আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

الترغيب والترهيب للمنذري

২৬. অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ২০ টি

হাদীস নং: ৫৫৫১
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৫৫৫১. হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) তাঁদেরকে এ দু'আ শিখাতেন, যেমনটি তিনি তাদের কুরআনের সূরা শিখাতেন। তোমরা বলঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ " .
হে আল্লাহ। আমি তোমার কাছে জাহান্নামের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার কাছে কবরের আযাব থেকে মুক্তি চাচ্ছি। আমি তোমার কাছে মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা থেকে পানাহ চাইছি। আমি তোমাদের কাছে জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
(মালিক, মুসলিম ও আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসাঈ (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
كتاب صفة الْجنَّة وَالنَّار
التَّرْغِيب فِي سُؤال الْجنَّة والاستعاذة من النَّار
5551- عَن ابْن عَبَّاس رَضِي الله عَنْهُمَا أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ كَانَ يعلمهُمْ هَذَا الدُّعَاء كَمَا يعلمهُمْ السُّورَة من الْقُرْآن قُولُوا اللَّهُمَّ إِنِّي أعوذ بك من عَذَاب جَهَنَّم وَأَعُوذ بك من عَذَاب الْقَبْر وَأَعُوذ بك من فتْنَة الْمَسِيح الدَّجَّال وَأَعُوذ بك من فتْنَة الْمحيا وَالْمَمَات

رَوَاهُ مَالك وَمُسلم وَأَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ النَّسَائِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫২
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৫৫৫২. হযরত উম্মু হাবীবা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা আমাকে বলতে শুনলেন: "হে আল্লাহ্ আমাকে আমার স্বামী রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দ্বারা, আমার পিতা আবু সুফিয়ানের দ্বারা এবং আমার ভাই মু'আবিয়ার দ্বারা দীর্ঘদিন উপকৃত কর।" তখন তিনি বললেন, তুমি সীমাবদ্ধ আয়ু সুনিদিষ্ট সময় ও সুনির্ধারিত রিযিকের ব্যাপারে প্রার্থনা করলে সেগুলোর নির্ধারিত সময় আসার পূর্বে একটুও ত্বরান্বিত করা হবে না বা (সময় আসার পর) একটু বিলম্ব করা হবে না। তার চাইতে যদি তুমি আল্লাহর কাছে এ প্রার্থনা করতে যে, তিনি যেন তোমাকে জাহান্নাম থেকে এবং কবরের আযাব থেকে আশ্রয় দেন, তবে তা (তোমার জন্য) উত্তম ও শ্রেয় হত।
(মুসলিম (র) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
كتاب صفة الْجنَّة وَالنَّار
التَّرْغِيب فِي سُؤال الْجنَّة والاستعاذة من النَّار
5552- وَعَن أم حَبِيبَة رَضِي الله عَنْهَا قَالَت سمعني رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَأَنا أَقُول اللَّهُمَّ أمتعني بزوجي رَسُول الله وبأبي أبي سُفْيَان وبأخي مُعَاوِيَة فَقَالَ سَأَلت الله لآجال مَضْرُوبَة وَأَيَّام مَعْدُودَة وأرزاق مقسومة لن يعجل شَيْئا مِنْهَا قبل أَجله وَلَا يُؤَخر وَلَو كنت سَأَلت الله أَن يعيذك من النَّار وَعَذَاب الْقَبْر كَانَ خيرا وَأفضل

رَوَاهُ مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫৩
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৫৫৫৩. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে কোন বান্দাহ জাহান্নাম থেকে সাতবার আশ্রয় প্রার্থনা করে তখন জাহান্নামও বলে উঠে, হে রব! আপনার অমুক বান্দাহ (আপনার কাছে) আমার থেকে অশ্রেয় প্রার্থনা করেছে, আপনি তাকে আশ্রয় দিন। আর যে কোন বান্দাই সাত যার জান্নাত প্রার্থনা করে, তখন জান্নাতও বলে উঠে। হে রব, আপনার অমুক বান্দা আমার জন্য প্রার্থনা করেছে, সুতরাং আপনি তাকে জান্নাতে দাখিল করুন।
(আবু ইয়া'লা বুখারী ও মুসলিমের শর্ত মুতাবিক হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
كتاب صفة الْجنَّة وَالنَّار
التَّرْغِيب فِي سُؤال الْجنَّة والاستعاذة من النَّار
5553- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا استجار عبد من النَّار سبع مَرَّات إِلَّا قَالَت النَّار يَا رب إِن عَبدك فلَانا استجار مني فَأَجره وَلَا سَأَلَ عبد الْجنَّة سبع مَرَّات إِلَّا قَالَت الْجنَّة يَا رب إِن عَبدك فلَانا سَأَلَني فَأدْخلهُ الْجنَّة

رَوَاهُ أَبُو يعلى بِإِسْنَاد على شَرط البُخَارِيّ وَمُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫৪
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৫৫৫৪. হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনবার আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে, (তার জন্য) জান্নাত বলে, হে আল্লাহ্ তাকে জান্নাতে দাখিল করুন এবং যে ব্যক্তি তিনবার জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, (তার জন্য) জাহান্নাম বলে, হে আল্লাহ্ তাকে তুমি জাহান্নাম থেকে আশ্রয় দান কর।
(তিরমিযী, নাসাঈ, ইবন মাজাহ ও ইবন হিব্বান- তাঁর 'সহীহ'-এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। সকলের বর্ণিত রিওয়ায়েতের ভাষা একই রকম। হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, এর সনদ সহীহ।)
كتاب صفة الجنة والنار
كتاب صفة الْجنَّة وَالنَّار
التَّرْغِيب فِي سُؤال الْجنَّة والاستعاذة من النَّار
5554- وَعَن أنس بن مَالك رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من سَأَلَ الله الْجنَّة ثَلَاث مَرَّات قَالَت الْجنَّة اللَّهُمَّ أدخلهُ الْجنَّة وَمن استجار من النَّار ثَلَاث مَرَّات قَالَت النَّار اللَّهُمَّ أجره من النَّار

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَلَفْظهمْ وَاحِد وَالْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫৫
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
অধ্যায়: জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জান্নাত প্রার্থনা করা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৫৫৫৫. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার
ভ্রাম্যমান কিছু ফিরিশতা রয়েছে, তারা যিকিরের মজলিস খোঁজ করে...... অতঃপর হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা ভালভাবে জানা সত্ত্বেও তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কোথা থেকে আসলে হে? তারা বলে, আমরা আপনার কিছু বান্দার কাছ থেকে এসেছি, তারা আপনার তাসবীহ্ পাঠ করে, আপনার মাহাত্ম বর্ণনা করে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়ে, আপনার প্রশংসা করে এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তারা আমার কাছে কি প্রার্থনা করে? তারা বলে, তারা আপনার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তারা কি আমার জান্নাত দেখেছে? তারা বলে, জ্বী না, প্রভু। তিনি জিজ্ঞেস করেন, যদি তারা আমার জান্নাত দেখত, তবে কেমন হত?
তারা বলে, তারা আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তারা কিসের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তারা বলে, আমাদের রব। আপনার জাহান্নাম থেকে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তারা কি আমার জাহান্নাম কখনো দেখেছে? তারা বলে জ্বী, না। তিনি জিজ্ঞেস করেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখত, তবে কেমন হত? তারা বলেন, তারা আপনার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করে। তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম, তারা যা চেয়েছে, তা তাদেরকে দান করলাম এবং তারা যা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে তা থেকে তাদেরকে আশ্রয় দিলাম।
(বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির উল্লিখিত পাঠ মুসলিম বর্ণিত। যিকির অধ্যায়ে সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب صفة الجنة والنار
كتاب صفة الْجنَّة وَالنَّار
التَّرْغِيب فِي سُؤال الْجنَّة والاستعاذة من النَّار
5555- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِن لله مَلَائِكَة سيارة يتبعُون مجَالِس الذّكر فَذكر الحَدِيث إِلَى أَن قَالَ فيسألهم الله عز وَجل وَهُوَ أعلم من أَيْن جئْتُمْ فَيَقُولُونَ جِئْنَا من عِنْد عباد لَك يسبحونك ويكبرونك ويهللونك ويحمدونك ويسألونك
قَالَ فَمَا يَسْأَلُونِي قَالُوا يَسْأَلُونَك جنتك قَالَ وَهل رَأَوْا جنتي قَالُوا لَا أَي رب قَالَ فَكيف لَو رَأَوْا جنتي قَالُوا ويستجيرونك
قَالَ وَمِمَّا يستجيروني قَالُوا من نارك يَا رب
قَالَ وَهل رَأَوْا نَارِي قَالُوا لَا
قَالَ فَكيف لَو رَأَوْا نَارِي
قَالُوا ويستغفرونك قَالَ فَيَقُول قد غفرت لَهُم وأعطيتهم مَا سَأَلُوا وأجرتهم مِمَّا استجاروا
الحَدِيث
رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَاللَّفْظ لَهُ وَتقدم بِتَمَامِهِ فِي الذّكر
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫৬
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৫৬. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ﷺ) প্রায়ই দু'আ করতেন,
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وفي الآخرة حَسَنَةً وَقِنَا عَذَاب النار
হে আমাদের রব। আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন, আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
(বুখারী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5556- عَن أنس رَضِي الله عَنهُ قَالَ كَانَ أَكثر دُعَاء النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم رَبنَا آتنا فِي الدُّنْيَا حَسَنَة وَفِي الْآخِرَة حَسَنَة وقنا عَذَاب النَّار الْبَقَرَة 102

رَوَاهُ البُخَارِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৫৭
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৫৭. হযরত আদী ইবন হাতিম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর। রাবী বলেন, এবং জড়সড় ও কম্পিত হলেন। তিনি জড়সড় ও কম্পিত হলেন। তারপর বললেন, তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর। এরপর তিনি চেহারা ফিরিয়ে ফেললেন এবং তিনবার জড়সড় ও কম্পিত হলেন। যার ফলে আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি বুঝি জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করছেন। আবার বললেন, তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর যদি খেজুরের একটি টুকরা দিয়েও হয়। যদি কেউ তাও না পায়, তবে একটি ভাল কথা দিয়ে হলেও।
(বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5557- وَعَن عدي بن حَاتِم رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم اتَّقوا النَّار قَالَ وأشاح ثمَّ قَالَ اتَّقوا النَّار ثمَّ أعرض وأشاح ثَلَاثًا حَتَّى ظننا أَنه ينظر إِلَيْهَا ثمَّ قَالَ اتَّقوا النَّار وَلَو بشق تَمْرَة فَمن لم يجد فبكلمة طيبَة

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم
হাদীস নং: ৫৫৫৮
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৫৮. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল: وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ "এবং আপনি আপনার নিকটতম আত্মীয়-স্বজনকে ভয় দেখান।" (২৬: ২১৪) তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরায়শের লোকদের ডাকলেন। তারা সমবেত হল। তিনি নির্বিশেষে এবং বিশেষভাবে সম্বোধন করে বললেন, হে কা'ব ইব্‌ন লু'আই গোত্রীয়রা। তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও! হে মুররা ইবন কা'ব গোত্রীয়রা তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে হাশিম গোত্রীয়রা! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানরা! তোমরা নিজেদের জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে ফাতিমা! তুমি নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। কেননা, তোমাদের আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা নেই।
(মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির উল্লিখিত শব্দমালা তারই বর্ণিত। বুখারী, তিরমিযী এবং নাসাঈ ও এ মর্মের হাদীস বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5558- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ لما نزلت هَذِه الْآيَة وأنذر عشيرتك الْأَقْرَبين الشُّعَرَاء 412 دَعَا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قُريْشًا فَاجْتمعُوا فَعم وَخص فَقَالَ يَا بني كَعْب بن لؤَي أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار يَا بني مرّة بن كَعْب أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار يَا بني
هَاشم أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار يَا بني عبد الْمطلب أَنْقِذُوا أَنفسكُم من النَّار يَا فَاطِمَة أَنْقِذِي نَفسك من النَّار فَإِنِّي لَا أملك لكم من الله شَيْئا

رَوَاهُ مُسلم وَاللَّفْظ لَهُ وَالْبُخَارِيّ وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ بِنَحْوِهِ
হাদীস নং: ৫৫৫৯
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৫৯. হযরত নু'মান ইবন বাশীর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে খুতবা দেওয়ার সময় বলতে শুনেছি, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের ভয় দেখালাম, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামের ভয় দেখালাম। এমন কি (তিনি এত জোরে বললেন যে,) যদি বাজারে কোন লোক থাকত, তবে সে আমার অবস্থানের জায়গা থেকে কথাটি শুনতে পেত। যার ফলে তাঁর ঘাড়ের উপর থাকা রুমাল তাঁর পায়ের কাছে পড়ে গেল।
(হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, হাদীসটি মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5559- وَعَن النُّعْمَان بن بشير رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يخْطب يَقُول أَنْذَرْتُكُمْ النَّار أَنْذَرْتُكُمْ النَّار حَتَّى لَو أَن رجلا كَانَ بِالسوقِ لسمعه من مقَامي هَذَا حَتَّى وَقعت خميصة كَانَت على عَاتِقه عِنْد رجلَيْهِ

رَوَاهُ الْحَاكِم وَقَالَ صَحِيح على شَرط مُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬০
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬০. হযরত আবু হুরায়রা (রা)- সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমিও আমার উম্মতের দৃষ্টান্ত এমন, যেমন কোন মানুষ আগুন জ্বালাল এবং তার মধ্যে কীট পতঙ্গ পড়তে লাগল। আমি তোমাদের কোমর চেপে আছি, অথচ (ধরে রাখতে পারছিনা) তোমরা জাহান্নামে ঝাঁপিয়ে পড়ছ।
(বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5560- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِنَّمَا مثلي وَمثل أمتِي كَمثل رجل استوقد نَارا فَجعلت الدَّوَابّ والفراش يقعن فِيهَا فَأَنا آخذ بِحُجزِكُمْ وَأَنْتُم تقحمون فِيهَا

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬১
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬১. মুসলিমের অপর এক রিওয়ায়েতে আছে, আমার দৃষ্টান্ত এমন ব্যক্তির মত, যে অগ্নি প্রজ্বলিত করল। যখন আগুন তার আশ-পাশ আলোকিত করল, তখন তাতে কীট-পতঙ্গ পড়তে লাগল এবং লোকটি সেগুলোকে বারণ করছে। কিন্তু কীট-পতঙ্গ তার বারণ উপেক্ষা করে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত। আমি তোমাদের কোমর ধরে জাহান্নাম থেকে (বাঁচাবার জন্য) টানছি। তোমরা জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাক। তোমরা জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাক। তারা আমার বাধা উপেক্ষা করছে এবং তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5561- وَفِي رِوَايَة لمُسلم إِنَّمَا مثلي كَمثل رجل استوقد نَارا فَلَمَّا أَضَاءَت مَا حوله جعل الْفراش وَهَذِه الدَّوَابّ يقعن فِيهَا وَجعل يحجزهن ويغلبنه فيتقحمن فِيهَا
قَالَ فذلكم مثلي ومثلكم وَأَنا آخذ بِحُجزِكُمْ عَن النَّار هَلُمَّ عَن النَّار هَلُمَّ عَن النَّار فيغلبوني ويقتحمون فِيهَا
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬২
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬২. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমার ও তোমাদের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত, যে অগ্নি প্রজ্বলিত করল, ফলে তাতে ফড়িং ও পতঙ্গ পড়তে লাগল এবং সে এগুলোকে অগ্নি থেকে তাড়াচ্ছে। আমি (তোমাদেরকে) জাহান্নাম থেকে (বাঁচাবার জন্য) তোমাদের কোমর চেপে ধরছি, আর তোমরা আমার হাত থেকে ফসকে যাচ্ছ।
(মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5562- وَعَن جَابر رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مثلي ومثلكم كَمثل رجل أوقد نَارا فَجعل الجنادب والفراش يقعن فِيهَا وَهُوَ يذبهن عَنْهَا وَأَنا آخذ بِحُجزِكُمْ عَن النَّار وَأَنْتُم تفلتون من يَدي

رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ৫৫৬৩
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৩. হযরত কুলায়ব ইবন হাযন (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা তোমাদের সাধ্য অনুযায়ী জান্নাত তলব কর, এবং তোমাদের সাধ্য অনুযায়ী জাহান্নাম থেকে বেঁচে থাক। কেননা, জান্নাত তলবকারী ঘুমায় না এবং জাহান্নাম থেকে পলায়নকারীও ঘুমায় না। নিশ্চয় পরকাল আজ কষ্টকর কাজে ঢাকা এবং দুনিয়া ভোগ-সম্ভোগে ঢাকা। সুতরাং দুনিয়া যেন তোমাদেরকে আখিরাতের ব্যাপারে গাফিল করে না দেয়।
(তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5563- وَرُوِيَ عَن كُلَيْب بن حزن رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول اطْلُبُوا الْجنَّة جهدكم واهربوا من النَّار جهدكم فَإِن الْجنَّة لَا ينَام طالبها وَإِن النَّار لَا ينَام
هَارِبهَا وَإِن الْآخِرَة الْيَوْم محفوفة بالمكاره وَإِن الدُّنْيَا محفوفة باللذات والشهوات فَلَا تلهينكم عَن الْآخِرَة

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৪
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৪. হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আমি জাহান্নামের মত কিছু দেখিনি, যার থেকে পলায়নকারী ঘুমিয়ে রয়েছে এবং জান্নাতের মত কিছু দেখিনি, যার তলবকারী ঘুমিয়ে রয়েছে।
(তিরমিযী (র) হাদীসটি বর্ণনাকারী বলেন, এ হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবন উবায়দুল্লাহ ইবন মাওহিব তায়মীর রিওয়ায়েতে বর্ণিত বলে জানি।
[হাফিয (র) বলেন], আব্দুল্লাহ্ ইবন শারীক তাঁর পিতার সূত্রে মুহাম্মদ আনসারী থেকে সুদ্দী তাঁর পিতার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রা) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী প্রমুখ হাদীসটি সংকলন করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5564- وَرُوِيَ عَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا رَأَيْت مثل النَّار نَام هَارِبهَا وَلَا مثل الْجنَّة نَام طالبها

رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ هَذَا حَدِيث إِنَّمَا نعرفه من حَدِيث يحيى بن عبيد الله يَعْنِي ابْن موهب التَّيْمِيّ

قَالَ الْحَافِظ قد رَوَاهُ عبد الله بن شريك عَن أَبِيه عَن مُحَمَّد الْأنْصَارِيّ وَالسُّديّ عَن أَبِيه عَن أبي هُرَيْرَة أخرجه الْبَيْهَقِيّ وَغَيره
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৫
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৫. হযরত আনাস (রা) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়। আল্লাহ তা'আলা
তোমাদেরকে যেজন্য উৎসাহিত করেছেন, তৎপ্রতি তোমরা আগ্রহী হও, আল্লাহ তা'আলা তোমাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করেছেন, তৎপ্রতি তোমরা সতর্ক হও এবং আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদেরকে তাঁর যে আযাব, শাস্তি ও জাহান্নাম থেকে ভয় দেখিয়েছেন, তা থেকে তোমরা ভয় কর। কেননা যদি জান্নাতের একটি ফোটা তোমাদের কাছে তোমাদের এ দুনিয়ায় থাকত, যেখানে তোমরা রয়েছ, তবে তা তোমাদের জন্য দুনিয়াকে স্বাচ্ছন্দময় করে দিত। আর যদি জাহান্নামের একটি ফোটা তোমাদের কাছে তোমাদের এ দুনিয়া থাকত, যেখানে তোমরা রয়েছ, তবে তা তোমাদের জন্য দুনিয়াকে বিস্বাদ করে দিত।
(বায়হাকী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ পর্যন্ত হাদীসটির সনদ আমার কাছে পৌঁছে নি।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5565- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ يَا معشر الْمُسلمين ارغبوا فِيمَا رغبكم الله فِيهِ واحذروا مِمَّا حذركُمْ الله مِنْهُ وخافوا مِمَّا خوفكم الله بِهِ من عَذَابه وعقابه وَمن جَهَنَّم فَإِنَّهَا لَو كَانَت قَطْرَة من الْجنَّة مَعكُمْ فِي دنياكم الَّتِي أَنْتُم فِيهَا حلتها لكم وَلَو كَانَت قَطْرَة من النَّار مَعكُمْ فِي دنياكم الَّتِي أَنْتُم فِيهَا خبثتها عَلَيْكُم

رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ وَلَا يحضرني الْآن إِسْنَاده
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৬
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৬. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এমন একটি ঘোড়া আনীত হল, যে তার দৃষ্টির শেষ সীমায় প্রতিটি পদক্ষেপ রাখে। (তাতে আরোহণ করে) তিনি সফর করলেন এবং তার সাথে জিব্রীল (আ) ও তাঁর সাথে সফর করলেন। তখন তিনি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে উপনীত হলেন যারা একদিন ফসল বুনে এবং ঐ একই দিনে কাটে। যখন তারা ফসল কাটে, তখন তা পূর্বের মত হয়ে যায়। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা আল্লাহর পথের মুজাহিদ। তাদের নেক আমল সাতশ' গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয় এবং সে যা ব্যয় করেছে, আল্লাহ্ তা'আলা তাকে তার বদলা দিয়ে দেন। এরপর এমন সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে উপনীত হলেন যাদের মস্তক পাথর দ্বারা চূর্ণ করা হচ্ছে। যখন চূর্ণ করা হয়, তখন আবার পূর্বে যেমন ছিল তেমন হয়ে যায় এবং এর কোন চিহ্ন তাদের কাছে থাকে না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হচ্ছে তারা যাদের মাথা সালাতের ব্যাপারে ভারী থাকত। এরপর তিনি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গেলেন, যাদের পেছনে রয়েছে কিছু নথিপত্র এবং সামনে রয়েছে। কিছু নথিপত্র। তারা চতুষ্পদ জন্তুর চরার মত 'দারী' ও 'যাক্কুম নামক কাটাবৃক্ষ এবং জাহান্নামের গরম পাথর চরে চরে খাচ্ছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে জিবরীল! এগুলো কি? তিনি বললেন, এরা হচ্ছে তারা, যারা তাদের সম্পদের যাকাত আদায় করত না। আল্লাহ তাদের উপর যুলুম করেন নি এবং আল্লাহ্ বান্দাদের প্রতি যুলুমকারী নন। তারপর তিনি এমন এক লোকের কাছে গেলেন, যে এক বিরাট লাকড়ীর বোঝা একত্রিত করেছে, কিন্তু সে তা বহন করতে সক্ষম নয়। অথচ সে বোঝা আরও বৃদ্ধি করতে চায়। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল, আবার কি? তিনি বললেন এ ব্যক্তি আপনার উম্মতের এমন এক লোক, যার কাছে মানুষের আমানত রয়েছে, কিন্তু সে তা আদায় করতে সক্ষম নয়, অথচ সে তা আরও বৃদ্ধি করতে চায়।
তারপর তিনি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গেলেন, যাদের ঠোঁট ও জিহ্বা লোহার কাঁচি দ্বারা কাটা হচ্ছে।
যতবার কাটা হয়, ততবার পূর্বে যেমন ছিল তেমন হয়ে যায় এবং তাদের কাছে এর চিহ্ন থাকে না। তিনি
জিজ্ঞেস করলেন, হে জিবরীল এরা কারা? তিনি বললেন, ফিতনার বক্তৃতা প্রদানকারীগণ।
তারপর তিনি একটি ছোট গর্তের কাছে গেলেন, তা থেকে একটি প্রকাণ্ড ষাঁড় বের হচ্ছে। অতঃপর ষাঁড়টি যেখান থেকে বের হয়েছে, সেখানে প্রবেশ করার জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু সে তাতে সক্ষম হচ্ছে না। তিনি
জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল, এটা কি? তিনি বললেন, এলোক বড় কথা বলে এবং তজ্জন্য লজ্জিত হয়। অতঃপর সে তার কথা ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সক্ষম হয় না।
এরপর তিনি একটি উপত্যকায় গেলেন এবং সেখানে সুগন্ধি পেলেন ও মিশকের সুগন্ধি ও শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি? জিব্রীল বললেন, এটা জান্নাতের শব্দ। জান্নাত বলছে, প্রভু। আমার মালিক ও আমাকে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমাকে প্রদান করুন। কেননা, আমার গাছ-গাছালি, রেশম, সুন্দুস, ইস্স্তাবরাক, মূল্যবান পাথর, মারজান, রূপা, সোনা, পানপাত্র রাশি, তৈজসপত্র, লোটা, ফলমূল, মধু, পানি, দুধ ও শরাব অধিক পরিমাণে হয়েছে। তুমি আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা আমাকে দান কর।
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, তোমার জন্য রয়েছে প্রতিটি মুসলিম পুরুষ, মুসলিম নারী ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী এবং যারা আমার প্রতি ও আমার রাসূলদের প্রতি ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, আমার সাথে কিছু শরীক করেনি এবং আমার পরিবর্তে কোন শরীক গ্রহণ করে নি, সে নিরাপদে থাকবে, যে আমার কাছে চায়, আমি তাকে দেই, যে আমাকে ঋণ দেয়, আমি তাকে তার বিনিময় দেই এবং যে আমার প্রতি ভরসা করে, আমি তার জন্য যথেষ্ট হই। নিশ্চয় আমি আল্লাহ্। আমি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। আমার প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ হয় না। মু'মিনগণ সফলকাম হয়েছে। সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ্ তা'আলা বরকতময়। তখন জান্নাত বলে, আমি সন্তুষ্ট হয়েছি।
তারপর তিনি আরেকটি উপত্যকায় গেলেন এবং সেখানে ভয়ঙ্কর শব্দ শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল, এটা কিসের শব্দ? তিনি বললেন, এটা জাহান্নামের শব্দ। সে বলে হে প্রভু! আমার অধিবাসীকে আমার কাছে দিন এবং আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পূর্ণ করুন, কেননা আমার জিঞ্জির, বেড়ি, প্রজ্জলিত অগ্নি শিখা, গরম পানি, জাহান্নামীদের পুঁজ ও শরীরের ময়লার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমার গভীরতা অনেক চেয়েছে, আমার তাপ তীব্রতর হয়েছে, আমাকে আপনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা পূর্ণ করুন। আল্লাহ বলেন, তোমার জন্য রয়েছে প্রতিটি মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারী, পাপাচারী পুরুষ ও পাপাচারী নারী এবং প্রত্যেক যালিম ব্যক্তি, যে হিসাবের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে না। জাহান্নাম বলে, আমি সন্তুষ্টি হয়েছি।...... অতঃপর মি'রাজের কাহিনী, সালাত ফরয হওয়া ইত্যাদি বিষয়ে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
(বাযযার রাবী ইব্‌ন আনাস-এর সূত্রে আবুল আলিয়া অথবা অন্য কারও মধ্যস্থতায় আবু হুরায়রা (রা) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5566- وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أُتِي بفرس يَجْعَل كل خطو مِنْهُ أقْصَى بَصَره فَسَار وَسَار مَعَه جِبْرِيل عَلَيْهِ السَّلَام فَأتى على قوم يزرعون فِي يَوْم ويحصدون فِي يَوْم كلما حصدوا عَاد كَمَا كَانَ فَقَالَ يَا جِبْرِيل من هَؤُلَاءِ قَالَ هَؤُلَاءِ المجاهدون فِي سَبِيل الله تضَاعف لَهُم الْحَسَنَة بسبعمائة ضعف وَمَا أَنْفقُوا من شَيْء فَهُوَ يخلفه ثمَّ أَتَى على قوم ترضخ رؤوسهم بالصخر كلما رضخت عَادَتْ كَمَا كَانَت وَلَا يفتر عَنْهُم من ذَلِك شَيْء قَالَ يَا جِبْرِيل من هَؤُلَاءِ قَالَ هَؤُلَاءِ الَّذين تثاقلت رؤوسهم عَن الصَّلَاة ثمَّ أَتَى على قوم على أدبارهم رقاع وعَلى أقبالهم رقاع يسرحون كَمَا تسرح الْأَنْعَام إِلَى الضريع والزقوم ورضف جَهَنَّم قَالَ مَا هَؤُلَاءِ يَا جِبْرِيل قَالَ هَؤُلَاءِ الَّذين لَا يؤدون صدقَات أَمْوَالهم وَمَا ظلمهم الله وَمَا الله بظلام للعبيد ثمَّ أَتَى على رجل قد جمع حزمة عَظِيمَة لَا يَسْتَطِيع حملهَا وَهُوَ يُرِيد أَن يزِيد عَلَيْهَا قَالَ يَا جِبْرِيل مَا هَذَا قَالَ هَذَا رجل من أمتك عَلَيْهِ أَمَانَة النَّاس لَا يَسْتَطِيع أداءها وَهُوَ يُرِيد أَن يزِيد عَلَيْهَا ثمَّ أَتَى على قوم
تقْرض شفاههم وألسنتهم بمقاريض من حَدِيد كلما قرضت عَادَتْ كَمَا كَانَت لَا يفتر عَنْهُم من ذَلِك شَيْء قَالَ يَا جِبْرِيل مَا هَؤُلَاءِ قَالَ خطباء الْفِتْنَة ثمَّ أَتَى على جُحر صَغِير يخرج مِنْهُ ثَوْر عَظِيم فيريد الثور أَن يدْخل من حَيْثُ خرج فَلَا يَسْتَطِيع قَالَ مَا هَذَا يَا جِبْرِيل قَالَ هَذَا الرجل يتَكَلَّم بِالْكَلِمَةِ الْعَظِيمَة فيندم عَلَيْهَا فيريد أَن يردهَا فَلَا يَسْتَطِيع ثمَّ أَتَى على وَاد فَوجدَ ريحًا طيبَة وَوجد ريح مسك مَعَ صَوت فَقَالَ مَا هَذَا قَالَ صَوت الْجنَّة تَقول يَا رب ائْتِنِي بأهلي وَبِمَا وَعَدتنِي فقد كثر غرسي وحريري وسندسي وإستبرقي وعبقريي ومرجاني وفضتي وذهبي وأكوابي وصحافي وأباريقي وفواكهي وعسلي ومائي ولبني وخمري ائْتِنِي بِمَا وَعَدتنِي
قَالَ لَك كل مُسلم ومسلمة وَمُؤمن ومؤمنة وَمن آمن بِي وبرسلي وَعمل صَالحا وَلم يُشْرك بِي شَيْئا وَلم يتَّخذ من دوني أندادا فَهُوَ آمن وَمن سَأَلَني أَعْطيته وَمن أَقْرضنِي جزيته وَمن توكل عَليّ كفيته إِنِّي أَنا الله لَا إِلَه إِلَّا أَنا لَا خلف لميعادي قد أَفْلح الْمُؤْمِنُونَ تبَارك الله أحسن الْخَالِقِينَ فَقَالَت قد رضيت ثمَّ أَتَى على وَاد فَسمع صَوتا مُنْكرا فَقَالَ يَا جِبْرِيل مَا هَذَا الصَّوْت قَالَ هَذَا صَوت جَهَنَّم تَقول يَا رب ائْتِنِي بأهلي وَبِمَا وَعَدتنِي فقد كثرت سلاسلي وأغلالي وسعيري وحميمي وغساقي وغسليني وَقد بعد قعري وَاشْتَدَّ حري ائْتِنِي بِمَا وَعَدتنِي قَالَ لَك كل مُشْرك ومشركة وخبيث وخبيثة وكل جَبَّار لَا يُؤمن بِيَوْم الْحساب قَالَت قد رضيت فَذكر الحَدِيث فِي قصَّة الْإِسْرَاء وَفرض الصَّلَاة وَغير ذَلِك

رَوَاهُ الْبَزَّار عَن الرّبيع بن أنس عَن أبي الْعَالِيَة أَو غَيره عَن أبي هُرَيْرَة
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৭
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৭. হযরত আনাস (রা) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, আমি যা দেখেছি তা যদি তোমরা দেখতে, তবে তোমরা কম হাসতে এবং অধিক কাঁদতে। সাহাবায়ে কিরাম বললেনঃ আপনি কি দেখেছেন? ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বললেন, আমি জান্নাত ও জাহান্নাম দেখেছি।
(মুসলিম ও আবূ ইয়া'লা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5567- وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ عَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَنه قَالَ وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ لَو رَأَيْتُمْ مَا رَأَيْت لضحكتم قَلِيلا ولبكيتم كثيرا
قَالُوا وَمَا رَأَيْت يَا رَسُول الله قَالَ رَأَيْت الْجنَّة وَالنَّار

رَوَاهُ مُسلم وَأَبُو يعلى
হাদীস নং: ৫৫৬৮
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৮. হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবন যুবায়র (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী (ﷺ) কিছু লোকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন; তারা তখন হাসছিল। তিনি বললেন, তোমরা হাসছ, অথচ জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা তোমাদের সামনে রয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তাদের কাউকে আর মৃত্যু পর্যন্ত কোনদিন হাসতে দেখা যায়নি। তিনি বলেন, তাদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে :
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ () وَأَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الْأَلِيمُ
"আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি মহান ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু এবং আমার শাস্তি হচ্ছে মর্মন্তুদ শাস্তি"। (১৫: ৪৯, ৫০)
(বাযযার হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির সনদে পরিত্যাজ্য বা অভিযুক্ত কোন রাবী নেই।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5568- وَرُوِيَ عَن عبد الله بن الزبير رَضِي الله عَنْهُمَا أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مر بِقوم وهم يَضْحَكُونَ فَقَالَ تضحكون وَذكر الْجنَّة وَالنَّار بَين أظْهركُم
قَالَ فَمَا رئي أحد مِنْهُم ضَاحِكا حَتَّى مَاتَ قَالَ وَنزلت فيهم نبيء عبَادي أَنِّي أَنا الغفور الرَّحِيم وَأَن عَذَابي هُوَ الْعَذَاب الْأَلِيم الْحجر 94

رَوَاهُ الْبَزَّار وَلَيْسَ فِي إِسْنَاده من ترك وَلَا اتهمَ
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৬৯
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৬৯. হযরত ইবন উমর (রা) এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত। তিনি খুতবা দানকালে বললেন, তোমরা বড় দু'টি বিষয় অর্থাৎ জান্নাত ও জাহান্নামকে ভুলবে না। এরপর তিনি এভাবে কাঁদলেন যে, তাঁর অশ্রু বেয়ে পড়ল অথবা তাঁর অশ্রু তাঁর দাড়ির দুই পার্শ্ব ভিজিয়ে ফেলল। এরপর বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে মুহাম্মদের প্রাণ রয়েছে, আমি পরকাল সম্পর্কে যা জানি, তোমরা যদি তা জানতে, তবে তোমরা রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে এবং তোমাদের মাথায় তোমরা ধূলি মাখতে।
(আবূ ইয়া'লা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5569- وَعَن ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَنه خطب فَقَالَ لَا تنسوا
العظيمتين الْجنَّة وَالنَّار ثمَّ بَكَى حَتَّى جرى أَو بل دُمُوعه جَانِبي لحيته ثمَّ قَالَ وَالَّذِي نفس مُحَمَّد بِيَدِهِ لَو تعلمُونَ مَا أعلم من أَمر الْآخِرَة لمشيتم إِلَى الصَّعِيد ولحثيتم على رؤوسكم التُّرَاب

رَوَاهُ أَبُو يعلى
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫৫৭০
অধ্যায়ঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা
জাহান্নাম থেকে ভীতি প্রদর্শন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর ফযল ও করমে আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করুন।
৫৫৭০. হযরত উমর ইবন খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জিব্রীল (আ) নবী (ﷺ)-এর কাছে সাধারণত যে সময় আসতেন, সে সময় ব্যতিরেকে অন্য এক সময় তাঁর কাছে আসলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-তাঁর কাছে উঠে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল। ব্যাপার কি আপনাকে যে বিবর্ণ দেখছি? তিনি বললেন, আমি আপনার কাছে আসিনি। আল্লাহ তা'আলা আমাকে জাহান্নামের ফুঁকনী তৈরী করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূলাল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে জিবরীল আমাকে অগ্নির বর্ণনা দিন এবং আমাকে জাহান্নামের বিবরণ দিন। জিবরীল (আ) বললেন, আল্লাহ তা'আলা জাহান্নাম তৈরী করতে হুকুম দিয়েছেন, তখন এক হাজার বছর জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হয়েছে। ফলে অগ্নি শ্রভ্র বর্ণ ধারণ করে। তারপর তিনি আবার তা প্রজ্জলিত করার হুকুম দিলেন। তখন এক হাজার বছর ধরে তা প্রজ্জলিত রাখা হল। ফলে অগ্নি লাল বর্ণ ধারণ করল। তারপর আবার তিনি তা প্রজ্জলিত করতে হুকুম দিলেন, তখন আরও এক হাজার বছর প্রজ্জলিত রাখা হল। ফলে অগ্নি কাল বর্ণ হয়ে গেছে। সুতরাং জাহান্নামের অগ্নি অন্ধকার কালো। তার স্ফুলিঙ্গ আলোকিত হয় না, তার শিখা নিভানো যায় না। সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, যদি জাহান্নাম একটি সুইয়ের ছিদ্র পরিমাণও খুলে দেয়া হয়, তবে তার তাপে একেবারে সমস্ত পৃথিবীবাসীর নির্ঘাৎ মৃত্যু হবে। সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, যদি জাহান্নামের তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত কোন ফিরিশতা দুনিয়াবাসীর কাছে আত্মপ্রকাশ করে, তবে তার কুৎসিত চেহারার কারণে এবং তার দুর্গন্ধে সমস্ত পৃথিবীবাসীর মৃত্যু হবে। সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা জাহান্নামীদের যে জিঞ্জিরের বর্ণনা তাঁর গ্রন্থে দিয়েছেন, তার কড়াসমূহ থেকে কোন একটি কড়া যদি পৃথিবীর কোন পর্বতের উপর রাখা হয়, তবে তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে এবং পর্বত স্বস্থানে স্থির থাকতে পারবে না। যে, পর্যন্ত না সে পৃথিবীর সর্বনিম্নস্তরে গিয়ে পৌঁছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন বললেন, হে জিব্‌রীল। আমার যথেষ্ট হয়েছে, (আর বলবেন না) যাতে আমার কলজে ফেটে না যায়, যার ফলে আমি মৃত্যুমুখে পতিত হই বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) জিবরীলের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, যে, তিনি কাঁদছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে জিব্রীল। আপনি কাঁদছেন, অথচ আপনি আল্লাহ্ তা'আলার কাছে আপনার বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। তিনি বললেন, আমার কি হয়েছে যে, আমি কাঁদব না? আমার তো বেশি কাঁদা উচিত। কেননা, আমি যে মর্যাদায় রয়েছি, হায় আল্লাহর ইলমের মধ্যে তার ব্যতিক্রম অবস্থায় রয়েছি। আমি জানি না, হয়ত ইবলীসকে যে পরীক্ষা করা হয়েছে, আমাকেও সে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হবে। অথচ সে ছিল ফিরিশতাদের অন্তর্ভুক্ত। আমি জানি না, হয়ত হারূত ও মারূতকে যে পরীক্ষা করা হয়েছে, আমাকে সে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হবে। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কেঁদে ফেললেন এবং জিব্রীল (আ) ও কাঁদলেন। তাঁরা দু'জন কাঁদতে থাকলেন। তার যে পর্যন্ত না তাঁদেরকে ডেকে বলা হয়, হে জিবরীল ও হে মুহাম্মদ। আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদের উভয়কে তাঁর অবাধ্যাচরণ থেকে নিরাপদে রেখেছেন। এরপর জিব্রীল (আ) উঠে গেলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) বের হলেন, এবং কিছু আনসারী সাহাবীর কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন। তাঁরা তখন হাসছিলেন এবং খেলা করছিলেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা হাসছ? অথচ তোমাদের পশ্চাতে রয়েছে জাহান্নাম। আমি যা জানি, যদি তোমরা তা জানতে, তবে তোমরা কম হাসতে, বেশি কাঁদতে, খাবার ও পানীয় গলাধঃকরণ করতে পারতে না এবং তোমরা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে করতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে।
(তাবারানী 'আল আওসাতে' হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মৃত্যুর আলোচনা অধ্যায়ে অপর এক হাদীস প্রসঙ্গে এ হাদীসের কোন কোন কম ব্যবহৃত শব্দের ব্যাখ্যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।)
كتاب صفة الجنة والنار
التَّرْهِيب من النَّار أعاذنا الله مِنْهَا بمنه وَكَرمه
5570- وَرُوِيَ عَن عمر بن الْخطاب رَضِي الله عَنهُ قَالَ جَاءَ جِبْرِيل إِلَى النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فِي حِين غير حِينه الَّذِي كَانَ يَأْتِيهِ فِيهِ فَقَامَ إِلَيْهِ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ يَا جِبْرِيل مَا لي أَرَاك متغير اللَّوْن فَقَالَ مَا جئْتُك حَتَّى أَمر الله عز وَجل بمنافخ النَّار فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَا جِبْرِيل صف لي النَّار وانعت لي جَهَنَّم فَقَالَ جِبْرِيل إِن الله تبَارك وَتَعَالَى أَمر بجهنم فَأوقد عَلَيْهَا ألف عَام حَتَّى ابْيَضَّتْ ثمَّ أَمر فَأوقد عَلَيْهَا ألف عَام حَتَّى احْمَرَّتْ ثمَّ أَمر فَأوقد عَلَيْهَا ألف عَام حَتَّى اسودت فَهِيَ سَوْدَاء مظْلمَة لَا يضيء شررها وَلَا يطفأ لهبها وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ لَو أَن قدر ثقب إبرة فتح من جَهَنَّم لمات من فِي الأَرْض كلهم جَمِيعًا من حره وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ لَو أَن خَازِنًا من خَزَنَة جَهَنَّم برز إِلَى أهل الدُّنْيَا لمات من فِي الأَرْض كلهم من قبح وَجهه وَمن نَتن رِيحه وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ لَو أَن حَلقَة من حلق سلسلة أهل النَّار الَّتِي نعت الله فِي كِتَابه وضعت على جبال الدُّنْيَا لأرفضت وَمَا تقارت حَتَّى يَنْتَهِي إِلَى الأَرْض السُّفْلى
فَقَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم حسبي يَا جِبْرِيل لَا ينصدع قلبِي فأموت قَالَ فَنظر رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِلَى جِبْرِيل وَهُوَ يبكي فَقَالَ تبْكي يَا جِبْرِيل وَأَنت من الله بِالْمَكَانِ الَّذِي أَنْت بِهِ فَقَالَ وَمَا لي لَا أبْكِي أَنا أَحَق بالبكاء لعَلي أكون فِي علم الله على غير الْحَال الَّتِي أَنا عَلَيْهَا وَمَا أَدْرِي لعَلي أبتلى بِمَا ابْتُلِيَ بِهِ إِبْلِيس فقد كَانَ من الْمَلَائِكَة وَمَا أَدْرِي لعَلي أبتلى بِمَا ابْتُلِيَ بِهِ هاروت وماروت
قَالَ فَبكى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَبكى جِبْرِيل عَلَيْهِ السَّلَام
فَمَا زَالا يَبْكِيَانِ حَتَّى نوديا أَن يَا جِبْرِيل وَيَا مُحَمَّد إِن الله عز وَجل قد أمنكما أَن تعصياه فارتفع جِبْرِيل عَلَيْهِ السَّلَام وَخرج رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَمر بِقوم من الْأَنْصَار يَضْحَكُونَ ويلعبون فَقَالَ أتضحكون ووراءكم جَهَنَّم فَلَو تعلمُونَ مَا أعلم لضحكتم قَلِيلا ولبكيتم كثيرا وَلما أسغتم الطَّعَام وَالشرَاب ولخرجتم إِلَى الصعدات تجأرون إِلَى الله

رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْأَوْسَط وَتقدم شرح بعض غَرِيبه فِي حَدِيث آخر فِي ذكر الْمَوْت