
হাদীছ নং: ৭৯৭

কায়স ইবন বিশর তাগলিবী বলেন, আমার পিতা, যিনি আবুদ দারদা রাযি.-এর মজলিসে বসতেন, আমাকে জানিয়েছেন যে, দামেশকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবী ছিলেন। তাকে ইবনুল হানযালিয়্যাহ বলা হত। তিনি একাকী থাকতে পসন্দ করতেন। মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা খুব কমই করতেন। তার কাজ ছিল কেবল নামায পড়া। নামায শেষ হলে তার কাজ ছিল তাসবীহ ও তাকবীর পড়া, যতক্ষণ না নিজ পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে আসতেন। একবার তিনি আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমরা আবুদ দারদা রাযি.-এর নিকট বসা। আবুদ দারদা রাখি, তাকে বললেন, এমন কোনও কথা বলুন, যা আমাদের উপকার দেবে, অথচ আপনার কোনও ক্ষতি করবে না।
তিনি বললেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাহিনী পাঠালেন। তারপর সেই বাহিনীটি যখন ফিরে আসল, তখন বাহিনীর এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে বসতেন সেই জায়গায় বসল। তারপর সে তার পাশের এক ব্যক্তিকে বলল, যদি তুমি ওই সময় আমাদের দেখতে, যখন আমরা এবং শত্রুদল মুখোমুখি হই আর এ অবস্থায় অমুক ব্যক্তি এই বলে বর্শা দিয়ে আক্রমণ করল যে, নে এটা আমার পক্ষ থেকে আর জেনে রাখ, আমি হলাম গিফার বংশের তরুণ। তুমি তার এ কথাটা কেমন মনে কর? লোকটি বলল, আমার তো মনে হয় তার ছাওয়াব নষ্ট হয়ে গেছে। তার এ কথা অন্য একজন শুনতে পেল। সে বলল, আমি তো এতে কোনও দোষ দেখি না। তারা তর্কে লিপ্ত হয়ে পড়ল। এমনকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে ফেললেন। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! তার পুরস্কারপ্রাপ্তি ও প্রশংসিত হওয়ায় কোনও সমস্যা নেই। আমি দেখলাম আবুদ দারদা রাযি. এটা শুনে খুশি হয়ে গেলেন। তিনি তার দিকে মাথা তুলে বলতে লাগলেন, তুমি এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছ? তিনি বললেন, হাঁ। আবুদ দারদা রাযি. তার সামনে এ কথাটির পুনরাবৃত্তি করতে থাকলেন। পরিশেষে আমি বলেই ফেলছিলাম, নিশ্চয়ই তিনি দুই হাঁটু গেড়ে বসে যাবেন।
আমার পিতা বলেন, অন্য একদিন তিনি আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আবুদ দারদা রাযি. তাকে বললেন, একটি কথা বলুন, যা আমাদের উপকার দেবে, অথচ আপনার কোনও ক্ষতি করবে না। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘোড়ার উপর খরচ করে, সে ওই ব্যক্তির সমতুল্য, যে দান-সদাকায় হাত বিস্তার করে রাখে আর তা বন্ধ করে না।
অতঃপর তিনি আরেকদিন আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আবুদ দারদা রাযি. তাকে বললেন, একটি কথা বলুন, যা আমাদের উপকার দেবে, অথচ আপনার কোনও ক্ষতি করবে না। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খুরায়ম আল আসাদী বড় ভালো লোক, যদি না তার বাবরি বেশি লম্বা হত এবং নিজ লুঙ্গি না ঝুলিয়ে দিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথাটি খুরায়মের কাছে পৌছে গেল। তিনি খুব তাড়াতাড়ি একটি ছুরি নিয়ে নিজ বাবরি কান বরাবর কেটে ফেললেন এবং নিজ লুঙ্গি নলার মাঝ বরাবর তুলে ফেললেন।
অতঃপর তিনি আরেকদিন আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আবুদ দারদা রাযি. তাকে বললেন, একটি কথা বলুন, যা আমাদের উপকার দেবে, অথচ আপনার কোনও ক্ষতি করবে না। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমরা তোমাদের ভাইদের নিকট উপস্থিত হতে যাচ্ছ। সুতরাং তোমরা নিজেদের হাওদাগুলো ঠিক করে নাও এবং নিজেদের পোশাক পরিপাটি করে নাও, যাতে তোমরা মানুষের মধ্যে তিলকের মতো হয়ে যাও। কেননা আল্লাহ পসন্দ করেন না স্বভাবগত অশালীনতা ও কৃত্রিম অশালীনতা। -আবু দাউদ
(সুনানে আবূ দাউদ: ৪০৮৯; মুসনাদে আহমাদ: ১৭৬২২; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৫৬১৬; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৬২০৪)
كتاب اللباس
باب صفة طول القميص والكُم والإزار وطرف العمامة وتحريم إسبال شيء من ذلك على سبيل الخيلاء وكراهته من غير خيلاء
797 - وعن قيس بن بشر التَّغْلِبيِّ، قَالَ: أخْبَرَني أَبي - وكان جَلِيسًا لأَبِي الدرداء - قَالَ: كَانَ بِدمَشْق رَجُلٌ مِنْ أصْحَابِ النَّبيِّ - صلى الله عليه وسلم - يقال لَهُ سهل بن الْحَنْظَلِيَّةِ، وَكَانَ رَجُلًا مُتَوَحِّدًا قَلَّمَا يُجَالِسُ النَّاسَ، إنَّمَا هُوَ صَلاَةٌ، فإذا فَرَغَ فَإنَّمَا هُوَ تَسْبِيحٌ وَتَكْبيرٌ حَتَّى يَأتي أهْلَهُ، فَمَرَّ بنا وَنَحْنُ عِنْدَ أَبي الدَّرداء، فَقَالَ لَهُ أَبُو الدرداءِ: كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ. قَالَ: بَعَثَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - سَرِيَّةً فَقَدِمَتْ، فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَجَلَسَ في المَجْلِسِ الَّذِي يَجْلِسُ فِيهِ رسُولُ الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ لِرَجُلٍ إِلَى جَنْبِهِ: لَوْ رَأيْتَنَا حِيْنَ التَقَيْنَا نَحْنُ وَالعَدُوُّ، فَحَمَلَ فُلانٌ وَطَعَنَ، فَقَالَ: خُذْهَا مِنِّي، وَأنَا الغُلاَمُ الغِفَاريُّ، كَيْفَ تَرَى في قَوْلِهِ؟ قَالَ: مَا أرَاهُ إِلاَّ قَدْ بَطَلَ أجْرُهُ. فَسَمِعَ بِذلِكَ آخَرُ، فَقَالَ: مَا أرَى بِذلِكَ بَأسًا، فَتَنَازَعَا حَتَّى سَمِعَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - فَقَالَ: «سُبْحَانَ الله؟ لاَ بَأسَ أَنْ يُؤجَرَ وَيُحْمَدَ» فَرَأَيْتُ أَبَا الدَّرْدَاء سُرَّ بِذلِكَ، وَجَعَلَ يَرْفَعُ رَأسَهُ إِلَيْهِ، وَيَقُولُ: أأنْتَ سَمِعْتَ ذَلِكَ مِنْ رَسُول الله - صلى الله عليه وسلم؟ فيقول: نَعَمْ، فما زال يُعِيدُ عَلَيْهِ حَتَّى إنّي لأَقُولُ لَيَبْرُكَنَّ عَلَى رُكْبَتَيْهِ، قَالَ: فَمَرَّ بِنَا يَوْمًا آخَرَ، فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْداء: كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ، قَالَ: قَالَ لنا رسول الله [ص:252] صلى الله عليه وسلم: «المُنْفِقُ عَلَى الخَيْلِ، كَالبَاسِطِ يَدَهُ بالصَّدَقَةِ لاَ يَقْبضُهَا»، ثُمَّ مَرَّ بِنَا يَومًا آخَرَ، فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْداء: كَلِمَةً تَنْفَعنَا وَلاَ تَضُرُّكَ، قَالَ: قَالَ رسول الله - صلى الله عليه وسلم: «نِعْمَ الرَّجُلُ خُرَيمٌ الأسَديُّ! لولا طُولُ جُمَّتِهِ وَإسْبَالُ إزَارِهِ!» فَبَلَغَ ذَلِكَ خُرَيْمًا فَعَجَّلَ، فَأَخَذَ شَفْرَةً فَقَطَعَ بِهَا جُمَّتَهُ إِلَى أُذُنَيْهِ، وَرَفَعَ إزارَهُ إِلَى أنْصَافِ سَاقَيْهِ. ثُمَّ مَرَّ بِنَا يَوْمًا آخَرَ فَقَالَ لَهُ أَبُو الدَّرْداء: كَلِمَةً تَنْفَعُنَا وَلاَ تَضُرُّكَ، قَالَ: سَمِعْتُ رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يقول: «إنَّكُمْ قَادِمُونَ عَلَى إخْوانِكُمْ، فَأصْلِحُوا رِحَالكُمْ، وَأصْلِحُوا لِبَاسَكُمْ حَتَّى تَكُونُوا كَأنَّكُمْ شَامَةٌ في النَّاسِ؛ فإِنَّ الله لاَ يُحِبُّ الفُحْشَ وَلاَ التَّفَحُّش». رواه أَبُو داود بإسنادٍ حسنٍ، (1) إِلاَّ قيس بن بشر فاختلفوا في توثِيقِهِ وَتَضْعِيفِهِ (2)، وَقَدْ روى لَهُ مسلم (3).